শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার সাবেক ওসি ও উপ পরিদর্শক ও যুবলীগনেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে বিএনপি নেতার মামলা

জেলা প্রতিনিধিঃ

শরীয়তপুরের নড়িয়া থানার সাবেক ওসি, উপ পরিদর্শক ও যুবলীগনেতাসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে নির্যাতন ও চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেছেন এক বিএনপি নেতা। ২০২১ সালের ঘটনাকে কারণ দেখিয়ে তিনি এই চাঁদাবাজি ও নির্যাতনের মামলা করেন। এই থানার ২ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করা বাদী, নড়িয়া উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক মতিউর রহমান সাগর ।

রবিবার (২২ ডিসেম্বর) দুপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নড়িয়া আমলী আদালতের বিচারক মোঃ সাকিব হোসেনের আদালতে মামলাটি দায়ের করেন এই বিএনপি নেতা। মামলাটি আমলে নিয়ে গোপালগঞ্জ পুলিশ বুরো অফ ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, নড়িয়ার, পেস্কার মো: মামুন মামলার এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার নথির বরাত দিয়ে তিনি জানান, মতিউর রহমান সাগর নামে নড়িয়া উপজেলা বিএনপির একজন, ৪ জনের নামে মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় আসামীরা হলেন, নড়িয়া থানা পুলিশের সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার অভনী শংকর কর (৫৫), থানার সাবেক উপ-পরিদর্শক (এসআই) হায়দার আলী (৪০), উপজেলার সুরেশ্বর গ্রামের মৃতঃ হেলার খানের ছেলে যুবলীগ নেতা সুজন খান (৪৫), একই গ্রামের মৃতঃ জাফর খানের ছেলে আঃলীগ নেতা ফারুক খান (৬০)।

মামলার নথি ও ভুক্তভোগী সূত্রে জানা যায়, মতিউর রহমান সাগর গত ২০২১ সালে ঘড়িষার ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে বি.এন.পি সমর্থিত একজন চেয়ারম্যান প্রার্থী ছিলেন। এর আগের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও ধানের শীষ প্রতিকে প্রতিদন্ধিতা করেছিলেন। বিএনপির কর্মী হওয়ায় স্থানীয় যুবলীগ নেতা সুজন ও আওয়ামীলীগ নেতা ফারুক এই নির্বাচন না করার জন্য নানানভাবে ভাবে হয়রানী ও ভয়ভীতি দেখাতেন ।

বাদী ব্যবসায়ী হওয়ার কারনে নগদ টাকার প্রয়োজন হওয়ায় তাঁর ছেলে জাহিদ তার আত্নীয়ের কাছ থেকে (তিন লক্ষ) টাকা নিয়ে ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ সুরেশ্বর হয়ে নিজ বাড়িতে যাওয়ার পথে, যুবলীগ নেতা সুজন ও ফারুক খান সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজন মিলে জাহিদ কে টাকা সহ একটি ঘরে জোরপূর্বক আটকিয়ে রাখে।

পরবর্তীতে তিনি খবর পেয়ে ৯৯৯ এর সহযোগিতা চাইলে নড়িয়া থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তার ছেলে মিজানুর রহমান জাহিদকে উদ্ধার করে। এই সময় অভিযুক্তদের আটক করে নড়িয়া থানায় নিয়ে আসেন। কিন্তু পরবর্তীতে অভিযুক্তরা ক্ষমতাসীন দলের হওয়ায় তাদের ছেরে দেয় নড়িয়া থানা পুলিশ ।

এই ঘটনার দিন নড়িয়া উপজেলার সুরেশ্বর এলাকার জাফর আলী খানের ছেলে মোহাম্মদ ফারুক খান, মতিউর রহমান ও তার ছেলে জাহিদ বিরুদ্ধে একটি মানব পাচার মামলা দায়ের করেন। ঐ মানবপাচার মামলায় মতিউরের ছেলে জাহিদের কাছে ৩ লাখ টাকা জ্বব্দ করে পুলিশ। পরে মামলায় ১ লাখ টাকা জব্দ দেখায় পুলিশ। ৫ লক্ষ টাকা দিলে মামলার শেষ হয়ে যাবে মতিউরকে এমন প্রস্তাব দেয় ওসি অবনী শংকর কর। পরে মতিউর ওসি অবনী ও উপপরিদর্শক হায়দার কে পর্যায়ক্রমে ৫ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। পাশাপাশি মতিউর ইউপি নির্বাচনের প্রার্থী হওয়ায় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত মোট ২৬ দিন বিশ হাজার টাকা করে ৫ লক্ষ বিশ হাজার টাকা নেন।

তার পরেও এ ঘটনায় আসামী ২ পুলিশ কর্মকর্তার বাদির যোগসাজোসে ঘটনা সাজিয়ে ২০১৩ সালের বৈদেশিক কর্মসংস্থান ও অভিবাসন আইনে চার্জশীট প্রদান করেন। পরে মতিউর বাদীদের নগদ ২লাখ টাকায় আপোষ করেন।

ঘটনার ৪ বছর পর মামলা দায়েরের কারণ সম্পর্কে জানতে চাইলে মামলার বাদী মতিউর রহমান সাগর বলেন, গত ১৭ বছর দেশে আইনের শাসন ছিল না। অবৈধভাবে সরকারের দায়িত্বে ছিল আওয়ামী লীগ। ওই সময় আওয়ামী লীগ ওসির বিরুদ্ধে মামলা তো দূরের কথা তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই তারা আমাকে প্রাণে মেরে ফেলতেন। তাই সেই সময় মামলা করতে পারিনি। উল্টো টাকা দিয়ে মামলার আপোষ করেছি। এখন দেশ স্বাধীন হয়েছে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এ জন্য আমি মামলা দায়ের করেছি।

সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত হলে আমি ন্যায়বিচার পাব। আর আমার ছেলে মালয়েশিয়াতে একটি ইউনিভার্সিটিতে পড়াশোনা করত। ওই মামলার কারণে আমার ছেলের ভবিষ্যৎ নষ্ট হয়েছে। সে পরে আর মালয়েশিয়ার পড়াশোনা সম্পূর্ণ করতে পারেনি । আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। আমি চাই আমারও আমার ছেলের সাথে যে অমানবিক ঘটনা ঘটেছে তার বিচার পাবো।

এই বিষয়ে বক্তব্য নেয়ার জন্য বিকাল থেকে রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওসি অবনী শঙ্কর করকে ফোন দিলে তিনি ফোন ধরেননি। খুদেবার্তা পাঠিয়েও তার কোন সাড়া পাওয়া যায়নি। তাই তার বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।

এই বিষয়ে উপপরিদর্শক হায়দার আলী মুঠোফোনে রাত ৮ টা ৫৫ মিনিটে বলেন, আমার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি যে অভিযোগ আনা হয়েছে এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এই ধরনের কোন কর্মকান্ডের সাথে আমি জড়িত নই। মূলত মতিউর রহমান সাগরে বিরুদ্ধে একটি মানব পাচারের মামলা হয়েছিল। আইনানুগ প্রক্রিয়া মেনেই ওই মানব পাচার মামলায় তার বিরুদ্ধে চার্জসীট প্রদান করা হয়েছিল।

এই বিষয়ে জানতে চাইলে শরীয়তপুর জেলা পুলিশ সুপার মো: নজরুল ইসলাম বলেন, অফিসিয়ালি দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলার বিষয়ে এখনো কোনো তথ্য পাইনি। আদালতের নির্দেশ পাওয়ার সাথে সাথেই, আমরা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখব।

গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ভেষজ গুণসম্পন্ন কাঁটা মান্দা গাছ

মোঃমিজানুর রহমান বাহার ভালুকা উপজেলা প্রতিনিধি :

গ্রাম বাংলার কৃষকরা জমির আইলে সীমানা খুঁটি এবং বাড়ির বেড়ার জন্য যে গাছ লাগিয়ে থাকতো তার নাম পরিজাত/কাঁটা মান্দা। এক সময়ের অতি পরিচিত এই মান্দার গাছ এখন নতুন প্রজন্মের কাছে অচেনা ও অজানা।কোনরকম পরিচর্যা ছাড়াই এই গাছ দ্রুত বাড়ে । বসন্ত এলে প্রাণ খুলে দেখিয়ে দেয় লাল টুকটুকে ফুলের বাহার ।

কিন্তু মেহগনি, শিশুসহ আগ্রাসী প্রজাতির গাছের কারণে ও যত্নের অভাবে ভেষজগুণ সম্পন্ন এই পরিজাত/ কাঁটা মান্দা গাছ ধীরে ধীরে গ্রাম বাংলা থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া ইটের ভাটায় কাঠের জোগান ও দিয়াশলাই তৈরিতে ব্যবহৃত হওয়ার কারণে পরিণত বয়সের মান্দার দেখা ভাগ্যের ব্যাপার।

কাঁটা মান্দার হল বৃক্ষ জাতীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ বিশেষ। এর (বৈজ্ঞানিক নাম: erythrina fusca)। এটি Fabaceae পরিবারের সদস্য। ইরিথ্রিনা গণভুক্ত উদ্ভিদ সমূহ একত্রে মান্দার বা মাদার নামে পরিচিত। বাংলাদেশে বেশ কয়েক প্রজাতির মান্দার গাছ দেখতে পাওয়া যায়। কাঁটা মান্দার গাছ পানিয়া মান্দার নামেও পরিচিত।
শীতের শেষে যখন বসন্তের হাওয়া লাগে, তখনই নানা ফুলের সঙ্গে গ্রাম বাংলায় মান্দার ফুল দেখা যায়। এটি বুনো গাছ। তাই যত্ন করার প্রয়োজন হয় না। জলের কাছের ঝোপঝাড়ে বেড়ে ওঠে। কেউ কেটে না ফেললে অনেক বছর বাঁচে। আবার ডাল কেটে লাগালেও গাছ হয়। বেড়া দিতে, জ্বালানি কাঠ হিসেবে এ গাছের ডাল ব্যবহার করা হয়।

কাঁটা মান্দারগাছের কোনোটির কাণ্ডের গায়ে ঘন ও প্রচুর কাঁটা থাকে, আবার কোনোটির কাণ্ডে কাঁটার পরিমাণ কম। ফাল্গুন মাসে গায়ের গো-শালিক পাখি বাসা তৈরির জন্য এ গাছটিকে বেছে নেয়। এই পরিজাত গাছের বহু ভেষজ গুণ রয়েছে। যেমন-রক্ত আমাশয় :পারিজাত গাছের ছালের রস এক বা দুই চা চামচ একটু গরম করে দুই থেকে চার চা চামচ দুধ মিশিয়ে দুই থেকে তিন খেলে রক্তামাশায় সেরে যাবে ।

বাঘি হলে- কু চকির এদিক বা ওদিক যে দিকেই হোক আর যে কারণেই হোক পরিজাত বা মান্দার পাতা বেটে অল্প করে ওখানে লাগাতে হবে। দুদিনের মধ্যে ওর টাটানি ও ব্যথাটাও চলে যাবে ।

স্তনে দুধের অভাব :পারিজাত বা মান্দার পাতার রস ‍দুই চা চামচ আর ঝুনো নারকেলের দুধ চার থেকে পাচ চা চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে কয়েকদিন সকালের দিকে খেলে স্তনে দুধের অভাব থাকবে না ।

মাসিক স্রাবের সমস্যায় :মাসিক স্রাবের সমস্যা হলে পারিজাত পাতার রস সেবন করলে উপকার পাওয়া যায় ।

জ্বর হলে :পারিজাত গাছের ছাল রস অল্প গরম করে তার সাথে মধু মিশিয়ে সকাল বিকেল খেলে জ্বর খুব ভালো হয়ে যায় ।

কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রয়োজনীয় রক্ষণাবেক্ষণ, গাছপালা কাটার মহোৎসব, বন জঙ্গল কেটে সাবাড় করা ও নতুন করে চারা রোপনের উদ্যোগের অভাবে এ ভেষজ গুনসম্পন্ন উদ্ভিদটি আজ বিলুপ্তির পথে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের