ডেমরায় জনসাধারণের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজধানীর ডেমরা থানাধীন ৬৬ নং ওয়ার্ডের ভুট্টোচত্বর এলাকায় দীর্ঘ প্রায় ১৫ বছরের পুরনো একটি রাস্তা বন্ধ করে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করার প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেছে এলাকাবাসী। এলাকাবাসীর ব্যানারে শনিবার সকাল ১১ টায় ঐ রাস্তার সামনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর নারী পুরুষ মানববন্ধনে অংশ নেন।
এ সময় তারা বলেন, জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কের মাঝখানে দেয়াল তুলে সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে লিপি আক্তার নামে এক নারী। এতে প্রায় ৪০ পরিবার অবরুদ্ধ হয়ে পড়েছে। ফলে স্কুল পড়ুয়া সন্তানদের নিয়ে পরিবারগুলো মানবেতর জীবন যাপন করছে। এলাকার বাসিন্দাদের চরম ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। অবিলম্বে এই সড়কের মাঝে উত্তোলন করা দেয়াল ভেঙে সাধারণ মানুষের চলাচলের রাস্তা উম্মুক্ত করে দেওয়ার দাবি জানান তারা। অবিলম্বে এই সড়কটি অবমুক্ত করে দেওয়া না হলে ওই এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি সহ ওয়াসার খাবার পানি সরবরাহ বিঘ্নিত হবে, সুয়ারেজ ব্যবস্থা ভেঙে পড়বে। এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো অবিলম্বে সিটি কর্পোরেশনের মেয়র এবং ঢাকা জেলা প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ করার ঘোষণা দিয়েছেন। এবং এ বিষয়ে ভবিষ্যতে বৃহত্তম কর্মসূচি পালন করারও ঘোষণা দেন তারা।

মানববন্ধন থেকে স্থানীয় ঢাকা-৫ আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব মশিউর রহমান মোল্লা সজল এবং ডেমরা থানা অফিসার ইনচার্জ জহিরুল ইসলামকে স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।

 

উল্লেখ থাকে যে গত ২০০৯ সালে মাতুয়াইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন মিয়ার উদ্যোগে স্থানীয় শহীদ কন্ট্রাকটার কে সাথে নিয়ে জনসাধারণের চলাচলের জন্য ১২ ফুট রাস্তাটি নির্মাণ করা হয়। মাতুয়াইল নিউটাউনের গুগল ম্যাপে রাস্তাটি দৃশ্যমান আছে। লিপি আক্তার নামে একজন মহিলা প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় থেকে গত কয়েকদিন আগে টিনের ব্যারিকেড দিয়ে রাস্তার উপরে উঁচু দেয়াল নির্মাণ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। রাস্তাটি দেয়াল তুলে বন্ধ করে দেয়ায় ভুক্তভোগী চল্লিশটি পরিবার বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছে। এই রাস্তার নিচ দিয়ে স্থানীয়দের গুরুত্বপূর্ণ সেবা প্রতিষ্ঠান ওয়াসার পানির পাইপ পয়ঃনিষ্কাশনের সুয়ারেজ লাইন স্থাপন করা হয়েছে। এ রাস্তাটি এই চল্লিশটি পরিবারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । এ রাস্তার ভেতরে বেশকিছু বহুতল ভবন অবস্থিত যেখানে শত শত যানবাহনও চলাচল করে আসছিল দীর্ঘদিন যাবৎ। এছাড়াও বর্তমানে আরো কিছু বহুতল ভবন নির্মাণাধীন অবস্থায় আছে।ভুক্তভোগী পরিবার গুলোর পক্ষে আব্দুল কাদের নামক একজন এ বিষয়ে ডেমরা থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

রাস্তা খুলে দেওয়ার দাবিতে ভুক্তভোগীরা কয়েক দফা প্রতিবাদ করেছে। সম্প্রতি ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ৬৬নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেও বিষয়টি অবগত করা হয়েছে।
বাদশামিয়া রোড সংলগ্ন ভুট্টো চত্বর এলাকার আয়েশা হক ট্রেড সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় জনৈক লিপি আক্তার চেয়ারম্যান নাসির উদ্দিন সড়কের প্রধান প্রবেশদ্বারে উঁচু দেয়াল তুলে চলাচলের রাস্তা বন্ধ করে দেয়। লিপি আক্তার সন্ত্রাসীদের দাঁড় করিয়ে রেখে সশস্ত্র মহড়া দিয়ে ভয়-ভীতি সৃষ্টি করে এই স্থানে উচু প্রাচীর নির্মাণ করে। লিপি আক্তারের মা আয়েশা খাতুন ২০০৯ সালে এই জায়গাটি রাস্তার জন্য ছেড়ে দেয়। লিপি আক্তারের মা একই খতিয়ানভুক্ত এই জমি সহ আশেপাশের বিভিন্ন জমি এসব ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর কাছে বিক্রয় করেন। সেই সময় এই রাস্তাটিকেই চলাচলের রাস্তা হিসেবে দলিলে দেখানো হয়েছিল।সরকারি গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্রে রাস্তাটি দৃশ্যমান আছে। লিপি আক্তার ভুক্তভোগী পরিবারগুলোকে ও রাস্তা বন্ধের প্রতিবাদ করতে আসা লোকজনকে কাপড় উঁচিয়ে নারী নির্যাতন মামলার ভয় ভীতি দেখিয়ে দমন করার চেষ্টা করছে বলেও জানান তারা।

সায়েন্সল্যাব মোড়ে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ, বন্ধ যান চলাচল

স্টাফ রিপোর্টার:  

সিটি কলেজ ও ঢাকা কলেজের উচ্চমাধ্যমিক শ্রেণির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের জেরে রণক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে রাজধানীর সায়েন্সল্যাবরেটরি এলাকা। শিক্ষার্থীদের নিবৃত করতে বিপুল সংখ্যক পুলিশ উপস্থিত থাকলেও এখনো সড়কেই অবস্থান করছেন শিক্ষার্থীরা। এরমধ্যে ঢাকা কলেজ শিক্ষার্থীরা সায়েন্সল্যাবরেটরি মোড় অবরোধ করে আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন। এতে বন্ধ হয়ে গেছে মিরপুর সড়কের যান চলাচল।

মঙ্গলবার (২২ এপ্রিল) বিকেল সোয়া তিনটার দিকে ওই এলাকায় এমন চিত্রই দেখা গেছে।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, সায়েন্সল্যাব মোড়ে সিটি কলেজর সামনে অর্ধশতাধিক পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিয়েছেন। তারা সিটি কলেজে শিক্ষার্থীদের ঘিরে রেখেছেন। এর বিপরীতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীর অবস্থান নিয়েছেন সায়েন্সল্যাব মোড় এলাকায়। সেখানে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করতেও দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। এতে করে নীলক্ষেত থেকে সায়েন্সল্যাব অভিমুখের সড়কে যানচলাচল বন্ধ হয়ে গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, দুপুর ১২টার পর থেকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও হামলার ঘটনা ঘটে। এরপর একাধিকবার পুলিশ সদস্যরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করলেও ব্যর্থ হয়। এরপর বারবার থেমে থেমে সংঘর্ষ হতে থাকে দুই কলেজের শিক্ষার্থীদের মধ্যে। এতে দুই কলেজের একাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।

অন্যদিকে দুপুর দেড়টার পর ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেয়। পরে একপর্যায়ে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীরা সিটি কলেজের নামফলক তুলে নিয়ে যায়। নিউমার্কেট এলাকার পরিস্থিতি এখনো থমথমে এবং উত্তেজিত। যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ রয়েছে। দুই কলেজের এই সংঘর্ষের কারণে বরাবরের মতো সাধারণ মানুষজন রাস্তাটি ব্যবহার করতে ভয় পাচ্ছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম