সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় পুলিশের আন্তর্জাতিক সংযুক্তি বিশ্বে নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে’

ইন্সপেক্টর জেনারেল অব পুলিশ বাংলাদেশ ড. বেনজীর আহমেদ বিপিএম (বার) বলেছেন, সাইবার অপরাধ এখন বিশ্বে নতুন চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অপরাধ মোকাবেলা কোন একক দেশের পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য প্রয়োজন একটি জোট গঠন এবং বিভিন্ন দেশের পুলিশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানো। এক্ষেত্রে ইন্টারপা সদস্য দেশের পুলিশ সদস্যদের সক্ষমতা বাড়াতে একটি সম্ভাবনাময় সংগঠন। তিনি বলেন, ইন্টারপা সম্মেলনে পুলিশের আন্তর্জাতিক সংযুক্তি সাইবার অপরাধ মোকাবেলায় নতুন সম্ভাবনা তৈরি করেছে।

আইজিপি শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর সোনারগাঁও হোটেলে ১১তম বার্ষিক ইন্টারপা সম্মেলনের সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এ কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে ইন্টারপা প্রেসিডেন্ট ও তার্কিশ ন্যাশনাল পুলিশ একাডেমির রেক্টর প্রফেসর ইলমাজ কোলাক (Yilmaz Colak) এবং পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর রেক্টর (অতিরিক্ত আইজি) খন্দকার গোলাম ফারুক বক্তব্য রাখেন।

আইজিপি বলেন, ইন্টারনেট ব্যবহারের ফলে বিশ্বব্যাপী মানুষ আজ একে অপরের সাথে সংযুক্ত। সাইবার অপরাধীরা নিজ দেশের সীমানা ছাড়িয়ে নতুন নতুন কৌশল অবলম্বন করে সাইবার জগতে অপরাধ করছে।

তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে ডিজিটাল সিস্টেম ও প্ল্যাটফর্ম ব্যবহারের মাধ্যমে যেভাবে অপরাধ বাড়ছে তা ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য হুমকি হয়ে উঠছে। এজন্য পুলিশকে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা, অপরাধ নিয়ন্ত্রণ এবং ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সুরক্ষা দেয়ার লক্ষ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে।

আইজিপি বলেন, সফলতার সাথে অপরাধ দমন, মোকাবেলা ও তদন্তের জন্য পুলিশিংয়ের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহারের বিকল্প নেই। সাইবার অপরাধ বেড়ে যাওয়ায় ইন্টারনেট ব্যবহারকারীরা সাইবার জগতে পুলিশের নিবিড় মনিটরিং প্রত্যাশা করে বলে মনে করেন আইজিপি।

ঢাকায় অনুষ্ঠিত ইন্টারপা‍‍`র তিন দিনের সম্মেলনকে সফল আখ্যায়িত করে আইজিপি বলেন, এ সম্মেলনে সদস্য দেশসমূহের পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সম্ভাব্য ক্ষেত্রসমূহ চিহ্নিত করা হয়েছে। সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের মধ্যে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের সুযোগ ঘটেছে, যা সাইবার জগতে ভবিষ্যত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় পুলিশের সক্ষমতা বাড়াতে সহায়ক হবে।

তিনি এ ধরনের একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সফল আয়োজনের জন্য পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানান।

বাংলাদেশকে সম্মেলনের ভ্যেনু নির্বাচনের জন্য ইন্টারপা প্রেসিডেন্ট এবং অন্যান্যদের ধন্যবাদ জানান আইজিপি।

ইন্টারপা প্রেসিডেন্ট ইলমাজ কোলাক এ সম্মেলন উদ্বোধন করায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি গভীর কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

উল্লেখ্য, পুলিশ স্টাফ কলেজ বাংলাদেশ এর ব্যবস্থাপনায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পুলিশের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানসমূহের আন্তর্জাতিক সংগঠন ইন্টারপা‍‍`র তিন দিনব্যাপী ১১তম বার্ষিক সম্মেলন ১২ সেপ্টেম্বর ঢাকায় শুরু হয়। এবারের সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‍‍`ডিজিটালাইজেশন অব পুলিশিং‍‍`।

সম্মেলনে বিভিন্ন কর্ম অধিবেশনে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশের প্রতিনিধিগণ ১৩টি পেপার উপস্থাপন করেন। বিশ্বের ৪৪টি দেশের ১২৭ জন প্রতিনিধি সম্মেলনে অংশ নেন। পরবর্তী ইন্টারপা সম্মেলন ২০২৩ সালে ভারতে অনুষ্ঠিত হবে।

বিদেশে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধে ‘অভিবাসী কূটনীতি’ অধিশাখার প্রস্তাব

বিদেশে নেতিবাচক প্রচারণা বন্ধ ও ইতিবাচক প্রচারণার জন্য ‘অভিবাসী কূটনীতি’ নামে নতুন অধিশাখা সৃষ্টির প্রস্তাব জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগের আওতায় ওই শাখা কাজ করবে। এ ছাড়া, মন্ত্রণালয় নতুন একটি শাখাও খুলছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠকে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৩ সেপ্টেম্বর) জাতীয় সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত ওই বৈঠকে উত্থাপিত প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশবিরোধী নেতিবাচক প্রচারণা মোকাবিলার পাশাপাশি ইতিবাচক প্রচারণায় আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে সম্মানী দিয়ে কলাম লেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ জন্য ভালো কলামিস্টও খোঁজা হচ্ছে। ভালো কলামিস্টদের সন্ধান থাকলে তা মন্ত্রণালয়কে জানানোর জন্য সংসদীয় কমিটির সদস্যদের অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ওই প্রতিবেদনে প্রবাসী/অভিবাসী বাংলাদেশীদের অনেকেই সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচারণায় লিপ্ত হন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ অন্যান্য মিডিয়ায় তাদের সরব উপস্থিতি ও দেশ বিরোধী আপত্তিকর মন্তব্য, বক্তব্য ও প্রচারের জন্য বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট হচ্ছে উল্লেখ করে বলা হয়, স্বাগতিক দেশের নানাবিধ আইনি বাধ্যবাধকতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া অনেক ক্ষেত্রে দুরূহ হয়ে পড়ে।

তাই বাংলাদেশের ইতিবাচক দিকগুলো বিশ্ববাসীর কাছে ব্যাপকভাবে তুলে ধরা এবং বাংলাদেশ বিরোধী নেতিবাচক প্রচার-প্রচারণা মোকাবিলার জন্য স্থায়ী কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী মন্ত্রণালয়ের জনকূটনীতি অনুবিভাগে ‘অভিবাসী কূটনীতি’ নামে একটি অধিশাখা সৃষ্টি করে একজন পরিচালকসহ ২ জন সহকারী সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তা পদায়নের করার উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

অধিশাখা সৃজন করার জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও অর্থ বিভাগসহ অন্যান্য অংশীজনের কাছে প্রস্তাব পাঠানোর কাজ শুরু করা হয়েছে।

কমিটি সূত্র জানায়, কমিটির আগের বৈঠকে বিদেশে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নানা নেতিবাচক প্রচারণার বিষয় আলোচনা হয় এবং এগুলো বন্ধে মন্ত্রণালয়কে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করা হয়। সুপারিশে এসব কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণের লক্ষ্যে একটি আলাদা সেল গঠনেরও কথা বলা হয়।

ওই বৈঠকে দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বিশ্বের অর্থনৈতিক মন্দাকে পুঁজি করে সরকার বিরোধীরা দেশের ভেতরে ও বাইরে নানা ধরেনর নেতিবাচক প্রচারণা ব্যাপকভাবে চালিয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ বিরোধী প্রচারণার বিষয়টি মন্ত্রণালয় থেকে গুরুত্বের সাথে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। দেশের ভাবমূর্তি উজ্জল করে এমন কোন কলাম কারো কাছে থাকলে তা ওয়াটসঅ্যাপে শেয়ার করলে সেটি বিভিণ্ন মিশনে প্রচারের কথা বলেন সিনিয়র সচিব।

ওই বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে বিভিন্ন তথ্য দিয়ে কলাম বা প্রবন্ধ লেখার মত দক্ষ জনবল না থাকায় সম্মানী দিয়ে আউটসোর্সিংয়ের মাধ্যমে কলামিস্টদের দিয়ে বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক লেখার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু ভালো কলামিস্টের সংখ্যাও খুব কম। আগামী দেড় বছর বর্তমান সরকারের বিরুদ্ধে বিরোধী শক্তিগুলো সোচ্চারভাবে সমালোচনায় মেতে উঠতে পারে।

বাংলাদেশে বিনিয়োগ করতে এলে বিদেশিরা নানাভাবে হয়রানির শিকার হন বলে সংসদীয় কমিটির একাধিক সদস্য মন্তব্য করেছেন। এ কারণে তারা বিনিয়োগ না করে ফিরে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় তারা।

কমিটির বৈঠকে পররাষ্ট্র মন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, অনেক কষ্ট করে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার কথা বলে বাংলাদেশে বিনিয়োগের জন্য আনা হলেও তারা বিভিন্ন সংস্থা ও দপ্তরে গিয়ে হয়রানি শিকার হয়ে ফিরে যাচ্ছে এবং অন্যদেরও বাংলাদেশে বিনিয়োগে নিরুৎসাহিত করছে। এ ছাড়া অনেক প্রবাসী বাঙালি দেশে বিনিয়োগ করতে চাইলেও তাদের জমি দখল, বাড়ি দখল থেকে শুরু করে নানাভাবে হয়রানি করা হয়। ফলে তারাও দেশে বিনিয়োগ করতে চাচ্ছে না।

বাংলাদেশের ব্যাংকিং সেক্টর বিশ্বে ১৬৮তম স্থানে অবস্থান করলে উল্লেখ করে পররাষ্ট্র মন্ত্রী বলেন, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এই প্রতিবন্ধকতাগুলো এখন মারাত্মক আকার ধারণ করছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ঘটাতে না পারলে দেশে কোন বিনিয়োগ হবে না বলে মন্ত্রী উল্লেখ করেন।

কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, দেশে বিনিয়োগের কোনো পরিবেশ নেই। বিনিয়োগ করতে গেলে বিভিন্ন সেক্টরে ধরনা দিতে হয়। বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের অধিকাংশই এখানে বিনিয়োগ না করে বাধ্য হয়ে তাদের দেশে ফিরে যাচ্ছেন।

এ বিষয়ে কমিটির সভাপতি মুহম্মদ ফারুক খান বলেন, দেশে প্রচুর বিনিয়োগের সম্ভাবনা থাকা সত্ত্বেও আমলাতান্ত্রিক জটিলতার কারণে বিনিয়োগের লক্ষ্যে সরকার ও ব্যক্তিপর্যায়ের উদ্যোগগুলো ব্যর্থতায় পর্যবসিত হচ্ছে।

চলতি বছরের শেষ নাগাদ ঢাকা-নিউইয়ার্ক ফ্লাইট চালু করা যাবে বলে সংসদীয় কমিটিতে অবহিত করেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব। ঢাকা-নিউইয়র্ক ফ্লাইপ চালুর বিষয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ঢাকা বিমানবন্দরে সাদা চামড়ারা বিশেষ করে নিউইয়র্ক থেকে নিরাপত্তার বিষয়ে পরিদর্শনে আসা ব্যক্তিদের তেমন কোনো চেক না করে ছেড়ে দেওয়ায় তারা ঢাকা বিমানবন্দরের নিরাপত্তা বিষয়ে বিরূপ প্রতিবেদন দিয়েছে। অপর দিকে প্রবাসী বাঙালি শ্রমিকরা দেশে আসলে বিমান বন্দরে তাদের বিভিন্ন রকমের হয়রানি করা হয়। যে কারণে ঢাকা নিউইয়র্ক ফ্লাইট চালুর ক্ষেত্রে কিছুটা বিলম্ব হচ্ছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে আরও দেড় হাজারের বেশি আবেদন সতর্ক মন্ত্রণালয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে কার্গো ভিলেজের অগ্নিকাণ্ডে অত্যন্ত হতাশাজনক : মির্জা ফখরুল রাজনৈতিক দের মাঝে যে অনৈক্য কুমিরের দেখা মিলল রাজশাহীর পদ্মায় সরকার ও সেনাবাহিনী, গণতন্ত্রে উত্তরণ ও ন্যায়বিচার যেন ব্যাহত না হয় আজ থেকে আমরণ অনশন, প্রত্যাখ্যান শিক্ষকদের শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের