ক্যানসারের মহৌষধ ভেষজ আঙ্গুর

স্টাফ রিপোর্টার:

চিকিৎসকদের ভাষায় ক্যানসার একটি ‘মাল্টি ফ্যাকেটেরিয়াল ডিজিজ’। মূলত তেল-মশলাদার খাবার, অতিরিক্ত বাইরের খাবার, অতিরিক্ত চিনি ও ময়দা খেলে ক্যানসার হওয়ার আশঙ্কা বাড়ে। শরীরের কোনও কোষের অস্বাভাবিক ও অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিই ক্যানসারের অন্যতম কারণ।

ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই এবং তা নির্মূল করার উপায় খুঁজতে বিজ্ঞানীরা দিনরাত পরিশ্রম করছেন। রোগীদের কিছুটা রিলিফ কীভাবে দেওয়া যায় তার উপায় খোঁজ করছেন তারা।

২৫ বছর ধরে গবেষণা করছেন ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিটি মেডিকেল ফিজিক্স এবং সাইকোলজির সিনিয়র প্রফেসর ডাক্তার হার্ডিন। তিনি ক্যান্সার নিয়ে একটি গবেষণা রিপোর্ট পেশ করেছেন।

গবেষণা রিপোর্টে তিনি জানিয়েছেন যে ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্য প্রয়োগ করা কেমোথেরাপি রোগীদের যন্ত্রণাদায়ক মৃত্যুর দিকে ঠেলে নিয়ে যায়।

এর বদলে প্রাকৃতিক উপায় যদি আপনি ফল গ্রহণ করেন বা ঘরোয়া ওষুধ হিসেবে ব্যবহার করা যায় ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অনেক বেশি কার্যকর বলে প্রমাণিত হয়।

তাও আবার কোনরকম সাইড এফেক্ট ছাড়াই এটিই কাজ করে। জানিয়ে দেওয়া যাক যে, এমন একটি ওষুধের বিষয়ে যা ক্যান্সারের কোশিকাগুলিকে খুব দ্রুত শেষ করে দিতে পারে।

সম্প্রতি এই গবেষণা রিপোর্টে প্রমাণিত হয়েছে যে আমাদের খুব পরিচিত আঙ্গুর ও আঙ্গুরের বীজের লিউকোমিয়াসহ নানা প্রকার ক্যানসারকে নিষ্ক্রিয় করার বিষয়ে কার্যকরী প্রমাণিত হয়েছে।

গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে যে, আঙ্গুরের বীজ শুধুমাত্র ৪৮ ঘণ্টায় প্রত্যেক রকম হওয়া ক্যান্সারকে ৭৬ শতাংশ পর্যন্ত বিকীর্ণ করে দিতে পারে।

আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি ক্যান্সার রিসার্চ রিপোর্ট অনুযায়ী আঙ্গুরের বীজে পাওয়া জেএনকে প্রোটিন ক্যান্সার কোশিকাগুলিকে বিকীর্ণ করে তাকে নিয়ন্ত্রণ করে সহায়তা করে।

ক্যান্সারের রোগে চিকিৎসায় আঙ্গুরের বীজ অত্যন্ত কার্যকরী ঘরোয়াবায় আঙ্গুর বেশি খেলেও কোনও ক্ষতি নেই। নিয়মিত আঙ্গুল খাওয়া তা জরুরি।

তাই যারা নিয়মিত আঙ্গুর খান, তাদের ক্ষেত্রে ক্যানসার নিয়ন্ত্রণে রাখার ক্ষেত্রে অনেকটা বেশি কাজ করে। লাল, কালো, সবুজ সব ধরনের আঙুরই এই তালিকায় রাখা হয়েছে। সব আঙুরের বীজে একই ধরনের গুণ রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন।

ফলের রানি আঙ্গুরকে পুষ্টির ‘স্টোরহাউস’ বলা হয়। মন মাতানো আঙ্গুরের রং, কোনোটা সবুজ তো কোনটা বেগুনী-লাল, কোনটা আবার গাঢ় ব্লু। এটি যেমন দেখতে সুন্দর তেমনি এর স্বাদও অতুলনীয়। আঙ্গুর নিয়মিত খেলে বিভিন্ন ধরনের মারণ রোগকে এড়ানো সম্ভব হয়। এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা এতটাই বাড়িয়ে তোলে যে ছোটখাটো রোগগুলো শরীরের ধারে কাছে ঘেঁষতে পারেনা।

এমনিতেও আঙ্গুরে নানা রকম গুণ রয়েছে। তাছাড়া ক্যান্সার সম্পর্কিত বা ক্যান্সারের সম্ভাবনা দেখা দিলে নিয়মিত আঙ্গুর খাওয়ার উপরে জোর দিয়েছেন তারা। ক্যানসার রুখতে ম্যাজিকের মতো কাজ করে আঙ্গুর। আঙ্গুর ফল ক্যানাসরের মহৌষধ।

গবেষণায় দেখা গেছে, প্রতিদিন ৬০টি করে আঙ্গুর খেলে রোদে পোড়া ত্বকের কালচে ভাব নির্মূল হয়। গবেষণায় অংশগ্রহণকারী ২৯ জনকে আঙুরের গুঁড়া খাইয়ে পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। এই গুঁড়া খাওয়ার ৪ সপ্তাহ পর, কিছু জনের ত্বকে পরিবর্তন লক্ষ্য করেন গবেষকরা। তাদের ধারণা আঙ্গুরে থাকা ‘পলিফেনল’ নামক যৌগটির কারণেই হয়তো ত্বকের এই পোড়া ভাব রোধ করা সম্ভব হয়েছে।

সম্প্রতি ব্রিটেনে বাড়তে থাকা ত্বকের ক্যানসার ভয় ধরাচ্ছে চিকিৎসক থেকে সাধারণ মানুষের মনে। সে দেশে দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ ‘নন-মেলানোমা’ ত্বকের ক্যানসারে আক্রান্ত। দুরারোগ্য এই ত্বকের ক্যানসারে প্রতি বছর নতুন করে ১৬ হাজার রোগী আক্রান্ত হন। এই ধরনের ক্যানসারে আক্রান্ত হওয়ার পিছনে অতিবেগুনি রশ্মিরই প্রভাব রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা।

আঙ্গুরে রয়েছে ভিটামিন এ, ভিটামিন সি, ভিটামিন বি, কে, সি, বি১, বি৬ এবং খনিজ উপাদান ম্যাংগানিজ, ক্যালসিয়াম ও পটাশিয়াম। ফ্লেভোনয়েডস হল আঙ্গুরের মধ্যে পাওয়া শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপাদান যা শরীরের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এছাড়াও নানান পুষ্টি উপাদান রয়েছে, যেমন ক্যালরি, ফাইবার, গ্লুকোজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং সাইট্রিক অ্যাসিড — যা প্রচুর পরিমাণে আঙ্গুরের মধ্যে পাওয়া যায়।

নিয়মিত আঙ্গুর ফলটি সেবন করেন তাহলে নিজের শারীরিক পরিবর্তন দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

আঙ্গুর ক্যানসারের মতো বিপজ্জনক রোগ প্রতিরোধেও সহায়ক। আঙ্গুরে পর্যাপ্ত পরিমাণে উপকারী উপাদান রয়েছে, যেমন – গ্লুকোজ, ম্যাগনেসিয়াম এবং সাইট্রিক অ্যাসিড। আঙ্গুর মূলত টিবি, ক্যানসারের মতো মারণ রোগের বিরুদ্ধে লড়াই করে। স্তন ক্যানসারের ঝুঁকিতে আছেন এমন রোগীরা খেতে পারেন আঙ্গুর। গবেষণায় দেখা গেছে, আঙুরের উপাদানগুলো ক্যানসার সৃষ্টিকারী কোষের বিরুদ্ধে কাজ করতে সক্ষম।

আঙ্গুর নিয়মিত খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আসে। নিউট্রিশন নামক জার্নালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয় যে, প্লাটিলেটের সক্রিয়তা কমানোর মাধ্যমে আঙ্গুরের জুস হার্টের ব্লকেজ প্রতিরোধে সাহায্য করে। গবেষণায় দেখানো হয় যে, এক গ্লাস লাল আঙ্গুরের জুস ধমনীতে প্লাটিলেটের সংখ্যা কমায়।

যারা হৃদরোগে ভুগছেন তাদের জন্য আঙ্গুর খাওয়া খুবই উপকারী। এটি হৃদপিণ্ডকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখে ও রক্ত চলাচলে সাহায্য করে। একটি গবেষণা অনুযায়ী, এটি স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে সাহায্য করে।

আঙ্গুরের উপাদানগুলো ক্ষতিকারক ইউরিক অ্যাসিডের মাত্রা সহনশীল অবস্থায় রাখে। সেই সঙ্গে কিডনির রোগব্যাধির বিরুদ্ধেও লড়াই করে।

ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের আঙ্গুর খাওয়া উচিত। এটি দেহে চিনির মাত্রা কমাতে সাহায্য করে। এছাড়াও এটি আয়রনের একটি ভালো উৎস যা শারীরিক দুর্বলতাকে দূর করে।

আঙ্গুরের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়, যা চোখের জন্য খুবই উপকারী। যাদের চোখের সমস্যা রয়েছে তারা নিয়মিত আঙ্গুর খেতে পারেন।

ব্যাকটেরিয়া এবং ভাইরাস সংক্রমণের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য আঙ্গুরে অসংখ্য পুষ্টি উপাদান রয়েছে। আঙ্গুর ভিটামিন “সি” এর একটি ভাল উৎস, যা দেহের প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারে। ফ্লু ভাইরাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করার জন্য আঙ্গুরের খোসা খাওয়া বেশি উপকারী।

শরীরের ফ্রি রেডিকেলস ত্বকে বলিরেখা ফেলে দেয়। আঙুরে থাকা ভিটামিন সি আর অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট এই ফ্রি রেডিকেলের বিরুদ্ধে লড়ে, শরীরে বয়সের ছাপ পড়তে দেয় না।

আঙ্গুরের রস পানে সরাসরি ওজন কমতে সাহায্য করেনা কিন্তু পোস্ট ওয়ার্ক আউট ড্রিংক হিসেবে এটি চমৎকার। একটি গবেষণায় জানা যায় যে, একটানা ১২ সপ্তাহ ধরে প্রতিদিন আঙ্গুরের জুস পান করলে ওজন বৃদ্ধি পায়না।

ডেঙ্গু: ১২১ জন নতুন রোগী হাসপাতালে ভর্তি

ডেস্ক রিপোর্ট:

ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বরিশাল বিভাগে নতুন করে ১২১ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এ নিয়ে মোট রোগীর সংখ্যা দাঁড়ালো ছয় হাজার ৫৪৭ জন। এখন পর্যন্ত মারা গেছেন ১৫ জন। যদিও গত ২৪ ঘণ্টায় কেউ মারা যাননি।

মঙ্গলবার (১৫ জুলাই) বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এই তথ্য জানানো হয়েছে।

সংক্রমিত সবচেয়ে বেশি রোগী ভর্তি হয়েছে বরগুনার হাসপাতালে ৬২ জন। বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশালের অন্যান্য হাসপাতালে ১৫ জন, পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ১২ জন, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৫ জন, ভোলার হাসপাতালে ২ জন, পিরোজপুরের হাসপাতালে ৮ জন এবং ঝালকাঠি হাসপাতালে দুইজন ভর্তি হয়েছেন।

বিভাগের ছয় জেলায় জানুয়ারি থেকে আজ পর্যন্ত মোট আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ছয় হাজার ১৯৯ জন সুস্থ হয়েছেন। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন ৩৩৩ জন।

বরিশাল বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল বলেন, ডেঙ্গু রোগীদের সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালগুলোতে নির্দেশনা দেওয়া আছে। বিভাগের সবগুলো হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন রোগীরা।

তিনি বলেন, ডেঙ্গু মোকাবিলায় সবার সচেতনতাই প্রধান কাজ। যার যার অবস্থান থেকে সচেতনতা অবলম্বন করলে সংক্রমণ রোধ করা সম্ভব। এজন্য এডিস মশার বংশবিস্তার রোধ করতে হবে। পানি জমিয়ে রাখা যাবে না। বাসা, বাড়ি আঙ্গিণা, ড্রেনেজ ব্যবস্থা, জলাশয় পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম