ডিসেম্বর এর মধ্যে দেশের প্রতিটি জেলায় কমিটি করার ভাবনা

স্টাফ রিপোর্টার॥

ডিসেম্বর মাসের মধ্যে সারা দেশে নিজেদের সাংগঠনিক কাঠামো গোছানোর পরিকল্পনা নিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এর অংশ এরই মধ্যে জেলা পর্যায়ে কমিটি গঠন শুরু করেছে তারা। শনিবার কুষ্টিয়া জেলায় আহ্বায়ক কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে প্রায় ১৫টি জেলায় তাদের কমিটি ঘোষণা করা হতে পারে।

তবে দেশের ৬৪টি জেলায় কমিটি গঠন করা সম্ভব হবে কি না, সে বিষয়ে এখনো নিশ্চিত নন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। তাঁরা অতন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলাগুলোতে কমিটি গঠন করতে চান।

গত শনিবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ ও সদস্যসচিব আরিফ সোহেলের স্বাক্ষরে কুষ্টিয়া জেলার যে কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে, তা ১১১ সদস্যের। আগামী ছয় মাসের জন্য এই আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে গত ১ জুলাই সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। এই আন্দোলন একপর্যায়ে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে রূপ নেয়। সেই অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতন ঘটে। আন্দোলন পরিচালনায় গত ৮ জুলাই ৬৫ সদস্যের সমন্বয়ক টিম গঠন করেছিল বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। পরে ৩ আগস্ট তা বাড়িয়ে ১৫৮ সদস্যের করা হয়। ৫ আগস্টের পর থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সমন্বয়ক পরিচয়ে অনেকের বিরুদ্ধে নানা নেতিবাচক কর্মকান্ডে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ ওঠে। এমন পরিস্থিতিতে গত ২২ অক্টোবর রাতে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে সংবাদ সম্মেলন করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন নিজেদের ১৫৮ সদস্যের সমন্বয়ক টিম বিলুপ্ত করে চার সদস্যের কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি গঠন করার কথা জানায়। কমিটিতে হাসনাত আবদুল্লাহকে আহ্বায়ক, আরিফ সোহেলকে সদস্যসচিব, আবদুল হান্নান মাসউদকে মুখ্য সংগঠক ও উমামা ফাতেমাকে মুখপাত্র করা হয়।

যে সংবাদ সম্মেলনে নতুন কমিটির কথা জানানো হয়, সেখানে সমন্বয়কেরা বলেছিলেন, ভুয়া সমন্বয়ক পরিচয়ে কেউ যাতে অপকর্ম করতে না পারেন, সেই চিন্তা থেকে তাঁরা সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠন করতে চান। শিগগিরই কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি বর্ধিত করে পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে। কমিটির প্রধান দুই লক্ষ্য হচ্ছে অভ্যুত্থানের শক্তিকে সংগঠিত করা এবং ‘মুজিববাদী অপশক্তিকে’ বাংলার মাটি থেকে সমূলে উৎপাটনে লড়াই অব্যাহত রাখা।

এখন জেলায় জেলায় কমিটি গঠনের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতারা। প্রাথমিকভাবে আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে ১৫টির মতো জেলায় কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সদস্যসচিব আরিফ সোহেল। এই কমিটিগুলো ‘মোটামুটি প্রস্তুত’ বলেই জানান তিনি।

আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ জেলা ও কেন্দ্রীয় আহ্বায়ক কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার প্রস্তুুতি নেওয়া হচ্ছে বলে জানান আরিফ সোহেল। তিনি বলেন, যেসব জেলায় কমিটি করা হবে, সেই জেলাগুলোর বেশির ভাগ উপজেলার কমিটি তৈরি হয়ে গেছে। উপজেলা কমিটি জেলা কমিটির সঙ্গেই ঘোষণা করা হবে।

এবার চুয়াডাঙ্গা জেলায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক কমিটি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন যখন যাত্রা শুরুহয়েছিল, তখন এর নেতাদের নীতিগত সিদ্ধান্ত ছিল যে কোটা আন্দোলন শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এই ব্যানার অকার্যকর হয়ে যাবে। সরকার পতনের পর ১২ আগস্ট রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে ৩৫টি ছাত্রসংগঠনের নেতাদের সঙ্গে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের বৈঠক হয়। সেখানেও ছাত্র সংগঠনগুলোর নেতাদের কেউ কেউ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ব্যানারটি বিলুপ্ত করার বিষয়ে বিভিন্ন সময়সীমার কথা প্রস্তাব করেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ব্যানারটি বহাল রাখার পথে হেঁটেছেন সমন্বয়কেরা।

এ বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আবদুল কাদের প্রথম আলোকে বলেন, আন্দোলন শুধু কোটা সংস্কারে সীমাবদ্ধ থাকেনি, বরং এই ব্যানার ফ্যাসিবাদের পতন ত্বরান্বিত করে। দেশের মানুষ মনে করে, এই ব্যানারের কার্যক্রম এখানে স্থগিত হওয়ার সুযোগ নেই। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান–পরবর্তী রাষ্ট্র সংস্কারের দায়দায়িত্ব এই ব্যানারের ওপর বর্তায়। তবে এই ব্যানার কোনো রাজনৈতিক দলে রূপ নেবে না বলে জানান তিনি।

তবে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে সরানোসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন কিছুদিন ধরে জাতীয় নাগরিক কমিটির সঙ্গে যৌথভাবে নানা কর্মসূচি পালন করছে। জাতীয় নাগরিক কমিটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে।

সবা:স:সু-১৭/২৪

 

নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : রিজভী

নির্বাচন নিয়ে গভীর ষড়যন্ত্র চলছে : রিজভী

ডেস্ক রিপোর্ট:

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ভোটকেন্দ্র আবার ভোটারের পদধ্বনিতে মুখর হবে। এইটা চাই, তার জন্যই এত কিছু। তাহলে ভোট কেন পেছাবে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কথা উঠেছে কেন? এটা তো আজ গোটা জাতির প্রশ্ন। তাহলে নিশ্চয় ভেতরে ভেতরে অত্যন্ত গভীর ষড়যন্ত্র চলছে; এটা তো হতে পারে না।

বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এ অভিযোগ করেন। কৃষক দলের সভাপতি হাসান জাফির তুহিনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুলের পরিচালনায় সমাবেশে অন্যরা বক্তব্য দেন।

রিজভী বলেন, আমরা বলেছি, সংস্কার চাই। যৌক্তিক সময়ে নির্বাচন দিন, একটা নির্দিষ্ট সময় বলে দিন, বেশি প্রলম্বিত করবেন না। লন্ডনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বৈঠক হলো; বৈঠক থেকে একটা যুক্ত বিবৃতি এলো। দেশের মানুষ একটু স্বস্তি পেয়েছে; কিন্তু এই স্বস্তি আমার মনে হয় কেউ কেউ চাচ্ছেন না। তার পরই সারা দেশে শুরু হলো সংঘাত রক্তাক্ত পরিস্থিতি! কেন প্রশ্ন তোলেন তিনি।

রিজভী বলেন, রাজধানীর মিটফোর্ডে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় সঙ্গে সঙ্গে বিএনপি নিন্দা জানিয়েছে। এটার সঙ্গে যারা জড়িত, তাদের আজীবন বহিষ্কার করেছি। ঘটনার পরপর চেয়ারম্যান ও মহাসচিবের বিবৃতিসহ নিন্দা জানানো হয়েছে। বলা হয়েছে, জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, তারা যেখানেই থাকুক, যে অবস্থায় থাকুক।

রিজভী আরও বলেন, নারায়ণগঞ্জের মাফিয়া গডফাদার আর কক্সবাজারের গডফাদারের জন্য শেখ হাসিনা পার্লামেন্টে তাদের পক্ষে কথা বলতেন। আর দলের নামে কেউ যদি চাঁদাবাজি করেছে, কেউ যদি অন্যায় করেছে, তাহলে সাংগঠনিক শাস্তির ব্যবস্থা হচ্ছে। শাস্তিস্বরূপ কেউ বহিষ্কার হচ্ছেন, কারও পদ স্থগিত হচ্ছে অথবা আমরা নিজেরাই পুলিশকে বলছি, তাদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে অথবা নিজেরাও মামলা দিচ্ছেএটাই তো তারেক রহমান। আর মিটফোর্ডের ঘটনায় কেন তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ স্লোগান দেওয়া হচ্ছে?

তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ছয়-সাত বছর ভয়ংকর নিপীড়নের শিকার হয়েছেন। অন্ধকারাচ্ছন্ন ঘরের মধ্যে যেখানে নিঃশ্বাস নেওয়া যায় না; সেই ঘরের মধ্যে বন্দি করে রাখল শেখ হাসিনা। গোটা জাতি যার প্রতি সহানুভূতিশীল, অথচ তার বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ কথা বলছেন!

তিনি আরও বলেন, তারেক রহমানকে ছাদের ওপর থেকে ফেলে দিল, কোমর ভেঙে ফেলা হয়। নিপীড়িত নির্যাতনের এক প্রতীক হচ্ছে তারেক রহমান। তার বিরুদ্ধে মিছিল ও ফেসবুকে সামাজিক গণমাধ্যমে বিভিন্ন কনটেন্ট তৈরি করে আজেবাজে বিভিন্ন ধরনের কথাবার্তা বলা হচ্ছে; তাহলে খুলনায় বিএনপির একজন যুবককে গুলি করে তার পায়ের রগ কেটে দিল এবং কক্সবাজারে বিএনপিকর্মী আব্দুর রহিমকে হত্যা করল জামায়াত। সেটা নিয়ে কথা হচ্ছে না কেন?

সবসময় যে কোনো হত্যাকাণ্ড ও রক্তপাত হলে সরকারকে অভিযোগ করে এমন মন্তব্য করে রিজভী বলেন, আইনশৃঙ্খলার জন্য দায়দায়িত্ব সরকারের অথচ তাকে কিছু বললেন না, প্রশাসনকে কিছু বললেন না। মিছিল করছেন তারেক রহমানের বিরুদ্ধে, যিনি ১৭-১৮ বছর লন্ডনে রয়েছেন। যিনি নিজেই শেখ হাসিনার নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার।

ছয়-সাত বছরের নেতৃত্ব দিয়ে গণতন্ত্রের বিজয়কে নিশ্চিত করেছেন তারেক রহমান জানিয়ে রিজভী বলেন, সাহস আর আত্মবিশ্বাসের প্রতীক তারেক রহমান।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য এবং স্লোগান দেওয়ার প্রতিবাদে এ কর্মসূচির আয়োজন করে কৃষক দল।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক