রাজধানীতে অধ্যক্ষ কর্তৃক ছাত্রী শিক্ষিকাদের যৌন হয়রানীর অভিযোগ!

 

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ

দেশ, জাতি কিংবা মানচিত্রে ভেদাভেদ থাকলেও সারা বিশ্বে সকল জাতি ধর্মের মানুষের মধ্যে গুরু/শিক্ষক ভক্তির রীতি ও আবেগ যেনো এক ও অভিন্ন। তবে বর্তমানে এই আবেগের হচ্ছে অবক্ষয়; কিছু শিক্ষকের মুখোশধারী বিকলাঙ্গ মানসিকতার নরপিশাচদের কর্মকাণ্ডে। এমনই এক মুখোশধারী শিক্ষকের যৌন হয়রানীর শিকার রাজধানীর শের -ই বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের একাধিক ছাত্রী শিক্ষিকারা। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে ওই লম্পট শিক্ষক।

রাজধানীর মধুবাগ এলাকার শের-ই বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের বিরুদ্ধে নিজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেরই ছাত্রী – শিক্ষিকাদের ক্রমাগত যৌন নির্যাতন ও নিগ্রহের মত কলঙ্কজনক অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগীরা এ বিষয়ে অসংখ্য অভিযোগ করলেও এখনো পর্যন্ত কোন প্রকার প্রতিকার পায়নি। উপরন্তু স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল স্যারের কাছ থেকে পুরস্কার পেয়েছেন এই অধ্যক্ষ।

শেরে-ই বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের যৌন নির্যাতন ও নিগ্রহের বিষয়টি এলাকার স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় তুলেছে।

সম্প্রতি শের- ই বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের এক মেয়ে শিক্ষার্থী অধ্যক্ষ কর্তৃক ফোনালাপের যৌন নিগ্রহের বিষয়ে তার বান্ধবীর কাছে বর্ণনা করছে এমন একটি কল রেকর্ড প্রতিবেদকের হাতে এসে পৌঁছেছে। যেখানে ঐ শিক্ষার্থী স্পষ্ট করে তার বান্ধবীকে বলছে যে, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার তাকে একাকী সময় কাটানোর প্রস্তাব দিয়েছে।

অনুসন্ধানকালে উক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভুক্তভুগী বেশ কয়েকজন শিক্ষিকা ও ছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলে আরো বিস্তরভাবে জানা গেছে, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারের বেপরোয়া যৌন হয়রানির সম্পর্কে। তারা বলেন, বিষয়টি স্থানীয় এলাকাবাসী, শিক্ষা সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এমনকি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যন্ত অভিযোগ করা হলেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি।

সূত্র জানায়, শের-ই বাংলা স্কুল এন্ড কলেজের বর্তমান অধ্যক্ষ আব্দস সাত্তারের বিরুদ্ধে পূর্ববর্তী তথ্য গোপন রেখে যোগদানের অভিযোগ আছে। এর আগে তার সাবেক কর্মস্থল বগুড়া পুলিশ লাইন হাই স্কুল এন্ড কলেজেও অতিরিক্ত ভর্তি ফি গ্রহণ, ফরম পূরণ আমানত ফেরৎ না দেয়া, পরীক্ষায় পুরাতন উত্তরপত্র বিক্রি, গাড়ি ক্রয়, রড বিক্রি, শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্য ও নারী কেলেঙ্কাকারিসহ অনৈতিক নানান কর্মকান্ডে জড়িত ছিলেন তিনি। তার এসব দুর্নীতি ও নারী কেলেঙ্কারির ঘটনাগুলো সেই সময় বগুড়ার স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে গুরুত্ব সহকারে প্রচার করা হয়েছিল।

জানা গেছে, মূলত এরপরই বগুড়ার তৎকালীন পুলিশ সুপার মোজাম্মেল হক পিপিএম ৫ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেন এবং বগুড়া পুলিশ লাইন হাই স্কুল এন্ড কলেজে দায়িত্ব পালনকালে রোটারিয়ান অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তারকে ২০১২ সালের ১৯ আগষ্ট সাময়িক ভাবে বহিষ্কার করা হয়।

মধুবাগ এলাকার বাসিন্দা উজ্জল সাক্ষাৎকারে জানান, অধ্যক্ষ আব্দুস সাত্তার কর্তৃক ছাত্রী ও শিক্ষিকাদের যৌন হয়রানীর বিষয়টি এলাকার সকলেই জানেন সকলের মুখে মুখে থাকা সত্ত্বেও এমন একটি চাঞ্চল্যকর ঘৃণিত বিষয়ে কোন প্রকার পদক্ষেপ না হওয়ায় হতাশ এলাকাবাসী।

অবশেষে এসব অভিযোগের বিষয়ে অধ্যক্ষ আবদুস সাত্তারের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোন নাম্বারে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

টিকটকের রমরমা বাণিজ্যে দিশেহারা তরুণ সমাজ

স্টাফ রিপোর্টার॥

বাংলাদেশে ‘টিকটক’ অ্যাপের ব্যবসা বাড়াতে হঠাৎ করেই দেশের শিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রীদের দিয়ে শুরু করা হয়েছে প্রচার-প্রচারণা। নাচ-গান-সিনেমার সংলাপ কিংবা রান্নার রেসিপিও মিলছে টিকটক ভিডিওতে। তবে, টিকটকের অশ্লীল ভিডিও, মাদক সেবনসহ আপত্তিকর বিভিন্ন ভিডিওর কারণে যখন দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো টিকটককে একে একে বন্ধ করা শুরু করেছিল, সেই নিষেধাজ্ঞা কী করে অতিক্রম করল টিকটক? অনুসন্ধানে জানা যায়, বড় অঙ্কের লেনদেনে বাংলাদেশে নির্বিঘে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে টিকটক। এ দেশে টিকটকের রমরমা বাণিজ্যে দিশেহারা যুবসমাজ।

রুচিহীন ভিডিও দিয়ে ডিজিটাল দুনিয়ায় অন্যের মনোযোগ আকর্ষণ করে নিজের পরিচিতি পাওয়ার প্রবণতাকে ভয়াবহ মানসিক অসুস্থতা বলছেন মনোবিদরা। টিকটক একদিকে যেমন অশ্লীল রুচিহীন কর্মকাণ্ডের বিস্তার ঘটাচ্ছে, অন্যদিকে তৈরি করছে মানসিক বৈকল্য।

গুলশানে এক রিকশাচালক বাসের সঙ্গে পাল­া দিয়ে রিকশা চালাচ্ছিলেন। এর মধ্যেও মোবাইল ফোনে সচল রেখেছেন টিকটক অ্যাপ। রিকশা চালাচ্ছেন আর পছন্দের গানের সঙ্গে ক্রমাগত মুখোভঙ্গি করে ঠোঁট মিলিয়ে যাচ্ছেন। ভিডিওটি আপ হলে লাইক, শেয়ারের বন্যা বইবে বলে ধারণা তার। ঝুঁকিপূর্ণ এ কাজ করতে গিয়ে ঘটতে পারত বড় দুর্ঘটনা।

২০১৬ সালে চীনে টিকটকের জন্ম হলেও সেখানে এখন এটির ব্যবহার অনেক কম। অথচ বাংলাদেশে এই অ্যাপটি জনপ্রিয়তায় এক নম্বরে।

সামাজিকমাধ্যমে লেখালেখি করা রাজীব নূর বলেন, আমি গত দুই মাস ধরে নিয়মিত এক ঘণ্টা করে টিকটক দেখেছি। অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলাম। টিকটক অন্য এক দুনিয়া। ইয়াবার চেয়ে কোনো অংশে কম নয় টিকটক নেশা। দুই-একটা উদাহরণ আমি দিচ্ছি। একজন বয়স্ক লোক টিকটক করছেন। পঞ্চাশের উপরে তার বয়স। লাল চুল, লাল দাড়ি। নাগিন নাচ দিয়ে এই লোক টিকটক করছেন। অতি কুৎসিত তার অঙ্গভঙ্গি। কোনো রুচিশীল মানুষ এরকম অঙ্গভঙ্গি করতে পারে না।

আরেকজন আছে এরকম বদ টিকটকার। অসুস্থ ও প্রতিবন্ধী দাদা বিছানায় শুয়ে আছেন। দাদার জীবন যায় যায় অবস্থা। টিকটকার অসুস্থ দাদার চার পাশে ঘুরে ঘুরে নেচে নেচে টিকটক করছে। সে প্রচুর লাইক পেয়েছে। তার ফলোয়ারও প্রচুর। কথা হলো এখানে এত লাইক দেওয়ার কী আছে? কারা এখানে লাইক দিচ্ছে? ছেলেটা বাজে মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এই টিকটক প্রজন্ম পাগল হয়ে গেছে। রিকশায় টিকটক করছে, বাথরুমে টিকটক করছে, বাস, গাড়ি, সিএনজি অটোরিকশা, ফাস্টফুডের দোকান, শপিংমল, ফুটপাত, রান্নাঘর, অফিস, বারান্দা, পার্ক, বাইক এমন কোনো জায়গা বাদ নেই যেখানে টিকটক করছে না। এটা অসুস্থ মানসিকতার লক্ষণ। এই প্রজšে§র ছেলেমেয়েদের অভিভাবকরা কি দেখছে না? কোন দিকে যাচ্ছে তাদের সন্তান? এদের ভবিষ্যৎ কী? এদের কথা কেউ ভাবছে না কেন?

ফেরদৌস আল মোত্তাকিন এবং টিকটক : ২০২২ সালের ১৭ জানুয়ারি বগুড়া জেলার ফেরদৌস আল মোত্তাকিনকে টিকটকের হেড অব পাবলিক পলিসি অ্যান্ড গভর্নমেন্ট রিলেশন্স অফিসার হিসাবে নিয়োগ দেয় কোম্পানিটি। মূলত বাংলাদেশ, ভারত, নেপালসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর নীতি-নির্ধারকদের সঙ্গে টিকটকের হয়ে সুসম্পর্ক তৈরি করে, নিষিদ্ধ হওয়া ঠেকানো এবং ইতিবাচক প্রচারণা বাড়িয়ে টিকটক কোম্পানির ব্যবসা বাড়ানোর দায়িত্ব দেয়া হয়। দুবাই অফিসে নিয়োগপ্রাপ্ত ফেরদৌস আল মোত্তাকিন চাকরির সুবাদে পরিবারসহ থাকছেন সেখানে।

সম্প্রতি সমালোচনা শুরু হয়েছে বাংলাদেশে নতুন করে টিকটক ব্যবসা চাঙ্গা করতে বিভিন্ন দপ্তরে মোটা অঙ্কের টাকা দিচ্ছে কোম্পানিটি। যুবসমাজকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দেওয়ার এই অ্যাপটি এ দেশে যেন বন্ধ করে দেওয়া হয় তার দাবি উঠেছে সচেতন মহলে।

ফেরদৌস আল মোত্তাকিনের সঙ্গে এ বিষয়ে মোবাইল ফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কল ধরলেও টিকটকের প্রসঙ্গ এড়িয়ে যান।

কে এই ফেরদৌস আল মোত্তাকিন? আর কেনইবা দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে টার্গেট বানিয়ে দেশে দেশে গিয়ে টিকটকের হয়ে নীতিনির্ধারকদের বাগে আনার দায়িত্ব দেওয়া হলো তাকে?

বগুড়া সদরের জহুরুল নগরের দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেওয়া ফেরদৌস মোত্তাকিন ওরফে তুশার ২০০৮ এবং ২০০৯ সালে অবৈধ ভিওআইপি ব্যবসা করে কোটি কোটি টাকার মালিক হয়েছেন। এমন অভিযোগ করেছেন বগুড়ার স্থানীয় জনগণ। বগুড়ার বিভিন্ন ব্যবসায়ীসহ সাধারণ মানুষকে ঠকিয়ে অনেক টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসী জানান, ভিওআইপি ব্যবসার অবৈধ টাকা দিয়ে ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট এলাকার অ্যাস্যুরেন্স সিটি অ্যাপার্টমেন্টে বিলাসবহুল ফ্ল্যাট, স্ট্যান্ডার্ড চার্টার্ড ব্যাংকসহ সিঙ্গাপুরের ব্যাংকে একাধিক এফডিআর করেন ফেরদৌস আল মোত্তাকিন। আফ্রিকার একটি মোবাইল কোম্পানি জিএসএমএ’তেও চাকরি করতেন তিনি। হঠাৎ করে তার শত কোটি টাকার মালিক হওয়া নিয়ে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী।

অনুসন্ধানে জানা গেছে, ট্রাভেল এজেন্সি ‘ভিসাথিং’-এর চেয়ারম্যান ফেরদৌস মোত্তাকিন আদম ব্যবসার সঙ্গেও জড?িত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘রোমানিয়া ইনফরমেশন হেল্প ফর বাংলাদেশি’ নামের একটি প্রাইভেট গ্র“পে ফেরদৌস আল মোত্তাকিনের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভিসাথিং-এর প্রতারণা ও জালিয়াতি নিয়ে লাইভ প্রচার করা হয় গত ১১ জুন, ২০২৩ বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায়। ট্যুর অপারেটর্স অ্যাসোসিয়েশন-টুয়াবের সদস্য (সদস্য নং-২৬১) ফেরদৌসের বিরুদ্ধে আদম ব্যবসা ও প্রতারণার অভিযোগ মেলে। ফেরদৌসের অবৈধ সম্পদের তদন্ত চান ভুক্তভোগীরা।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের