মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষায় মঞ্চ ৭১ এর আত্মপ্রকাশ

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রক্ষায় মঞ্চ ৭১ এর আত্মপ্রকাশ

ডেস্ক রিপোর্ট:

মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষার দাবিতে ‘মঞ্চ ৭১’ নামে একটি নতুন প্ল্যাটফর্ম আত্মপ্রকাশ করেছে। বীর মুক্তিযোদ্ধা, নতুন প্রজন্ম ও ছাত্র জনতার প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে এ মঞ্চ গঠিত হয়েছে। অধ্যাপক আবদুল্লাহ আল মাহমুদ (বীর প্রতীক) ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না এ প্ল্যাটফর্মের সমন্বয় করছেন। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানা গেছে। বিজ্ঞপ্তিতে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের পক্ষে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করা হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘মহান মুক্তিযুদ্ধ বাঙালি জাতির সবচেয়ে গৌরবময় এবং আত্মত্যাগের ইতিহাস। লাখো শহীদের রক্ত, মা বোনদের সম্ভ্রম আর কোটি কোটি মানুষের মহান আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে অর্জিত স্বাধীনতা শুধু একটি ভূখণ্ড নয়, একটি পতাকা নয়, একটি জাতীয় সংগীত নয়, বাঙালি জাতির হাজার বছরের স্বপ্ন, চেতনা, আত্মমর্যাদা প্রতিষ্ঠার নিরন্তর সংগ্রামের গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। কিন্তু আমরা নিদারুণ বেদনা, ক্ষোভ আর হতাশার সঙ্গে লক্ষ করছি, আজ মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস মুছে ফেলার গভীর ষড়যন্ত্র চলছে। আগস্ট অভ্যুত্থানের পর কথিত নানা ঘোষণাপত্র এবং বয়ানের মধ্যে জাতির সামনে মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস, আদর্শ অর্জনকে হেয় করার ঘৃণ্য অপচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। ইতিহাস বিকৃতির মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে প্রত্যাখ্যানের চেষ্টায় বীর মুক্তিযোদ্ধারা গভীরভাবে মর্মাহত এবং ক্ষুব্ধ।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের বীর মুক্তিযোদ্ধারা, নতুন প্রজন্ম এবং ছাত্র জনতার প্রতিনিধিরা সংগঠিত হয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি বন্ধের লক্ষ্যে মঞ্চ ৭১ এর পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হয়েছে। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃতি রোধ, ইতিহাস মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র প্রতিহত এবং বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান রক্ষাসহ বিজ্ঞপ্তিতে পাঁচ দফা দাবি জানানো হয়। দাবিগুলো হলো
১. জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং চেতনার সঙ্গে সাংঘর্ষিক কোনো বক্তব্য ও ব্যাখ্যা থাকবে না, তা নিশ্চিত করতে হবে। জুলাই ঘোষণাপত্রে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার বিপক্ষে অসম্মানজনক কিছু থাকলে তা সম্পূর্ণভাবে প্রত্যাখ্যান করা হবে।
২. মুক্তিযুদ্ধের অর্জন, ইতিহাস ও চেতনা মুছে ফেলে তথাকথিত নতুন সংবিধান প্রণয়ন করার অপপ্রয়াস বাঙালি জাতি কোনো দিন মেনে নেবে না।
৩. কোনো রাজনৈতিক দলের অপরাধ ও ব্যর্থতার দায়ে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ঢালাওভাবে অভিযুক্ত করা যাবে না।
৪ . মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস বিকৃত করা, ইতিহাস মুছে ফেলা, মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ঘৃণা, বিদ্বেষ ছড়ানো, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের হেয় করার সঙ্গে সংযুক্ত সব ব্যক্তির বিরুদ্ধে অবিলম্বে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগে মামলা দায়ের করে গ্রেপ্তার এবং বিচার করতে হবে।
৫. অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে অবস্থান পরিষ্কার করতে হবে। তাদের বলতে হবে, তারা কী মনে করে, কী করবে আর কী করবে না।

এসব দাবি বাস্তবায়িত না হলে কর্মসূচি পালনের ঘোষণা দিয়ে বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যদি এসব পরামর্শ উপেক্ষা করে তথাকথিত কোনো ঘোষণার মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ঐতিহ্য বিকৃত করা হয়, মুক্তিযুদ্ধকে অসম্মান করা হয়, তাহলে দেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে রাজধানী ঢাকায় মঞ্চ ৭১ ভবিষ্যৎ কর্মসূচি ঘোষণা করবে। এ আন্দোলন কোনো রাজনৈতিক দলের, কোনো রাজনৈতিক গোষ্ঠীর পক্ষে বা বিপক্ষে নয়। এটি মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে, দেশের পক্ষে, রক্তস্নাত ইতিহাসের পক্ষে। জাতির অর্জনকে মুছে ফেলার সব ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে বীর মুক্তিযোদ্ধারা প্রস্তুত। যদি প্রয়োজন হয় ইতিহাস রক্ষা করার জন্য মঞ্চ ৭১ নতুন প্রজন্ম এবং বাংলাদেশের জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আত্মত্যাগে প্রস্তুত।

এই সরকার মৌলবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে-জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরামের সভায় বক্তারা

স্টাফ রিপোর্টার:

জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, মুজিব পরিবার আর জিয়া পরিবারের মধ্যে মৌলিক পার্থক্য রয়েছে। মুজিব পরিবার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না। আর জিয়ার পরিবার সংবাদপত্রের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে। জাতীয় প্রেস ক্লাবকে সাংবাদিকদের সেকেন্ড হোম মনে করা হয়। আর এটি জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার অবদান।

 আজ একটি মৌলবাদী গোষ্ঠী প্রেস ক্লাবকে কলুষিত করতে চায়। সবাইকে তা রুখে দিতে হবে। আওয়ামী লীগও এমনটি করেছিল। আমরা চাই এই অন্তর্বর্তী সরকার সংস্কার করুক, এর পরই একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি গণতান্ত্রিক সরকার গঠিত হবে। এর ব্যত্যয় হলে জনগণ মেনে নেবে না। এই সরকার মৌলবাদীদের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে। জাতীয়তাবাদী সাংবাদিকদের আজ কোথাও চাকরি হচ্ছে না। এমনটা চলতে দেওয়া যাবে না। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়।

৭ নভেম্বর চেতনায় ১৯৭৬ সালে জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম গঠিত হয়েছিল। তার ধারাবাহিকতায় আজ ৭ নভেম্বর পালনে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।

বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে জাতীয়তাবাদী সাংবাদিক ফোরাম আয়োজিত জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবসের আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন ফোরামের সভাপতি বিশিষ্ট ছড়াকার আবু সালেহ।

প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি অধ্যাপক জসিমউদ্দিন।

প্রধান বক্তা ছিলেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন ও জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ।

বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি ও সাংবাদিক মাহমুদ শফিক, সাপ্তাহিক রোববারের সম্পাদক সৈয়দ তোসারফ আলী, দৈনিক নওরোজ সম্পাদক সামছুল হক দুররানী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনয়নের সাবেক সহকারী মহাসচিব কাজিম রেজা, চলচ্চিত্র সাংবাদিক সমিতি (বাচসাস) সভাপতি কামরুল হাসান দর্পণ।

অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন সিনিয়র সাংবাদিক আবদুল গাফফার মাহমুদ, কামার ফরিদ, নির্মল চক্রবর্তী, কাজী মিজানুর রহমান, জাকির হোসেন, মিজানুর রহমান সুমন, গোলাম কিবরিয়া, রমজানুল হক রুবেল, জেসমিন জুঁই, আবদুল হালিম, জাকির হোসেন মাঝি, মীর হোসেন মিরন, শেখ আনোয়ার প্রমুখ।

ফোরামের সহ-ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মুজিবুর রহমান সরকারের কোরআন তেলাওয়াত ও দোয়ার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের সূচনা হয়।

ফোরামের মহাসচিব জাহাঙ্গীর আলম প্রধান সভাটি সঞ্চালনা করেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম