আকিজ তাকাফুল লাইফে সিইও নিয়োগ নিয়ে ফের অনিয়মের অভিযোগ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

আকিজ তাকাফুল লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানি লিমিটেডের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নিয়োগে আবারও অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। নিয়মনীতি উপেক্ষা করে সদ্য অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) পদে নিয়োগ পাওয়া একজন কর্মকর্তার সিইও পদে নিয়োগ অনুমোদনের জন্য আবেদন করেছে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ।

বিশ্বস্ত সূত্র জানায়, সম্প্রতি আকিজ তাকাফুলের বোর্ড সাজ্জাদুল করিম নামের এক কর্মকর্তার সিইও নিয়োগ চেয়ে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের (আইডিআরএ) কাছে আবেদন করেছে। অথচ তিনি এর আগে কোনো বীমা কোম্পানিতে সিইও বা অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এএমডি) পদে দায়িত্ব পালন করেননি। মাত্র ২৪ দিন আগে তাকে আকিজ তাকাফুলে এএমডি পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। এর আগে তিনি প্রতিষ্ঠানটিতে ছয় মাস কনসালট্যান্ট পদে ছিলেন।

বীমা আইন ও নিয়োগ প্রবিধান অনুযায়ী, সিইও পদে নিয়োগের জন্য প্রার্থীর অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে কমপক্ষে দুই বছরের অভিজ্ঞতা অথবা পূর্বে সিইও পদে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। পাশাপাশি, এই নিয়োগের জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ এবং আবেদনকারীদের সাক্ষাৎকার গ্রহণের বাধ্যবাধকতাও রয়েছে। কিন্তু এসব আইনগত শর্ত উপেক্ষা করেই সাজ্জাদুল করিমের নিয়োগ অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

সূত্র জানায়, আকিজ তাকাফুল লাইফ ইন্স্যুরেন্স প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে চার বছর ধরে কোনো সরকার অনুমোদিত সিইও ছাড়াই পরিচালিত হয়ে আসছে। যদিও আইন অনুযায়ী, সর্বোচ্চ ছয় মাসের বেশি এ পদ শূন্য রাখা যাবে না। এর আগে কোম্পানির চেয়ারম্যান শেখ শামিম উদ্দিনের নিকটাত্মীয় আলমগীর চৌধুরী সিইও পদে নিয়োগের জন্য প্রস্তাবিত হলেও তার শিক্ষাগত যোগ্যতা নিয়ে বিতর্ক ওঠায় অনুমোদন পাওয়া সম্ভব হয়নি। বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়ায়।

বর্তমানে কোম্পানিটির পরিচালনা বোর্ডে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে এ ধরনের অনিয়ম হচ্ছে বলে জানা গেছে। নতুন বোর্ড পরিচালক মুহম্মদ ফুয়াদ আহমেদের পছন্দের লোক হিসেবে সাজ্জাদুল করিমকে দ্রুত সিইও করার প্রচেষ্টা চলছে।

আইডিআরএ’র এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “সিইও নিয়োগে নির্ধারিত আইন রয়েছে। এভাবে নিয়ম ভেঙে কোনো নিয়োগ হলে তা বীমা সেক্টরে শৃঙ্খলা রক্ষার ক্ষেত্রে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।”

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে কোম্পানির চেয়ারম্যান শেখ শামিম উদ্দিনের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

কমলো ডলারের দাম, বাড়লো টাকার মান

ডেস্ক রিপোর্ট:

ডলারের বিপরীতে বাংলাদেশি টাকা শক্তিশালী হয়েছে। গত ১০ দিনে প্রবাসী আয়ের তীব্র প্রবাহ এবং প্রত্যাশিত রপ্তানি আয়ে বাংলাদেশি টাকার বিপরীতে মার্কিন ডলারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, ডলারের দাম কমার কারণে টাকার মান বেড়েছে। এতে মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ আরও কমছে। পাশাপাশি ডলারের বাড়তি দামের কারণে আমদানিজনিত মূল্যস্ফীতির চাপও কমবে। একই সঙ্গে বৈদেশিক দেনা পরিশোধের ক্ষেত্রেও কম দামে ডলার পাওয়া যাবে। এতে দায়ও কমবে।

গত রোববার (১৩ জুলাই) বেশিরভাগ ব্যাংক ডলার বিনিময় করেছে প্রতি ডলার ১২০.৩০ টাকা থেকে ১২১.২০ টাকায়, যেখানে গত সপ্তাহের শুরুতে ডলারের দর ছিল ১২২.৮০ টাকা থেকে ১২২.৯০ টাকা। সবশেষ তথ্যমতে, টাকার বিপরীতে ডলারের দাম কমে ১২০ টাকার নিচে নেমে এসেছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার (১৪ জুলাই) মার্কিন ডলার ১১৯ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ১২০ টাকা ১০ পয়সায় ব্যাংকগুলো কেনাবেচা করেছে। এর আগে, ১৪ জুলাই তা ১১৯ টাকায় নেমে আসে। যা গত ১১ মাসের মধ্যে সর্বনিম্ন। এর আগে গত বছরের আগস্টে সর্বনিম্ন ১১৯ টাকা ছিল।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে প্রবাসী বাংলাদেশিরা রেকর্ড ৩০ দশমিক ৩৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছে। যা দেশের ইতিহাসে এক অর্থবছরে প্রাপ্ত সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স।

এটি আগের অর্থবছর (২০২৩-২৪) এর ২৩ দশমিক ৯১ বিলিয়ন ডলারের তুলনায় ২৬ দশমিক ৮০ শতাংশ বেশি। এই রেমিট্যান্স প্রবাহের ধারাবাহিকতায়, ২০২৫-২৬ অর্থবছরের জুলাই মাসের প্রথম ১২ দিনে প্রবাসীরা প্রায় ১ হাজার ৭১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন।

এই সময়ে প্রবাসীদের প্রেরিত গড় দৈনিক রেমিট্যান্সের পরিমাণ ছিল ৮৯ দশমিক ২৫ মিলিয়ন ডলার। যেখানে গত বছরের একই সময়ে দেশে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ছিল ৯৪৮ মিলিয়ন ডলার।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর প্রবাসী আয় (রেমিট্যান্স) এবং রপ্তানি আয় দুটোই বাড়ছে। এর ফলে বাজারে ডলারের জোগান স্বাভাবিক রয়েছে। অন্যদিকে কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতির মতো পণ্যের আমদানির খরচ তেমন বাড়েনি। যার প্রভাবে ডলারের ওপর চাপ কমেছে এবং দাম কমতির দিকে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, গভর্নরের নির্দেশনায় রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো বাজার থেকে ডলার কিনে আমদানি বিল পরিশোধ করেছে। ফলে তাদের আর ব্যাকলগ নেই। এখন রেমিট্যান্স ও রপ্তানি আয় ভালো থাকায় ডলারের জোগান স্বাভাবিক রয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম