1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
বরিশাল কারাগার দুর্নীতির শীর্ষে - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

৩০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । রাত ৯:৩৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
ঢাকা সাব-এডিটরস কাউন্সিলের নতুন সভাপতি মুক্তাদির, সম্পাদক জাওহার নারায়ণগঞ্জ পাসপোর্ট অফিসে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা ঘুষ বাণিজ্য নিয়ন্ত্রণে তিন কর্মকর্তা সুপ্রীম কোর্টে কজলিস্টে অভিনব জালিয়াতি : নেপথ্যে তাসাদ্দুক-আগষ্টিন-ডেভিড চক্র কিশোর গ্যাংয়ের মদতদাতাদের তালিকা করা হয়েছে : ডিএমপি কমিশনার ভালুকায় ছেলের হাতে বাবা খুন গুলফাম বকাউলের গনজোয়ারের নেপথ্যের রহস্য ! গুলশানে স্পা অন্তরালে অপরাধ জগতের ডন বাহার ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য নারী দিয়ে ফাঁদ তীব্র গরমের অতিষ্ঠ জনজীবনে একটি প্রশান্তিময় ও দৃষ্টি নন্দিত উদ্যোগ বিশ্বনাথে পৌর মেয়রের উপর  কাউন্সিলর রাসনা বেগমের মামলা:  মেয়রের বিরুদ্ধে ঝাড়ু– মিছিল, উত্তেজনা তিতাস গ্যাসের সিবিএ সভাপতি মরহুম কাজিম উদ্দিন প্রধানের স্মরনসভা
বরিশাল কারাগার দুর্নীতির শীর্ষে

বরিশাল কারাগার দুর্নীতির শীর্ষে

মেহেরাজ রাব্বি :

“রাখিব নিরাপদ, দেখাব আলোর পথ” বরিশাল জেলা কারাগারের এই স্লোগান শুধু দেয়ালেই সীমাবদ্ধ থেকে যায়,দুর্নীতি যেন বরিশাল কারাগারের রন্ধ্রে রন্ধ্রে প্রবেশ করেছে। বন্দীদের নির্যাতন,সাক্ষাৎ-বাণিজ্য, সিট-বাণিজ্য,খাবার বাণিজ্য, মালামাল পাঠাতে বাণিজ্য, চিকিৎসা-বাণিজ্য এবং জামিন-বাণিজ্যের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ আদায় করে কারা কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এবং কারারক্ষীদের মধ্যে ভাগ-বাটোয়ারার অভিযোগে উঠেছে। অনুসন্ধানে বেরিয়ে এসেছে এসব অনিয়ম-দুর্নীতির ভয়াবহ চিত্র আর এমন অনিয়ম-দুর্নীতি চার দেওয়ালের ভিতরেই আটকে রাখে কারা কর্মকর্তারা।
অনুসন্ধান ২৪ এর অনুসন্ধানে জানা যায়, বন্দীদের সাথে দেখা করতে আসা মানুষের মোবাইল জমা রাখতে হয় বাহিরের ক্যান্টিনে প্রতিটি মোবাইল ব্যবদ আধাঁয় করে ১০ টাকা। বন্দীদের কাছে পাঠাতে সার্ট প্যান্ট , লুঙ্গি, সহ পিচ প্রতি ২০ টাকা করে আধায় করেন কারা কর্তৃপক্ষ। এক প্যাকেট সিগারেট বাহিড়ে ১৩০ টাকা কিন্তু তাদের কাছ থেকে কিনতে হয় দুই শত টাকায়। বন্দীদের এক প্যাকেট সিগারেট দিতে কারা কর্মকতা ও কারারক্ষীদের দিতে হয় আর দুই প্যাকেট সিগারেট। এছাড়াও বন্দীদের দেয়া হয় মানহীন খাবার। নিম্মমানের খাবার খেয়ে বন্দীরা দিন দিন ক্লান্ত হয়ে পরেছে। এসব নিম্নমানের খাবার সরবরাহের সঙ্গে কারারক্ষীসহ জেল সুপার সরাসরি জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। নিম্নমানের খাবার অনুপযোগী খাবার দেয়া হয় হাজতি ও কয়েদীদের মাঝে। এসব খাবারে দেয়া হইনা পরিমান মতো মসলা। ডাল দেয়া হয় পানির মতো পাতলা। সরকারি ফাইলের তরকারির দিকে তাকানো যায় না। আবার ভালো খাবার সেদিন হয় যেদিন কোন বড় কর্মকর্তারা জেল পরিদর্শনে আসে সেদিনই ভালো খাবারে দিকে চেয়ে থাকে অসহায় বন্দী হাজতীয় ও কয়েদিরা। হাজতি ও কয়েদিরা আলোচনায় ও দোয়া করতে থাকে যেন প্রতিদিন জেল পরিদর্শনে কর্মকর্তারা আসেন আসলে ভালো খাবার মিলবে এই অপেক্ষায়।

নিম্মমানের খাবার খেতে না পারায় বাধ্য হয়েই হাজতী ও কয়েদীরা তাদের পার্সোনাল রান্না করা পিসি ক্যান্টিন থেকে ভালো সামান্য উন্নত খাবার কিনে খায়। যার দাম বাজারমূল্য থেকে কয়েকগুন বেশি। কিন্তু নেই কোন উপায়। প্রতিবাদ করতে গেলে শিকার হতে হয় হামলা ও শারীরিক নির্যাতন,বেশি প্রতিবাদ করলেই ফজরের নামাজের পর একলা ওয়ার্ড থেকে বের করে চোখে কাপড় বেঁধে মুখে গামছা ভরে লাগাতাল পিটানো হয় এতে ভাঙ্গে চার থেকে পাঁচটা মোটা লাঠি নিরুপায় বন্দী রয়েছে মাগো জেলখানারি ঘরে।

অনুসন্ধানে জানা যায়,কারাগারের নিয়ন্ত্রণে দুটি ক্যান্টিন রয়েছে। একটি কারাগারের ভেতরে,অন্যটি বাইরে। বাইরের ক্যান্টিনে কোন মূল্য তালিকা নেই। ভেতরের ক্যান্টিনের পরিবেশ অনুপযোগী। দুই ক্যান্টিনেই সিগারেট, কলা,বিস্কুট,কেক আপেলসহ অন্যান্য প্রতিটি পণ্যের দাম বেশি নেয়া হয়। ভেতরের ক্যান্টিনে ক্রয়কৃত মালামালের বিপরীতে মূল্য পিসি (প্রিজনার ক্যাশ) কার্ড থেকে কর্তন করা হয়। কোন পণ্যের নাম লেখা থাকে না বাইরের দ্রব্যমূল্যের দাম ও ভিতরের খাবার পুন্যের দাম আকাশ জমিন তফাৎ।

নির্ভরযোগ্য সূত্র ও জামিনে মুক্ত হয়ে বেরিয়ে আসা একাধিক বন্দী জানিয়েছেন,কারাগারের প্রতিটি ওয়ার্ড ইজারা দেয়া হয়। ম্যাট,সিও ম্যাট,সিআইডি ম্যাট,পাহারাদার ও ওয়ার্ড রাইটার এসব ওয়ার্ড বরাদ্দ নিয়ে থাকে। নির্দিষ্ট ইজারা মূল্য কারা কর্তৃপক্ষকে পরিশোধ করতে বাধ্য করে দেরি হলে চলে বিভিন্ন অজুহাতের জুলুম শুধু তাই নয় সামান্য অজুহাতে মারাত্মক আকার ধারন করা হয় বন্দীদের সাথে ডান্ডা বেড়ি,অ্যাড়া বেড়ি,দুই পায়ে পড়া হয় লোহার শিকল। জামিনপ্রাপ্ত আরিফ ভান্ডারী সংবাদকর্মীকে বলেন, মামা খাবার তালিকায় শুধু মুলা। মুলা দিয়ে চলে জেল খানার খাবার।

