ঠাকুরগাঁও ৩ আসনে নৌকার মাঝি হলেন ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা

মো: আক্তারুল ইসলাম আক্তার: ঠাকুরগাঁও জেলা প্রতিনিধিঃ

আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে একজন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাকে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।

বুধবার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ও জেলা রিটার্নিং অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন পীরগঞ্জ উপজেলার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত আলী।

অভিযোগে তিনি বলেন,ইমদাদুল হক কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। সে ভুয়া কাগজে মুক্তিযোদ্ধার নাম লিখিয়েছিলো যা ইতিমধ্যে প্রমাণিত হয়েছে।

২০১৮ সালের নির্বাচনে স্বতন্ত্র হয়ে নৌকার বিরুদ্ধে নির্বাচন করেছিলেন। একজন ভূয়া মুক্তিযোদ্ধাকে কি করে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন দেয়া হলো।

এর আগে গত ২৬ নভেম্বর ঢাকায় আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে ঠাকুরগাঁওয়ের তিনটি আসনের মনোনয়ের ঘোষণা দেয়া হয়।

সেখানে ঠাকুরগাঁও-৩ আসনে আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে দলীয় ভাবে ইমদাদুল হককে মনোনয়ন দেয়া হয়। এরপর থেকে ক্ষিপ্ত স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও মুক্তিযোদ্ধারা।

অভিযোগে আরো যানা যায়, গত ৩১ অক্টোবর জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলের ৮৬তম কার্যকারী সভা শেষে বীর মুক্তিযাদ্ধা হিসেবে প্রমাণিত না হওয়ায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইমদাদুল হকের মুক্তিযোদ্ধার গেজেট বাতিল করা হয়েছে।

গেজেটে বলা হয় যেহেতু তথ্য গোপন করে নতুন গেজেট করা হয়েছে তাই ইমদাদুল হকের ১৭০২নং গেজেটটিও ১৬২৫ এর ১নং গেজেটের ন্যয় বাতিল বলে গণ্য হয়েছে।

পীরগঞ্জ উপজেলার যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা খয়রাত আলী বলেন,ইমদাদুল হক কোনো মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন না। আমি আগেও অভিযোগ করে একবার ইমদাদের ১৬২৫ এর ১নং গেজেট বাতিল করেছি।

এরপরেও সে গোপনে নতুন করে ১৭০২ নং গেজেট করে আবারো আবেদন করে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে। পরে আমি বিষয়টি অবগত হয়ে পুনরায় ভুয়া মুক্তিযোদ্ধা এটি অবগত করে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিলে অভিযোগ দিয়েছিলাম।

অবশেষে সেই অভিযোগ তদন্ত শেষে আবারো ইমদাদুল হকের গেজেট বাতিল করে মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল।

অবিলম্বে ইমদাদুল হকের আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন বাতিল করে অন্য কাউকে দেওয়া হোক।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ইমদাদুল হককে ফোনে বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হয়নি।

ঠাকুরগাঁও জেলা প্রশাসক ও জেলা রির্টানিং অফিসার মাহবুবুর রহমান বলেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা লিখিত অভিযোগ দিয়েছে। আমরা বিষয়টি তদন্ত করবো।

মনোনয়নকে কেন্দ্র করে ঠাকুরগাঁও ৩ আসনের সর্বস্তরের জনগণের মাঝে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এ ব্যাপারে রাণীশংকৈল ও পীরগঞ্জ বাসী বলেন বিতর্কিত প্রার্থী পরিবর্তন করে নতুন কাওকে মনোনয়ন দেওয়া হোক ।

হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল

হিন্দুপাড়ায় হামলার ঘটনায় সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল

আলাউদ্দিন কবির, রংপুর প্রতিনিধিঃ

রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় হামলার ঘটনায় জড়িত যৌথ বাহিনীর অভিযানে গ্রেফতার সাংবাদিক সেলিমের রিমান্ড শুনানী আগামীকাল সোমবার অনুষ্ঠিত হবে। গতকাল রোববার দুপুরে তাকে গংগাচড়া আমলী আদালতে পাঠালে সিনিয়র জুডিশিয়াল-১ আদালতের বিচারক কৃষ্ণ কমল রায় আগামীকাল সোমবার উম্মুক্ত আদালতে শুনানীর দিন ধার্য্য করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে কোর্ট ইন্সপেক্টর আমিনুল ইসলাম জানান, আগামীকাল সোমবার পুলিশের পক্ষ থেকে ওই আসামির রিমাণ্ড আবেদন করা হবে। তাকে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে জেলখানায় পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে।

 

গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছে বলে তথ্য প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। গতকাল শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে ওই সাংবাদিককে রংপুর সদরের হরিদেবপুর ইউনিয়নের গোকুলপুর চওড়াপাড়ায় নিজ বাড়ি থেকে আটক করে গংগাচড়া থানায় সোপর্দ করে সেনাবাহিনী। পরে তাঁকে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-কে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগকে কেন্দ্র করে রংপুরের গংগাচড়া উপজেলার বেতগাড়ী ইউনিয়নের আলদাদপুর বালাপাড়া গ্রামের হিন্দু পাড়ায় অজ্ঞাত লোকজন ভাঙচুর, লুটপাট ও হামলা চালায়।

 

ওই হামলায় অন্তত ১৫টি বসতঘর ভাঙচুর ও লুটপাটের শিকার হয়েছিল। পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলে সংঘর্ষ বাঁধে। এতে পুলিশের এক কনস্টেবল গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় ২৯ জুলাই রবীন্দ্রনাথ রায় (৫৫) বাদী হয়ে গংগাচড়া মডেল থানায় ১ হাজার থেকে ১২শ’ অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলাটি দণ্ডবিধির ১৪৯/ ৪৪৭/ ৪৪৮/ ৩৩২/ ৩৩৩/ ৩৫৩/ ৩৭৯ /৩৮০/ ৪২৭/ ৩৪ ধারায় দায়ের করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়া হাবিবুর রহমান সেলিম ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে তার ফেসবুক পেজে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জনগণকে সরাসরি উস্কানি দিয়ে উত্তেজিত করেছিল।

 

বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, অভিযুক্ত গ্রেফতার সেলিম সাংবাদিকতার সাইনবোর্ড লাগিয়ে ফ্যাসিষ্ট আওয়ামীলীগের এজেন্ডা বাস্তবায়নকারী ছিল। আলদাদপুরের হিন্দু পল্লীতে হামলার ঘটনায় সে জড়িত ছিল এবং হামলার জন্য জনগণতে উস্কে দিয়েছিল বলে জানা গেছে। যাতে করে বর্তমান সরকার বেকায়দায় পড়ে যায়। অন্যদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাবিবুর রহমান সেলিম বাংলাদেশ ছাত্রলীগ রংপুর সদর উপজেলার সাবেক সভাপতি। তারাগঞ্জ ডিগ্রী কলেজের সাবেক সাধারন সম্পাদক। সাবেক রংপুর জেলা আওয়ামীলীগ সদস্য। বর্তমান আওয়ামীলীগ সদর উপজেলা শাখার কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ছিলেন।

 

২০২৪ সালের ১৯ জুলাই রংপুর সিটি বাজার এলাকায় আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগের ক্যাডাররা রামদা, ছুরি ও পিস্তল নিয়ে ছাত্র জনতার উপর হামলা চালিয়েছিল। এ সময় নিহত হয়েছিল সাজ্জাদ হোসেন, মুসলিম উদ্দিন মিলন, আব্দুল্লাহ আল তাহির, মেরাজুল ইসলাম মেরাজ। কথিত সাংবাদিক সেলিমের নেতৃত্বে সেইদিন পাগলাপীর থেকে শতাধিক ছাত্রলীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসী সেই হামলায় অংশ নিয়েছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের আগে কোতয়ালী সদর থানায় নিরপরাধ ও নির্দলীয় ছাত্র জনতার নামের তালিকা পাঠিয়ে মামলার ভয় দেখিয়ে হয়রানি ও অর্থ আদায়। চাঁদাবাজি ইত্যাদি অভিযোগ রয়েছে। যা পুলিশ তদন্ত করছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম