আদালতের রায়ের পরেও সালাম মুর্শেদী গুলশানের সেই বাড়ি ছাড়েনী

স্টাফ রিপোর্টার:

খুলনা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীকে তিন মাসের মধ্যে গুলশানের আলোচিত সেই বাড়ি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছলো হাইকোর্ট।

জনস্বার্থে করা একটি রিট আবেদনের দীর্ঘ শুনানি শেষে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করে।

রায়ের অনুলিপি পাওয়ার তিন মাসের মধ্যে সালাম মুর্শেদীকে গুলশানের বাড়ি গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করতে বলা হয়েছে।  সেই সঙ্গে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়কে বাড়িটি বুঝে পাওয়ার পর আদালতকে অবহিত করতে বলা হয়েছে রায়ে।
আদালতে রিটকারীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট অনীক আর হক, দুদকের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট খুরশীদ আল খান, রাজউকের পক্ষে শুনানি করেন সাঈদ আহমেদ রাজা। সালাম মুর্শেদীর পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট প্রবীর নিয়োগী।

সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশান-২ এর ১০৪ নম্বর সড়কের ২৯ নম্বর বাড়িটি ‘পরিত্যক্ত সম্পত্তি’ দাবি করে তদন্তের নির্দেশনা চেয়ে রিট আবেদন করেন আইনজীবী সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। ২০২২ সালের ৩০ অক্টোবর সেই আবেদনে দুদক, রাজউক ও গণপূর্ত বিভাগসহ সংশ্লিষ্টদের সেখানে বিবাদী করা হয়।

প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২০২২ সালের ১ নভেম্বর রুল জারি করে হাইকোর্টের এই বেঞ্চ। সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় সেখানে। একইসঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।

২০২২ সালের ১৩ নভেম্বর বাড়িটি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। এরপর ২০২৩ সালের ৩০ জানুয়ারি বাড়িটি নিয়ে রাজউকের প্রতিবেদন হাইকোর্টে দাখিল করে বলা হয়, বাড়িটি পরিত্যক্ত সম্পত্তির তালিকায় নেই। ওই বাড়ির নকশাও (মূল লে আউট প্ল্যান) আদালতে জমা দেয় রাজউক।

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রিটের পক্ষে শুনানিতে অ্যাডভোকেট অনীক আর হক ও সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছিলেন, হাইকোর্টে রাজউক ও দুদকের দাখিল করা প্রতিবেদনে প্রমাণিত হয়েছে, গুলশানে সালাম মুর্শেদী যে বাড়িতে বাস করছেন সেটা রাষ্ট্রের সম্পত্তি। এই বাড়িতে তিনি এখন এক মুহূর্তও থাকতে পারেন না। এরপর গত ৩ মার্চ মামলার শুনানি শেষ হয়।
এদিকে ৫ মাস পার হয়ে গেলেও সে এখনো বাড়িটি ছারেননী এ বিষয়ে সালাম মোর্শেদীর মোবাইল ফোনে বার বার চেস্টা করেও মন্তব্য জানা যায়নি তবে খবর নিয়ে জানাযায় সে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে পলাতক রয়েছে।

প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন কলেজছাত্রী

অনলাইন ডেস্কঃ

নড়াইলের লোহাগাড়া উপজেলার সাতকানিয়ায় প্রেমিকের বাড়িতে বিয়ের দাবি নিয়ে এসে লাশ হয়ে ফিরলেন পেকুয়ার কলেজছাত্রী প্রেমিকা। গত সোমবার দিবাগত রাতে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা মৌলভী পাড়ায় প্রেমিক আমিনুর রহমানের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। ঘটনার পর থেকে প্রেমিক আমিনুরসহ পরিবারের লোকজন পলাতক রয়েছেন।

আমিনুর রহমান সাতকানিয়া ইউনিয়নের ৮ নং ওয়ার্ডের বারদোনা মৌলভী পাড়ার মৃত শব্বির আহমদের ছেলে। প্রেমিক আমিনুর রহমানের দাবি প্রেমিকা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। আর কলেজছাত্রী প্রেমিকার স্বজনদের দাবি মেয়েকে হত্যা করা হয়েছে। এখন সবার প্রশ্ন হত্যা নাকি আত্মহত্যা?

জানা যায়, এখন থেকে প্রায় দেড় বছর আগে কক্সবাজারের পেকুয়ার টৈটং এলাকার বাসিন্দা ওই কলেজছাত্রীর সঙ্গে সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের বারদোনা মৌলভীপাড়ার আমিনুর রহমানের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আমিনুর বিভিন্ন সময়ে প্রেমিকাকে সঙ্গে নিয়ে বেড়াতে গেছে।

গত সোমবার সকালে আমিনুর রহমান কলেজছাত্রীকে নিয়ে কক্সবাজারে বেড়াতে যায় এবং হোটেলে উঠে। বিকালে কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে আমিনুর কাজ থাকার কথা বলে চকরিয়ায় নেমে যায়। এরপর কলেজছাত্রীর মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেয়। ওই কলেজছাত্রী ঘরে পৌঁছার পর প্রেমিকের মোবাইলে বার বার কল দিয়েও সংযোগ না পাওয়ায় রাতে সাতকানিয়ায় প্রেমিকের বাড়িতে চলে আসে। প্রেমিকের বাড়িতে আসার পর তার পরিবারের সদস্যরা জানায় আমিনুর বাড়িতে নাই। তখন কলেজছাত্রী প্রেমিক আমিনুরের পরিবারের সদস্যদেরকে প্রেমের সম্পর্ক, সকালে কক্সবাজারে যাওয়া এবং হোটেলে উঠার বিষয়টি জানায়। এজন্য বিয়ের দাবিতে প্রেমিকের বাড়িতে অবস্থান করে। এসময় আমিনুরের বোন-ভগ্নিপতিসহ পরিবারের সদস্যরা গালিগালাজ ও মারধর করে তাকে ঘর থেকে বের করে দেয়। এরপর ওই কলেজছাত্রী সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস ছবুরের কাছে ফোন করে প্রেমিকের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করে।

এদিকে মঙ্গলবার ভোরে প্রেমিক আমিনুরের বোন কলেজছাত্রীকে গুরুতর অসুস্থ অবস্থায় লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে লোহাগাড়া থানা পুলিশ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে ওই কলেজছাত্রীর লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য চমেক হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করেন।

সাতকানিয়া সদর ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আবদুস ছবুর জানান, মেয়েটি রাতে আমাকে ফোন করে আমিনুরের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক থাকার কথা বলেছে। তাকে প্রেমিক আমিনুরের বাড়িতে থাকার ব্যবস্থা করার জন্য অনুরোধ করেছে। তখন আমি তাকে অভিভাবকদের নিয়ে আসতে বলেছি। সকালে জানলাম মেয়েটি মারা গেছে। তবে কিভাবে মারা গেছে সে বিষয়ে আমি কিছুই জানি না।

লোহাগাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডা. জিয়া উদ্দিন আহমেদ জানান, ওই কলেজছাত্রীকে ভোরের দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসে। তবে হাসপাতালে আনার আগেই মেয়েটি মারা গেছে। তার শরীরে উল্লেখযোগ্য কোনো আঘাতের চিহ্ন নাই। তবে ময়নাতদন্তের রিপোর্ট না পাওয়ার আগে মৃত্যুর সঠিক কারণ বলা যাাচ্ছে না।

ওই কলেজছাত্রীর চাচা মিজানুর রহমান জানান, প্রেমিক আমিনুর বিয়ের কথা বলে মেয়েকে কক্সবাজারে নিয়ে যায়। সেখানে নেওয়ার পর হোটেলে উঠে। কক্সবাজার থেকে ফেরার পথে আমিনুর কাজ থাকার কথা বলে চকরিয়ায় এসে গাড়ি থেকে নেমে যায়। পরে আমিনুর মেয়ের মোবাইল নম্বর ব্লক করে দেয়। মেয়ে ঘরে পৌঁছার পর আমিনুরকে ফোনে না পেয়ে রাতে প্রেমিকের বাড়িতে চলে যায়। সেখানে প্রেমিকের বোন-ভগ্নিপতিসহ পরিবারের সদস্যরা মিলে তাকে গালিগালাজ ও মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। পরবর্তীতে তাদের আঘাতে মেয়েটি মারা যায়।

ঘটনার বিষয়ে প্রেমিক আমিনুর রহমান মুঠোফোনে জানান, তার প্রেমিকা বিষপানে আত্মহত্যা করেছে। তাকে কেউ মারধর করেনি।

সাতকানিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ ইয়াসির আরাফাত জানান, এ ঘটনায় একটি মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম