
সাতক্ষীরা সংবাদদাতা:
সাতক্ষীরার তালায় ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে মো. হাবিবুর মোড়ল (৩০) নামে এক ভ্যানচালক যুবককে হত্যা করা হয়েছে। সোমবার (২১ জুলাই) রাত আনুমানিক সাড়ে ৯টার দিকে সাতক্ষীরার তালা উপজেলার আটারই গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। পুলিশ বলছে, পারিবারিক কলহ থেকেই এ হত্যাকাণ্ডের সূত্রপাত। নিহত হাবিবুর ওই গ্রামের আব্দুল্লাহ মোড়লের ছেলে। এদিকে এ ঘটনায় নিহতের মাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
তালা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মাইনউদ্দিন জানান, সংঘাতের খবর পেয়ে তালা থানা পুলিশ রাতেই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় এবং তদন্ত শুরু করে। হাবিবুরের নিহতের ঘটনার পর রাত সাড়ে ১০টার দিকে হাবিবুরের মা ও স্ত্রী হাবিবুরকে গুরুতর আহত অবস্থায় তালা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। পরে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। নিহতের মাথা ও শরীরজুড়ে ধারালো অস্ত্রের একাধিক কোপের চিহ্ন ছিল। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আর তার মা পারুল বেগমকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার দুপুরে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
ঘটনার আগে মোটরসাইকেল কেনা নিয়ে স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে হাবিবুরের তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। তিনি মাদকাসক্ত ছিলেন বলেও দাবি করেন স্থানীয়রা। একপর্যায়ে তিনজনের মধ্যে হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। পরে তা মারাত্মক রূপ নেয়। ওসি মাইন জানান, মোটরসাইকেল কেনা নিয়ে স্ত্রী শান্তা খাতুন ও মা পারুল বেগমের সঙ্গে হাবিবুরের তীব্র বাকবিতণ্ডা হয়। যা একপর্যায়ে হাতাহাতিতে রূপ নেয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে পারুল বেগম এ তথ্য পুলিশকে জানিয়েছে।
নিহতের স্ত্রী শান্তা খাতুন বলেন, আমার স্বামী মাদকাসক্ত। প্রায়ই মাদক সেবন করে আমাকে ও শ্বাশুড়িকে মারধর করতো। মোটরসাইকেল কেনার জন্য চাপ দিতো। ঘটনার রাতে সে আবারও টাকা চেয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। আমি বাধা দিতে গেলে সে আমাকে মারধর করে। এতে আমি অজ্ঞান হয়ে যাই। পরে জ্ঞান ফিরে দেখি সে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। প্রতিবেশীদের কাছ থেকে জানতে পারি হাবিবুর তার মাকে কোপাতে গেলে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে নিজের শরীরেই হাসুয়ার কোপ লাগে।
হাবিবুরের মা পারুল বেগম বলেন, ছেলে মাদকাসক্ত হয়ে পরিবারে অশান্তি করতো। স্ত্রীকে মারধর করছিল। আমি বাধা দিতে গেলে সে আমাকে কোপাতে আসে। ধস্তাধস্তির সময় হাসুয়া তার কপাল ও গলায় লেগে যায়।সাতক্ষীরার তালাতেই এ ঘটনার আগের দিন রোববার (২০ জুলাই) ধারালো অস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়ে কুপিয়ে মাদরাসা শিক্ষক শরিফুল গাজীকে (৩৮) হত্যার পর গণপিটুনিতে নিহত হয় হামলাকারীও। একজন মানসিক ভারসাম্যহীনকে রাজু গাজী (৩৬)-কে গ্রেপ্তার করে। সাতক্ষীরার তালা উপজেলার খেশরা ইউনিয়নের শাহাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।