১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৫:৩২ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
স্টাফ রিপোটারঃ
অল্প দিনেই সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন চট্টগ্রামের হাটহাজারীর কাজী আব্দুর রহিম মিজান। পাহাড়ি মাটি ও বনের গাছ কেটে কাজী কর্পোরেশন অ্যান্ড কাজী ম্যানুফ্যাকচার (কেবিএম) নামক অবৈধ ইটভাটার মালিক বনে গেছেন তিনি। বিভিন্ন জনকে মিথ্যা প্রলোভন দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল অর্থ। গড়ে তুলেছেন চোখ ধাঁধানো আলিশান বাড়ি। কাজী আব্দুর রহিম মিজান উপজেলার চারিয়া কাজীপাড়ার মৃত কাজী আব্দুল হালিমের পুত্র। স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, মিজান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ছাত্রদল নেতা হলেও চলাফেরা করেন বড় কোনো শিল্পপতির মতো। বাড়ির চতুর্পাশ সিসিটিভি ক্যামেরার নিয়ন্ত্রণে। ওঠাবসা ক্ষমতাসীন দলের নেতাদের সঙ্গে। এলাকার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়মিত দেন অনুদান। ছদকা হিসেবে রমজান মাসে ইফতার সামগ্রী বিলান।
মিজানের এতটাকার উৎস নিয়ে এলাকায় কৌতুহল ছিল আগে থেকেই। রহস্য উন্মোচন হয় গত ৫ই মার্চ রাতে চারিয়া-মির্জাপুর ইটভাটা মালিক সমিতির একাংশে সেক্রেটারি পদ বাগিয়ে নেয়ার পর। এরপর থেকেই একের পর এক বেরিয়ে আসছে স্বঘোষিত শিল্পপতি কাজী আব্দুর রহিম মিজান এর নানা অপকর্মের তথ্য। প্রতারণা করে অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে মো. আলী আকবর নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। তিনি বলেন, মিজানের কাছে ৬০ লাখ টাকা পাই। সে মিথ্যা কথা বলে আমার কাছ থেকে টাকা নিয়েছে। আমার কষ্টে উপার্জিত অর্থ আত্মসাৎ করার জন্য মিজান বিভিন্নভাবে আমাকে হুমকি দিচ্ছে। অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ এনে তার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছি। আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে থানাকে তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন। আরেক ভুক্তভোগী মো. আবছার বলেন, মিজান আমার কাছ থেকে মিথ্যা বলে ১১ লাখ ২৫ হাজার নিয়েছেন। তার ছোট ভাইকে ব্যারিস্টারি পড়ার জন্য দেশের বাইরে পাঠাতে হবে। টাকার প্রয়োজন। চেক দিয়েছে। পরে দেখি ব্যাংকে টাকা নেই। আমি তার বিরুদ্ধে আদালতে এনআই- অ্যাক্ট ১৩৮ ধারায় মামলা করেছি। এদিকে মেঘনা ব্যাংক লিমিটেড হাটহাজারী আমান বাজার শাখার (এভিপি) ব্রাঞ্চ ম্যানেজার শাহরিয়ার কবির বলেন, কাজী কর্পোরেশন অ্যান্ড কাজী ম্যানুফ্যাকচার (কেবিএম) ইটভাটার মালিক কাজী আব্দুর রহিম মিজান এর বিরুদ্ধে মেঘনা ব্যাংক হাটহাজারী আমান বাজার শাখার অধীনে ঋণ খেলাপির মামলা রয়েছে। মামলাটি অর্থঋণ আদালতে বিচারাধীন। এসব বিষয়ে অভিযুক্ত কাজী আব্দুর রহিম মিজান বলেন, মেঘনা ব্যাংক থেকে ১ কোটি ২০ লাখ টাকা ঋণ নিয়েছি। সময়মতো ঋণ পরিশোধ করতে না পারায় ব্যাংক আমার বিরুদ্ধে মামলা করেছে। টাকা দিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতেছি। মানুষের টাকা আত্মসাৎ এর প্রশ্নে বলেন, আমি একজন ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের ধার-কর্জ থাকতেই পারে। এটা আদালতের বিচারধীন বিষয়।
হাটহাজারী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ রুহুল আমিন সবুজ বলেন, কাজী আব্দুর রহিম মিজানের বিরুদ্ধে অর্থ আত্মসাৎ এর বেশ কয়েকটি মামলা রয়েছে। কয়েকদিন আগেও অর্থ আত্মসাৎ এর অভিযোগে এনে মো. আলী আকবর নামের এক ব্যক্তি মামলা করেছে। অপরাধ সংঘটনের বিষয়ে সত্যতা পাওয়ায় আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেছি।
Leave a Reply