পিরোজপুরের সুনীল হালদারের ‘অবৈধ চাপে’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ!

বিশেষ প্রতিবেদক
“আমি মন্ত্রীর লোক,আমার ‘চাপ’ আপনি সামলাতে পারবেন না। আমার কথামত কাজ না করলে বিপদে পড়বেন। আপনাকে খাগড়াছড়ি না হয় বান্দরবান বদলী করা হবে। মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরে আমি যা বলি তাইই হয়। এখন ভেবে দেখেন, আমার কথামত কাজ করবেন না বদলী হবেন।” এতা গেলো বদলীর হুমকি । এর বাইরেও রয়েছে অরো ভয়ংকর তৎপরতা। তিনি প্রায়ই মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পের পিডির কাছে ঠিকাদারী কাজ দাবী করেন। ঠিকাদারদের পক্ষে তদবীরও করেন। এমন কি এই দুই অধিদপ্তরের মহাপরিচালকদের কাছেও নানা তদবীর নিয়ে হাজির হন। কখনো কখনো ল্যান্ড ফোনে বা মোবাইল ফোনে অনৈতিক দাবীও জানান। তার এই অনৈতিক ‘চাপে’ মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন । বাধগ্রস্থ হচ্ছে সরকারি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। কে এই মহাক্ষমতাধর ব্যক্তি? কি তার পরিচয়? তিনি কি আদৌ মন্ত্রীর একান্ত লোক? নাকি সবই তার মুখের ফাঁকা বুলি? নাকি মন্ত্রীর সুনাম ক্ষুন্ন করতে তিনি কোন বিশেষ মিশনে নেমেছেন? এসব প্রশ্ন এখন সবার মুখে মুখে।
এই ব্যক্তির সম্পর্কে খোঁজখবর নিয়ে জানাগেছে, তিনি পিরোজপুর জেলার বাসিন্দা। স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা বলে দাবী করে থাকেন। পিরোজপুর সদর উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান এর এপিএস বলেও পরিচয় দেন। যদিও সরকারি প্রজ্ঞাপনে এমন কোন পদের অনুমোদন নেই। তার ফেসবুকের প্রোফাইলে দেখা যায় তিনি জেএসবি সোনাক্ষী এগ্রোবেজ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক। তাই তিনি নিজেকে কখনো কখনো শিল্পপতি বলেও দাবী করেন। তিনি প্রচার করেন যে, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট স.ম রেজাউল করিম তার পকেটের লোক। তিনি যা বলেন মন্ত্রী তাইই করেন। বিনিময়ে তিনি মন্ত্রীর জন্য সংখ্যালঘু ভোট ব্যাংক তৈরী করছেন। মন্ত্রীর বাসা ও অফিসে নাকি তার অবাধ যাতাওয়াত রয়েছে। আর সে কারণেই তিনি বিশেষভাবে পাওয়ারফুল। আবার কোথাও কোথাও তিনি নিজেকে পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগ,যুবলীগ ও স্বেচ্চাসেবক লীগের নেতা বলেও পরিচয় দিয়ে প্রভাব খাঁটিয়ে থাকেন।
এই ব্যক্তির বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ তুলেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের একাধিক কর্মকর্তা ও প্রকল্প পরিচালকরা। তারা জানান, মন্ত্রী মহোদয়ের নাম ভাঙিয়ে এই ব্যক্তি প্রায় তাদের ওপর অনৈতিক ‘চাপ’ সৃষ্টি করছেন। তার কথা মত কাজ না করলে নানা প্রকার ভয় দেখাচ্ছেন। এমন কি বদলী ও চাকরী খেয়ে ফেলারও হুমকি দিচ্ছেন। হুটহাট করে বিনা পারমিশনে অফিসাদের রুমে ঢুকে সরকারি কাজে ব্যাঘাত সৃষ্টি করছেন। তার এই অত্যাচার সাম্প্রতিক সময়ে সীমা অতিক্রম করেছে। এর একটা বিহিত হওয়া দরকার।
বছরখনেক ধরে তিনি প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পিডি ডা: জসিম,ডা: জাহাংগীর,ডা: কবীর,ডা: রাহাত,ডিপিপি ডা: দীপ্র,ডা: মুস্তানুর,ডা: রব্বানী ও সার্বক্ষণিকভাবে পরিচালক প্রশাসন ডা: ইমদাদুল হক তালুকদারকে মন্ত্রীর ভয় দেখিয়ে বিভিন্ন অবৈধ কাজ করতে বাধ্য করেছেন। এ ছাড়া মৎস্য অধিদপ্তরের একাধিক প্রকল্প পরিচালকের ওপর চাপ প্রয়োগ করে অনেক অনৈতিক দাবী হাসিল করেছেন। এ পথে তিনি এখন কোটিপতি বনেগেছেন। সে সব টাকা হন্ডি মাধ্যমে ভারতে পাচারও করেছেন বলে এলাকায় প্রচার রয়েছে।
এ দিকে স্থানীয় এলাকাবাসী জানান, মন্ত্রীর সাথে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে সুনীল হালদার মাত্র দুই বছরেই কোটপতি বনে গেছেন। তিনি এখন পিরোজপুরের অসীম ক্ষমতাধর নেতা। তাকে ডিসি এসপিও সমীহ করে চলেন। মন্ত্রী এলাকায় এলে তিনি সব সময় ডানে বামে থাকেন। তার প্রভাবের কাছে জেলা আওয়ামী লীগের অন্যন্য নেতারা চুপসে থাকেন। এত যে আওয়ামী লীগ ও মন্ত্রীর ইমেজের কত বড় ক্ষতি হচ্ছে তা কেউ ঠাহর করতে পারছেন না। এ বিষয়ে মন্ত্রীর আরো সতর্ক হওয়া প্রয়োজন বলে তারা মনে করেন।
তার সম্পর্কে জানার জন্য পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, সাবেক এমপি এ কে এম এ আওয়াল এর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, সুনীল হালদার পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই।
এ বিষয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এডভোকেট স. ম. রেজাউল করিম এর বক্তব্য নেওয়ার জন্য তার মুঠো ফোনে কথা বললে তিনি বলেন ,আমি এখন পিরোজপুরে মিটিং আছি। আপনি পরে কথা বলেন।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুনীল হালদার মুঠোফোনে জানান, আমি পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কোন পদে নেই। উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এর এপিএস এর দায়িত্ব পালন করি। মন্ত্রী মহোদয় আমার শ্রদ্ধেয় নেতা। আমি তার একজন কর্মী মাত্র। এলাকার উন্নয়নের জন্য তার বাসা ও অফিসে যাই তবে তার নাম ভাঙিয়ে আমি কোন সুযোগ সুবিধা নেই না । মন্ত্রীর মহোদয়ের নাম ব্যবহার করে কোন সরকারি কর্মকর্তাকে হুমকি ধামকি দেওয়ার প্রশ্নই ওঠেনা।

বরগুনায় সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন

 

জেলা প্রতিনিধি, বরগুনা:
বরগুনা অনুষ্ঠিত হওয়া এক সংবাদ সম্মেলনের প্রতিবাদে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছে এক ভুক্তভোগী। ভুক্তভোগী ব্যাক্তির নাম বাবুল হোসেন, তিনি সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের রায় ভোগ গ্রামের লালমিয়া আকনের ছেলে।

সোমবার (২৬ জুন) বেলা সাড়ে ১১ টায় বরগুনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সম্মেলন কক্ষে সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী বাবুল বলেন, বরগুনা সদর থানাধীন ৩৬নং চরকগাছিয়া মৌজার এস.এ-৬০৮/১৮/০৭ খতিয়ানের রেকর্ডীয় মালিক আহমদ হোসেন, মোহাম্মদ হোসেন, আলী আকাদর। আমার নানা আহম্মদ হোসেন এবং মোহাম্মদ হোসেন ও আলী আকাব্বরদের মৃত্যুতে আমি সহ আমার ভাই-বোন এবং আহমদ হোসেন ও আলী আকার ক্রমিক ওয়ারিশান ওয়ারিশী স্বত্ত্ব সম্পত্তি ভোগ দখল করে আসছে।

ইতিমধ্যে ঐ খতিয়ান মধ্যে নব আগন্তক মোঃ জাফর। বরগুনা সাব রেজিস্ট্রী অফিসে ইং ০৫/০৩/২০২৩ তারিখে গোপনে ১১১৭ নং সাফ কবলা দলিল রেজিস্ট্রী করিয়া রাখে। আমি জানতে পারিয়া আইনের প্রতি প্রকাশীল হইয়া বিজ্ঞ সিনিয়র সহকারী জজ আদালতে দেওয়ানী ১৩৯/২০২৩ (অগ্রক্রয়) নং মামলা দাখিল করি। তৎপ্রেক্ষিতে ঐ দলিলের গ্রহীতা মোঃ জাফর ও সু-নির্দিষ্ট পরিচয় বিহীন এস.এম গোলাম রসুল পরস্পর যোগাযোগে, একাধীক বিজ্ঞ এ্যাডভোকেট সাহেবদের চেম্বার হইতে বিভিন্ন অভিযোগে বাহির করিয়া দেওয়া এ্যাডভোকেট ক্লার্ক মোঃ আঃ ছত্তার মিয়া (এ্যাডভোকেট ক্লার্ক সমিতি হইতে একাধীকবার শোকজ পাওয়া সদস্য) নামমাত্র মূলে তাহার জামাতা মোঃ রিয়াজ এর নামে খরিদা অস্থিস্তবিহীন সম্পত্তি কোন হদিস না পাওয়ায় তাহার প্রত্যাক্ষ সহযোগীতায় মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক কাগজী কারবারে তৈরী কল্প কাহিনী দ্বারা উক্ত এস, এম গোলাম রসুল কে দিয়া ইং 25/06/২০২৩ তারিখ বরগুনা প্রেস ক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে।

তিনি বলেন, জানিনা এ কোন বাস্তবতা, জমির প্রকৃত রেকর্ডীয় মালিকের ওয়ারিশদের বিভিন্ন অপশক্তির মাধ্যমে অবৈধ উপায় উচ্ছেদ করার জন্য দখল বিহীন নৰ আগন্তুক কবলাদার অপচেষ্টা চালায়। যাহা গ্রাম্য প্রবাদ “কোচে মাছ লড়ায়” অন্যদিকে আমার চাচাতো ভাই বরগুনা শহরের প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী ও ঠিকাদার মোঃ হারুন অর রশিদ সাহেবকে জড়াইয়া উক্ত সংবাদ সম্মেলনে যে সকল মিথ্যা, বানোয়াট, মনগড়া বিবরন প্রকাশ করিয়াছে তাহা শুধুমাত্র লিখনিতে মানায়, বাস্তবে তাহার কোন সত্যতা নাই। অন্যদিকে সংবাদ সম্মেলনে উল্লেখিত দেওয়ানী মোকদ্দমার কার্যক্রম বিজ্ঞ আদালতেই চলমান। যাহা বিচারের এখতিয়ার বিজ্ঞ আদালতের। এ নিয়া সংবাদ সংম্মেলনের কোন যুক্তিযুক্ত কারণ আমার জানা নাই। আমি এঘটনার প্রতিবাদ জানাই।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম