প্রবাসী স্বামীকে তালাক দিয়ে হয়রানির শিকার আয়শা

নিজস্ব প্রতিবেদক: সিঙ্গাপুর প্রবাসী স্বামী ও তার পরিবারের শারীরিক মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি যৌন হয়রানি থেকে বাঁচতে স্বামীকে তালাক প্রদান করেও বিভিন্ন ভাবে হয়রানির শিকার হওয়ার অভিযোগ করেছেন এক ভুক্তভুগী নারী।

রাজধানীর মৌচাকে সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী নারী আয়েশা আক্তার জানান, বরিশালের চরমোনাই বুখাইনগর এলাকার আব্দুল জলিল হাওলাদারের প্রবাসী পুত্র আব্দুস সালাম এর সাথে ২০১৩ সালে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন এরপর তিনি সিঙ্গাপুরে ফিরে যান এর মাঝে স্বামী-স্ত্রী একসাথে সংসার করার বয়স মাত্র ২২ দিন। প্রবাসে যাওয়ার আগে আব্দুস সালাম রাজধানীর ভাটারা এলাকায় তার ফুফুর বাসায় তার জিম্মায় স্ত্রী আয়েশাকে রেখে যান। প্রবাসে যাওয়ার আগে স্ত্রী আয়েশার কাছ থেকে বিভিন্ন ছলচাতুরি মাধ্যমে তিনটি ব্ল্যাক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেন স্বামী আব্দুস সালাম। বিদেশে চলে যাওয়ার পর থেকে স্ত্রী আয়েশার সাথে খারাপ ব্যবহার করতে শুরু করেন এবং স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর ব্যবহার করে তাকে বিভিন্ন ক্ষতি সাধনের জন্য হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

অপরদিকে, স্বামীর ফুফুর পরিবারের থেকে বিভিন্ন রকম মানসিক নির্যাতন সহ স্বামীর ছোট ছোট রিয়াজ, ফুফাতো ভাই রুবেল এমনকি স্বামীর ফুফার অসামাজিক প্রস্তাব ও যৌন হয়রানির চেষ্টার অভিযোগও তুলেছেন আয়েশা আক্তার নামের ভুক্তভোগী ওই নারী।

স্বামীর আপন ছোট ভাই, ফুফাতো ভাই, ফুফার বিভিন্ন অসামাজিক ও অশ্লীল প্রস্তাবে দিশেহারা হয়ে স্বামীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। পরবর্তীতে নিজ পরিবারে ফিরে এসে আইনি প্রক্রিয়ায় যথাযথভাবে স্বামীকে তালাক দেন আয়েশা আক্তার। তালাক দেয়ার পর থেকে সামাজিক ও মানসিক ভাবে এক অস্থির নির্যাতনের মুখোমুখি হন তিনি। স্বামীর ছোট ভাই রিয়াজ রাজধানীর ভাটারা থানায় চুরির অপবাদ দিয়ে তার বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ করেন পাশাপাশি স্বামীর ছোট ভাই রিয়াজ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি ব্যবহার করে চোর সাব্যস্ত করে ধরিয়ে দেয়ার পোস্ট দেন। যে কারনে কারণে সামাজিক ও পারিবারিক ভাবে হেয় করা ও চরম সন্মানহানীর শিকার হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েন আয়েশা আক্তার।

এছাড়াও তার স্বামীর ছোট ভাই রিয়াজ রেপিড একশন ব্যাটালিয়ন র্যাবের মাধ্যমে তাকে ও তার পরিবারকে বিভিন্ন ক্ষতিসাধন করার হুমকি-ধামকি প্রদান করেন।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার সাংবাদিকদের আরো জানান, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে চোর সাব্যস্ত করে পোস্ট দিয়ে তার ও তার পরিবারের মান সম্মান চরম ভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছে উপায়ান্তর না পেয়ে তিনি গণমাধ্যমের নিকট সাহায্য চাইতে বাধ্য হন।

সোশ্যাল মাধ্যমে তাকে হেয় প্রতিপন্ন করার অপরাধে রাজধানীর বংশাল থানায় মামলা করতে গেলে ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা থানায় হয় না বলে পুলিশের পক্ষ থেকে ফিরিয়ে দেওয়া হয় আয়েশা আক্তার কে। এ বিষয়ে আয়েশা আক্তার এর আইনজীবী দিলাম দুই মেয়র অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান জানান, যেহেতু ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্টের মামলা থানায় দায়ের করার সুযোগ নেই তাই আমরা আদালতের মাধ্যমে এই বিষয়ে বিচার চাইব।

এছাড়াও স্বামীর কাছ থেকে ডিভোর্স পরবর্তী অধিকার প্রাপ্তির জন্য আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলে জানান আয়েশা আক্তার।
সংবাদ সম্মেলনে আয়শা আক্তারের এসব অভিযোগের সততার বিষয়ে তার স্বামীর ছোট ভাই রিয়াজের মুঠোফোনে জানতে একাধিকবার চেষ্টা করে হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

মানসিক ও সামাজিকভাবে চরম হেয় প্রতিপন্ন হওয়া ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার প্রশাসন ও সাংবাদিকদের কাছে ন্যায্য সহায়তা পাওয়ার জন্য সাহায্যের আকুল আবেদন জানিয়েছেন।

সাবেক আইজিপির বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের ‘রেড নোটিশ’ জারি

স্টাফ রিপোর্টার:

আওয়ামী সরকার আমলের বহুল আলোচিত ও সমালোচিত পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারি করেছে ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল পুলিশ অর্গানাইজেশন (ইন্টারপোল)।

গত ১০ এপ্রিল এই রেড নোটিশ জারি করা হয়। ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে দেশ থেকে পালানো সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ আরও ১১ জনের বিষয়টি ইন্টারপোলের আইনি পর্যালোচনাধীন।

বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) ছাড়াও পুলিশ সদর দপ্তরের সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছে।

পুলিশ সদর দপ্তর সূত্র জানায়, আদালতের নির্দেশনায় প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ) অথবা তদন্ত সংস্থার অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ সদর দপ্তরের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি) শাখা ইন্টারপোলে রেড নোটিশ জারির আবেদন করে থাকে।

পুলিশ সদর দপ্তরের ডিআইজি পদ মর্যাদার এক কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে ঢাকার একটি আদালত সাবেক আইজিপি বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির জন্য ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয়। এরপর গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করতে ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করা হয়। বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি বা অপরাধের অভিযোগের কারণে দ্রুত পদক্ষেপ হিসেবে গত ১০ এপ্রিল তার বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারি করে ইন্টারপোল।

বেনজীরের অবস্থান সম্পর্কে জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে বলেন, বেনজীর স্বপরিবারে পলাতক। কোন দেশে আছেন তা এখনো আমরা নিশ্চিত হতে পারিনি। তবে রেড নোটিশ যেহেতু জারি হয়েছে, আশা করি খুব শিগগিরই তার অবস্থান ও গ্রেপ্তার করে দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে।

ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বেনজীরের বিরুদ্ধে রেড নোটিশটি এখনো ইন্টারপোলের ওয়েবসাইটে দেওয়া হয়নি। তার অবস্থান শনাক্ত করার পর সেটি ওয়েবসাইটে দেওয়া হবে। তবে রেড নোটিশ জারির বিষয়টি বাংলাদেশ পুলিশকে ই-মেইলের মাধ্যমে নিশ্চিত করা হয়েছে ইন্টারপোলের পক্ষ থেকে। এছাড়া সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আরও ১১ জনের বিরুদ্ধে তিন দফায় ইন্টারপোলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। চিঠিপত্র আদান-প্রদান ছাড়াও একটি ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধেও রেড নোটিশ জারির বিষয়টি পর্যালোচনা করছে ইন্টারপোল।

ছাত্র-জনতার আন্দোলনে পদত্যাগ ও দেশ থেকে পালানো প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে ‘রেড নোটিশ’ জারির জন্য আন্তর্জাতিক পুলিশ সংস্থা ইন্টারপোলের কাছে পৃথক তিন ধাপে আবেদন করেছে বাংলাদেশ পুলিশের ন্যাশনাল সেন্ট্রাল ব্যুরো (এনসিবি)।

যাদের বিরুদ্ধে রেড নোটিশ জারির আবেদন পর্যালোচনা করছে ইন্টারপোল

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সাবেক মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, সাবেক বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাবেক শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) সাবেক মেয়র শেখ ফজলে নূর তাপস, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা বিষয়ক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, সাবেক বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ, সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত এবং সাবেক আইজিপি বেনজীর আহমেদ।

এখানে উল্লেখ্য যে, ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে আওয়ামী লীগ সরকারের আমলেই বেনজীর আহমেদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধান শুরু করেছিল দুদক। অনুসন্ধান চলাকালে গত বছরের ৪ মে সপরিবারে দেশ ছাড়েন তিনি। ২০২০ সালের এপ্রিল থেকে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আইজিপির দায়িত্ব পালন করা বেনজীর ২০১৫ থেকে ২০২০ সালের এপ্রিল পর্যন্ত র‌্যাবের মহাপরিচালক ছিলেন। তার বিরুদ্ধে বিচার বহির্ভূত হত্যা, গুম, খুন, দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগের তদন্ত চলছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের