স্টাফ রিপোর্টার:
প্রায় এক দশক আগ থেকে রাজধানীর অভিজাত এলাকা গুলশান-বনানীতে একটি-দুটি করে গড়ে উঠে ম্যাসাজ থেরাপী দেওয়ার জন্য স্পা সেন্টার। আর এই স্পা সেগুলোই ধীরে ধীরে ছড়িয়ে গেছে রাজধানীর বিভিন্ন অলিগলিতেও। সিটি করপোরেশন থেকে সেলুন, বিউটি পার্লার, ব্যায়ামাগার বা ফিটনেস সেন্টার ও ক্ষুদ্র ব্যবসার লাইসেন্সের আড়ালে গড়ে তোলা হয় এসব কথিত স্পা সেন্টার। সেগুলোর অধিকাংশের বিরুদ্ধে মাদক ও দেহব্যবসার অভিযোগ রয়েছে। সেই সঙ্গে উঠতি বয়সের তরুণীদের দিয়ে গ্রাহকদের স্পা করানোর নামে অশ্লীল কর্মকাণ্ড এবং ম্যাসাজ থেরাপীর আড়ালে অনৈতিক কার্যকলাপের সময়ের ছবি ধারণ করে পরবর্তীতে চলে ব্ল্যাকমেইলও।
রংপুর জেলার চন্দনপাট গ্রামের মোঃ আব্দুল হাইয়ের ছেলে মোঃ মিজানুর রহমান ছিলেন একটি ক্লাবের ক্লিনার। তবে হঠাৎ করেই তিনি যেনো ‘আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ’। ক্লিনারের কাজ ছেড়ে গণিকাবৃত্তির দালাল হিসেবে যোগদেন গুলশান-১ এ রতনপুর ক্যাসেল নামক একটি ভবনে (যার ব্যবস্থাপক শাওন) অবস্থিত স্পা সেন্টারে
কথায় আছে, ‘চোরের উপর বাটপারি’ আর ঠিক তাই করেছেন উক্ত মিজানুর। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মিজানুর, ঐ প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক শাওন এর ম্যানেজার কামাল, নাঈম, সোহাগ, নাজমুল ও আরও কয়েকজন মিলে রতনপুর ক্যাসেলের ভবন মালিককে স্পা সেন্টারের ব্যবস্থাপক শাওনের দেওয়া এ্যাডভান্সের অতিরিক্ত টাকা দিয়ে স্পা সেন্টারটি নিজেরা বাগিয়ে নেন। এই অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত রয়েছেন খোদ রতনপুর ক্যাসেলের কথিত মালিক রনি মাহমুদ হাসান।
সম্প্রতি, গুলশান-১ এর রতনপুর ক্যাসেল নামক একটি ভবনের (৩য় তলা) ভাড়া নিয়ে অবৈধ স্পা সেন্টারের মালিক হয়েছেন উক্ত মিজানুর। গুলশানের অবৈধ স্পা সেন্টারগুলোতে স্পা সার্ভিসের আড়ালে যে মাদক ও গণিকাবৃত্তি হয় তা এখন ওপেন-সিক্রেট।
গত কিছু দিন আগেও গুলশানে স্পার আড়ালে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার অভিযোগে সিআইডি কর্তৃক অভিযান পরিচালনা করে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার ২৪ আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
এর আগেও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পরিচালিত একটি অভিযানে স্পা সেন্টারের মালিকসহ দেহব্যবসায়ীদের মামলা প্রদান করা হয়। কিন্তু একাধিক অভিযানের পরেও স্পা সেন্টারের দৌরাত্ম দিন দিন যেন বেড়েই চলেছে। আর এতে ক্ষতিগ্রস্থ্য হচ্ছে যুব সমাজ।
স্থানীয়রা বলছেন, পুলিশ প্রশাসনের মাঝে মাঝে অভিযান পরিচালনা করে এদের বিরুদ্ধে মামলা দিলেও কিছু দিন পরে আইনের ফাঁকফোকরে বেড়িয়ে এসে পুনরায় এরা আবারো অবৈধ কার্যকলাপের সঙ্গে জড়িত হচ্ছে। এতে করে আমরা আমাদের সন্তানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে বেশ সঙ্কায় রয়েছি। দিন দিন গুলশানে স্পা সেন্টারের আড়ালে এদের অনৈতিক কার্যকলাপ বেড়েই চলেছে।
এসময় আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যেনো সঠিক ব্যবস্থা গ্রহণ করে এদের অবৈধ কার্যকলাপ নির্মূলে এগিয়ে আসে এই কামনা করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
ওপর দিকে বনানী থেকে একাধিক মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা মাথায় নিয়ে গুলশান-১ এর রোড নং-১৩০, বাড়ী নং-২৮ এ স্পা সেন্টারের নাম দিয়ে দেহ ও মাদকের রমরমা বাণিজ্য পরিচালনা করছেন আয়েশা সিদ্দিকা লাবণী (ওরফে ইভা)।
এছাড়াও একাধিক মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা হওয়ার পরও বহাল তবীয়তে গুলশান-১ এর রোড নং-১৩১, বাড়ী নং-৬০/বি তে স্পা সেন্টারের নাম দিয়ে দেহ ও মাদকের রমরমা বাণিজ্য পরিচালনা করছেন রহিমা বেগম (ওরফে সুমনা, ওরফে সুলতানা) এবং তার স্বামী কখনো নাটকের পরিচালক আবার কখনো পত্রিকার সাংবাদিক পরিচয়দানকারী নারী পাচার চক্রের সদস্য এ কে হৃদয়। যার ম্যানেজারের দায়িত্ব পালন করছেন, নারী পাচারকারী চক্রের দালাল নুরুল ইসলাম নাহিদ (ওরফে নাবিল হাসান)।
চলবে...
সম্পাদক ও প্রকাশক: মোহাম্মদ মাসুদ || বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়: ২১/১ নয়াপল্টন, ঢাকা-১০০০ || মোবাইল : ০১৫১১৯৬৩২৯৪,০১৬১১৯৬৩২৯৪ || ই- মেইল: dailysobujbangladesh@gmail.com || ওয়েব : www.dailysobujbangladesh.com
Copyright © 2025 দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ. All rights reserved.