শহীদ পরিবারের সম্মানের জন্য সংগ্রাম করছি : নাহিদ ইসলাম

শহীদ পরিবারের সম্মানের জন্য সংগ্রাম করছি : নাহিদ ইসলাম

ডেস্ক রিপোর্টঃ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম বলেছেন, আমরা সারা দেশে যাত্রা করছি এবং সব শহীদ পরিবারদের সঙ্গে বসছি। তাদের সবারই কমবেশি একই ধরনের সমস্যা। কিছু জায়গায় সমস্যাগুলো কম, সুযোগ-সুবিধাগুলো পৌঁছেছে বা খোঁজখবর নেওয়া হয়েছে। আমরা যখন সরকারে ছিলাম তখন আমরা তাদের নিয়ে বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার ক্ষেত্রে চাপ তৈরি করেছি।

তিনি বলেন, দেখা যাচ্ছে উদ্যোগগুলো মাঠ পর্যায়ে পৌঁছায়নি বা পৌঁছাতে দেরি করছে। সেখানে অনেক ধরনের ঝামেলা এখনো হয়। প্রশাসনের বিভিন্ন জায়গায় স্বৈরাচারের দোসররা আছে। শহীদ পরিবারগুলো যে সম্মান পাওয়ার কথা, সেটা নিয়ে আমরা বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ শুনি। রোববার (২০ জুলাই) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে চট্টগ্রামের নিউমার্কেট হোটেল সৈকতে জুলাই শহীদ পরিবারের সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে এসব কথা বলেন এনসিপির আহ্বায়ক।

নাহিদ ইসলাম বলেন, আমরা আপনাদের কাছে কোনো দল হিসেবে আসিনি। আমরা এসেছি কারণ অভ্যুত্থানে আমরা ছিলাম, আপনাদের পরিবারের সদস্যরা আমাদের সাথে ছিল, সে জায়গা থেকে দলমতের ঊর্ধ্বে একটি পরিবার মনে করি। তারা পুরো বাংলাদেশের, দেশের জন্য জীবন দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা আমাদের পার্টির পক্ষ থেকে সারা দেশে যাচ্ছি এবং সবার কথা শুনছি। আমরা দলের পক্ষ থেকে একটা শহীদ কল্যাণ-আহত সেল করছি, সেটার অধীনে আমরা আমাদের জায়গা থেকে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। যেখানে যাচ্ছি আমরা পুনরায় সবার নম্বরগুলো নিচ্ছি।

এটি আমরা স্থানীয় একটি সংগঠনের মাধ্যমে করছি। জুলাইয়ের রাজনৈতিক যে ঘোষণাপত্র বা সনদ, সেটা আমরা সবসময় বলছি এবং ৩ আগস্টে সেটা নিয়ে আমরা ঢাকায় বড় প্রোগ্রাম করব। সরকার যাতে এটা দেয়। সরকারও বলছে ৫ আগস্টের মধ্যে দেবে। এসময় চট্টগ্রামের শহীদদের পরিবার এবং দলটির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা রাঙামাটির উদ্দেশে রওনা দেন।

দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি:জিএম কাদের

অনলাইন ডেস্কঃ

দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান ও বিরোধীদলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ কাদের। তিনি বলেছেন, সরকারের হাতে টাকা নেই, এলসি খুলতে পারছে না।  সরকারের হাতে রিজার্ভ নেই। রিজার্ভের টাকা অন্যখাতে খরচ করা হয়েছে, যা পৃথিবীর ইতিহাসে নেই।

রিজার্ভের অর্থ বিদেশিদের ধার দিয়েছে, বিমানে ও পায়রা বন্ধরে খরচ করা হয়েছে। বিভিন্নভাবে রিজার্ভের ৮ বিলিয়ন খরচ করা হয়েছে। নিত্যপণ্য, ওষুধ, চিকিৎসা সরঞ্জাম আমদানির জন্য এলসি খুলতে পারছে না। আর এ কারণেই চাহিদার তুলনায় বাজারে পণ্য সরবরাহ কম। সকল জিনিসের দাম বেশি আর রিজার্ভ বর্তমান পরিস্থিতি অস্বাভাবিক।

তিনি বলেন, দেশ এখন দেউলিয়াত্বের কাছাকাছি। সরকারের রিজার্ভে যে টাকা আছে দেনা তার চেয়ে বেশি। দেনা পরিশোধ করলে রিজার্ভে কোন টাকা থাকবে না।

আজ শুক্রবার দুপুরে গাজীপুর জেলার চান্দনা উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজ মাঠে মহানগর জাতীয় পার্টি আয়োজিত জনসভায় গোলাম মোহাম্মদ কাদের এ কথা বলেন।

গাজীপুর মহানগর জাতীয় পার্টির উদ্যোগে জনসভায় মহানগর জাতীয় পার্টির সভাপতি ও চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা এম এম নিয়াজ উদ্দিনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টি মহাসচিব বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মুজিবুল হক চুন্নু এমপি, কো চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি, প্রেসিডিয়াম সদস্য আলহাজ্ব শফিকুল ইসলাম সেন্টু, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব আবদুস সাত্তার মিয়া, ভাইস চেয়ারম্যান মো. আরিফুর রহমান খান, আহসান আদেলুর রহমান এমপি, গাজীপুর মহানগরের নেতৃবৃন্দের মধ্যে মো. জাকির হোসেন,  হানিফ মাস্টার, বারি মাস্টার।

মহানগর জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক মো. মোশারফ হোসেন এর পরিচালনায় এবং সহ সভাপতি মো. হারুন অর রশিদ এর সঞ্চালনায় জনসভা অনুষ্ঠিত হয়।

গোলাম মোহাম্মদ কাদের আরও বলেন, রমজান মাস আসছে, এমনিতেই জিনিসপত্রের দাম ঊর্ধ্বমুখী। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি, রমজানের জন্য বিশেষ ব্যবস্থায় দ্রব্যমূল্য সহনীয় মাত্রায় রাখতে। মানুষের আয় বাড়েনি, কিন্তু জিনিস পত্রের দাম বেড়েই চলছে। দেশের মানুষ যেন সুন্দরভাবে রোজা রেখে ইবাদত করতে পারে। সরকারকেই এই দায়িত্ব পালন করতে হবে। দেশের মানুষ কষ্টে আছে। তাই, পরিবার ভিত্তিক রেশনিং ব্যবস্থা চালু করুন। অতিদরিদ্র, দরিদ্র, নিন্মমধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্ত অনুযায়ী রেশন কার্ড দিতে হবে। প্রতি সপ্তাহের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম মূল্যে মানুষের মাঝে বিতরণ করতে হবে। রমজানে নিত্যপণ্যের দাম যেন বাড়াতে না পারে সেজন্য সকলকে সচেতন থাকতে হবে। দায়িত্বশীলরা দুর্নীতি মুক্তভাবে দায়িত্ব পালন করলে রমজানে নিত্যপণ্যের দাম কেউ বাড়াতে পারবে না। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কম মূল্যে দিতে পারলেই মানুষ বাঁচবে।

প্রধান অতিথির বক্তৃতায় জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যন আরো বলেন, এবার বাংলাদেশ থেকে ১ লাখ ২৭ হাজার হাজী হজ্জ করতে পারবেন। তিন বার সময় বাড়িয়ে এখন পর্যন্ত এক লাখ হাজী নিবন্ধন করেছেন। এখনো ২৭ হাজার কোটা বাকি আছে। হজ্জ প্যাকেজ এর দাম প্রায় ৭ লাখ টাকা করা হয়েছে। এটা আমাদের দেশের সাধারণ মানুষের জন্য অসম্ভব। হজ্জের খরচ কমাতে ভর্তুকি দিতে হবে। প্রতিবেশী দেশগুলোতে হজ্জের খরচ কোথাও আমাদের চেয়ে অর্ধেক আবার কোথাও অর্ধেকের চেয়ে কম। বাংলাদেশে কেন হজ্জে যেতে এত টাকা খরচ হবে?

ব্যাংকিং খাতে অবাধ লুটপাট হয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, সরকারি হিসেবে খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ৮ ভাগ। অথচ, আন্তর্জাতিক মনিটরিং সংস্থাগুলো বলছে বাংলাদেশে খেলাপী ঋণের পরিমাণ শতকরা ২৫ ভাগ। বছরে বিদ্যুত খাতে ১ বিলিয়ন ডলার লস হচ্ছে সরকারের ভুল সিদ্ধান্তে। মেগা প্রকল্পে যে খরচ হয়েছে তার দায়ভার এখন সাধারণ মানুষের ওপর পড়েছে। সেই দায়ভার মেটানো কঠিন হয়ে পড়বে। বাংলাদেশ থেকে দেদারছে অর্থ বিদেশে পাচার হচ্ছে। লুটপাটের কারণে সরকারের হাতে টাকা নেই। আন্তর্জাতিক সংস্থা মুডিস বলেছে, বাংলাদেশকে ঋণ দিলে তা আর ফেরত পাওয়া যাবে না। তাই বাংলাদেশকে ধার দেওয়া ঠিক হবে না।

বাংলাদেশের সামনে বিশাল রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা আছে বলে মন্তব্য করেন জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান।

‘আওয়ামী লীগ ও বিএনপি পরস্পরের মুখিামুখি দাঁড়িয়ে আছে। দুটি দলেরই দাবি নিয়ে পিছু হটার সুযোগ নেই। এই দাবিগুলোতে কেউ ছাড় দিলে তারা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। তাই সংঘাতময় পরিস্থিতির আশঙ্কায় মানুষের মাঝে ভিতি বিরাজ করছে। আমরা চাই শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তর হোক। রাজনীতিতে শান্তির সুবাতাস চাই। আমরা রাজনীতির পরিবর্তন চাই। আওয়ামী লীগ ও বিএনপি বারবার ক্ষমতায় গিয়ে দুর্নীতি, লুটপাট, টেন্ডারবাজী, চাঁদাবাজী, দলীয়করণ করবে আমরা এর পরিবর্তন চাই। আমরা চাই সরকার সবাইকে সমান চোখে দেখবে। প্রশাসনও সরকার দলীয় অধীন হলে কোনো ভালো কাজ হয় না।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম