ডিবির ক্যাশিয়ার পরিচয়ে চাঁদাবাজি; নেপথ্যে ❝সোর্স বেলাল❞

চট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

পুলিশের ক্যাশিয়ার পরিচয়ে দাপিয়ে বেড়ানো এক সোর্সের অত্যাচারে সাধারণ জনগণ আজ অসহায় হয়ে পড়ছে। চট্টগ্রামজুড়ে রয়েছে তার দাপট। কথায় কথায় দেখান পুলিশের ভয় বলছি, চট্টগ্রামে নগর গোয়েন্দা পুলিশের ক্যাশিয়ার পরিচয় দেওয়া বিল্লাল হোসেন ওরফে সোর্স বেলালের কথা। ষশোর জেলার জিকরগাছা থানার রাজাপুর গ্রামের মৃত খোরশেদ আলমের ছেলে এই বেলাল। থাকেন চট্টগ্রামের ডবলমুরিং থানার পান্নাওয়ালা পাড়া হাড্ডি কোম্পানী এলাকার হাজী কাশেমের বাড়ীতে ।

ডিবি পুলিশের নামে চাঁদাবাজি বন্দর-পতেঙ্গায়!  এই শিরোনামে ১৪ এপ্রিল ২০২২ সালে সিটিজি নিউজ ডটকমে এই বেলালকে নিয়ে  সংবাদ প্রকাশিত হয়। তবুও দমে যাননি বেলাল, বন্ধ করেনি চাদাঁবাজিসহ নানা অপকর্ম।

প্রধান ক্যাশিয়ার পরিচয়ে বেলাল হোসেন প্রকাশ বেলালের রয়েছে চাঁদা আদায় করার জন্য ৫ সদস্যের একটি ভয়ানক সিন্ডিকেট । যাদের নাম এরশাদ মোল্লা, জাহাঙ্গির, নিজাম উদ্দিন ও নুর নবী তার ওই সিন্ডিকেটের সদস্য।

যদিও এদিকে নগর গোয়েন্দা পুলিশ বলছে, ডিবি পুলিশের কোন ক্যাশিয়ার নেই, যদি কেউ এমন পরিচয় দেয় তাহলে তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।

অনুসন্ধনে জানা যায়, মাদকের স্পট, জুয়ার আসর এমনকি পতিতালয়ের থেকে নিয়মিত মাসিকহারে মাসোহারা নিয়ে থাকে।

স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, গত একমাস ধরে এরশাদ মোল্লা প্রকাশ এরশাদ ও নুর নবী ‘ডিবি পুলিশের ক্যাশিয়ার’ পরিচয় দিয়ে বন্দর-ইপিজেড এলাকার ব্যবসায়ীদেরকে মুঠোফোনে কল দিয়ে চাঁদা দাবি করছেন। মাসিক চুক্তিতে ব্যবসা পরিচালনা করতে এসব চাঁদা দাবি করছেন অভিযুক্তরা। শুধু তা নয়, চুক্তিতে না আসলে তাদের ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার হুমকিও দিচ্ছেন বেলাল, এরশাদ ও নুর নবী।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক ব্যবসায়ী বলেন, এরশাদ ও নুর নবী ডিবি বন্দর (পোর্ট) জোনের ‘ক্যাশিয়ার’ পরিচয় দিয়ে মাসিক চুক্তিতে চাঁদা দিয়ে ব্যবসা পরিচালনার জন্য বিভিন্ন ব্যবসায়িকে ফোন দিয়ে মোবাইল নাম্বার পাঠাচ্ছেন। কোথাও কোথাও তাদের মূল ক্যাশিয়ার পরিচয়ে নিজাম উদ্দিন নামে আরেক ব্যক্তিকে নিয়ে আসছেন। তাদের সাথে চুক্তিতে না এলে ব্যবসা বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও হুমকি দিচ্ছেন তারা।এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের গুরু হিসেবে কাজ করছেন বেলাল ।

জানা গেছে,  ১২ এপ্রিল মঙ্গলবার বিকালে নগরীর পতেঙ্গা পূর্ব কাটগড় একতলা মসজিদ এলাকার স্ক্র্যাপ ব্যবসায়ী ফারুকের কাছ থেকে ডিবি পুলিশের নাম ভাঙিয়ে এরশাদ মোল্লা প্রকাশ এরশাদ অজ্ঞাত একজনকে সাথে নিয়ে ২০ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেন। ব্যবসায়ী ফারুক এসব টাকা ডিবির নামে ওই এলাকার কয়েকজন ব্যবসায়ী থেকে তুলে আনেন বলে জানায় একটি বিশ্বস্ত সূত্র।

জানা গেছে,  গোয়েন্দা পুলিশের পশ্চিম বিভাগের ক্যাশিয়ার পরিচয়ধারী এই বেলাল দীর্ঘদিন ধরে পুলিশের এ দুই বিভাগের (বন্দর ও পশ্চিমের) ক্যাশিয়ার বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণ করে আসছেন বলেও লোকমুখে প্রচার আছে। তবে অভিযোগ থাকলেও সব সময় ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যায় এই বেলাল।

যুগোপযোগী করেই ড্যাপ সংশোধন

বিশেষ প্রতিনিধি:

♦ সরকারি-বেসরকারি আবাসন, অপরিকল্পিত এলাকা, ব্লকভিত্তিক আবাসন, একত্রীভূত প্লটের ক্যাটাগরি ফারের সুবিধা পাবে ♦ ৬ কাঠার বেশি প্লটে দশমিক ২৫ ও ১০ কাঠার বেশি দশমিক ৫০ ফার প্রণোদনা পাবে ♦ চলতি মাসেই গেজেট

রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) প্রণীত বিশদ অঞ্চল পরিকল্পনা (ড্যাপ) যুগোপযোগী করে সংশোধন হচ্ছে। এ ড্যাপে বেশকিছু বিষয় সংশোধন করা হয়েছে। এর মধ্যে সরকারি-বেসরকারি আবাসন, অপরিকল্পিত এলাকা, ব্লকভিত্তিক আবাসন, একত্রীভূত প্লটের মালিকদের কিছুটা ফ্লোর এরিয়া রেশিও (ফার) সুবিধা বাড়ানো হয়েছে। এতে আগের চেয়ে ভবনের উচ্চতা বাড়ানোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এরই মধ্যে সংশোধিত ড্যাপের সারসংক্ষেপ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনুমোদন দিয়েছেন। চলতি মাসেই এটি গেজেট আকারে প্রকাশ করা হবে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয়সূত্র বলছেন, ড্যাপ গেজেট হওয়ার পর পেশাজীবী ও স্টেকহোল্ডাররা ফ্লোর এরিয়া রেশিওর বিষয়টি পর্যালোচনার জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন জানান। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২২ মার্চ গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদের সভাপতিত্বে একটি পর্যালোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভার সিদ্ধান্তের আলোকে ১৮ মে রাজউক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিয়ার সভাপতিত্বে ড্যাপ বাস্তবায়নসংক্রান্ত সভা অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০ জুলাই অনুমোদন দেন। এই সংশোধিত ড্যাপে ১১টি সংশোধনের জন্য প্রস্তাব করা হয়। সংশোধিত ড্যাপের প্রস্তাবে বলা হয়েছে, আগামী তিন বছরের জন্য সরকারি ও রাজউক অনুমোদিত বেসরকারি আবাসন প্রকল্পগুলোয় ভবন নির্মাণে আগ্রহী আবেদনকারীদের দশমিক ৫ ফার প্রণোদনা দেওয়া যেতে পারে। যৌক্তিকতা হিসেবে বলা হয়েছে, এসব আবাসিক এলাকা পরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে। একই সঙ্গে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার চেয়ে নাগরিক সুবিধা বেশি থাকায় প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অপরিকল্পিত এলাকা অর্থাৎ বাড্ডা, ডেমরা, খিলক্ষেত, উত্তরখান, দক্ষিণখান, রায়েরবাজার, সাভার, কেরানীগঞ্জে ফারের সুবিধা দশমিক ৫ বাড়ানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। একইভাবে ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে ১ থেকে ৬ বিঘা পর্যন্ত আয়তনের ব্লকে ২০ শতাংশ আর ১৫ বিঘার বেশি আয়তনের ব্লকে ৩০ শতাংশ প্রণোদনা পাবেন ভূমিমালিকরা। এতে আগের তুলনায় নতুন ভবনের উচ্চতা বা প্রশস্ততা বাড়বে। ব্লকভিত্তিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আরও কিছু বিষয় রাখা হয়েছে সংশোধিত ড্যাপে। যেমন ব্লকের মোট জমির ৪০ শতাংশ উন্মুক্ত স্থান (পার্ক, খেলার মাঠ, সবুজ ভূমি) হিসেবে সংরক্ষণ করতে হবে। সংরক্ষিত জমির কমপক্ষে ৫০ শতাংশ একত্রে থাকতে হবে। এ ছাড়া ব্লকের মোট আয়তনের ৮০ শতাংশ জমির ওপর সর্বোচ্চ ভূমি আচ্ছাদন হিসাব করতে হবে। একই সঙ্গে এলাকাভিত্তিক ডুয়েলিং ইউনিট (ফ্ল্যাট সংখ্যা) প্রদানসংক্রান্ত প্রস্তাবে ড্যাপ (২০২২-২০৩৫) অনুযায়ী একক বা যৌথ প্লটভিত্তিক আবাসনের ক্ষেত্রে প্রাপ্য ডুয়েলিং ইউনিটকে ১৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা যেতে পারে। এ ছাড়া ৬ কাঠার বেশি আয়তনের প্লটের ক্ষেত্রে দশমিক ২৫ ফার এবং ১০ কাঠার বেশি প্লটে দশমিক ৫০ ফার প্রণোদনা দেওয়ার প্রস্তাব রয়েছে। এ বিষয়ে ড্যাপের প্রকল্প পরিচালক মো. আশরাফুল ইসলাম বলেন, ড্যাপ গেজেট হওয়ার পরে ব্যবসায়ী প্রতিনিধি, পেশাজীবী সংগঠনসহ অংশীজনদের কাছ থেকে যে মতামত এসেছে সেই পরিপ্রেক্ষিতে গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রীর সভাপতিত্বে সভা হয়। সে সভার সারসংক্ষেপে প্রধানমন্ত্রী অনুমোদন দিয়েছেন। এই সংশোধিত ড্যাপে কোনো ব্যক্তিবিশেষকে প্রাধান্য দেওয়া হয়নি, সমগ্র ঢাকা শহরের ভিতরে একটা সাম্য আনার চেষ্টা করা হয়েছে। তিনি বলেন, আবাসিক এলাকায় রাস্তা ছেড়ে দিলেও স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে বুঝিয়ে দেওয়া হতো না। এখন সেটা কার্যকর হয়েছে। একই সঙ্গে ব্লকভিত্তিক আবাসনকে উৎসাহিত করা হয়েছে। ছোট ছোট প্লট থেকে যেন বড় প্লটে মানুষ যায়। আর বড় প্লটে গেলেই গ্রিন স্পেস তৈরি হবে। পরিবেশগত দিক বিবেচনায় নিয়ে ড্যাপটি সংশোধন করা হয়েছে। এই কর্মকর্তা আরও বলেন, প্রতি তিন বছর পর পর ড্যাপ রিভিউ করা হবে। আগামী রিভিউর সময় প্রেক্ষাপট ও পারিপার্শ্বিকতা বিবেচনা করে সংশোধন হবে। এ বিষয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত সচিব কাজী ওয়াসি উদ্দিন বলেন, ড্যাপ নিয়ে অংশীজনের সঙ্গে সভা করা হয়েছে। সে পরিপ্রেক্ষিতে ভবন নির্মাণে ফারের সুবিধা কিছুটা বাড়ানো হয়েছে। আর অন্যান্য ক্ষেত্রে কোনো পরিবর্তন নেই। সংশোধিত ড্যাপ পুরোটাই যুগোপযোগী। এখন এ ড্যাপ আইন মন্ত্রণালয়ে ভেটিং হয়ে চলে এসেছে। রাজউকের সঙ্গে সভা করে চূড়ান্ত করা হবে। আশা করি এ মাসের মধ্যেই গেজেট হয়ে যাবে। মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, ড্যাপ গেজেট হওয়ার আগে অনেক ব্যবসায়ী ভবন নির্মাণে কন্ট্রাক্ট সাইনিং করেছেন। তারা জানতেন না গেজেট হওয়ার পরে ফারের সুবিধা কমে যাবে। একই সঙ্গে গেজেট হওয়ার পরে তাদের নির্দিষ্ট সময়ও দেওয়া হয়নি। এসব কারণে ড্যাপ সংশোধন করা হয়েছে। প্রসঙ্গত, ১৯৯২ সালে সরকারের নেওয়া মহাপরিকল্পনা অনুযায়ী ১৯৯৫ সালে ঢাকা মহানগরী উন্নয়ন পরিকল্পনা (ডিএমডিপি) করা হয়। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৯৬ সালে ড্যাপ প্রণয়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়। ২০১০ সালের ২২ জুলাই গেজেট আকারে ড্যাপ প্রকাশ করে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়। এরপর ২০১৩ সালে আবার ড্যাপ রিভিউ কার্যক্রম শুরু হয়। সর্বশেষ ২০২২ সালে (২০২২-২০৩৫) ১৩ বছরের জন্য নতুন করে ড্যাপ গেজেট হয়।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন