সনাতনীরা আমাদের ধর্মগ্রন্থ পড়ে না,আমাদের আচরণই আমাদের ধর্মের বহিঃপ্রকাশ- বাবর

চ্ট্টগ্রাম প্রতিনিধিঃ

ঢাক-কাঁসরের বাদ্যি-বাজনা, রাত্রি উজ্জ্বল করা আরতি ও ভক্তদের পূজা-অর্চনায় বেজে উঠল বিদায়ের সুর। আজ বুধবার শুভ বিজয়া দশমী। হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব পাঁচ দিনের শারদীয় দুর্গোৎসব শেষ হয়েছে প্রতিমা বিসর্জনের মধ্য দিয়ে। মর্ত্যলোক ছেড়ে বিদায় নিয়েছেন দেবী দুর্গা। অশ্রুসজল চোখে হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিসর্জন দিয়েছেন প্রতিমা। প্রতিমার গাড়িগুলো একের পর এক লাইন ধরা। তাদের এই যাত্রা যেন নির্বিঘ্নে হতে পারে, সেজন্য ঘর্মাক্ত দেহে যানযট সরিয়ে দিচ্ছে পাঞ্জাবি পড়া একজন মানুষ। মানুষটি করোনা প্রতিরোধক বুথের উদ্ভাবক, হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

শারদীয় দূর্গাউৎসবের বিজয় দশমী উপলক্ষে এনায়েত বাজার গোয়ালপাড়া হাজারী পুকুরে আজ বিকাল ৪টা ৩০ মিনিটে প্রতিমা বির্সজনের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে হেলাল আকবর চৌধুরী বাবর বলেন, “আমি একজন মুসলিম। বিধর্মী ভাইদের রক্ষা করা আমার নৈতিক দায়িত্ব। তাছাড়া একে অপরের কল্যান করতে হবে মানুষ পরিচয়ে। তাতে ধর্মের প্রতি ধর্মের শ্রদ্ধা বাড়বে। বেড়ে যাবে পারস্পরিক সম্প্রীতির। আমি সকল মুসলমানদের আহ্বান জানাবো তারা যেন সকলে এ ধরনের কল্যানকর কাজে এগিয়ে আসে। সনাতনী আমাদের ধর্মগ্রন্থ কখনও পড়ে না। আমাদের আচার-আচরণই আমাদের ধর্মের বহিঃপ্রকাশ। তাই সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প উপরে ফেলে অসাম্প্রদায়িক চেতনার মাধ্যমে সকল ধর্মের প্রতি সম্মান প্রতিষ্ঠিত করতে হবে।তাছাড়া আমাদের মুসলিম প্রধান দেশে সনাতনী মানুষের কোন সমস্যা হলে তার দায়ভার আমরা এড়াতে পারি না। তাই তাদেরকে সহযোগিতা করার মাধ্যমে নিজ ধর্মের সম্মানও অক্ষুন্ন রাখার চেষ্টা করছি ”

এসময়ে তিনি আরও বলেন, “বাংলাদেশের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর আদর্শকে ছোটবেলা থেকে ধারণ করেই অসাম্প্রদায়িক চেতনায় গড়ে উঠেছি। এ বছরের দূর্গা পূজা যেন নির্বিঘ্নে করতে পারে, তার জন্য চট্টগ্রামের প্রতিটা পাড়া মহল্লায় সম্প্রীতি কমিটি তৈরি করার আহ্বান জানিয়েছি।”

এসময়ে আরও উপস্থিত ছিলেন এসময় উপস্থিত ছিলেন কাউন্সিলর সলিমুল্লাহ বাচ্চু ,সংরক্ষিত কাউন্সিলর নিলু নাগ,মোঃ ঈসমাইল মনু, মানিক ঘোষ, অশোক ঘোষ , বিপু ঘোষ বিলু , সহোদেব ঘোষ, গীতা র্রুদ্র, মিনা চৌধুরী, শিবু প্রসাদ চৌধুরী , সুজিত ঘোষ,মো একরামুল্লা, দিপু নাথ ,গোপাল ঘোষ, রতন ঘোষ ,মোরশেদ আলম, একে মাসুদ , মোঃ ফরিদ, রাজু ঘোষ, বিকাশ ঘোষ, রকি ঘোষ সহ এনায়েত বাজারের ১৪ টি পূজা মন্ডপ যথাক্রমে এনায়েত বাজার কেদারনাথ তেওয়ারি কলোনী সনাতন ধর্ম দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদ , গোয়ালপাড়া বাবুলাল ঘোষ পূজা উদযাপন পরিষদ , গোয়ালপাড়া মহিলা সমিতি পূজা উদযাপন পরিষদ , গোয়ালপাড়া শিল্পী সংঘ পূজা উদযাপন পরিষদ, মঙ্গলময়ী কালীবাড়ি পূজা উদযাপন পরিষদ , ব্রজধাম দূর্গা মন্দির পূজা উদযাপন পরিষদ , রেলওয়ে কর্মকর্তা দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদ হাসপাতাল কলোনী , ১নং এনায়েত বাজার দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদ (সংগীত পরিষদ) , জুবিলী রোড পূজা উদযাপন পরিষদ , লাভ লেইন দয়াময়ী কালী বাড়ী দূর্গাপূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ও সাধারন সম্পাদকবৃন্দ উপস্হিত ছিলেন।

সরকার উৎখাত করা এতই সোজা

স্টাফ রিপার্টার॥
বিজয় আমরা এনেছি, সেটা যেন কেউ নস্যাৎ করতে না পারে সেজন্য সবাইকে সচেতন থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘১০ ডিসেম্বর আসছে সরকার উৎখাত করতে। সরকার উৎখাত করা এতই সোজা? আওয়ামী লীগ পারে; আইয়ুব খান, এরশাদ ও খালেদা জিয়াকে উৎখাত করেছি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় বসলে চক্রান্ত ষড়যন্ত্র করতে পারে। ২০০১-এ ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতায় আসতে দেয়নি। সে বিষয়ে (চক্রান্ত ষড়যন্ত্র) মানুষকে সচেতন থাকতে হবে।’

রোববার (১৮ ডিসেম্বর) মহান বিজয় দিবসের বিশেষ আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ মিলনায়তনে এ সভার আয়োজন করে আওয়ামী লীগ।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আগামীর বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। বিজয়ের পতাকা সমুন্নত রেখে আমরা জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়ে তুলবো।’

আমদানি ব্যয় বাড়ায় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের অনেক জিনিস আমদানি করতে হয়। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে আমদানি ব্যয় বেড়েছে। সেজন্য দামও বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী তেলের মূল্য ও গ্যাসের মূল বেড়ে গেছে। সেজন্য আমাদের কিছুটা সাশ্রয়ী হতে হচ্ছে। আমরা সবার ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেবো বলেছিলাম, সে কথা তো রেখেছি। এখন বিশ্বে দাম বাড়লে আমাদের কী করার আছে!’

বিদ্যুতে ভর্তুকিমূল্য থাকছে না
বিদ্যুতের দাম উৎপাদনের খরচ অনুযায়ী দিতে হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা এখন ভর্তুকিমূল্যে দিচ্ছি। সামনে আর দিতে পারবো না। আমাদের যেটা খরচ সেটা কিন্তু দিতে হবে। তাহলে দেবো, না হলে দেবো না।’

কৃষিপণ্য উৎপাদনের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের আগাম সাবধানতা নিতে হবে। যাতে সংকটের পরিস্থিতিতে না পড়ি। সেজন্য জমিতে বাগানে বা ছাদে হলেও কিছু উৎপাদন করেন।’

বাম-ডান মিলে যায় কী করে?
আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘কোথায় বামপন্থি আর কোথায় ডানপন্থি। যারা বামপন্থী তারা ৯০ ডিগ্রি ঘুরে গেছে। বাম, স্বল্পবাম ও অতিবাম সবাই এখন জামায়াত-বিএনপির সঙ্গে মিলে গেছে। এজন্যই বলা হয়, কী বিচিত্র বাংলাদেশ!’

তিনি বলেন, ‘১০ ট্রাক অস্ত্র মামলা, দেশের টাকা পাচার, এতিমের টাকা আত্মসাৎ করার মামলায় সাজাপ্রাপ্ত আসামির নেতৃত্বে বড় বড় তাত্ত্বিকরা এক হয়ে যায় কীভাবে? সেটাই আমার প্রশ্ন। কোথায় গেলো তাদের আদর্শ?’

শেখ হাসিনা বলেন, ’৭৫-এর পরে যারাই ক্ষমতায় এসেছে, তারা চেয়েছে দেশকে ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করতে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধুলোয় মিশিয়ে দিতে চেয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারে এসেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সমুন্নত রাখছে।

এসময় মুক্তিযোদ্ধাদের মর্যাদা দেওয়া এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনাভিত্তিক দেশ গড়ার কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য মতিয়া চৌধুরী, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, সিমিন হোসেন রিমি, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি বজলুর রহমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ।

সভা সঞ্চালনা করেন প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম