কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে মা ছেলের মৃত্যু

কুষ্টিয়া সংবাদদাতা:

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলার চাঁদগ্রাম ইউনিয়নে বিদ্যুতের তারে জড়িয়ে মা ছেলের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। শনিবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে ব্র্যাক অফিস সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন ওই এলাকার হাবিল সদ্দারের ছেলে বিপ্লব সরদার (৩৬) ও তার মা জোসনা খাতুন (৫২)।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায় প্রতিদিনের মতো শনিবার সকালে বিপ্লব সরদার পাওয়ার টিলার দিয়ে মাঠে চাষ করতে যান। চাষ শেষে বাড়িতে ফেরার পথে তাদের নিজস্ব মুরগির খামারের ছিঁড়ে পড়া বিদ্যুতের তার টিলারের সঙ্গে জড়িয়ে যায়। এতে টিলারের চালক বিপ্লব বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে চিৎকার শুরু করেন।

এ সময় খামারের ভেতরে থাকা তার মা জোসনা খাতুন ছেলের চিৎকার শুনে দৌড়ে এসে তাকে বাঁচানোর চেষ্টা করলে তিনিও বিদ্যুতায়িত হন। ঘটনাস্থলেই দু’জনের মৃত্যু হয়। পরিবারের সদস্যরা তাৎক্ষণিকভাবে মা ও ছেলেকে উদ্ধার করে ঘরে নিয়ে যান এবং স্থানীয় চিকিৎসককে খবর দিলে তিনি দুজনকেই মৃত ঘোষণা করেন।

এই মর্মান্তিক মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে। আত্মীয়-স্বজনদের কান্নায় ভারী হয়ে ওঠে পুরো পরিবেশ। ভেড়ামারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবদুর রব তালুকদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, নিহত মা ও ছেলে নিজস্ব মুরগির খামারের বিদ্যুৎ লাইনের তার ছিঁড়ে গিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয়েছেন। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।

সখীপুরে একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধার মৃত্যু

স্টাফ রিপোার্টারঃ

টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ফাতেমা আক্তার (৬৭) মারা গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত নানান রোগে ভুগছিলেন।

শুক্রবার দুপুর ২টার দিকে উপজেলার আন্দি গ্রামের নিজ বাড়িতে তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, তিন মেয়েসহ অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন।

এদিন বিকাল ৫টার দিকে উপজেলা প্রশাসন তাকে গার্ড অব অনার দেয়। এশার নামাজের পর জানাজা শেষে তাকে দাফন করা হয়। উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম এ গনি উপজেলার একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ফাতেমার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

১৯৭১ সালে উপজেলার বহেড়াতৈল মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্পের রান্নাবান্না ও সেন্ট্রির দায়িত্ব পালন করেন ফাতেমা। যুদ্ধকালীন সখীপুরে মুক্তিযোদ্ধাদের পাঁচটি কোম্পানি গড়ে ওঠে। তখন বিভিন্ন ক্যাম্পে খবর আনা-নেওয়া ও চিঠি আদান-প্রদানের দায়িত্ব দেওয়া হয় ফাতেমাকে। কেউ যেন বুঝতে না পারে এ জন্য তাকে ছেলেদের কাপড় পরানো হতো। চুলও কাটা হয়েছিল ছেলেদের মতো করে। স্বাধীনতার পর সামাদ নামের প্রতিবেশী এক যুবককে বিয়ে করেন ফাতেমা। বিয়ের কয়েক বছর পর চার সন্তানসহ ফাতেমাকে ফেলে চলে যান সামাদ। শুরু হয় ফাতেমার কষ্টের জীবন। মানুষের বাড়ি বাড়ি কাজ করে সংসার চালাতেন ফাতেমা। এরপর সন্তানদের নিয়ে চলে আসেন সখীপুরে। বিয়ে করেন মোবারক নামের এক ব্যক্তিকে। দুজনই চাকরি নেন পৌরসভার সুইপার (পরিচ্ছন্নতাকর্মী) হিসেবে। অন্যের জমিতে একটি ছাপরা ঘর তুলে থাকতেন তারা। কিছুদিন যেতে না যেতেই মোবারক তাকে ছেড়ে অন্যত্র বিয়ে করে চলে যান। আবার শুরু হয় ফাতেমার কষ্টের জীবন।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিলের সাবেক কমান্ডার এম এ গনি বলেন, স্বাধীনতার দীর্ঘ সময় (এরশাদ সরকারের সময়) পর মুক্তিযোদ্ধার তালিকায় নাম ওঠে ফাতেমার। তিনি সখীপুরের একমাত্র নারী মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। সর্বশেষ পৌর শহরের উত্তর পাশে আন্দি এলাকার বনের জমিতে ছিল তার বর্তমান ঠিকানা।

 

সবা:স:জু- ৭৩০/২৫

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম