1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
  2. dailysobujbangladesh@gmail.com : samiya masud : samiya masud
  3. mahtabur0@gmail.com : Daily Sobuj Bangladsesh : Daily Sobuj Bangladsesh
  4. editorsobujbangladesh@gmail.com : sumona akter : sumona akter
কয়েদি পোশাকে সাবরিনা - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

২৯শে এপ্রিল, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৭:৪২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

কয়েদি পোশাকে সাবরিনা

কয়েদি পোশাকে সাবরিনা

স্টাফ রিপোর্টার॥

করোনাভাইরাসের নমুনা পরীক্ষা নিয়ে প্রতারণার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত জেকেজি হেলথ কেয়ারের শীর্ষ কর্মকর্তা ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে কারাগারে কয়েদির পোশাক পরানো হয়েছে। একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তার স্বামী আরিফুল হক চৌধুরীকে কারাগারে রান্নার কাজ দেখাশোনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ওই প্রতারণার মামলায় মঙ্গলবার ডা. সাবরিনাসহ আট আসামিকে ১১ বছরের কারাদণ্ডের রায় দেন ঢাকার অতিরিক্ত মহানগর মুখ্য হাকিম মো. তোফাজ্জল হোসেন।

ডা জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের চিকিৎসক ও জেকেজির চেয়ারম্যান সাবরিনা কাশিমপুরের মহিলা কারাগারে আছেন। আর জেকেজির সিইও আরিফ কেরানীগঞ্জে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে।

কারাসূত্র জানায় জানায়, রায় ঘোষণার আগে কারাগারে ডিভিশন পেয়েছিলেন ডা. সাবরিনা। রায় ঘোষণার পর তার ডিভিশন বাতিল করা হয়েছে। ফলে তাদের এখন থেকে সাধারণ কয়েদির মতো দিন কাটাতে হবে।

ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারের একটি সূত্র জানায়, রায় ঘোষণার পর মঙ্গলবার বিকালে আরিফুল হক চৌধুরীকে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে নেওয়া হয়। আজ বুধবার সকালে তাকে কয়েদির পোশাক পরানো হয়।

সশ্রম কারাদণ্ডের রায় বলে তাকে আজ কাজ দেওয়া হয়েছে। কারাসূত্র জানায়, আরিফকে কাজ করতে হবে রান্না ঘরে। কয়েদিদের রান্নার তদারক করবেন তিনি। আরিফ আজ সারাদিন খুব বিষণ্ণ ছিলেন বলে জানান কারাসূত্র।

এদিকে সাবরিনাকে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কাশিমপুর মহিলা কারাগারে নেওয়া হয়। তাকেও আজ সকালে কয়েদির পোশাক পরানো হয়। তবে আজই তাকে কোনো কাজ দেওয়া হয়নি বলে জানায় কারাসূত্র।

কাশিমপুর মহিলা কারাগারের একটি সূত্র জানায়, ওখানে প্রত্যেক কয়েদির জন্য নির্ধারিত শাড়ি-ব্লাউজ তৈরি করা থাকে। বুধবার সকালে সাবরিনাকে কয়েদির পোশাক দেওয়া হয়। সকাল থেকে কারাগারে চুপচাপ ছিলেন সাবরিনা। কারো সঙ্গে কোনো কথা বলেননি।

সূত্র আরও জানায়, রায় ঘোষণার আগে ডিভিশন পেলেও এখন সাবরিনাকে সাধারণ বন্দিদের মতো থাকতে হচ্ছে। বাড়তি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না। এ ছাড়া সশ্রম কারাদণ্ড দেওয়ায় কারাগারে তাকে কাজ করেই খেতে হবে। আজকালের মধ্যে তাকে কাজ দেওয়া হবে।

এই মামলার অন্য আসামিরা হলেন সাঈদ চৌধুরী, হুমায়ুন কবির ও তার স্ত্রী তানজীনা পাটোয়ারী, শফিকুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠানটির ট্রেড লাইন্সেসের স্বত্বাধিকারী জেবুন্নেছা রিমা ও বিপ্লব দাস। আসামিরা সবাই কারাগারে রয়েছেন।

রায়ে আসামিদের প্রত্যেককে দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় ১১ বছরের সাজা দিয়েছে আদালত। এর মধ্যে দণ্ডবিধির ৪২০ ধারায় ৩ বছর, ৪৬৬ ধারায় ৪ বছর আর ৪৭১ ধারায় ৪ বছর মোট ১১ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।

করোনাভাইরাসের পরীক্ষার নামে প্রতারণার অভিযোগে গত বছর ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফসহ পাঁচজনকে আটক করে তেজগাঁও থানার পুলিশ। ওই ঘটনায় তেজগাঁও থানায় প্রতারণা ও জালিয়াতির অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে।

মামলার নথি থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ২২ জুন জেকেজির সাবেক গ্রাফিক্স ডিজাইনার হুমায়ুন কবীর হিরু ও তার স্ত্রী তানজীন পাটোয়ারীকে আটক করে পুলিশ। হিরু স্বীকারোক্তি দিয়ে জানান, তিনি ভুয়া করোনা সার্টিফিকেটের ডিজাইন তৈরি করতেন, যার সঙ্গে জেকেজি গ্রুপের লোকজন জড়িত।

ওই তথ্যের ভিত্তিতে পুলিশ ২৩ জুন জেকেজির সিইও আরিফুলসহ চারজনকে আটক করে। আরিফ চৌধুরীকে গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে নেয় পুলিশ। ১৫ জুলাই তাকে ফের ৪ দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়।

প্রতিষ্ঠানটির চেয়ারম্যান ডা. সাবরিনা চৌধুরীর জ্ঞাতসারেই সবকিছু হয়েছে বলে পুলিশকে জানান আটক ব্যক্তিরা।

এরপর ওই বছর ১২ জুলাই ডা. সাবরিনা চৌধুরীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ১৩ জুলাই তাকে তিন দিনের রিমান্ডে নেয়া হয়। ওই রিমান্ডের পর ১৭ জুলাই তার ফের ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।

২০২০ সালের ৫ আগস্ট এ মামলায় ঢাকা সিএমএম আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন ডিবি পুলিশের পরিদর্শক লিয়াকত আলী। চার্জশিটে জেকেজি হেলথ কেয়ারের কম্পিউটারে এক হাজার ৯৮৫টি ভুয়া রিপোর্ট ও ৩৪টি ভুয়া সার্টিফিকেট জব্দের কথা বলা হয়।

একই বছরের ২০ আগস্ট সাবরিনাসহ ৮ আসামির বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত।

চলতি বছরের ২৯ জুন এ মামলায় রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তিতর্কের শুনানি শেষে ১৯ জুলাই রায়ের জন্য দিন ঠিক করে রাখে আদালত। এর আগে মামলাটিতে গত ১১ মে আসামিরা নিজেদের নির্দোষ দাবি করে ন্যায়বিচার চান। গত ২০ এপ্রিল মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়। ৪০ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হয়।

তদন্তে জানা যায়, আরিফের চতুর্থ স্ত্রী ডা. সাবরিনার কল্যাণেই করোনার নমুনা সংগ্রহের কাজ পায় জেকেজি হেলথকেয়ার।

প্রথমে তিতুমীর কলেজ মাঠে স্যাম্পল কালেকশন বুথ স্থাপনের অনুমতি মিললেও প্রভাব খাটিয়ে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী ও গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে ৪৪টি বুথ স্থাপন করেছিল প্রতিষ্ঠানটি। নমুনা সংগ্রহের জন্য মাঠকর্মী নিয়োগ দেন তারা।

তাদের হটলাইন নম্বরে রোগীরা ফোন দিলে মাঠকর্মীরা বাড়ি গিয়ে এবং বুথ থেকেও নমুনা সংগ্রহ করতেন। এভাবে নমুনা সংগ্রহ করে তারা ২৭ হাজার রোগীকে করোনা টেস্টের রিপোর্ট দেন, যার মধ্যে ১১ হাজার ৫৪০ জনের করোনার নমুনা আইইডিসিআরের মাধ্যমে সঠিক পরীক্ষা করানো হয়েছিল। বাকি ১৫ হাজার ৪৬০ জনের রিপোর্ট প্রতিষ্ঠানটি জাল-জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করে। প্রতিটি সার্টিফিকেটের বিনিময়ে তারা নেয় পাঁচ হাজার টাকা।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »