সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যা সাত আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর

 

বরগুনা প্রতিনিধিঃ
সাংবাদিক তালুকদার মাসউদ হত্যা মামলার সাত আসামীর রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তার আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানী শেষে বুধবার বরগুনা অতিরিক্ত মূখ্য বিচারিক হাকিম আদালতের বিচারক মোঃ হারুন অর রশীদ আসামীদের রিমান্ড মঞ্জু করেণ। এছাড়াও একইদিনে আসামীদের জামিন আবেদনেরও শুনানী অনুষ্ঠিত হয়। শুনানী শেষে জামিন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো আদেশ দেয় আদালত।

সাংবাদিক মাসউদ তালুকদার হত্যা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বরগুনা সদর থানার উপ পরিদর্শক মোঃ হেলাল উদ্দিন জানান, মামলায় জেল হাজতে থাকা সাত আসামীর পাঁচদিন করে রিমান্ড চেয়ে গত সোমবার আদালতে রিমান্ড আবেদন করলে আদালত বুধবার (আজ) শুনানীর তারিখ ধার্য্য করেছিল। শুনানী শেষে ৩নং আসামী দৈনিক সংবাদ প্রকাশ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি কাসেম হাওলাদার ও সময় টিভির বরগুনা প্রতিনিধি মামলার ৫নং আসামী সাইফুল ইসলাম মিরাজকে থানা হাজতে এনে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেণ। মামলার বাকী ৫ আসামী এনটিভির বরগুনা জেলার নিজস¦ প্রতিবেদক সোহেল হাফিজ, তার (এনটিভির) ক্যামেরা পার্সন আরিফলু ইসলাম মুরাদ, বাংলা নিউজের বরগুনা প্রতিনিধি জাহিদুল ইসলাম মেহেদি, দৈনিক আজকের দর্পন পত্রিকার ওলি উল্লাহ ইমরাণ ও তাদের সহযোগী সোহাগ হাওলাদারকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছে আদালত।

বাদী পক্ষের নিয়োজিত আইনজীবী মো: নেসার উদ্দীন জানান, গত সোমবার আসামীদের পক্ষে জামিন চেয়ে আবেদন করার পর বুধবার (আজ) শুনানীর জন্য তারিখ নির্ধারণ করেছিল আদালত। শুনানী শেষে জামিন আবেদন নামঞ্জুর করা হয়। এছাড়াও মামলার ১২নং আসামী মোঃ শহিদুল ইসলাম আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিন চাইলে আদালত আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানো আদেশ দেন।

আসামী পক্ষের আইনজীবী মোঃ আবদুর রহমান বলেন, ‘আদালত জামিন নামঞ্জুর করেছে। পরবর্তিতে আমরা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে জামিন আবেদন করব। নিম্ন আদালতে জামিন নামঞ্জুর হলে উচ্চাদালতে জামিন আবেদন করা হবে।’

গত ১৯ ফেব্রুয়ারী বরগুনা প্রেসক্লাবে আটকে রেখে মারধর ও নির্যাতনের ১১ দিন পর ২মার্চ চিকিৎসাধীন অবস্থায় সাংবাদিক তালুকদার মাসউদের মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ৪মার্চ নিহতের স্ত্রী সাজেদা বাদি হয়ে বরগুনা সদর থানায় ১৩জনকে আসামী করে হত্যা মামলা রুজু করেন। তালুকদার মাসউদ ‘দৈনিক ভোরের ডাক’ পত্রিকার বরগুনা প্রতিনিধি ও সদর উপজেলার নলটোনা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ছিলেন।

বরিশালে অফিস সহকারির পাঁচ তলা ভবন, ব্যাংকে জমা কোটি টাকা

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নেছারাবাদ পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অফিস সহকারি অামিনুল ইসলামের বরিশালে পাঁচতলা বাড়ি ও তার ব্যাংকের বেতন হিসাবে কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক(প্রশাসন) বরাবর এই অফিস সহকারির অনিয়ম দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ তদন্তে গেলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।

বরিশালের শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের পিছনে আমতলা মোড় সংলগ্ন ওসমান সড়কের বিলাসবহুল পাঁচতলা ভবন তালুকদার ভিলার মালিক তিনি, ২০১১-২০১৬সাল পর্যন্ত সোনালি ব্যাংকে তার পরিচালিত হিসাব নম্বর ১০০০১১১৫৫ এ এক কোটি ছয় হাজার সাত শত একাশি টাকা জমা।

অত্র অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও পরিচালক প্রশাসন খান মোঃ রেজাউল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানা গেছে, একই কার্যালয়ের সহকারি পঃপঃ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির এই অফিস সহকারির সহায়তায় জাল স্মারকের মাধ্যমে জাল প্রজ্ঞাপন তৈরী করে নেছারাবাদ উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে দাখিল করায় তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়।

দীর্ঘ ২২ বছর ধরে একই অফিসে কর্মরত অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম দুলালের ব্যাপারে সোহাগদল এফডব্লিউসি’র স্যাকমো মাহফুজা বলেন, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কোন খরচ দেওয়া হয়না। ২০১১ থেকে ১৬ সাল পর্যন্ত আমাদের বেতনের একটা অংশ আমিনুল ইসলাম আত্নস্যাত করেছিল যা সোনালী ব্যাংকের তৎকালিন ম্যানেজার তার বেতন হিসাবে অত্যাধিক টাকা লেনদেন  দেখে তদন্তে আসলে বেরিয়ে আসে। সে ঘটনায় দুলাল দোষ স্বীকার করে আমাদের টাকা ফেরত দিয়েছিল। শ্রান্তী ভাতার টাকা তুলে তাকে দুই হাজার টাকা দিতে হয়।

সুটিয়াকাঠী এফডব্লিউসি’র  এফডব্লিউভি শিরিন সুলতানা বলেন, আমাদের যত ভাউচার বিল রয়েছে তার সব বিলের শতকরা ত্রিশ ভাগ দুলালকে দিয়ে আসি একাউন্সসহ অন্যান্য অফিসারদের যেটা দেওয়া দরকার সে দেয়।

মাঠকর্মীদের টাকা আত্নস্যাতের বিষয়ে তৎকালিন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অাবু বকর অাকন বলেন, ওই সময় দুলাল কর্মীদের বেতনের টাকার খুচরা অংশ আত্নস্যাৎ করেছিল যা সে স্বীকার করে রিফান্ড করায় প্রাথমিক ভাবে তাকে ক্ষমা করা হয়েছিল।

অভিযুক্ত অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম দুলাল সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। চাকরির বাহিরে কোন ব্যবসা নেই উল্লেখ করে ব্যাংক হিসাবের লেনদেন তার নয় এবং বরিশালের আমতলা মোড় সংলগ্ন ওসমান সড়কের বিলাসবহুল ভবন তালুকদার ভিলার মালিক হওয়া সত্বেও তিনি সে ব্যপারে বলা জাবেনা বলে জানান।

২৪ মে ২০২২ তারিখ দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) এর বরাত দিয়ে এফপি, পিরোজপুর মোঃ শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আমিনুল ইসলাম দুলালকে ৩০মে ২০২২ উপস্থিত থাকতে বলা হয়। দুদকে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে স্বাক্ষদানকারী ব্যক্তিরা স্বাক্ষও প্রদান করেন বলে জানা গেছে কিন্তু আজো আলোর মুখ দেখতে পায়নি সে তদন্ত প্রতিবেদন। এ বিষয়ে দুলালের সাথে বারবার যোগাযোগ করার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এমনকি ক্ষুদে বার্তার জবাব দেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম