শাহজাদপুরে জাহিদ হাসান মুন্না সাংবাদিকতার আড়ালে ভেজাল ঔষধ উৎপাদন, সংবাদ প্রকাশ করায় ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালে অপপ্রচার!

মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:

সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে সাংবাদিকতার আড়ালে জাহিদ হাসান মুন্নার ভেজাল ঔষধ উৎপাদন, সংবাদ প্রকাশ করায় কিছু ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

বাংলাদেশের কোনো মিডিয়ায় কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশ হলে তাতে সংক্ষুব্ধ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সংশ্লিষ্ট মিডিয়ায় বিস্তৃত ব্যাখ্যা কিংবা প্রতিবাদ পাঠাবে এটাই হলো বিধান, যা যুগ যুগ ধরে প্রচলিত।

মিডিয়ায় প্রকাশিত সংবাদে উত্থাপিত অভিযোগসমূহ খন্ডন করে যে বক্তব্য দেয়া হয় সেটাকেই প্রতিবাদ বলে আখ্যায়িত করা হয়।

বাংলাদেশের সংবাদপত্র,সংবাদ সংস্থা এবং সাংবাদিকের জন্য অনুসরণীয় আচরণ বিধি,১৯৯৩ (২০০২ সাল
সংশোধিত) এর ১২ ধারায় লেখা আছে: প্রকাশিত সংবাদ যদি ক্ষতিকর হয় বা বস্তুনিষ্ঠ না হয় তবে তা অবিলম্বে প্রত্যাহার,সংশোধন বা ব্যাখ্যা করা এবং ক্ষেত্র বিশেষে ক্ষমা প্রার্থনা করা।

১৭ ধারায় আছে: সংবাদপত্রে প্রকাশিত প্রতিবেদনের সাথে প্রত্যক্ষভাবে সম্পর্কিত পক্ষ বা পক্ষ সমূহের প্রতিবাদ সংবাদপত্রটিতে সমগুরুত্ব দিয়ে দ্রুত ছাপানো এবং সম্পাদক প্রতিবাদলিপির সম্পাদনা কালে এর চরিত্র পরিবর্তন না করা। ১৮ ধারায় আছে: সম্পাদকীয়ের কোন ভুল তথ্যের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্থ পক্ষ যদি প্রতিবাদ করে, তবে সম্পাদকের নৈতিক দায়িত্ব হচ্ছে একই পাতায় ভুল সংশোধন করে দুঃখ প্রকাশ করা।

অনুসরণীয় আচরণ বিধি’র ২৫টি ধারার কোথাও লেখা নেই যে, এক মিডিয়ায় ভুল বা মিথ্যা নিউজ প্রকাশ করলে অন্যান্য মিডিয়া একই সংবাদকে ঠিক উল্টোভাবে প্রকাশ করবে। বরং প্রচলিত ধারা অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট মিডিয়াকে তার সংশোধনী প্রকাশের অথবা প্রতিবাদ,ব্যাখ্যা প্রকাশের সময় ও সুযোগ দেয়া। তবে,সবুজ বাংলাদেশের অনলাইন ভার্সনে প্রকাশিত সংবাদের সঠিক তথ্য প্রমাণ আছে বলেই পাল্টা সংবাদ প্রকাশ করেছে ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টাল দিয়ে। এবার তো বলাই যায়, পাল্টা সংবাদ প্রকাশকারী ও কথিত নিউজ পোর্টাল কোন নিয়মনীতি জানা এটাই তো প্রমাণ হয়। আজ থেকে যারা মাত্র এক যুগ,দুই যুগ আগেও সাংবাদিকতায় সম্পৃক্ত ছিলেন তারা সবাই জানেন,যে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয় সে পত্রিকাতেই প্রতিবাদ দিতে হয়। তবে কথিত সাংবাদিক জাহিদ হাসান মুন্না কয়েকটি ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালে প্রতিবাদের নামে অপপ্রচার চালাচ্ছে।

কথিত সাংবাদিক জাহিদ হাসান মুন্নার ভেজাল ঔষধ উৎপাদন সংবাদের সঠিক তথ্য প্রমাণ সবুজ বাংলাদেশের হাতে আছে বলেই সে সরাসরি সবুজ বাংলাদেশ পত্রিকার সম্পাদক বরাবর প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদের আবেদন করার ক্ষমতা রাখে না।এছাড়াও তিনি কয়েকজন কথিত সাংবাদিকের কথায় এমন প্রচার চালাচ্ছে বলে জানা গেছে।

সিরাজগঞ্জ শাহজাদপুর পৌর এলাকার বাড়াবিল মঙ্গলদহ গ্রামে টাচ ফার্মা এগ্রোবেট নামক একটি কারখানায় দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল উপকরণে গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন ও বাজারজাত করে আসছে।

ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদনকারী কারখানাটির মালিক
জাহিদ হাসান মুন্না বিশ্বাস নামের এক নামধারী সাংবাদিকের, জানা যায়, তিনি আনন্দ টেলিভিশনের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কিছু অসাধু কর্মকর্তাকে ঘুষ দিয়ে মেনেজ করে বাগিয়ে নিয়েছে(ক্যাটাগরি-১) এর অনুমোদন। সেই অনুমোদন দেখিয়ে
আমদানি করার কথা অফলাইনে অনলাইনে প্রচার করে বেড়ালেও কারখানাটি ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন করার জন্য উপাদান গুলো মূলত চকবাজার ও মিটফোর্ড এলাকা থেকে বিভিন্ন রকম ছাই, ভস্ম, জেল এবং রঙ ইত্যাদি ক্রয় করে। চকবাজার থেকে কেজি ধরে প্লাস্টিকের বোতল সংগ্রহ করে। তারপরে ফকিরাপুলের বিভিন্ন প্রিন্টিং প্রেস থেকে টাচ ফার্মার স্টিকার বানিয়ে প্লাস্টিকের বোতলে সেটে দেয় আর এভাবেই তৈরি করে ফেলে গবাদিপশুর জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ঔষধ।

গবাদিপশু এই ঔষধ মিশ্রিত খাবার দানবের মতো খেলেও তা গবাদি পশুগুলোর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। মানুষের জন্য পরবর্তীতে ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তবুও যেনো দেখার কেউ নেই!

এছাড়াও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের অনুমোদন (ক্যাটাগরি-১) এ উল্লেখ করে বলা আছে মোট ০৯(নয়টি)পণ্য প্রাথমিকভাবে অনুমোদন করা হলেও।
তবে,সেই অনুমোদনের তোয়াক্কা না করে একাধিক পণ্য বাজারজাত করে যাচ্ছে কারখানাটি।

অন্যদিকে,অদক্ষ লোক ধারা উৎপাদন করা হচ্ছে গবাদি পশুর ঔষধ। কারখানাটিতে রয়েছে একজন ভেটেরিনারি মেডিসিন ডাক্তার (ডিভিএম) তবে,তিনি নামে মাত্র (ডিভিএম) তার নেই কোন বৈধ কাগজপত্র নেই তবুও তিনি নামে আগে ডাঃ লাগিয়ে বনে গেছে ভেটেরিনারি মেডিসিন ডাক্তার (ডিভিএম) এবং ভুয়া কেমিষ্ট দিয়ে চলছে রমরমা গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন।একজন কেমিষ্ট রসায়নবিদ তার জ্ঞান ব্যবহার করে অপরিচিত পদার্থের গঠন এবং বৈশিষ্ট্যগুলি শিখতে,সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে দরকারী প্রাকৃতিকভাবে ঘটতে থাকা পদার্থের পুনরুত্পাদন ও সংশ্লেষণ এবং নতুন কৃত্রিম পদার্থ এবং দরকারী প্রক্রিয়া তৈরি করে। তবে, টাচ ফার্মা কেমিষ্ট ভুয়া!

এছাড়াও নেই কোন ল্যাব,ফার্মাসিষ্ট এবং আধুনিক যন্ত্রপাতি। ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের মতে,টাচ ফার্মার মানহীন ও ভেজাল ঔষধ গবাদি পশুর স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ। এদিকে,ঔষধের অন্য অন্য কোম্পানির চেয়ে দাম অর্ধেক হওয়ায় বিভিন্ন গ্রামের দোকানে গবাদিপশুর চিকিৎসকরা এই টাচ ফার্মার ঔষধ বিক্রির ব্যাপারে আগ্রহ দেখাচ্ছে।

সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধান জানা যায়, টাচ ফার্মার মালিক জাহিদ হাসান মুন্নার ক্ষমতার উৎস! আসলে এই ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদন করার জন্য তিনি হয়েছে কার্ডধারী সাংবাদিক।

দেশের স্যাটারলাইট চ্যানেল আনন্দ টেলিভিশনের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি। বিশ্বস্ত সূত্রের মাধ্যমে জানা যায়,আনন্দ টেলিভিশনের কার্ড কিনে হয়েছে কার্ডধারী সাংবাদিক!
তার সাংবাদিক হওয়ার কারন শুধু মাত্র ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ কারখানাটি শেল্টার দেওয়ার জন্য।

গোঁফ দেখে বিড়াল কেউ চিনতে না পারলেও সবুজ বাংলাদেশের অনুসন্ধানে তা বেড়িয়ে আসে, তিনি সাংবাদিকতার কোন নিয়মনীতি না জেনেও তিনি বিশাল মাপের একজন সাংবাদিক! এছাড়াও ভাবার বিষয়, কিভাবে পেল আনন্দ টেলিভিশনের শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধির কার্ড।

এবিষয়ে জানতে চাইলে,নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শাহজাদপুরের এক সিনিয়র সাংবাদিক বলেন,জাহিদ হাসান মুন্না এই ভেজাল গবাদি পশুর ঔষধ উৎপাদনকারী কারখানাটি পরিচালনা করার জন্যই তিনি সাংবাদিক পেশা যুক্ত হয়েছে,তিনি আরো বলেন,১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা দিয়ে আনন্দ টেলিভিশন এর শাহজাদপুর উপজেলা প্রতিনিধি হিসেবে কার্ড কিনে এনেছে,এখন তিনি সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে তার ভেজাল ঔষধ কারখানায় রমরমা ব্যবসা চালাচ্ছে।
এছাড়াও ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টালে উল্লেখ করা হয়েছে সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদক চাঁদা দাবী করেছে,চাঁদা দাবী করার এমন কোন সঠিক তথ্য প্রমাণ দেখাতে পারিনি এতেই বুঝা যায় প্রতিবাদের নামে কি ধরনের প্রচার চাচ্ছে কার্ডধারী সাংবাদিক জাহিদ হাসান মুন্না ও তার কিনে নেওয়া ভুঁইফোঁড় নিউজ পোর্টাল গুলো।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়,কার্ডধারী সাংবাদিক ও ভেজাল ঔষধ কারখানার মালিক জাহিদ হাসান মুন্না শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য উঠে পড়ে লেগেছে,এছাড়াও জানা যায়,সারাদিন শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের গেটের সামনে দারোয়ানের মত বসে থাকে শুধু মাত্র সদস্য হওয়ার জন্য। তিনি আরো জানান,যেকোনো ভাবেই হোক যত অর্থের বিনিময়েই হোক শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য হওয়ার জন্য সে রাজি আছে।

শাহজাদপুর প্রেসক্লাবের এক বিশ্বস্ত সূত্র জানায়,জাহিদ হাসান মুন্নার ভেজাল ঔষধ কারখানার বিরুদ্ধে সাংবাদিকরা যেনো সংবাদ প্রকাশ না করতে পারে এর জন্যই তিনি যেকোনো বিনিময়ে প্রেসক্লাবের সাথে যুক্ত হতে চায়।

সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে বিভিন্ন বাধার সম্মুখীন হতে হয়, প্রতিবেদককে বাঁধা দেওয়া ও হুমকি দেওয়ার সকল তথ্য প্রমাণ সংরক্ষিত।

এবিষয়ে,ভেজাল ঔষধ কারখানা টাচ ফার্মার মালিকের কাছে জানতে চাইলে,তিনি সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদক কে বলেন,আমার ফ্যাক্টরীর আশেপাশে গেলে হাত পা ভেঙ্গে দিবো এবং কারখানার গেটের সাথে হাত পা বেঁধে রাখাবো এবং প্রাণ নাশের হুমি প্রধান করে কার্ডধারী সাংবাদিক জাহিদ হাসান মুন্না।

অবৈধ ভেজাল ওষুধ উৎপাদনকারী কারখানা পরিচালনা করার জন্য সাংবাদিকের সাইনবোর্ড লাগিয়ে সাংবাদিকতার মত একটি মহান পেশাকে কলঙ্কিত করছে এই কার্ডধারী সাংবাদিক প্রতারক জাহিদ হাসান মুন্না।

এবিষয়ে,সিরাজগঞ্জ জেলা প্রাণীসম্পদ কর্মকর্তা ডাঃ এ,কে,এম আনোয়ারুল হক এর সঙ্গে কথা হলে তিনি সবুজ বাংলাদেশ কে বলেন, এই বিষয়ে আমি অবগত নাই, তবে আপনি ঢাকা অফিসে যোগাযোগ করেন অথবা আমাদের কে বিস্তারিত জানান,পরবর্তীতে আমরা বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নিবো।

শত কোটি টাকার কাজ নিয়ে পালিয়েছেন এন. এস গ্যালারি ঠিকাদার সাইফুল

* ৫ আগস্টের পর পলাতক সাইফুল, স্থবির কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়ন কাজ  * দুর্নীতি করে শত কোটি টাকার মালিক, কাজ না করেই নিয়েছে বিল
* ৫ থেকে ২০ পার্সেন্টে বেঁচে দিয়েছে ৫০ কোটি টাকার কাজ * ব্যবস্থা নিতে দুদকে অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে কোনো প্রকার সম্পর্ক না থাকার পরও এন এস গ্যালারীর স্বত্ত্বাধীকারি সাইফুল ইসলাম ছিলেন কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের সকল ঠিকাদারি কাজের প্রধান নিয়ন্ত্রক। সাইফুলকে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের হাজার কোটি টাকার কাজের নিয়ন্ত্রকের দায়িত্ব দিয়েছিলে কুমিল্লার সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার। সাইফুলের কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের ঠিকাদারি নিয়ন্ত্রণের কাজ শুরু হয় আরফানুল হক রিফাত মেয়র থাকা অবস্থাতেই। কুমিল্লা সিটির টেন্ডার হওয়া কাজের প্রায় ৪০ থেকে ৬০ ভাগ দেয়া হতো সাইফুলের লাইসেন্স এন এস গ্যালারীর নামে। বিগত তিনটি টেন্ডারে সাইফুল ইসলামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এন এস গ্যালারীর নামে টেন্ডার লয়েস্ট হয়েছে ১ শত ৭২ কোটি টাকার কাজ। তবে সকল কাজই এককভাবে দেখাশোনা করতের সাইফুল। যাদেরকে ভাগ করে কাজ দেওয়া হতো, তাদের কাছ থেকে নিতেন ৫ পার্সেন্ট। এছাড়াও কাজের প্রাক্কলন থেকে শুরু করে ফাইনাল বিল পর্যন্ত নিয়ন্ত্রণ করতেন সাইফুল, সাইফুলের এই দুর্নীত ও কোটি টাকা আত্মসাতের পেছনে জড়িত রয়েছে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উচ্চ পর্যায়ের বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা। যারা ৫ আগস্টের পর থেকে ভোলপাল্টে এখন অন্তর্র্বতী সরকারের গুণকীর্তন গাইছেন। যার সুবাদে সাইফুল অল্প সময়ে কোটি টাকা আত্মসাৎ করে ৫ আগস্টের পর থেকে পলাতক রয়েছে। তবে সাইফুলকে কুমিল্লা সদরের সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার দায়িত্ব দিলেও মেয়র আরফানুল হক রিফাতের মৃত্যুর পর উপ-নির্বাচনে বাহার কন্যা তাহসীন বাহার সূচী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর সাইফুল বনে যায় কুমিল্লা সিটির সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর ব্যক্তি। একটি সূত্র জানায়, কুমিল্লা সিটির টেন্ডার সহ সকল কাজের থেকে নগদ অর্থ আসার বিষয়ে অলিখিত উপদেষ্টা ছিলেন সাইফুল, মেয়র সূচীকে এবিষয়ে সব ধারণা দিতেন তিনি। মেয়রের চেয়ারে বসেই কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কোটি টাকা ডুকতো সূচীর ভ্যানেটি ব্যাগে, তাই সূচীরও এক নাম্বার লোক হয়ে যান সাইফুল ইসলাম। ৫ আগস্টের পর থেকে ভয়ে ও আতঙ্কে থাকা আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকর্মী অভিযোগ করে বলেন, কোনো দিন আওয়ামী লীগ বা অন্য কোনো সংগঠনের সাথে জড়িত ছিলেন না সাইফুল ইসলাম। তিনি হয়ে যায় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের হর্তাকর্তা। দীর্ঘ দিনের পুরনো কর্মীদের বঞ্চিত করে লুটে নেন কুমিল্লা সিটির কোটি টাকার কাজ। অনেকে বলেন, সাবেক এমপি বাহারের দেওয়া কর্মীর কাজও সাইফুল ছলচাতুরি করে আত্মসাৎ করতেন।

অনেকের অভিযোগ আওয়ামী লীগের পুরনো কর্মীর কাজ ও টাকা আত্মসাৎ করেন নব্য আওয়ামী লীগার সাইফুল। তবে বিশ্বস্ত একটি সূত্র জানায়, সাইফুল ইসলামের এই ক্ষমতার উৎস হচ্ছে টাকা। তিনি বহু আগে থেকেই সাবেক এমপি বাহার পরিবারের সকলকে নিয়মিত টাকা দিতেন। যার সুবাদে সাইফুল হয়ে উঠেন বাহার পরিবারের কাছে বিশ্বস্ত ও ক্ষমতাধর ব্যক্তি। বাহার কন্যা সূচী মেয়র হওয়ার পর পরই তিন থেকে চারটি টেন্ডারে প্রায় সাড়ে ৫শত কোটি টাকার টেন্ডার হয় কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনে। যেখান থেকে প্রায় একশত কোটি টাকার মতো কাজের টেন্ডার হয় সাইফুলের এন এস গ্যালরীর নামে। সেখান থেকে সাইফুল একাই নিতেন ৩০ কোটি টাকার কাজ। সাইফুল পলাতক হওয়ায় মুখথুবরে পরেছে কুমিল্লা সিটির উন্নয়ন প্রকল্প। এদিকে কাজ পাওয়া অনেকে জানিয়েছেন, সাইফুল পলাতক হলেও কাজের পার্সেন্টিজ নিয়মিত নিচ্ছেন তিনি। নিজের নামে নেওয়া কাজ বিক্রি করে দিচ্ছেন ১৫ থেকে ২০ পার্সেন্টে। পলাতক হয়েও কিভাবে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের টাকা আত্মসাৎ করছেন। এবিষয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা নিতে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রশাসক ও নির্বাহীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছে একটি গ্রুপ। নামে-বেনামে কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কোটি কোটি টাকা আত্মসাতের বিষয়ে তদন্ত করে সাইফুল ইসলামের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ ও তার লাইসেন্স বাতিলের দাবি জানান ঠিকাদার ও কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের কর্মকর্তা সহ অনেকে। ভুক্তভোগিরা কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের বর্তমান প্রশাসক ও নির্বাহীর কাছে দেওয়া লিখিত অভিযোগে বলেন, সাইফুল ইসলাম, প্রোপ্রাইটর-এন. এস গ্যালারি. পিতা-মোঃ আঃ মালেক (তিশার ড্রাইভার), মাতা-আনোয়ার বেগম, গ্রাম-চম্পকনগর, পোঃ তালপুকুর পশ্চিম পাড়, কুমিল¬া সিটি করপোরেশন, কুমিল¬া। কুমিল¬ার সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহার, তার মেয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র তাহসিন বাহার সূচনা-এর যোগসাজশে তাদের ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে অবৈধভাবে ভুয়া কাগজপত্র বানিয়ে, কাজ না করে বিল ভাউচার তৈরি করে, ভুয়া পে-অর্ডার বানিয়ে, ভুয়া ব্যাংক গ্যারান্টার হয়ে, চেক জালিয়াতি করে, ভুঁয়া মানি রিসিট তৈরি করে, আংশিক কাজ সম্পন্ন করে প্রকল্পের পুরো বিল হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সূত্রে জানা যায়, পতিত আওয়ামী লীগ সরকার কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের জন্য কয়েক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছিলো। নগরবাসীর প্রত্যাশা ছিল নগরীর জীর্ণ শীর্ণ সড়ক ব্রিজ কালভার্ট, ড্রেনসহ বিভিন্ন গ্রামীণ অবকাঠামোর ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করবেন। নগরবাসীর চলাচলে নিরাপদ সড়ক তৈরি করবেন। কিন্তু সে আশায় গুড়েবালি। চোর না শোনে ধর্মের কাহিনী। কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের উন্নয়নের নামে ঠিকাদার সাইফুল বাহিনী যে লুটপাট করেছে তা নজিরবিহীন। স্থানীয়দের সাথে আলাপ করে জানা যায়, কুমিল¬া সিটি কর্পোরেশনের কোনো উন্নয়ন কাজ করতে হলে আগে সাইফুলের সাথে আগে যোগাযোগ করতে হবে, তারপর অন্যান্য কর্মকর্তা। সাইফুল দাম্বিকতার সাথে বলেন, এখানে যত বাজেট বা কাজের সিডিউল সব আমার হাত থেকে হয়। তাই অন্যত্র যোগাযোগ করে কোনো লাভ নেই। যা আমি পারবো, তা অন্য কেউ পারবে না।

অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, এক সময় কুমিল্লার এমপি বাহারের একচ্ছত্র আধিপত্য ছিল, যা বর্তমানে দখল করেছে সাইফুল বাহিনী। সাইফুলের পরিবারের একসময় নূন আনতে পানতা ফুরানোর অবস্থা ছিল। তার বাবা কুমিল্লা এলাকার তিশা গাড়ীর ড্রাইভার ছিল। সেই ড্রাইভারের ছেলে আজ কোটি কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দোসর কুমিল্লার সাবেক এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিনের একান্ত আপনজন হিসেবে তিনি এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে চলেছেন। শেখ হাসিনার দম ফুরিয়ে গেলেও এই সাইফুলের দম ফুরায়নি। বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের ১৬ বছরে ক্ষমতাসীনদের বিপুল সম্পদ অর্জনের ইতিহাস তো সবারই জানা। এ অর্থ সম্পদের পাহাড় কেবল তৎকালীন মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী ও সংসদ সদস্যরাই গড়ে তুলেননি, তাদের অনুসারী দোসররাও সৃষ্টি করেছেন নতুন নতুন ইতিহাস, বানিয়েছেন কোটি কোটি টাকার সম্পদ গাড়ি-বাড়ি। এমপি বাহার এবং তার কন্যা তাহসিন বাহার সূচনার খুব কাছাকাছি থাকায় ছাইফুল লাগামহীন অর্থের নাগাল পেয়ে সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে ভুল করেননি। তাই রাতারাতি গড়ে তুলেন শক্তিশালী সিন্ডিকেট বাহিনী। আর অল্পদিনে দিনে গড়ে তোলেন বিলাস বহুল গাড়ি বাড়ি। ব্যাপক দুর্নীতি, কাজ না করে বিল উত্তোলন ও ভুয়া বিল ভাউচারের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ এবং ভাগভাটোয়ারা ও কমিশন বাণিজ্যের মূল হোতা সাইফুল ইসলাম রয়েছে ধরা ছোঁয়ার বাইরে, কেউ কেউ বলছেন ৫ আগস্টের পর থেকে সাইফুল দুবাই বা সিঙ্গাপুরে পালিয়ে গিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, সাইফুল ইসলাম দুর্নীতির মাধ্যমে যে পাহাড়সম সম্পদ গড়েছেন, তা রূপকথার গল্পকেও হার মানায়। সাইফুল ইসলাম সবার সাথে মিলে যে, সিন্ডিকেট বাণিজ্য করেছে তা সবার মুখে মুখে আলোচিত হলেও তার ভয়ে কেউ কখনও কিছু বলার সাহস পায় নাই। এবিষয়ে জানার জন্য কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান নির্বাহীকে বার বার কল দিয়েও তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম