সিরিয়া থেকে পালিয়ে স্বপরিবারে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন বাশার আল আসাদ

সবুজ বাংলাদেশ ডেস্ক: 

সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশ থেকে পালিয়ে স্বপরিবারে রাশিয়ায় আশ্রয় নিয়েছেন। রাশিয়ায় তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এদিকে, বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের হাতে দায়িত্বভার তুলে দেয়ার আগ পর্যন্ত, দেশ চালাবেন বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী।

এ বিজয়কে স্বাগত জানিয়ে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। দামেস্কে ফিরে ঐক্য ও সাম্যের ভিত্তিতে দেশ গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছেন বিদ্রোহী সংগঠনের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল জোলানি।

স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হওয়ার আনন্দে সিরিয়ার রাজপথে সাধারণ মানুষ উল্লাসে ফেটে পড়ছেন। হাজার হাজার মানুষ দামেস্কের উমাইয়াদ স্কয়ারে জড়ো হয়ে মেতে ওঠেন বিজয়োল্লাসে। এ যেনো এক টুকরো কলম্বো অথবা ঢাকার প্রতিচ্ছবি।

বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল শামের অভিযানের মুখে, ২৪ বছর সিরিয়া শাসন করা বাশার আল আসাদ রোববার ভোরে পদত্যাগ করে পালিয়ে যান। বিদ্রোহীরা দামেস্কে ঢোকার পরই সেখানকার কুখ্যাত সেদনায়া কারাগার উন্মুক্ত করে দেয়। ভেঙে ফেলা হয় বাশারের বাবা হাফিজ আল আসাদের ভাস্কর্য।

দেশ থেকে পালানোর পর সিরিয়ার ক্ষমতাচ্যুত প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ, স্বপরিবারে মস্কোতে আশ্রয় নিয়েছেন। মানবিক দিক বিবেচনা করে তাকে রাজনৈতিক আশ্রয় দেওয়া হয়েছে। বিদ্রোহীরা যখন দামেস্কে প্রবেশ করছিলেন, তখন বিমানবন্দর ছেড়ে যায় সিরিয়ান এয়ার ৯২১৮ ফ্লাইটটি্। উড়াল দেয়ার কয়েক মিনিট পর সেটি রাডার থেকে অদৃশ্য হয়ে গিয়েছিল। সিরিয়ার পরিস্থিতি নিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রুদ্ধদ্বার বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছে রাশিয়া।

বিজয় অর্জিত হওয়ার বেশ কয়েক ঘণ্টা পর বীরের বেশে রাজধানী দামেস্কে যান হায়াত তাহরির আল শামের প্রধান আবু মোহাম্মদ আল জোলানি। আনন্দে আত্মহারা সিরিয়াবাসী বরণ করেন তাদের মুক্তির দূতকে। পরে উমাইয়াদ মসজিদে দেয়া ভাষণে আল জোলানি বলেন, এ বিজয় জীবিত কিংবা শহীদ হওয়া প্রতিটি নাগরিকের। সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে সাম্য আর ঐক্যের মধ্যে। মিত্রদের পাশে থাকার আহ্বান জানান আবু মোহাম্মদ আল জোলানি।

বিদ্রোহীদের বিজয়ে অভিনন্দন জানিয়েছে পশ্চিমা দেশগুলো। আসাদকে জবাবদিহিতার আওতায় আনার কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। মধ্যপ্রাচ্যে স্থিতিশীলতা ফেরাতে সিরিয়া ও প্রতিবেশি দেশগুলোর সঙ্গে কাজ করবেন বলেও জানান তিনি। তবে, এ ইস্যু থেকে যুক্তরাষ্ট্রের দূরে থাকা উচিত বলে মনে করেন নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। তার মতে, দেশটিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলেছিল রাশিয়া। সিরিয়ায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষার আহ্বান জানিয়েছে ব্রিটেন ,ফ্রান্স, ইতালি, জার্মানি ও ইউক্রেন।

আসাদ সরকারের পতনকে মধ্যপ্রাচ্যের জন্য ঐতিহাসিক দিন বলে মন্তব্য করেছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। সিরিয়ার একতা, অখণ্ডতা ও নিরাপত্তা রক্ষায় সব ধরনের সহায়তা দেয়ার অঙ্গীকারের কথা জানিয়েছে তুরস্ক, মিশর, জর্ডান ও ইরাক।

তবে এতো দিন আসাদ সরকারকে সমর্থন দিয়ে আসা ইরান বলেছে, জনগণই সিরিয়ার ভাগ্য নির্ধারণ করবে। কোনো বিদেশী হস্তক্ষেপ কাম্য নয়।

 

সবা:স:জু- ২৫৯/২৪

স্বাধীনতার ঘোষক আর পাঠক এক নয়: ওবায়দুল কাদের

হাফসা আক্তার॥

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, স্বাধীনতার বৈধ ঘোষণা ছিল একমাত্র বঙ্গবন্ধুর। অনেকেই ছিলেন পাঠক। পাঠক আর ঘোষক এক না। মঙ্গলবার সকালে ৭ মার্চ উপলক্ষে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের কাছে একথা বলেন তিনি।

সেতুমন্ত্রী বলেন, ৭ মার্চ বাংলাদেশের ইতিহাসের বাঁক পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক মাইলফলক। রেসকোর্স ময়দানে বিশাল জনসমুদ্রে বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ভাষণ স্বাধীনতার ডাক।

’৭১ এ পাকিস্তানি সেনাবাহিনী যখন গণহত্যা শুরু করে তখন ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ মার্চ রাত ১২টা ২০ মিনিটে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু। এরপর চট্টগ্রামের ‘স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে’র কর্মীরা বঙ্গন্ধুর ‘স্বাধীনতার ডাক’ জনসাধারণে ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য জিয়াউর রহমানকে বেছে নিয়েছিলেন। চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্রের তখনকার কর্মকর্তা বেলাল মোহাম্মদের ভাষ্য অনুযায়ী, ২৭শে মার্চ সন্ধ্যায় জিয়াউর রহমানকে ডেকে নিয়ে এসে তারা স্বাধীনতার ঘোষণাটি পাঠ করান। এর আগেরদিন ২৬শে মার্চ স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা হান্নানও বেতার কেন্দ্রে স্বাধীনতার ঘোষণা পাঠ করেন। তবে বিএনপি মেজর জিয়াকে স্বাধীনতার ঘোষক হিসেবে দাবি করে। এ বিষয়টি সামনে রেখেই ওবায়দুল কাদের বলেন, পাঠক আর ঘোষক এক না।

সেতুমন্ত্রী আরও বলেন, যারা ৭ মার্চ পালন করে না তারা স্বাধীনতার পক্ষের নয়। বিএনপির সময় ৭ মার্চ ভাষণ নিষিদ্ধ ছিলো, যে ভাষণ ইউনেসকো পৃথিবীর অন্যতম সেরা ভাষণের স্বীকৃতি দিয়েছে, সেই ভাষণ তারা ক্ষমতায় থাকাকালে নিষিদ্ধ করেছিল। এই দিবসের প্রতি, তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রতি তাদের ন্যূনতম বিশ্বাস আছে, চেতনা ধারণ করে—সেটা আমরা বিশ্বাস করি না।

তিনি আরও বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র ধংস করেছে। তারা এমন এক দল যাদের নিজেদের ঘরে দল নেই। গণতন্ত্র একটা দীর্ঘস্থায়ী প্রক্রিয়া। রাতারাতি গণতন্ত্র প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাবে না। আমাদের চেষ্টা আছে। গণতন্ত্র ক্রমে ক্রমে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পাচ্ছে। যেটুকু আছে সেটা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে হয়েছে।

বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানানোর সময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাতীয় সংসদের উপনেতা বেগম মতিয়া চৌধুরী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, আফজাল হোসেন, সুজিত রায় নন্দী, প্রচারও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ, দপ্তরসম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ দলের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ।

এর আগে সকালে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পক্ষে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন বঙ্গবন্ধু দৌহিত্র রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম