১১ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ১১:১১ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
মুন্সীগন্জ প্রতিনিধি।।
মুন্সীগন্জের লৌহজং উপজেলার মেদিনীমণ্ডল ইউনিয়নের কান্দিপাড়া গ্রামের “মেয়েকে দিয়ে জোর করে দেহব্যবসা” করানোর অভিযোগে অভিযুক্ত সেই মা তানজিলা এবার বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন বলে জানা গেছে।দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকায় গত ১৫ই নভেম্বর এই সংবাদ প্রকাশের পর সারাদেশে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠে।এতে তানজিলা ক্ষিপ্ত হয়ে ১৫ তারিখ রাতে মেয়ের স্বামীকে কল দিয়ে সেই সংবাদ প্রকাশের জন্য তাঁকে অভিযুক্ত করে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে “তুই রেডি থাক,তরে আমি দেইখা নিমু নইলে আমি আবুল খায়েরের জন্মের না” বলে ফোন কেটে দেয়।এই প্রতিবেদক ঘটনার অনুসন্ধানে দেশ ও বিদেশের তানজিলার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন জনের সাথে কথা বলে
রীতিমতো আঁতকে ওঠার মতো তথ্য জানতে পারেন। তানজিলার অতীত রেকর্ড তাঁর গ্রামে বেশ নেতিবাচক। তাঁরা চার বোন ও এক ভাইয়ের মধ্যে তানজিলা সবার বড়।
কান্দিপাড়া গ্রামের সুফিয়া বেগম (৫৫) জানান,অর(তাঁর) কিচ্ছা শুরু করলে রাইত পার হইব কিন্তু কিচ্ছা শেষ হইবনা।টেকার লেইগা পারেনা এমুন কোন কাম নাই।হেই কেছরা কালের থাইকা ওইয়ে নষ্টামি শুরু করছে।দেশে পইচ্চা গন্ধ বাইর হইলে বিদেশ গিয়া হেই দেশেও খারাপ কাম করত হুনছি।তানজিলার একমাত্র ভাই সাইদুল ইসলাম এলাকায় বেশ ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত। এই প্রতিবেদক সাইদুলের নিকট তানজিলা ও তাঁর মেয়ে সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন,আমার কোন বোন বা ভাগ্নি নাই।আপনি যাঁদের কথা বললেন,তাঁরা কেউ ভালো মেয়ে মানুষ বলে আমার জানা নেই।মেয়েকে তানজিলা স্বামীর কাছে যেতে দিচ্ছেনা বলতেই সাইদুল বলেন,মায়ের জন্যই মেয়েটা বদনামের ভাগীদার হচ্ছে।তিনি আরও বলেন,ভাগ্নির জামাই আমাকে কল দিয়ে বলেছে সবই।আমি তাঁকে বলেছি তাঁদের সাথে আমার কোন সম্পর্ক নাই।আমি কিছু করতে পারলাম না আপনার জন্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তানজিলার এক প্রতিবেশী এই প্রতিবেদককে বলেন,তানজিলা যেবার ওমানে ছিলো তখন মাইনউদ্দীন নামের এক যুবকের সাথে তাঁর সম্পর্ক গড়ে ওঠে।মাইনউদ্দীনের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে সে মাঈনউদ্দীনকে ব্লক করে দেয়।তারপর সম্পর্ক গড়ে তোলে সরফরাজ নামের এক পাকিস্তানীর সাথে।ঐ প্রতিবেশী এই প্রতিবেদককে সরফরাজের ফেসবুক আইডির লিংক জোগাড় করে দেন।কৌশলে এক নারীর আইডি থেকে সরফরাজকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠানো হয়।দশ মিনিটের ভেতর সে একসেপ্ট করে মেসেঞ্জারে হায় লিখে।তারপর থেকে গত তিন দিন সরফরাজের সাথে চ্যাটিং করে জানা যায়,তানজিলা তাঁর স্ত্রী নয়,বান্ধবী। কিছুদিনের মধ্যেই তানজিলাকে সে ওমানে নিয়ে যাবে।এক দেড় বছর পর ওঁর বড় মেয়ের বয়স আরেকটু বাড়লে তখন তাঁকে নিয়ে আসা হবে ওমানে।তানজিলা ফিরে যাবে দেশে।ওঁর মেয়েকে কেনো ওমানে নিতে হবে?উত্তরে সরফরাজ জানায়,ওঁর মেয়ের জন্য তানজিলার পেছনে তাঁর অনেক টাকা ইনভেস্ট করা হয়েছে।মেয়ে যুবতী,অল্প সময়েই অনেক টাকা ইনকাম হবে।তানজিলা কি জানে এসব?সরফরাজ জানায় অবশ্যই জানে।ওঁর মেয়ের সাথে আমাকে ভিডিও কলে আলাপও করিয়ে দিয়েছে তানজিলা।ওঁর মেয়ে তো বিবাহিতা,স্বামী নামকরা সাংবাদিক,সে কি অনুমতি দিবে বউকে বিদেশে আসতে?
সরফরাজ বলে স্বামীর সাথে তো কবেই তালাক হয়ে গেছে।এটা মিথ্যা কথা,আজো তাঁদের সম্পর্ক অটুট আর তানজিলা সেটি ভাঙতে মেয়েকে আটকে রেখেছে।একথা শুনে সরফরাজ রাগান্বিত হয়ে অফলাইন হয়ে যায়।আগের
খবরে ইতালির আরিফের কথা বলা হয়েছিল।সেই আরিফের সাথেও তানজিলার মেয়ের বেষ্ট ফ্রেন্ড পরিচয় দিয়ে ফেসবুকে ও পরে হোয়াটসঅ্যাপে এই প্রতিবেদকের কথা হয়।আরিফ জানায় তানজিলাকে সে ফেসবুকের মাধ্যমে চিনে।পরে নম্বর বিনিময় করে ইমোতে দুজন ভিডিও কলে ইমো নোংরামি করে।এজন্য কয়েকবার সে তানজিলাকে ডলার দিয়েছে।তানজিলা বয়স্ক হওয়ায় সে একদিন তানজিলাকে তাঁর কোন যুবতী বোন আছে কিনা জানতে চাইলে সে বলে,তোমার জন্য আমার নিজের ইনটেক মেয়েই আছে।তানজিলাই আমাকে তাঁর মেয়ের নম্বর দেয়।কিন্তু ওঁর মেয়ে এসব করতে চাইতোনা।শেষে তানজিলাকে সে এটা জানালে তানজিলা বলে,দেশে গিয়ে
সে তাঁর আশা পূরণ করে দিবে।গতকাল থেকে আরিফ সকল মাধ্যমেই ব্লক করে দেয় এই প্রতিবেদকের আইডি। দৈনিক সবুজ বাংলাদেশের পক্ষ থেকে তানজিলার প্রথম স্বামী,তাঁর দুই মেয়ের বাবা হারুন শিকদারের সাথে মোবাইলে কথা বলা হয়।হারুন শিকদার মেয়ে জামাইকে অনেক ভালো একজন মানুষ অভিহিত করে বলেন তানজিলা সম্পর্কে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধে। আমার মেয়েটার জীবন ও হাতে ধরে নষ্ট করে দিয়েছে।তিনি জানান,মেয়েরা আমার কাছেই থাকতো।বারো তেরো বছর বয়সেই তানজিলা মেয়েকে টাচ মোবাইল কিনে দেয়।
আমার মেয়েটা চোখের সামনে পেকে যেতে থাকে।রাতভর
ঐ মোবাইলে কিসব বলতো।আমি বুঝতে পেরে মেয়ের কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নিলে সে মোবাইল না দিলে জীবন দিয়ে দিবে বলে হুমকি দেয়।আর মোবাইল ফিরিয়ে দিলে সে আর কিছু করবেনা মোবাইল দিয়ে।তিনি বলেন মোবাইলটা ফেরত দেয়ার দিনই মেয়েটা বাড়ী থেকে চলে যায়।আর এসব কিছুই সে তানজিলার বুদ্ধিতে করে।
হারুন শিকদার জানান,গত ৮ তারিখ তানজিলা তাঁকে ঢাকায় দেখা করতে বলে মেয়েদের নিয়ে কথা বলবে বলে।
ঢাকায় দেখা হবার পর তানজিলা আমাকে বলে আমিতো চলে যাবো।আপনি গাজীপুরে ওঁদের একটা বাসা ভাড়া নিয়ে দিবেন।আমিই ভাড়া দিব।আর ভালো ছেলে পাইলে বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দিবেন।আমার পরিচিত একটি ছেলে আছে জানালে তানজিলা আমাকে বলে জামাইটা খুব খারাপ আছিলো।তাই ছাড়াছাড়ি করাইয়া দিছি।আপনে সম্ভব হইলে এক সপ্তাহের ভিতর বিয়া দিয়া দেন।
তিনি বলেন, আল্লাহ আমাকে বড় একটা পাপ থেকে বাঁচিয়েছে।৯ তারিখ মেয়ের জামাই এখানে আসার পর জানতে পারি সবকিছু।তিনি এই প্রতিবেদককে প্রশ্ন করেন
পৃথিবীতে এমন মায়ের কথা আগে শুনেছেন কোনদিন।
তিনি বলেন আপনারা মেয়েটারে স্বামীর কাছে ফিরিয়ে এনে দেন। নইলে আমার মেয়েটাকে তানজিলা টাকার মেশিন বানিয়ে জীবনটা ধ্বংস করে দিবে।
গতকাল কথা হয় তানজিলার মেয়ের স্বামীর সাথে।নারায়নগঞ্জের সৎ সাংবাদিক হিসেবে পরিচিত তিনি বলেন,আমি চাইছিনা এসব কথা মিডিয়ায় আসুক। স্ত্রীকে ফিরে পেতে হেন চেষ্টা নেই যা আমি করিনি।এখন ওঁর মা আমাকে একবার বলে মামলা দিয়ে জেলে দিবে,আবার বলে আমার সন্তানদের লাশও খুঁজে পাবোনা আমি,গতকাল বলেছে এক লাখ টাকা নাকি সে বাজেট করেছে।বায়নাও করেছে।অনেক চতুর মহিলা একেক সময় একেকজনের নম্বর দিয়ে কথা বলে।আর নিজের ও আমার স্ত্রীর নম্বর ব্ল্যাকলিষ্টে রেখেছে।তিনি বলেন তানজিলার ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয় বুধবার তাঁকে জানিয়েছে
গোপনে মেয়ের বিয়ে দিতে তানজিলা উঠেপড়ে লেগেছে।
যেকোনো দিন এটি হয়ে যেতে পারে।তবে তিনি আইনী ব্যবস্থা নিয়ে রেখেছেন বলে জানান সবুজ বাংলাদেশকে।
Leave a Reply