মিটফোর্ডের জিনসিন জামান এখন ইমপেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়) এর গর্বিত মালিক

নিজস্ব প্রতিবেদক :

মিটফোর্ডের ভেজাল জিনসিন সিরাপ ব্যাবসায়ী এখন ইম্পেক্স আয়ুর্বেদিকের কারখানায় উৎপাদন করছে ভেজাল ও নিম্নমানের আয়ুর্বেদিক ঔষধের সামগ্রী, সম্প্রতি এমনই এক অভিযোগ উঠেছে রাজধানীর মিটফোর্ডের জিনসিন জামানের বিরুদ্ধে, এ খবর নিশ্চিত করেছেন আয়ুর্বেদিক ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাতকারী একটি বিশেষ সুত্রের।
জানা গেছে, জামান দীর্ঘদিন যাবত মিটফোর্ড মাজারের বিপরীতে একটি ঔষধের মার্কেটের নীচতলায় তার মালিকানাধীন ঔষধের দোকানে দেশের বিভিন্ন এলাকার ইউনানী-আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির যৌন উত্তেজক ঔষধ সামগ্রী পাইকারি ও খুচরা বিক্রি করছে। জিনসিন (শরবত জিনসিন) নামক যৌন উত্তেজক ইউনানী সিরাপ এর মিটফোর্ডের হোলসেলার হিসেবে সারা বাংলাদেশের ঔষধ কোম্পানির মালিকের কাছে জিনসিন জামান বিশেষ পরিচিত।
জিনসিন জামান কে বিভিন্ন সময়ে নকল ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের ব্যাবসা করার জন্য সরকারের আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বেশ কয়েকবার গ্রেফতার ও করে। পরে জিনসিন জামান জামিনে বেরিয়ে এসে পুনরায় একই ব্যাবসা অব্যাহত রাখে।
ইতোমধ্যে জামান জিনসিন সিরাপ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের মালিকদের সাথে প্রতারণা করে রাতারাতি কোটিপতি বনে যান। যার ফলে তোফাজ্জল হোসেনের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইম্পেক্স ল্যাবরেটরিজ (আয়ু) নামক একটি ঔষধ কোম্পানি জামান নাম মাত্র কিনে নিয়ে কোম্পানির মালিকানা ও স্থান পরিবর্তন না করেই শুরু করে ভেজাল ও নিম্নমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত। মিটফোর্ডে জামানের দোকান থাকার সুবাদে বিভিন্ন কেমিক্যাল ব্যাবসায়ীদের কাছ থেকে নাম মাত্র মুল্যে এলোপেথিক ঔষধের মেয়াদোত্তীর্ণ কাঁচামাল কিনে নিয়ে তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইম্পেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) নামক আয়ুর্বেদিক ঔষধ কোম্পানির অভ্যান্তরে শুরু করে কালার, ফ্লেভার ও কেমিক্যাল ব্যাবহার করে তৈরি করে কথিত আয়ুর্বেদিক ঔষধ। এর পাশাপাশি রাতের আঁধারে শুরু করে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর কর্তৃক নিষিদ্ধ ঘোষিত বিভিন্ন কোম্পানির বিভিন্ন ব্রান্ডের ভেজাল ও নিম্নমানের এলোপেথিক ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত। এছাড়াও জামান তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান মেসার্স ইম্পেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) এর কারখানায় বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির নামি-দামি ব্রান্ডের বহুল প্রচলিত ঔষধ সামগ্রীর উৎপাদন ও বাজারজাত। এর মধ্যে ওমিপ্রাজল -২০, ইসসোমিপ্রাজল-২০ ও ৪০, মন্টিলোকাস -১০ প্যান্টাপ্রাজল-২০ অন্যতম।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে জিনসিন জামানের মালীকানাধীন ইমপেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) এর ঔষধের তালিকা।

এছাড়াও জিনসিন জামান আমলাপ্লেক্স (আমলকী রসায়ন) নামক ৪৫০ মিলি ভিটামিন সিরাপ উৎপাদন ও বাজারজাত করছে এর মধ্যে গবাদিপশু মোটাতাজাযাতকরন সিপ্রোহেপ্টাডিন ও ডেক্সামিথাসন গ্রুপের কেমিক্যাল ব্যাবহার করার অভিযোগ উঠেছে। ইম্পেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) এর উৎপাদিত কলসিপ্লেক্স নামে ক্যালসিয়াম ঔষধ তৈরির সময় শুধুমাত্র ক্যালসিয়াম কার্বোনেট ব্যাবহার করা হয় ফলে উক্ত কলসিপ্লেক্স মিটফোর্ড সহ সারা দেশের বিভিন্ন এলাকার ঔষধের পাইকারী ও খুচরা দোকানে মুড়িমুড়কির মতো বিক্রি হচ্ছে। আমলাপ্লেক্স (আমলকী রসায়ন) ৪৫০ মিলি সিরাপে গবাদিপশু মোটাতাজা করা কেমিক্যাল ব্যাবহার করার ফলে উক্ত আমলাপ্লেক্স সিরাপ সেবনের ফলে মানব দেহের তাতক্ষনিক পরিবর্তন দেখা দিলেও এর প্রতিক্রিয়া অতিব ভয়াবহ প্রতিনিয়ত এধরণের ক্ষতিকর কেমিক্যাল মানব দেহের অভ্যান্তরে প্রবেশের ফলে মানব দেহের লিভার, কিডনি ও হার্ট বিকল হওয়ার সম্ভবনা প্রায় শতভাগ। সচেতন মহলের মতে মেসার্স ইম্পেক্স ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) এর উৎপাদন লাইসেন্স, কোম্পানির কারখানার পরিবেশ, উক্ত কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধের লেবেল কার্টনের খসড়া ও চুড়ান্ত অনুমোদন, ঔষধের পদ নবায়ন, ঔষধের টেস্টিং ক্রাইটেরিয়া তদারকি সহ উক্ত কোম্পানির উৎপাদিত ঔষধের নমুনা পরিক্ষা করা এখন সময়ের দাবী বলে মনে করেন স্বাস্থ্য সচেতন মহল।

বিআইএম এর প্রকল্প পরিচালক তানভীর হোসাইনের অনিয়ম দুর্নীতি

নিজস্ব প্রতিবেদক:

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট (বিআইএম)’র প্রকল্প পরিচালক (পিডি) তানভীর হোসাইন। বিআইএম’র ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনা উপদেষ্টাও তিনি।
প্রকল্প বাস্তবায়নে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে তানভীর হোসাইন ইতিমধ্যে কামিয়াছেন কোটি কোটি টাকা। পিডির দায়িত্ব পেয়ে তিনি নিজেই যেন ঠিকাদারির দায়িত্ব নিয়েছেন। সখ্যতা ও স্বজনপ্রীতীর কারণে হালিমা সিদ্দিকা ট্রেডার্স, সরদার ট্রেডার্স ও সিকো ইন্টারন্যাশনাল নামের এই তিনটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ করছেন তিনি। এর মধ্যে সরদার ট্রেডার্সের মালিক তানভীরের আপন ভাই।
সূত্র জানায়, বিআইএম’র প্রশাসনিক ভবনের দ্বিতীয় তলার ইন্টেরিয়র ডিজাইনের কাজটি পেয়েছে পিডি তানভীর হোসাইনের যোগসাজশে থাকা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান হালিমা সিদ্দিকা ট্রেডার্স। সেখানে ব্যাপক অনিয়ম করেছেন তিনি। সিকো ইন্টারন্যাশনালের মাধ্যমে করা একই ভবনের থাই-টাইলসের কাজেও করেছেন ব্যাপক অনিয়ম। ২২ হাজার স্কয়ার ফিট থাই লাগানোর কথা থাকলেও সবমিলিয়ে ৪-৫ হাজার স্কয়ার ফিট থাইয়ের কাজ করেছেন।
এ ছাড়াও ভবনটিতে টাইলস স্থাপনের কথা ছিল ১১ হাজার স্কয়ার ফিট। সেখানেও তিনি সবমিলিয়ে ৪ হাজার স্কয়ার ফিট টাইলস লাগিয়েছেন কি-না এ নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। এসব কাজে বরাদ্দকৃত টাকার অর্ধেক পরিমাণও কাজ হয়নি বলে দাবি এখানকার অন্যান্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের।
এ ছাড়া বিআইএম প্রকল্পের বাউন্ডারি ওয়াল নির্মাণের কাজটিও পেয়েছে সিকো ইন্টারন্যাশনাল। যার ইজিপি আইডি- ৮৮৫৫৪৬। দেয়ালটি নতুন নির্মাণের কথা থাকলেও পুরনো দেওয়ালকেই প্লাস্টার করে নতুন দেওয়াল বানিয়েছেন পিডি তানভীর। যেখানে ৩৭ টন রড ব্যবহারের কথা সেখানে এক টন রডও ব্যবহার হয়নি বলে অভিযোগ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অভ্যন্তরের রাস্তার কাজ পায় পিডি তানভীরের ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান সরদার ট্রেডার্স। সেখানেও ব্যাপক অনিয়ম ও দুর্নীতির সত্যতা পাওয়া গেছে।
অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থ দিয়ে গড়েছেন বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ। রাজধানীর মিরপুরের পীরেরবাগে কিনেছেন ফ্ল্যাট। আদাবরের ১৭ নম্বর রোডের ১৭-১৮ কমফোর্ট হাউজিংয়ে ড্রিম টাওয়ারেও রয়েছে তার একটি ফ্ল্যাট।
এই ফ্লাটে পরিবার নিয়ে বসবাস করেন তিনি। এছাড়াও আদাবরের বায়তুল হাউজিং এলাকায় গার্ডেন টাওয়ার ও লেক ভিউতে একাধিক ফ্লাট রয়েছে। আদাবরের সুনিবিড় হাউজিংয়ের ১৬ নম্বর রোডের ১৬ নম্বর বাসাটিও তার নিয়ন্ত্রণে। যার নাম রিলায়েন্স নিবাস।
এ সব বিষয়ে জানতে চাইলে প্রকল্প পরিচালক (পিডি) তানভীর হোসাইন জানান, হালিমা ট্রেডার্স নামে যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি প্রকল্পের কাজ পেয়েছে, তার সঙ্গে কাকতালীয়ভাবে তার মায়ের নামের মিল রয়েছে। সরদার ট্রেডার্স তার ভাইয়ের প্রতিষ্ঠান বলে স্বীকার করেছেন। সম্পর্কের খাতিরে সিকো ইন্টারন্যাশনাল কে কাজ দেওয়ার বিষয়টিও স্বীকার করেন তিনি।
তবে তার অবৈধ সম্পদের বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো মন্তব্য প্রকাশ করেনি তিনি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম