‘টাকা তুলে হাসিনাকে আবার ফেরাবো’ বলা তরুণসহ গ্রেফতার ৪

ডেস্ক রিপোর্টঃ সচিবালয়ে ঢুকে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এদের মধ্যে ‘টাকা তুলে শেখ হাসিনাকে আবার ফেরাবো’ বলা এক তরুণও রয়েছেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ জুলাই) সকালে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা বিভাগের উপ-কমিশনার মাসুদ আলম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

তিনি জানান, গ্রেফতার চারজনকে আদালতে তোলা হবে। তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করবে পুলিশ।

গ্রেফতার চারজন হলেন- বাহ্মণবাড়িয়ার বর্ডার বাজার থানাধীন মধ্যপাড়ার বাসিন্দা জয়নাল আবেদীনের ছেলে আশিকুর রহমান তানভীর (১৯), বরিশালের বাবুগঞ্জ থানাধীন দেহেরগতী এলাকার বাসিন্দা ফ্রান্সেস সিকদারের ছেলে জেফরী অভিষেক সিকদার (২১), কুমিল্লার লাকসাম থানাধীন পশ্চিমগাঁও এলাকার বাসিন্দা আমির হোসেনের ছেলে আবু সফিয়ান (২১) ও মুরাদনগর থানাধীন সালিয়াকান্দি ইউনিয়নের নিয়ামত কান্দির বাসিন্দা মৃত নূর নবীর ছেলে মো. শাকিল মিয়া (১৯)।

রাজধানীর মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজে বিমানবাহিনীর যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় ছয় দাবি নিয়ে সচিবালয়ে ঢুকে পড়েন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। এ সময় সচিবালয়ের ভেতর হামলাও চালানো হয়। ওইদিন শাকিল মিয়া নামে এক তরুণের দেয়া বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তাকে বলতে শোনা যায়, ‘যদি শিক্ষা উপদেষ্টা পদত্যাগ না করেন, আমরা সবাই টাকা তুইলা শেখ হাসিনারে আবার বাংলাদেশে আনবো। শেখ হাসিনা ভালো ছিল।’

এর আগে সচিবালয়ে ঢুকে হামলা, গাড়ি ভাঙচুর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে গত মঙ্গলবার ১২০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা করে পুলিশ। বুধবার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত মামলাটির এজাহার গ্রহণ করেন। সেইসঙ্গে আগামী ২৮ আগস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয়া হয়।

মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ২২ জুলাই ঢাকার বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে অজ্ঞাতনামা এক হাজার থেকে ১২০০ শিক্ষার্থী ও স্বার্থান্বেষী দুষ্কৃতিকারীরা মাইলস্টোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ঘটে যাওয়া মর্মান্তিক দুর্ঘটনাকে কেন্দ্র করে এইচএসসি পরীক্ষা দেরিতে স্থগিতসহ বিভিন্ন দাবি নিয়ে ‘মার্চ টু শিক্ষা মন্ত্রণালয়’ কর্মসূচি পালন করে।

প্রথমে শিক্ষার্থীরা শিক্ষাবোর্ড ও শিক্ষাভবনের উদ্দেশে মার্চ করলেও পরে শিক্ষাভবন থেকে বেরিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উদ্দেশে সচিবালয়ের সামনে অবস্থান নেন। আন্দোলন চলাকালে নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ সচিবালয়ের সকল গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়। তাদের সচিবালয়ে প্রবেশ না করার জন্য বিভিন্নভাবে অনুরোধ করা হয়।

পরে তারা বেআইনি জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে শাহবাগ সচিবালয়ের মেইন গেটের সামনে এসে দাঙ্গা সৃষ্টি করে এবং গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। তখন বাধা দিলে কর্তব্যরত পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আনসার বাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠিসোঁটা, ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অনেকে গুরুতর আহত হন।

এছাড়া, তারা সরকারি গাড়ি ভাঙচুর করে ক্ষতি সাধন করে এবং বিভিন্ন ধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করেন।

জুলাই গণহত্যাকারীদের কেউই ছাড় পাবে না

জুলাই গণহত্যাকারীদের কেউই ছাড় পাবে না

ডেস্ক রিপোর্ট:

জুলাই গণহত্যাকারীদের কেউই ছাড় পাবে না বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, যারা মনে করেছিলেন বাংলাদেশে গণহত্যা চালিয়ে পার পাওয়া যাবে কিংবা প্রতিবিপ্লব ঘটিয়ে বিচারকাজকে বানচাল করা যাবে, তাদের জন্য পরিষ্কার বার্তা হলো যারা অপরাধ করেছেন তারা কেউ ছাড় পাবেন না। বিচারের প্রক্রিয়া কোনোভাবেই বন্ধ হবে না।

সোমবার (১১ আগস্ট) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল প্রাঙ্গণে প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন চিফ প্রসিকিউটর।

আজ জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে রাজধানীর চানখারপুলে শিক্ষার্থী আনাসসহ ছয়জনকে হত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন তাজুল ইসলাম।

সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন শেষে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, যেসব তরুণরা রক্ত দিয়ে বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বার মুক্ত করেছেন, তাদের স্বজন-পরিবার বেঁচে আছেন। তাদের সাক্ষ্যের মাধ্যমেই দেড় হাজারেরও বেশি মানুষের জীবন যাওয়া পরিবারের প্রতি জাস্টিস করার যে চেষ্টা, সেটা রাষ্ট্রের পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হবে।

চানখারপুলে মানবতাবিরোধী অপরাধের এ মামলার প্রথম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য শুরু করেন শহিদ আনাসের বাবা শাহরিয়ার খান পলাশ। এছাড়া সাক্ষী হিসেবে তার মাও উপস্থিত রয়েছেন।

এর আগে, ১৪ জুলাই এ মামলায় পলাতক চার আসামিসহ আটজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল।

বর্তমানে এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে রয়েছেন চারজন। তারা হলেন- শাহবাগ থানার সাবেক ওসি (অপারেশন) মো. আরশাদ হোসেন, কনস্টেবল মো. সুজন মিয়া, মো. ইমাজ হোসেন ইমন ‍ও মো. নাসিরুল ইসলাম।

গত ৩ জুলাই চানখারপুলের মামলাটির অভিযোগ গঠন নিয়ে দ্বিতীয় দিনের শুনানি শেষ হয়। সেদিন আসামিপক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সিফাত মাহমুদ শুভ। প্রসিকিউশনের পক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম ও গাজী এমএইচ তামিম।

এছাড়া পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পরও ট্রাইব্যুনালে হাজির হননি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চারজন। বাকিরা হলেন- ডিএমপির সাবেক যুগ্ম কমিশনার সুদীপ কুমার চক্রবর্তী, রমনা অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার শাহ আলম মো. আখতারুল ইসলাম ও রমনা অঞ্চলের সাবেক সহকারী কমিশনার মোহাম্মদ ইমরুল।

গত ২৯ জুন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষ হয়। তবে অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আবেদন শুনানির জন্য সময় চান আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।

এর আগে গত ৩ জুন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তাকে হাজির করতে পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। ২৫ মে এ মামলায় আট পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। ওই দিন পলাতক চার পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানাও জারি করেন ট্রাইব্যুনাল।

উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট চানখারপুল এলাকায় শিক্ষার্থীদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে গুলি চালায় পুলিশ। এতে বহু হতাহতের ঘটনা ঘটে। শহীদ হন শাহরিয়ার খান আনাস, শেখ মাহদী হাসান জুনায়েদ, মো. ইয়াকুব, মো. রাকিব হাওলাদার, মো. ইসমামুল হক ও মানিক মিয়া শাহরিক।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া