সরেজমিনে দেখা যায়,প্রতিদিন সন্ধ্যায় কারাগারের সামনে জামিনপ্রাপ্ত আসামির স্বজনদের দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করতে। জামিনপ্রাপ্ত আসামির স্বজনদের কাছ থেকে বিভিন্ন কৌশলে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কারা কর্তৃপক্ষ। বন্দীরা আদালত থেকে জামিনলাভ করলেও অর্থ প্রদান না করলে জামিননামা আটকিয়ে রেখে মুক্তি বিলম্বিত করা হয় বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অভিযোগ রয়েছে,বন্দীদের খাবার, স্বজনের সঙ্গে সাক্ষাৎ,কারাগারে ভালো স্থানে থাকার ব্যবস্থা- এ সবকিছু চলে টাকার বিনিময়ে। টাকার বিনিময়ে সোনা চোরাকারবারি ও মাদক কারবারিরাও কারাগারে বিলাসী জীবনযাপন করে। কারাগারকে বলা হয় সংশোধনাগার। সেখানে অপরাধীদের রাখা হয় কৃত অপরাধের সাজা প্রদানের পাশাপাশি সংশোধনের উদ্দেশ্যে। সেই কারাগারেই চলছে নানা ধরনের অপরাধকর্ম।
জেল সুপারের নেতৃত্বে গড়ে উঠেছে এই অনিয়ম ও দুর্নীতির সিন্ডিকেট। অন্তত ৩-৪শ বন্দীর কাছে মাসে সর্বনিম্ন ২ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা পর্যন্ত বেড ভাড়া উত্তোলন করা হয়। অবৈধভাবে উত্তোলনকৃত বেড ভাড়ার নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা কারা কর্তৃপক্ষের পকেটে যায়। বাকি টাকা ম্যাট, পাহারাদার ও ওয়ার্ড রাইটারদের মধ্যে ভাগাভাগি হয় তবে হাঁ আরেকটি রয়েছে কারাগারের ভিতরে কারা মেডিকেল,এখানে উন্নত পরিবারের জন্য তবে যে কেউ টাকা দিলে মাসিক ৬,থেকে ৭ হাজার টাকা মাসে লোহার বেডশীট ভাড়া দিয়ে থাকতে পারেন।
কারাগারের হাসপাতালে সুস্থ আসামির কাছে বেড বিক্রি করছে মাসে ৫ থেকে ১০ হাজার টাকায়। এতে জড়িত ডাক্তার,ডিপুটি জেলার ও জেল সুপার।
বরিশাল আদালতের এক আইনজীবী জানান,আদালত থেকে আসামির জামিনাদেশ পাওয়ার পরও কারা কর্তৃপক্ষ ইচ্ছাকৃতভাবে কালক্ষেপণ করে থাকে। বিভিন্ন সময় দাড়ি-কমার সহ কাগজের তোমার নাম ভুল ধারা ভুল দেখিয়ে নানা অজুহাতে আসামি প্রতি এক,দুই হাজার টাকা দাবি করে। ঘুষের টাকা না দিলে মুক্তি দিতে টালবাহানা করে। প্রতিনিয়ত এ ধরনের ধৃষ্টতা দেখিয়ে থাকে কারা কর্তৃপক্ষ নেতৃত্বে জেল সুপার।

এসব অভিযোগ উপস্থাপন করে জানতে চাইলে বরিশাল সিনিয়র জেল সুপার রত্না রায় বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে আপনি যখন বলেছেন আমি দেখব।
জেল খানার অনিয়ম-দুর্নীতির বিষয় জানতে চাইলে জেলার মোহাম্মাদ জয়নাল আবেদীন বলেন, আমি বলে দিচ্ছি আপনি সাংবাদিক আপনার কাছ থেকে মোবাইল রাখা ব্যবদ কোন টাকা যেনও না নেয়, এই বলে মোবাইলের কল কেটে দেয়।
অনিয়মের বিষয় ডেপুটি জেলার মোহাম্মাদ মিজানুর রহমান জানান, মোবাইল জমা ব্যবদ ১০ টাকা করে আধায়ে বিষয়টি আমি জানি, তবে পোষাক দিতে যে টাকা নেয় তা আমার জানা নেই। বিষয়টি আমি উপরস্থ স্যারদের জানাবো।
জেল খানার অনিয়মের বিষয় জেলা প্রশাসক মোঃ শহিদুল ইসলাম এর সাথে মোবাইল কল দিলে তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »