তিতাস গ্যাসের ডিজিএম আতিয়া বিলকিসের বিরুদ্ধে অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
তিতাস গ্যাস ট্রান্সমিশন এন্ড ডিস্ট্রিবিউশন পিএলসি’র ডিজিএম কোম্পানি অ্যাফেয়ার্স সৈয়দা আতিয়া বিলকিস (মিতু) কোড নং-০০৭৫৬ এর বিরুদ্ধে অর্থ-আত্মসাৎসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ইতোপূর্বে নানা অনিয়ম দুর্নীতির বিষয়ে পেট্রোবাংলায় অভিযোগের প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি হয়।কিন্ত তা আলোর মুখ দেখেনি। তার বিরুদ্ধে কথা বলতে অনেকেই ভয়ে মুখ খুলতে চায় না। দীর্ঘদিন একই কর্মস্থলে থেকে তিনি দাপটের সাথে অপকর্ম করে আসছেন।নিয়মিত অফিসে না আসা, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসর থেকেও রাতারাতি আওয়ামী রূপ পাল্টিয়ে বিএনপি বনে যাওয়া এই কর্মকর্তার অত্যাচারে জর্জরিত তিতাস গ্যাসের কর্মকর্তারা।বিভিন্ন সময়ে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের দোহাই দিয়ে অনিয়ম দুর্নীতির সাথে সম্পৃক্ত হয়েছেন, বাগিয়ে নিয়েছেন ৪টি পদোন্নতি ও তিনটি বৈদেশিক প্রশিক্ষণ। প্রায় দিনই দুপুরে অফিসে আসলেও তিনি দাপ্তরিক কাজ করতেন না।সোস্যাল মিডিয়ায় আবির তালুকদার নামে ফেক আইডি ব্যাবহার করে কোম্পানীর স্বার্থ বিরোধী কাজ করেন। শফিউল্লাহ ভূইয়া নামে একজন চাকরিচ্যুত কর্মচারীকে দিয়ে ফেসবুকে বর্তমান এমডিকে নিয়ে টাকার জন্য অভিযান চালায় বলে কুৎসা রটায়।গত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর কমিশনার মোজাম্মেল হক, ও পুলিশের আইজিপি জাবেদ পাটোয়ারী কে দিয়ে তিতাসের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোস্তফা কামাল কে চাপ প্রয়োগ করে তদবির করে ডিজিএম পদে পদোন্নতি লাভ করেন। তিতাস গ্যাসের ডিজিএম হয়ে বেপরো হয়ে ওঠেন আতিয়া। সেই সময় তিনি আওয়ামী লীগ সমর্থিত তিতাস গ্যাস কর্মকর্তাদের অ্যাসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি পদ বাগিয়ে নেন। দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তা মোজাম্মেল হক এর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে সৎ, দক্ষ,কর্মঠ ও নিবেদিত প্রাণ তিতাস গ্যাসের অফিসারদের বিরুদ্ধে মিথ্যা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন অভিযোগ দিয়ে হয়রানি করেন। তিতাসের সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন খানের নামে অফিসের আশেপাশে ও পেট্রোবাংলায় পোস্টার সাঁটিয়ে হয়রানি ও মানহানি করেন। আতিয়ার ছেলে ও ছেলের স্ত্রী কানাডা গমন কালে আর্থিক সংকট দেখিয়ে তিতাসের আঞ্চলিক অফিস প্রধানদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেন।
তিনি কমন সার্ভিস বিভাগের ডিজিএম থাকাকালে মিরপুরে তিতাসের অফিস ভাড়া নেওয়ার কে কেন্দ্র করে সংশ্লিষ্ট বাড়িওয়ালার নিকট হতে ১০ লক্ষ টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলেও শোনা যায়। এবং সেখান থেকে নিয়মিত মাসোহারা গ্রহণ করতেন। ভগবতী ব্যানার্জি রোডের অফিসে থাকাকালে সর্বশেষ এক বছরের জন্য বাড়ি ভাড়ার চুক্তি নবায়ন কালে এক মাসের ভাড়া সমপরিমাণ ৬ লক্ষ টাকা বাড়ির মালিকের নিকট জোরপূর্বক হাতিয়ে নেন। তিতাসের কুড়িল অফিসে জাকির কমপ্লেক্সের মালিক জাকির হোসেন কে ৮ লক্ষ টাকা দিতে বাধ্য করেন। চাকুরী জীবনে নিজের স্বার্থ ছাড়া কোম্পানির স্বার্থে কোন কাজ করেনি। তিনি বিগত সরকারের আমলে আওয়ামী লীগ সমর্থিত অফিসার্স এসোসিয়েশনের সহ-সভাপতি পদে থেকে সুবিধা নিয়েছেন। তিতাস গ্যাস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন রেজিঃ নং- ঢ ০১৭২০/৮৫ এর ২০২২ সালে অভিষেক ও পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রকাশিত স্মরণিকায় সম্পাদক হিসেবে প্রদত্ত বিজ্ঞাপনে কোটি কোটি হাতিয়ে নেন।আবার রাজনৈতিক পদ পরিবর্তন এর পর সুকৌশলে তিতাসের বিএনপিপন্থী সিবিএর সাথে মিশে জাতীয়তাবাদী ঘরানার কর্মকর্তা বনে গেছেন। তিতাস গ্যাসের বিএনপি কর্মকর্তা হিসেবে পরিচিত প্রকৌশলী মোঃ হেলাল উদ্দিন তালুকদারের সাথে একত্রিত হয়ে প্রায় ১০০ জন কর্মকর্তা কর্মচারীর বদলি বাণিজ্য সহ ১০/১৫ বছর আগে চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাকরিতে পুনর্বহাল করার প্রতিশ্রুতি দিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমান অন্তবর্তী কালীন সরকার ক্ষমতায় আসার পর তিনি তিতাসে ভয়ার্ত পরিবেশের সৃষ্টি করে চলেছেন। আতিয়া বিলকিসের ব্যক্তি জীবন নানা কলঙ্কে ভরপুর। তিনি একজন পরকীয়া আসক্ত নারী বলেও জানান তিতাস গ্যাসের চাকরিচ্যুত কর্মচারী নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সিবিএ নেতা।বর্তমান পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে নিজের আওয়ামী চরিত্র বদল করে রাতারাতি বিএনপি বনে যাওয়া আতিয়া বিলকিস মিতুর দাপটে তটস্থ সকলেই।সাধারণ কর্মকর্তা কর্মচারীরা আতিয়া আতঙ্কে আতঙ্কিত হয়ে দিন পার করছেন। তারা এই ধরনের অরাজক পরিস্থিতি থেকে রেহাই পেতে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সকলের সদয় হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা।

ঢাকার সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়া

স্টাফ রিপোর্টার॥
ঢাকার আটটি সাব-রেজিস্ট্রার অফিস দুর্নীতি ও অনিয়মের আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ঢাকা সদর, গুলশান, তেজগাঁও, মোহাম্মদপুর, সূত্রাপুর, উত্তরা, বাড্ডা ও খিলগাঁও সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে ঘুষ ছাড়া কাজ হয় না। জমির নিবন্ধন, নামজারি, জাল দলিলে জমি দখলসহ নানা ঘটনায় অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। জমির দলিল আটকে রেখে ভুক্তভোগীদের চাপের মুখে ঘুষ দাবি সাব-রেজিস্ট্রার, উম্মেদার, পিওন ও নকলনবিশদের নিয়মিত আচরণে পরিণত হয়েছে। ঘুষ আদায়ের কৌশল হিসেবে সাব-রেজিস্ট্রারের রুটিনমাফিক কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন দিয়েও করানো হচ্ছে। এই সুযোগে নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওন কোটি কোটি টাকার মলিক হচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪ মানছেন না সাব-রেজিস্ট্রাররাও। তারা নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী নিজেদের কাজ নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওনদের দিয়ে করাচ্ছেন। দলিল চেক করার কাজ সাব-রেজিস্ট্রারদের করার নিয়ম থাকলেও তা মানছেন না তারা। অনুসন্ধানে ও সরেজমিন এসব তথ্য উঠে এসেছে।
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের নিবন্ধন ম্যানুয়াল-২০১৪-এর অধ্যায়-২৬-এ উল্লেখ আছে যে, সহকারীগণ কর্তৃক দলিল পরীক্ষাকরণ কাক্সিক্ষত নয়, এই কাজটি অবশ্যই স্বয়ং নিবন্ধনকারী কর্মকর্তা কর্তৃক সম্পাদিত হবে।
সম্প্রতি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এই দুর্নীতি বন্ধ করার জন্য গণশুনানির আয়োজন করেছে। শুনানিও চলছে। এতে ভুক্তভোগীরা তুলে ধরেছেন তাদের নানা সমস্যার কথা। বলেছেন সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের দুর্নীতি ও অনিয়মের চিত্র। তারা বলেন, ‘আমরা আমজনতা। আমরা কোনো কাজের জন্য ভূমি রেজিস্ট্রি অফিসে গেলে হয়রানির শিকার হই। মোটা অঙ্কের ঘুষ ছাড়া কাজ হবে না বলে কর্মকর্তা-কর্মচারীরা প্রকাশ্যে জানিয়ে দেন। আমরা তাদের কাছে জিম্মি।’ ভুক্তভোগী জনগণের দাবি, নামজারি, খারিজ, জমির শ্রেণী পরিবর্তনসহ নানা কাজে জনগণের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিয়ে দুর্নীতি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছেন ভূমি অফিসের সাব-রেজিস্ট্রারসহ কর্মচারীরা।
সরেজমিন গিয়ে রোববার দেখা গেছে, গুলশান সাব-রেজিস্ট্রার অফিসের মনির হোসেন ও মঞ্জু মোল্লা রেজিস্ট্রি দলিল চেক করছেন। তিনি দলিল মালিককে জিজ্ঞাসা করছেন আপনার তথ্য-প্রমাণ ঠিক নেই। অথচ নিবন্ধন ম্যানুয়াল অনুযায়ী, দলিল চেক করার কাজ করার দায়িত্ব রয়েছে গুলশান সাব-রেজিস্ট্রারের।কিন্তু এই মঞ্জু মোল্লা অনেক ক্ষমতাধর রাজধানীর যাত্রাবাড়ী থানা এলাকায় রয়েছ তার একাধিক বাড়ী, এছাড়াও ঢাকার তেজগাঁও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনে অপর সাতটি সাব রেজিস্ট্রার অফিসের দলিলও চেক করা হচ্ছে নকলনবিশ, উম্মেদার ও পিওনদের দিয়ে। নিয়ম অনুযায়ী, নকলনবিশগণ অফিসের অন্যান্য কাজ করবেন। সাব-রেজিস্ট্রার দলিল চেক করার পর নকলনবিশগণ দলিল ভলিউমে লিপিবদ্ধ করবেন।
এ বিষয়ে গুলশানের সাব-রেজিস্ট্রার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি নিজেও দলিল চেক করি। নকলনবিশ দিয়ে বাজারমূল্য চেক করাই। আমরা তিন-চার জন মিলে চার-পাঁচ বার দলিল চেক করি। যাতে কোন ভুল না থাকে।মঞ্জুর মোল্লাও দলিল চেক করেন বলেও তিনি জানান। ঘুষ গ্রহণের বিষয়টি অস্বীকার করেন তিনি।
রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মনির হোসেন মঞ্জু মোল্লাসহ কয়েকজন নকলনবিশ ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় নেতাদের সাথে যোগসাজশে দলিল রেজিস্ট্রি ভুক্তভোগীদের জিম্মি করে ভয়-ভীতি দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেন। নকলনবীশগণ দলিল রেজিস্ট্রি ভুক্তভোগীদের সঙ্গে স্থানীয় নেতাদের মীমাংসার কথা বলেও অর্থ আদায় করে বলেও অভিযোগ রয়েছে। ওমেদার মনির হোসেন মঞ্জু মোল্লা ক্ষমতাসীন দলের পরিচয় দিয়ে এ কর্মকা- চালান অভিযোগ রয়েছে। আবার কখানও দুদক ও প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ে তার ভাই, আত্মীয়-স্বজন আছে বলে দাবি করে প্রভাব বিস্তার করে চলছেন। এছাড়াও রেজিস্ট্রেশন কমপ্লেক্স ভবনের প্রধান সহকারী সালাউদ্দিন, কম্পিউটার অপারেটর মতিউর রহমানও ক্ষমতার প্রভাব চালিয়ে যাচ্ছেন। তারা বর্তমান আইনমন্ত্রীর লোক বলে পরিচয় দিচ্ছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
এই বিষয়ে মঞ্জুর মোল্লার মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। তার সাথে নাকি অনেক সাংবাদিকের ভাল সম্পর্ক।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম