দারাজে অবৈধভাবে বিক্রি হচ্ছে ওয়াকিটকি

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

এবার  দারাজে রাষ্ট্রের জন্য নিরাপত্তার জন্য স্পর্শকাতর ওয়াকিটকি ও বেজ রেডিও বিক্রি হচ্ছে। অনুমতি ছাড়া এসব ওপেন ফ্রিকোয়েন্সির টু ওয়ে রেডিও বিক্রি অবৈধ বলছেন সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমনকি সাধারণের অবাধে এই বেতার যন্ত্র ও সরঞ্জামাদি বিক্রি ও ব্যবহার রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকি। কেননা এসব রেডিওর ফ্রিকোয়েন্সি সরকারি বাহিনীগুলোর ব্যবহৃত রেডিওর ফ্রিকোয়েন্সিতে ইন্টারফেয়ারেন্স তৈরি করতে পারে।

সরকারের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, গোয়েন্দা সংস্থা, দুর্যোগকালে ত্রাণ বিতরণ ও উদ্ধারকাজে নিয়োজিত সংস্থাগুলোকে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহারের অনুমতি দেয় বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি)। বিটিআরসির তালিকাভুক্ত শৌখিন রেডিও অপারেটর বা অ্যামেচার রেডিও অপারেটররাও বেতার তরঙ্গ ব্যবহারের অনুমতি পান। এ ছাড়া গুরুত্ব অনুযায়ী লাইসেন্স নিয়ে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও রেডিও তরঙ্গ ব্যবহার করতে পারেন।

কিন্তু এসব বেতারযন্ত্র আমদানি, কেনা বা বিক্রির জন্য বিটিআরসির লাইসেন্স ও গোয়েন্দা সংস্থার কাছ থেকে ছাড়পত্র (এনওসি) প্রয়োজন হয়। এমনকি যিনি কিনবেন তার জন্য সরকারি সংশ্লিষ্ট সংস্থার অনুমতি বাধ্যতামূলক। এসব রেডিও কেনা বা আমদানি করতে হয় কমিশনের তালিকাভূক্ত ভেন্ডরের (বিক্রেতা) মাধ্যমে। এর বাইরে রেডিও কেনাবেচা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ।

সরকারের এত সব নিয়ম-কানুন এড়িয়েই ওপেন ফ্রিকোয়েন্সির ওয়াকিটকি এবং বেজ রেডিও কেনাবেচা হচ্ছে ই-কমার্স প্লাটফর্ম দারাজ ডটকম ডট বিডিতে। ঢাকা টাইমসের অনুসন্ধানে প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে বেশ কিছু টু ওয়ে রেডিও, বেজ রেডিও ও বিভিন্ন বেতার সরঞ্জাম বিক্রির জন্য প্রদর্শিত হতে দেখা গেছে।

দারাজের ওয়েবসাইটে ওয়াকিটকি (টু ওয়ে রেডিও), বেজ রেডিও, ফ্রিকোয়েন্সি কাউন্টার, সফটওয়্যার ডিফাইন রেডিও এবং এর নানা সরঞ্জামাদি দেখা গেছে। দারাজের এসব ভেন্ডরের বেশির ভাগই ওভারসিজ ভেন্ডর বা বিদেশি বিক্রেতা। তাদের এসব রেডিও সরঞ্জামাদি দেশে বিক্রির অনুমতি নেই। তারপরও কাজটি করছে অবাধে।

‘প্রাইম পয়েন্ট’ নামের দারাজের এক সেলার বাওফ্যাংয়ের এক জোড়া ওয়াকিটকি বিক্রির জন্য প্রদর্শন করছে, যার দাম ৮৫২৬ টাকা। `Boyouyoushop’ নামের এক সোলারের এক জোড়া ৩-৫ কিলোমিটার রেঞ্জের টু ওয়ে রেডিওর দাম দেখাচ্ছে ২২২২ টাকা।

এ ছাড়া ফ্রিকোয়েন্সি কাউন্টার মিটারও পাওয়া যাচ্ছে দারাজে। এই মিটার দিয়ে আশপাশের সব ফ্রিকোয়েন্সি খোঁজা এবং পরিমাপ করা যায়। এর দাম দেখানো হচ্ছে ৪৯১৭ টাকা। এটি বিক্রির জন্য প্রদর্শন করছে মি গ্লোব্লা নামের একটি প্রতিষ্ঠান।

‘XHHDQES’ নামের সেলার দারাজে বিক্রি করছে মিনি রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি মিটার। দাম ১৯৮০ টাকা। ‘The Old Tree’ নামের বিদেশি সেলার দারাজে ৭৪৯৯ টাকায় ২৫ ওয়াটের বেজ রেডিও বিক্রি করছে। এটি একটি ডুয়েল ব্যান্ডের ইউএইচএফ/ভিএইচএফ রেডিও। এসব রেডিও সাধারণত বেজ স্টেশনের কাজে লাগে।

দারাজ সার্চ করলে এই ধরনের অসংখ্য ওয়াকিটকি ও বেজ রেডিও কেনার লিংক মেলে। অনুমতি ছাড়াই এসব রেডিও কেনা যাচ্ছে, যা কিনা আইনবিরোধী।

‘Cacao (Shenzhen)’ নামের একটি সেলার লং রেঞ্জের বিজ্ঞাপন দিয়ে বেজ রেডিও বিক্রি করছে। এসব রেডিও ওপেন ফ্রিকোয়েন্সির। অর্থাৎ একটি নির্দিষ্ট ফ্রিকোয়েন্সিতে টিউন করা নেই। স্ক্র্যান দিয়ে যেকোনো ফ্রিকোয়েন্সিতে সিগন্যাল ট্রান্সমিশন ও রিসিভ করা যায়। দারাজে প্রদর্শিত পণ্যের বিবরণে এসব তথ্য দেওয়া আছে। অনলাইন প্ল্যাটফর্মে এসব রেডিও এবং রেডিও ডিভাইস বিক্রি হচ্ছে যার-তার কাছে।

ওয়াকিটকি ছাড়াও দারাজে বিক্রি হচ্ছে ওয়াকিটকির অ্যান্টেনা, ব্যাটারি, চার্জার, হেডফোন, মাইক্রোফোন, সফটওয়্যার ডিফাইন রেডিও ইত্যাদি। দারাজে প্রদর্শিত ওয়াকিটকি এবং বেজ রেডিওর বিবরণীতে এর ফ্রিকোয়েন্সি রেঞ্জ হিসাবে বলা হয়েছে আল্ট্রা হাই ফ্রিকোয়েন্সিতে (ইউএইচএফ) রেঞ্জ ৪০০-৪৭০ মেগাহার্জ। ভেরি হাই ফ্রিকোয়েন্সিতে (ভিএইচএফ) রেঞ্জ ১৩৬-১৭৪ মেগাহার্জ। অর্থাৎ ভিএইচএফ এবং ইউএইচএফ ফ্রিকোয়েন্সিতে লম্বা একটা রেঞ্জ রয়েছে এসব রেডিওতে।

বিটিআরসির লাইসেন্সপ্রাপ্ত অ্যামেচার রেডিও অপারেটর এবং আইনজীবী তানভীর হাসান বলেন, বাংলাদেশে টু ওয়ে রেডিও বিক্রি করতে পারে কেবল বিটিআরসির তালিকাভূক্ত প্রতিষ্ঠান। এসব প্রতিষ্ঠান থেকে রেডিও কিনতে বিটিআরসি থেকে প্রাপ্ত লাইসেন্স এবং রেডিও কেনার ছাড়পত্র (এনওসি) থাকতে হয়। কিন্তু দারাজ বা দারাজের সেলার ক্রেতার কাছ থেকে কোনোরূপ লাইসেন্স ও ছাড়পত্র (এনওসি) না নিয়ে সরাসরি বিক্রি করছে। এটা রাষ্ট্রের জন্য হুমকি। যেসব টু ওয়ে রেডিও বিক্রি হচ্ছে দারাজে, সেগুলো ওপেন ফ্রিকোয়েন্সির। এগুলো অবাধে বিক্রি ও ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয়।

এসব রেডিও না কেনার পরামর্শ দিয়ে তানভীর হাসান বলেন, লাইসেন্স ছাড়া আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কারও কাছে এসব রেডিও পেলে আইনি ব্যবস্থা নিতে পারে।

বিটিআরসির আইন বলছে অবৈধভাবে রেডিও তরঙ্গের ব্যবহারের সাজা ১০০ কোটি টাকা জরিমানা এবং ১০ বছরের জেল।

র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, যাদের রেডিও তরঙ্গ ব্যবহারের লাইসেন্স আছে তারাই কেবল এ ধরনের রেডিও কিনতে ও ব্যবহার করতে পারবে। এর বাইরে অনুমোদন ছাড়া বেতারযন্ত্র দিয়ে তরঙ্গ ব্যবহার নিষিদ্ধ। বিটিআরসি প্রায়ই র‌্যাবকে সঙ্গে নিয়ে অবৈধ রেডিও ও এই ধরনের যন্ত্রাংশের অবৈধ ব্যবহারকারীদের ধরতে অভিযান পরিচালনা করে থাকে।

বিটিআরসির তালিকাভূক্ত রেডিও আমদানিকারক এবং বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান অলিওফিন্স করপোরেশনের প্রোপাইটর আবদুল্লাহ আল সাব্বির বলেন, টু ওয়ে রেডিও ইকুইপমেন্ট বিক্রি নিষিদ্ধ নয়। তবে শর্তসাপেক্ষে বিক্রি করার নিয়ম। একজন ক্রেতা চাইলেই তার কাছে রেডিও ও এর সরঞ্জাম বিক্রি করার বিধান নেই। তার কাছে বেতার যন্ত্রাংশ ব্যবহারে বিটিআরসির লাইসেন্স ও কেনার ছাড়পত্র আছে কি না তা খতিয়ে দেখতে হবে বিক্রেতাকে।

দেশে অ্যামেচার রেডিও অপারেটরদের শীর্ষ সংগঠন অ্যামেচার রেডিও সোসাইটি অব বাংলাদেশের সহকারী সম্পাদক সৈয়দ সামসুল আলম দীর্ঘদিন অ্যামেচার রেডিও অপারেশন এবং প্রচারে কাজ করছেন। তিনি বলেন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ছাড়াও বিটিআরসি নানা কাজে রেডিও তরঙ্গ ব্যবহারের অনুমতি দেয়। এর মধ্যে অন্যতম হলো অ্যামেচার রেডিও এবং প্রাইভেট মোবাইল রেডিও (পিএমআর)। এসব রেডিও লাইসেন্স দেয়ার সময় সরকার ফ্রিকোয়েন্সি সীমা বেঁধে দেয়। এক ফ্রিকোয়েন্সির লাইসেন্স নিয়ে অন্য ফ্রিকোয়েন্সি ব্যবহার আইনত দণ্ডনীয়। এসব রেডিও কেনার জন্য সরকারের কাছ থেকে লাইসেন্সের পাশাপাশি ছাড়পত্র (এনওসি) নিতে হয়। লাইসেন্স ছাড়া রেডিও কেনা-বেচা অপরাধ। এটা রাষ্ট্রের নিরাপত্তার জন্য হুমকিও বটে।

অবৈধভাবে ওয়াকিটকি বিক্রি করা আইনবিরোধী বলে জানিয়েছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘বিটিআরসি এই ধরনের অবৈধ কাজের বিরুদ্ধে সব সময়ই অভিযান চালায়। অভিযোগ পেলে আমরা ব্যবস্থা নিই। অনেকে নিয়ম না মেনে অবৈধভাবে ওয়াকিটকি বিক্রি করছে। এটি তারা করছে গোপনে, যা আইনের বিরোধী। আমাদের কাছে সুস্পষ্ট অভিযোগ এলে আমরা ব্যবস্থা নিব।’

এ বিষয়ে দারাজের বক্তব্য জানতে প্রতিষ্ঠানটির মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিউকেশন ম্যানেজার সায়ন্তনী তিশার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি কোনো মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। তিনি এ ব্যাপারে তার প্রতিষ্ঠানের বক্তব্য জানতে এজেন্সি ফোর থট পিআরের কাছে লিখিত প্রশ্ন পাঠাতে বলেন।

ফোরথট পিআরের কাছে ই-মেইল মারফত বক্তব্য জানতে চাইলে তারা জানায়, এ ধরনের যন্ত্র আগে বিক্রি হতো, এখন হয় না। এখন এমন বেতারযন্ত্র দারাজে বিক্রির প্রমাণ দেখাতে পারলে তারা এ ব্যাপারে বক্তব্য দেবেন।

কিন্তু দারাজের ওয়েবসাইট সার্চ করে এ ধরনের বেশ কিছু টু ওয়ে রেডিও বিক্রির জন্য প্রদর্শিত হতে দেখা যায়, যার স্ক্রিনশট ও লিঙ্কও আমাদের কাছে আছে।

 

৩৫০ কোটি টাকার ঋণকাণ্ডে নাটের গুরু রতন এখন জেলে

স্টাফ রিপোর্টার॥

নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠিত আমদানিকারক দেখিয়ে ৩৫০ কোটি টাকার নন-ফান্ডেড ঋণ অনুমোদন করেছে এবি ব্যাংক। কাগুজে ওই প্রতিষ্ঠানটির নাম ব্র্যান্ডশেয়ার ট্রেডিং লিমিটেড। বিপুল অঙ্কের এ ঋণের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। ঋণের বিপরীতে জামানত দিয়েছে তৃতীয় পক্ষ এবং ঋণের বিপরীতে যে সম্পত্তি বন্ধক রাখা হয়েছে, তার মূল্য দেখানো হয়েছে বাজার মূল্যের চেয়েও ১৬ গুণ বেশি।

শুধু তাই নয়, ঋণটির দায় গ্রাহক পরিশোধ না করলে তা এলটিআর ও মেয়াদি ঋণে রূপান্তরের সুযোগও রাখা হয়েছে। এরপরও ঋণ মঞ্জুরিপত্রের শর্ত লঙ্ঘন করে অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ১৬ কোটি টাকার পারফরম্যান্স গ্যারান্টি ইস্যু করা হয়েছে। এবি ব্যাংকের ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ এরই মধ্যে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

কে এই রতন
তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে পরিচয় দিতেন।     জানা যায়, আলী হায়দার রতন নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জ থানার চরপারবতী গ্রামের মৃত নূর ইসলামের ছেলে। গাজীপুরের শ্রীপুর এলাকায় ব্যপক প্রভাব ছিলো তার। তিনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ভাগ্নে পরিচয় দিতেন।

আলী হায়দার রতন ইনফ্রাটেক লিমিটেডের চেয়ারম্যান হিসেবেও পরিচিত। তিনি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নকল নথির মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে আলোচনায় আসেন। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত মুস্তাফিজুর রহমান বুলবুলের মেয়ের জামাতা।

স্থানীয়দের অভিযোগ, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে তিনি শ্রীপুরের গাজীপুর ইউনিয়নে বহু মানুষের বাড়ি ও জমি দখল করে নিয়েছেন।
২১ এপ্রিল রাজধানীর হোটেল ইন্টার কন্টিনেন্টালের সামনে থেকে জনগণ তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। এরপর রমনা থানার সহায়তায় শ্রীপুর থানা পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে। ্

৩৫০ কোটি টাকার এই ঋণকাণ্ডে ‘নাটের গুরু’ ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কর্ণধার আলী হায়দার রতন। তিনি সেই ব্যক্তি, যাকে ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে রাত ৮টার পর নগদ ২২ কোটি ৬০ লাখ টাকা উত্তোলনের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ওই সময় বিষয়টি সংবাদের খোরাক হয়েছিল। রতন পেশায় একজন ঠিকাদার। ১০ বছর ধরে দেশের সরকারি বিভিন্ন কাজ তিনি একক ও যৌথভাবে করছেন।

আলী হায়দার রতন শুধু এবি ব্যাংক থেকেই নয়, এর আগে আরও পাঁচটি ব্যাংক থেকে জালিয়াতির মাধ্যমে প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার ঋণ নিয়েছেন। ঋণ নেওয়ার ক্ষেত্রে একই জমি একাধিক ব্যাংকে বন্ধক ও বন্ধকি সম্পত্তির অস্বাভাবিক বেশি মূল্য দেখানোর ঘটনা ঘটেছে। এসব ঋণের মধ্যে এরই মধ্যে ৫২৫ কোটি টাকা খেলাপিতে পরিণত হয়েছে। এর মধ্যে ন্যাশনাল ব্যাংকে ২০০ কোটি টাকা, ইউনাইটেড কমার্শিয়াল ব্যাংকে ১৮০ কোটি টাকা, জনতা ব্যাংকে ৭০ কোটি টাকা, বেসিক ব্যাংকে ৩৫ কোটি টাকা ও সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকে ৪০ কোটি টাকার ঋণখেলাপি হয়ে গেছে। বিএফআইইউর কর্মকর্তারা জানান, ওই ৫ ব্যাংকের ঋণের বিষয়ে সংস্থাটির তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

এমন কি সে সাবেক সচিব কবির বিন আনোয়ারের ব্যবসায়িক র্পাটনারও ছিলো সেই ক্ষমতাধর সচিবের নাম নিয়েই সে শত অপর্কম করে গেছেন।

যেভাবে উঠে এল রতনের নাম

দেশের কেন্দ্রীয় আর্থিক গোয়েন্দা সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) এক তদন্তে আলোচ্য ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী হিসেবে ঠিকাদারি ও সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইনফ্রাটেক কনস্ট্রাকশন কোম্পানির কর্ণধার রতনের সংশ্লিষ্টতা মিলেছে। তিনি ব্র্যান্ডউইন গ্রুপ অব কোম্পানিজেরও ব্যবস্থাপনা পরিচালক। সম্প্রতি ব্যাংকটির গুলশান শাখার অনুমোদিত ঋণ প্রস্তাবটির যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনা করে এ জালিয়াতির ঘটনা উদঘাটন করেছে বিএফআইইউ।

বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ব্যাংকের নির্বাহী ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনা পর্ষদ এবং আলী হায়দার রতনের পারস্পরিক যোগসাজশে দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে একটি কাগুজে এবং বেনামি প্রতিষ্ঠানের নামে ৩৫০ কোটি টাকার ঋণ মঞ্জুর করা হয়েছে। এ ঋণের প্রকৃত সুবিধাভোগী আলী হায়দার রতন। কেননা আলোচ্য ঋণটির আবেদন থেকে শুরু করে সহায়ক জামানত, পার্সোনাল ও করপোরেট গ্যারান্টি প্রদানসহ যাবতীয় কার্যসম্পাদন করেছেন আলী হায়দার রতন নিজেই। এরই মধ্যে ১৬ কোটি টাকার ঋণ সুবিধা ভোগও করেছেন তিনি।

বিএফআইইউর মতে, বেনামি প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে ঋণ সুবিধার আওতায় ৩৫০ কোটি টাকা বিতরণ করা হলে তা আদায় করা দুরূহ হবে। তাই ঋণের বাকি অর্থের বিতরণ বন্ধে সংশ্লিষ্ট অ্যাকাউন্ট জব্দ করার পাশাপাশি ব্যাংকটির কাছে এ ঋণের বিপরীতে ব্যাখ্যা তলব করা হয়েছে। এ ছাড়া বিষয়টির বিশদ তদন্ত সাপেক্ষে কাগুজে প্রতিষ্ঠানটির প্রকৃত মালিক ও সুবিধাভোগী চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাশাপাশি দুর্নীতি দমন কমিশনেও (দুদক) এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন পাঠানো হয়েছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. মইনুল ইসলাম  বলেন, ব্যাংক খাতের শৃঙ্খলা যে একেবারেই তলানিতে এসে ঠেকেছে, সেটারই আভাস দিচ্ছে এ ধরনের জালিয়াতি। এখানে সংশ্লিষ্টদের অবশ্যই যোগসাজশ রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই এ খাতে বড় ধরনের চুরি-জালিয়াতি চলছে। এগুলোর বিরুদ্ধে অবশ্যই শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।

খতিয়ে দেখার নির্দেশ হাইকোর্টের

কাগুজে কোম্পানির নামে এবি ব্যাংকের ৩৫০ কোটি টাকা ঋণ অনুমোদনের অভিযোগ এরই মধ্যে খতিয়ে দেখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিষয়টি অনুসন্ধানে দুদক, বিএফআইইউ ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তিন মাসের মধ্যে এ নিয়ে প্রতিবেদন দিতে বলেছেন আদালত।

কিন্তু সেই প্রতিবেদন আজও আলোর মুখ দেখেনী।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন