থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের হাতে

থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধীদের হাতে

চট্টগ্রাম সংবাদদাতা:

থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি। গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম নগরের সাগরিকা এলাকা থেকে এসব উদ্ধার করা হয় চট্টগ্রাম নগরে থানা ফাঁড়ি থেকে লুট হওয়া অনেক আগ্নেয়াস্ত্র ও গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি। এসব অস্ত্র গুলি ডাকাতি ছিনতাইসহ নানা অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে। লুট হওয়া অস্ত্র কেনাবেচায় পুলিশেরও সম্পৃক্ততা পাওয়া গেছে। জুলাই গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন গত বছরের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম নগরের আটটি থানা ও আটটি ফাঁড়িতে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করেন বিক্ষুব্ধ লোকজন। সে সময় ৮১৩টি আগ্নেয়াস্ত্র ও ৪৪ হাজার ৩২৪টি গুলি লুট হয়। পুলিশের একটি সূত্র বলছে বেশির ভাগ অস্ত্র-গুলি এখনো উদ্ধার হয়নি।

জানতে চাইলে নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মাহমুদা বেগম সুনির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি। তবে অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানান তিনি। গত ২১ জুলাই নগরের চান্দগাঁওয়ে ‘সন্ত্রাসী’ ইসমাইল হোসেন ওরফে টেম্পো ও শহিদুল ইসলাম ওরফে বুইসার বাহিনীর মধ্যে গোলাগুলি হয়। পরে পুলিশ বহদ্দারহাট কাঁচাবাজার এলাকায় সন্ত্রাসী শহিদুলের আস্তানার সন্ধান পায়। সেখানে লুট হওয়া দুটি গুলি ও গুলির খোসা পাওয়া যায়। চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আফতাব উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন শহিদুলের দখল করা একটি ফ্ল্যাট থেকে গুলি ও দেশি অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। ফ্ল্যাটটি টর্চার সেল হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

গত বছরের ২৯ আগস্ট নগরের বায়েজিদ হাটহাজারী থানার সীমানাসংলগ্ন কুয়াইশ এলাকায় মাসুদ কায়সার ও মো. আনিস নামে দুই ব্যক্তিকে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনাস্থল থেকে পাঁচটি গুলির খোসা (শটগানের কার্তুজ) উদ্ধার করা হয়। সেগুলোও লুট করা গুলির খোসা বলে নিশ্চিত হয় পুলিশ। নিহত আনিসের স্ত্রী শামিম আকতারের অভিযোগ, সন্ত্রাসী সাজ্জাদ পুলিশের গুলি ব্যবহার করে তাঁর স্বামীসহ দুজনকে খুন করেছেন। তবে সাজ্জাদ কারাগারে থাকায় তাঁর বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি। এদিকে ৩ মার্চ সাতকানিয়ায় পিটুনিতে দুজনের মৃত্যুর পর ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ যে পিস্তল উদ্ধার করে, সেটিও থানা থেকে লুট হওয়া।

১৭ এপ্রিল নগরের ডবলমুরিং থানার বারিক বিল্ডিং মোড় থেকে আরিফ হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তাঁর আস্তানা থেকে একটি পিস্তল ও ৫০টি গুলি উদ্ধার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে আরিফ স্বীকার করেন, এসব অস্ত্র-গুলি থানা থেকে লুট করা। তিনি অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ডাকাতি ও ছিনতাই করেন। গত ২৫ জানুয়ারি ডবলমুরিং থানার ঝরনাপাড়ায় পুলিশ অভিযান চালিয়ে ১৬টি গুলি, ১টি রাবার বুলেটসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। এ ছাড়া ১৫ ফেব্রুয়ারি ডবলমুরিং থানার চৌমুহনী এলাকার চারিয়াপাড়ায় অভিযান চালিয়ে পুলিশ অস্ত্রসহ তিনজনকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশ জানায়, এসব অভিযানে উদ্ধার হওয়া অস্ত্র গুলি লুট হওয়া এবং গ্রেপ্তার ছয়জনই ছিনতাইকারী।

১৭ জুন নগরের মেরিন সড়ক থেকে পিস্তল গুলিহ মো. রুবেল নামের একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পিস্তলটি থানা থেকে লুট হওয়া বলে পুলিশ নিশ্চিত করেছে। এদিকে পিস্তলটি বিক্রির সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গত ২১ মার্চ মো. রিয়াদ নামের পুলিশের এক কনস্টেবলসহ ছয়জনকে পতেঙ্গা ও বাকলিয়া থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরে রিয়াদসহ তিনজন আদালতে অস্ত্র কেনাবেচায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন। সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) চট্টগ্রামের সম্পাদক আখতার কবির চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, অস্ত্র, গুলি উদ্ধারে বিশেষ অভিযান পরিচালনা না করলে কিংবা মনোযোগ না দিলে জননিরাপত্তা এবং সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় শৃঙ্খলা হুমকির মুখে পড়বে।

দুদকের নজরে কি পড়বে সাবেক ত্রাণ প্রতিমন্ত্রীর এপিএস শামীমের অবৈধ সম্পদ

নিজস্ব প্রতিবেদক:

সাবেক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) শামীমের দুর্নীতির খবর সকলের জানা।
এ বিষয়ে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ(টিআইবি)এর পরিচালক
ইফতেখারুজ্জামান বলেন এধরণের দূর্নীতির বিরুদ্ধে সঠিক আইন প্রয়োগ করে কেউ দেশ ছাড়ার আগে ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত।
এক দশক আগে সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায় একটি মেসে থেকে টিউশনি করে কোনোরকমে জীবনযাপন করতেন শামীম আহাম্মদ। তিনি ইংরেজিতে পারদর্শী ছিলেন। তাই শিক্ষক হিসাবে সাভারের মানুষের কাছে বেশ সুনাম অর্জন করেন। মানুষ তাকে ‘ইংলিশ টিচার’ হিসাবেই চিনতেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমানের সহকারী একান্ত সচিব (এপিএস) হিসাবে নিয়োগ পাওয়ার পর শামীমকে আর পিছে ফিরে তাকাতে হয়নি। গত ১০ বছরে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন তিনি। তার রয়েছে বেলা অ্যাগ্রো পার্ক, বেলা নার্সিং ইনস্টিটিউটসহ ৮টি প্রতিষ্ঠান এবং ৭টি মাছ ও গরুর খামার। যার মূল্য অন্তত ২১০ কোটি টাকা। কিভাবে তিনি এত বিপুল সম্পদের মালিক হলেন তা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।

একান্ত সচিব হিসাবে শামীম ৩৭ হাজার টাকা মাসিক ভাতা পেতেন। হঠাৎ তিনি এত সম্পদের মালিক বনে গেলেন কী করে? দুদকের নজরে আসা উচিত বলেও জানান সচেতন মহল।

শামীম ময়মনসিংহ জেলার ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ইউনিয়নের রানীগঞ্জ-পোড়াবাড়ি এলাকার অধ্যাপক মফিজ উদ্দিনের ছেলে। তিনি সাভারে পক্ষাঘাতগ্রস্তদের পুনর্বাসন কেন্দ্রে (সিআরপি) ওকুপেশনাল থেরাপিস্ট কোর্স সম্পন্ন করেন। থাকতেন সাভারের থানা রোডের মুক্তির মোড় এলাকার অ্যাভিনিউ জুনায়েদ টাওয়ারের ৬ তলায়। ওই টাওয়ারে তিনি দুটি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। এর আনুমানিক মূল্য ২ কোটি টাকার বেশি। বর্তমানে তিনি উত্তরায় কিনে ফ্ল্যাট কিনে বসবাস করতেন।

ময়মনসিংহ ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ী, রানীগঞ্জ এলাকায় রানীগঞ্জ চকের অধিকাংশ জায়গাজুড়ে ‘বেলা অ্যাগ্রো পার্ক’। পুরো এলাকা কাঁটাতারের বেড়ায় ঘিরে রাখা হয়েছে।১৪০ বিঘা আবাদি জমি কিনে বিশাল আকারের মৎস্য খামার গড়ে তোলা হয়েছে। গবাদি পশুর খামারও। স্থানীয়রা জানায় ২০১৭/২০১৮ সাল থেকে শামীম নিজ গ্রাম ও পাশের এলাকায় জমি কিনেন। সেখানে মাছের খামার গড়ে তোলা হয়।মাছের ঘের খনন করতেই ব্যয় হয়েছে কয়েক কোটি টাকা। খামারে ৫ কোটি টাকার বেশি মূল্যের মাছ রয়েছে। এছাড়া এই অ্যাগ্রো পার্কে আরও দুটি মাছের খামার এবং একটি গরুর খামার রয়েছে। গরুর খামারে দেশি বিদেশি জাতের গরু রয়েছে।

পোড়াবাড়িতে রয়েছে ৮টি সেমিপাকা ঘর ও একটি ৩ তলা ভবন বেলা নার্সিং ইনস্টিটিউট ও নার্সিং কলেজ। ভবনের সামনে রয়েছে বিশাল আকারের দুটি মাছের খামার। খামারের পাশে নার্সিং কলেজের জন্য তিনটি ৬ তলা ভবন রয়েছে । এখানে জমির পরিমাণ ৯০ থেকে ১০০ বিঘা।
বেলা নার্সিং ইনস্টিটিউট ছাড়া আরও ৩টি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং এগুলোর একাধিক শাখা রয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো-বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সলিউশন পয়েন্ট, জোসনার আলো ও কাতলাসেন মৎস্য খামার। এরমধ্যে বেলা রিহ্যাবিলিটেশন সলিউশন পয়েন্টের ৩টি শাখা। এগুলো রয়েছে ময়মনসিংহ সদর উপজেলার মাসকান্দা নতুন বাজার, ত্রিশাল উপজেলার মঠবাড়ি ও ঢাকার গুলশানে নাভানা টাওয়ারে। জোসনার আলো’র একটি শাখা ময়মনসিংহের মাসকান্দা নতুন বাজারে। এছাড়া ফুলবাড়িয়া উপজেলার কাতলাসেন এলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা জমিতে একটি মৎস্য খামার ও একটি গরুর খামার রয়েছে।

স্থানীয়রা আরো তার বাবা মফিজ উদ্দিন শিক্ষকতা করে ছেলেমেয়েদের জীবনযাপন করত। তার নগদ টাকা-পয়সা ছিল না।তবে শামীমের বাবা এলাকায় সম্মানিত ব্যক্তির একজন। শামীম গ্রামের অনেক জমি কিনেছে। গ্রামের মানুষ এ নিয়ে নানা রকম কথা বলাবলি করে। শামীম সরকারী লগোযুক্ত দামি গাড়ি নিয়ে গ্রামে আসে।

মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা যায়, দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই শামীম তার পছন্দের ঠিকাদারদের কাজ পাইয়ে দিতে প্রকল্প পরিচালকদের নানাভাবে চাপ প্রয়োগ করতেন। এছাড়া জেলা-উপজেলা পর্যায়ে ত্রাণ বরাদ্দে কমিশন বাণিজ্য করতেন বলে গুন্জন রয়েছে ।
সাভার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায় সেখানে অনেক প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ।

দুদকের একটি সূত্রে জানায় তদন্ত সাক্ষেপে ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে। এ বিষয়ে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ডা.এনামুর রহমান বলেন,কেউ ব্যক্তিগতভাবে দূর্নীতির সাথে যুক্ত থাকলে তার দায় ব্যক্তির
এ বিষয়ে সাবেক এপিএস শামিমের সাথে যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের সাগর-রুনি হত্যাকাণ্ড মামলার পথেই হাঁটছে বকশীগঞ্জের সাংবাদিক নাদিম হত্যা মামলা রাজউকের ইমারত পরিদর্শক মনিরুজ্জামান ৭ বছরেই শত কোটি টাকার মালিক শাহজালাল বিমানবন্দরে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ নতুন ইতিহাস গড়লেন দীপিকা পাড়ুকোন বাংলাদেশকে রাজস্ব ও আর্থিক খাত সংস্কার অব্যাহত রাখতে হবে ডেঙ্গুতে আরও ১ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৬১৯ ৩০ কোটি বছর আগে মহাকাশ থেকে ছুটে এসেছিল একটি বিশাল পাথর কুমিল্লায় হত্যার পর নারীর লাশ বেডশিট দিয়ে মুড়িয়ে খাটের নিচে রেখে গেল দুর্বৃত্তরা দীর্ঘদিন পর গাজায় একসঙ্গে জুমার নামাজ আদায় করলেন হাজারো ফিলিস্তিনি