ডিএনসিসিকে দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত করেছেন এজাজ, শওকত ও আরিফ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

রিভার এন্ড ডেল্টা রিসার্স সেন্টার এর চেয়ারম্যান জনাব মোঃ এজাজ মৃত হাজী মফিজুর রহমান ভূইয়ার পুত্র। শেরে-বাংলা নগর থানার ২০১৪ সালের জিআর ২৩৫/১৪ মামলায় মোঃ এজাজ নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হিজবুত তাহরীরের কর্মী মর্মে আট নাম্বার আসামি । ২০২৪ এর জুলাই বিপ্লবের পরে ছাত্র প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে উপদেষ্টা হিসেবে আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেলে ২৩ জানুয়ারি ২০২৫ তারিখে মোঃ এজাজকে দুই বছরের জন্য ডিএনসিসির প্রশাসক হিসেবে সুপারিশ করেন । গুঞ্জন রয়েছে চল্লিশ কোটি টাকার বিনিময়ে এই পদ বাগিয়ে নিয়েছেন মোঃ এজাজ, কিন্তু এর কোন প্রমাণ পাওয়া না গেলেও প্রশ্নের শেষ হয়নি।

 

২৯ মে ২০২৫ তারিখে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজকে অপসারণ ও গ্রেপ্তারের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে ঢাকা মহানগর উত্তর গণঅধিকার পরিষদ। অবস্থান কর্মসূচিতে গণঅধিকার পরিষদের উচ্চতর পরিষদ সদস্য ও গণমাধ্যম সমন্বয়ক আবু হানিফ বলেন, ‘ডিএনসিসির প্রশাসক হিসেবে নিষিদ্ধ সংগঠন হিজবুত তাহরীর সদস্য এজাজকে নিয়োগ দিয়ে সরকার মূলত জঙ্গিবাদকে প্রশ্রয় দিচ্ছে।

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ, প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ শওকত ওসমান ও অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমানের সিন্ডিকেটের নিয়ন্ত্রণে এই সেবামূলক প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম।  অস্বভাবিক ক্ষমতাধর এই সিন্ডিকের বিরুদ্ধে ভয়াবহ অনিয়ম, নানা দুর্নীতি, ক্ষমতার অপব্যবহার এবং কোটি কোটি টাকার টেন্ডার বাণিজ্য নিয়ে ডিএনসিসির ‘টপ টু বটম’ কর্মকর্তাদের পাশাপাশি রাজনৈতিক নেতা-কর্মী এবং ব্যবসায়ীদের মাঝে প্রচন্ড ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে।  ইতোমধ্যে তাদের কার্যক্রম নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছে।

 

অভিযোগ রয়েছে আরিফুর রহমানের নিয়ন্ত্রণে চলছে সব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের পদোন্নতি, দায়িত্ব প্রদান,বদলি, নিয়োগ বাণিজ্য ছাড়াও ডিএনসিসিতে কোটি কোটি টাকার উন্নয়নমূলক কাজের টেন্ডার, বড় বড় ক্রয়, গাবতলী পশুর হাটসহ অস্থায়ী কোরবানী পশুর হাটের ইজারা । এবং সরকারি সম্পত্তি দখলকারীদের বহাল তবিয়তে থাকতে সহযোগিতার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা হাতাচ্ছেন প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ শওকত ওসমান। আর এই সকল অপকর্মের সুরক্ষা দিচ্ছেন প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ।

 

মোহাম্মদপুরে সরকারি খালের জমি দখল করে একাধিক ভবন নির্মাণের তথ্য ডিএনসিসিকে দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ প্রদান করলেও তারা ব্যবস্থা নেয়নি। পরে গভীর অনুসন্ধান করে দেখা গেছে এর পিছনে মোটা অংকের লেনদেন হয়েছে। ২৩ জুলাই ২০২৫ তারিখে “রাজধানীর মোহাম্মদপুরে সরকারি খাল দখল করে বহুতল ভবন নির্মাণ” শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের পর এই ভবনের  মালিকদের সুরক্ষা দেয়ার শর্তে সার্ভেয়ার রবিউলের মাধ্যমে মোঃ এজাজ ও শওকত কোটি টাকার ডিল করেছেন মর্মে তথ্য রয়েছে।

 

ডিএনসিসির এক নির্বাহী কর্মকর্তা বলেন, প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজের ইচ্ছের বাইরে এখানে কিছুই হচ্ছে না।  বোর্ড সভায় তার পিছনের বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। তিনি আরো বলেন, সরকারের আইন বিধির  লঙ্ঘন সংক্রান্ত বিষয় গুলো প্রশাসক স্যার কৌশলে এরিয়ে যান। এর বেশি আর কোন কথা বলতে রাজি নয় প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা।

নাম না প্রকাশের শর্তে ডিএনসিসির একাধিক কর্মকর্তা বলেন, গত ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ এ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে নিয়োগ প্রাপ্ত ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ যোগদানের পর থেকে এ পর্যন্ত এই প্রতিষ্ঠানকে দুর্নীতির আখঁড়ায় পরিনত করেছেন।  ইতোমধ্যে সরকারের আইন ও বিধি অমান্য করে নিজের ইচ্ছে মতো সব কিছু করে যাচ্ছেন।  এমনকি কর্মকর্তাদের নিয়ে নির্ধারিত বোর্ড সভার সিন্ধান্তকেও আমলে নেয়া হয় না।

 

অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী মো. আরিফুর রহমানের সাথে আলোচিত অভিযোগ নিয়ে সরাসরি কথা বলতে চাইলে, তিনি তার স্টাফের মাধ্যমে জানিছেন, কোন কথা বলবেন না। বর্তমানে এই বিষয়ে কথা বলার জন্য প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা (উপসচিব) মোহাম্মদ শওকত ওসমান ও প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এর সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও কোনোভাবেই তাদের সাথে যোগাযোগ করা যায়নি।

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুরসহ ৪ পুলিশের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

ডেস্ক রিপোর্ট:

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সময় রাজধানীর রামপুরা এলাকায় সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলা আমলে নিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১। এই মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ ৪ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। বিচারপতি মো. গোলাম মর্তুজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল-১ এই মামলা আমলে নিয়ে পরোয়ানা জারি করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন বিচারপতি মো. শফিউল আলম মাহমুদ ও বিচারক মো. মোহিতুল হক এনাম চৌধুরী।

এই মামলায় পাঁচজন আসামি। তাঁদের মধ্যে ডিএমপির সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ চার আসামি পলাতক। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। হাবিবুর ছাড়া ডিএমপির খিলগাঁও অঞ্চলের সাবেক অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) মো. রাশেদুল ইসলাম, রামপুরা থানার সাবেক ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. মশিউর রহমান ও রামপুরা থানার সাবেক উপপরিদর্শক (এসআই) তারিকুল ইসলাম ভূঁইয়ার বিরুদ্ধে পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। এই মামলায় একজন আসামি গ্রেপ্তার আছেন। তিনি হলেন রামপুরা পুলিশ ফাঁড়ির সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) চঞ্চল চন্দ্র সরকার। তাঁকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ ১৭ আগস্ট।

মামলায় তিনটি অভিযোগ আনা হয়েছে। সেগুলো হলো গণঅভ্যুত্থানের সময় ১৯ জুলাই রাজধানীর রামপুরায় কার্নিশে ঝুলে থাকা যুবক আমির হোসেনকে গুলি, গুলি বাসিত খান মুসার (৭) মাথা ভেদ করে চলে যায়। এতে তাঁর দাদি মায়া ইসলাম মারা যান। একই দিন রামপুরায় মো. নাদিম নামের আরও একজন ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম