
স্টাফ রিপোর্টার:
নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় থানা বিএনপির এক নেতার চাঁদাবাজির কলরেকর্ড ফাঁস হলে তাকে বহিস্কার করেছে কেন্দ্রীয় বিএনপি৷ আর এতে করে মনোক্ষুন্ন হয়েছেন পদধারী আরেক নেতা৷ কোনোপ্রকার রাখঢাক না রেখেই তিনি কেন্দ্রীয় বিএনপির ওই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন৷ বহিস্কারের বিরোধিতা করা ওই নেতার নাম রুহুল আমিন শিকদার, তিনি ফতুল্লা থানা বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক৷ মূলত এক শিল্পপতির প্রতিষ্ঠান পুড়িয়ে দেয়ার হুমকি ও চাঁদা চেয়ে বৃহস্পতিবার (১৫ মে) বহিস্কার ও গ্রেফতার হন ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী৷ তাকে বহিস্কারের দলের ওই সিদ্ধন্তেরই প্রকাশ্যে বিরোধিতা করলেন সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন শিকদার।
বিএনপি নেতা রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে বহিস্কার ও গ্রেফতারের একদিন পরেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে দলীয় সিদ্ধান্তের সরাসরি বিরোধিতা করেন রুহুল আমিন৷ রিয়াদের সাথে তোলা একটি ছবি আপলোড করে রুহুল লেখেন, আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ না দিয়ে সাহসী যোদ্ধাদের বহিষ্কারের দ্বিমত পোষন করছি।’ এছাড়াও বিএনপি মিডিয়া ট্র্যায়ালের শিকার হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন রুহুল৷
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লার ‘আজাদ ডাইং’-এর মালিক আজাদ হোসেনের কাছে চাঁদার দাবিতে ফোন দেন রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী। একপর্যায়ে রিয়াদ ডাইং পুড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেন। ওই ফোনকল রেকর্ডটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ব্যাপক আলোচনা তৈরি হয়। ফলে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লা থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে দলের প্রাথমিক সদস্য পদসহ সব পদ থেকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।
বৃহস্পতিবার বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ এবং দলের নীতি, আদর্শ ও সংহতি পরিপন্থী অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগে রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরীকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানান রিজভী।
একইদিন তিনি গ্রেফতারের ভয়ে থাইল্যান্ড পালিয়ে যাবার সময় বৃহস্পতিবার রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে চাঁদাবাজির মামলায় তাকে জেলহাজতে পাঠানো হয়৷ গত বছরের ৫ আগস্টে সরকার পতনের পর থেকেই রিয়াদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, দখলবাজি, অগ্নিসংযোগ, সন্ত্রাসী তৎপরতার অভিযোগ উঠে আসছিলো৷ সরকারের একটি গোয়েন্দা সংস্থার প্রতিবেদনেও এসব অপরাধের সাথে সম্পৃক্ততার কথা উঠে আসে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানকে কেন্দ্র করে নারায়ণগঞ্জ জেলায় দায়ের হওয়া অধিকাংশ মামলা ও একে ঘিরে বাণিজ্যে ফতুল্লা থানা বিএনপির সভাপতি শহীদুল ইসলাম টিটু, বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক রিয়াদ মোহাম্মদ চৌধুরী ও তার লোকজনদের জড়িত থাকারও অভিযোগ রয়েছে৷ সম্প্রতি রিয়াদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করেন ফতুল্লার কয়েকশো জনসাধারণ৷