রূপপুর দুর্নীতির রুপকার গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুল চ্যাম্পিয়ন ব্যবস্থা নিতে গড়িমসি

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

রূপপুর দুর্নীতির রুপকার গণপূর্ত অধিদপ্তরের ইলেক্ট্রিক্যাল ও মেকানিক্যাল ই/এম, বিভাগ-১–এর নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ আশরাফুল ইসলাম চ্যাম্পিয়ন হলেও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গড়িমসি করছে গণপূর্ত অধিদপ্তরের প্রশাসন। ইতোমধ্যে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ চাউর হয়েছে।তবে প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আখতারের নীরবতা প্রশ্নবিদ্ধ মনে করছেন নেটিজেনরা।বিগত আট বছর একই পদে বহাল থেকে দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদ গড়ার অভিযোগ রয়েছে এ প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে । সরকারি নীতিমালা উপেক্ষা করে এক জায়গায় তিন বছরের বেশি দায়িত্ব পালনের বিধি আরোপ থাকলেও সেটি মানছে না আশরাফুল।তবে তাঁর এ দীর্ঘ মেয়াদি অবস্থান শুধু নীতিমালা লঙ্ঘন-ই নয়, বরং প্রতিষ্ঠিত প্রভাব ও দুর্নীতির একটি শক্তিশালী সিন্ডিকেট অবস্থানের সুস্পষ্ট ইঙ্গিত ও বটে।

২০২১ সালের ৫ আগস্ট গণপূর্ত অধিদপ্তর থেকে এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিন বছরের বেশি সময় ধরে যেসব নির্বাহী প্রকৌশলী একই পদে বহাল রয়েছেন, তাদের অবিলম্বে বদলি করতে হবে। উদ্দেশ্য ছিল অপারদর্শিতা, দুর্নীতি, ও স্বজনপ্রীতির চক্র ভেঙে শৃংখলা ও স্বচ্ছতা ফিরিয়ে আনা। কিন্তু বাস্তবতা হলো ভিন্ন, এ নীতির প্রয়োগ হয় অনেক ক্ষেত্রে পক্ষপাতদুষ্টভাবে। আশরাফুল ইসলাম তার পদে আছেন আট বছর ধরে, যা নিজেই হয়ে উঠেছে একটি উদাহরণ, নাকি ব্যতিক্রম, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে আলোচিত দুর্নীতির মামলায় তার নাম থাকা সত্ত্বেও পদোন্নতি বন্ধ রয়েছে। কিন্তু এখানেই ঘটনার ধুম্রজাল, একজন দুর্নীতির অভিযোগে অভিযুক্ত কর্মকর্তা কীভাবে এতবছর ধরে ঢাকার মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থানে বহাল থাকতে পারেন? বিশ্লেষকদের মতে, দুর্নীতির মামলা থাকা অবস্থায় কোনো কর্মকর্তার পদে বহাল থাকা সরকারি প্রশাসনিক নীতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। তবে আশরাফুল ইসলাম একই পদে থাকেন এবং গুরুত্বপূর্ণ কাজের দায়িত্ব নিয়ে গোটা অধিদপ্তর জুড়ে প্রশ্ন বিদ্ধ হয়েছেন।

এদিকে বহিরাগত চেহারায় ”ক্লিন ইমেজ’ বজায় রাখা হলেও বাস্তবতা বলছে ভিন্ন কথা। ঠিকাদারি সিন্ডিকেটের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক, দরপত্র ছাড়াই কাজ শুরু করা, কাজ শেষ হওয়ার পর টেন্ডার আহ্বান করা, এসবই আশরাফুল ইসলামের ডিভিশনে অঘোষিত নীতি হিসেবে বিবেচিত।

প্রক্কলন না করেই কাজ শুরু করে পরে প্রক্কলন এবং টেন্ডার লাইভে দেন। এমন অভিযোগ তুলেছেন অধিদপ্তরের একাধিক ঠিকাদার ও আভ্যন্তরীণ কর্মকর্তারা। একাধিক ভূক্তভোগি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, গণপূর্ত দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় আমরা অচিরেই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)এ লিখিত অভিযোগ দায়ের প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আশরাফুল এর দপ্তরে কর্মরত একজন জুনিয়র কর্মকর্তা বলেন, দুর্নীতি না করলে এ দপ্তরে টিকে থাকা মুশকিল। তবে আশরাফ ভাই এ বিষয় অনেক পারদর্শী। তিনি জানেন কাকে কখন কোথায় ব্যবহার করতে হবে। গণপূর্তে ম্যানেজমেন্টের মাস্টার হিসেবে পরিচিত।

বিশ্বস্ত সূত্র বলছে,উত্তরবঙ্গীয় কোটা ও নিজস্ব প্রভাবের জোরে তিনি বিশেষ সুবিধাভোগী বলে অনেকে দাবি তুলছেন। একাধিকবার অভিযোগ উঠলেও প্রধান প্রকৌশলী তা আমলে নেয়নি। বিশেষ করে সোহবানবাগ মসজিদ প্রকল্পে অনিয়মে সিভিল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীকে বদলি করা হলেও, অদৃশ্য কারণে আশরাফ রয়েছেন বহাল তবিয়তে।টানা ৮ বছর গণভবন ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের দায়িত্বে থাকা আশরাফের মাঝে ‘সরকারই আমি’এই মনোভাব গড়ে উঠেছে বলে দাবি অনেকের। তাকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন না তার ওই জোনের সিনিয়র ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও। ফলে অধিদপ্তরে এক অদৃশ্য শক্তিশালী সিন্ডিকেটের বলয় রয়েছেন তিনি।

আর মাত্র চার বছর পর এক যুগ পূর্ণ করবেন আশরাফ একই পদে থেকে। তখন কি বদলি হবেন? না কি নতুন কোনো রেকর্ড গড়ার পথে হাঁটবেন? নিয়মের বাইরে অবস্থান, দুর্নীতির অভিযোগে পদোন্নতি বন্ধ থাকা, অথচ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল থাকা এসব কিছুই প্রশাসনিক ব্যবস্থার দুর্বলতা ও নিকৃষ্ট অবকাঠামোর প্রমাণ।

গণপূর্ত অধিদপ্তরের ভেতরে ‘মিস্টার ম্যানেজার’দের ছায়া যতদিন থাকবে, ততদিন ৫ আগস্টের মত উচ্চাশী ঘোষণাগুলো কেবল ফাইলের পৃষ্ঠায় জমে থাকবে। এসব অনিয়মের অভিযোগের বিষয় জানতে আশরাফুল ইসলাম এর মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দেওয়া হলেও ফোন কল গ্রহণ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে খুদেবার্তা পাঠানো হলেও কোনো সাড়া মেলেনি।

দুর্নীতির টাকায় স্ত্রীর নামে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের মাসুদ

স্টাফ রিপোর্টার:

দেখতে আপাদ মস্তক পাঁচ ওয়াক্ত নামাজী পরহেজগার ব্যাক্তি। দাড়ি, টুপি সবই আছে। চাকরিও করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ে একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা হিসেবে। স্ত্রী আর তিন সন্তান নিয়ে থাকেন ভাড়া বাসায়। প্রতিদিন সকালে অফিস যান এবং এরপর কাজ শেষে বাসায় ফিরেন। বলছি ধর্ম মন্ত্রণালয় অধীনস্থ ইসলামিক ফাউণ্ডেশনের আইসিটি ও ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল্লাহ আল মাসুদ মোল্লা’র কথা।

প্রথম দর্শনে কেউ ধারণাই করতে পারবেন না যে তার এই সহজ-সরল সাধারণ চলাচলের পেছনে রয়েছে এক ধরি মাছ না ছুঁই পানি ধরণের দুর্নীতির এক লম্বা গল্প।

পরিবার পরিজন নিয়ে পুরান ঢাকার বাংলাবাজারের বিউটি বোর্ডিংয় সংলগ্ন ৩১/২ শিরিস দাস লেনে ভাড়া থাকেন তিনি। বাসা ভাড়া দেন ২৫ হাজার টাকা৷ এরপর সার্ভিস চার্জ, বিদ্যুৎ ও গ্যাস বিল। তার বড় ছেলে পড়াশোনা করে নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়ে। মেঝ মেয়ে একটি বেসরকারি কলেজে। আর সবার ছোট মেয়ে মাদ্রাসায়।

এ পর্যন্ত সব ঠিকই ছিল। খটকা বাধে যখন দেখা যায় যে দ্রব্যমূল্যের এই দুর্বিষহ একেবারেই ভ্রুক্ষেপহীনভাবে দিব্যি চলছেন তিনি। সামান্য এই সন্দেহ থেকে অনুসন্ধান চালান এই প্রতিবেদক। আর বেরিয়ে আসে তার আসল চেহারা।

এই সরকারি চাকুরে আর ক’দিন পরেই যাবেন অবসরে। কিন্তু চাকরির এত বছরে যা ঘটানোর তা ঘটিয়ে ফেলেছেন। বিভিন্ন তদবির, বদলি বানিজ্যের মাধ্যমে পকেটে পুরেছেন কোটি কোটি টাকা৷ শুধুমাত্র বেতনভুক্ত একজন কর্মকর্তা’র ঢাকা শহরে কয়েকটি ফ্ল্যাট, জমি তার প্রমাণই বটে।

অনুসন্ধানে জানা যায়, পুরান ঢাকার কলতা বাজারের কাজী আবদুর রউফ রোড’র ১৩/এ বিল্ডিংয়ে তার রয়েছে ২টি ফ্ল্যাট। তবে তা অবশ্য রেখেছেন নিজ স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা’র নামে। এছাড়া রাজিয়া সুলতানা’র নামে রয়েছে রায়েরবাগে জমি। গ্রামের বাড়ি মাদারীপুরে পৈতৃক সম্পত্তির বাহিরেও কিনেছেন বড় মাপের দামি জমি। পৈতৃক বাড়িতেও তিনি আলিশান প্রাসাদতূল্য বিল্ডিং নির্মাণ করছেন। যদিও সেটি সাময়িকভাবে লোকচক্ষু থেকে আড়াল করতে বন্ধ রেখেছেন।

অবসরকালীন ভাতা পাওয়ার আগেই এই বিপুল সম্পদের উৎস প্রসঙ্গে সন্দেহ সৃষ্টি হওয়া একেবারেই অমূলক নয়। তবে আরেকটু যাচাই বাছাই করার জন্যে আরেকটু গভীরে যেতে হবে। প্রতিবেদকের কথা হয় তার দপ্তরের একাধীক কর্মকর্তা এবং কর্মচারীদের সঙ্গে।

তারা জানান, মাসুদ সাহেব এমনিতে ভালো লোক। তবে তাকে যখনই কোন তদন্ত, বদলি কমিটির দায়িত্ব দেওয়া হয় তখনই তিনি হাত সাফাইয়ের কাজটি সেরে নেন। নাহলে বুঝেন না কেন, তার স্ত্রী একজন নেহাৎ গৃহিণী এতো টাকা পাবে কোথা থেকে! উনি (মাসুদ) খান (ঘুষ) তবে মাত্রাতিরিক্ত না আবার একেবারে কমও না। ওনার স্টাইল অনেক ভিন্ন।

এই প্রসঙ্গে আবদুল্লাহ আল মাসুদ মোল্লা’র সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রথমেই তিনি বিব্রত হয়ে পড়েন। এরপর বলেন সম্পত্তি তার স্ত্রী’র নামে।

‘আপনার স্ত্রী তো একজন গৃহিণী, তিনি এতো টাকা কোথায় পেলেন’ এমন প্রশ্ন করা হলে, তিনি সাংবাদিক পাড়ায় অনেক পরিচিতি আছে জানিয়ে বলেন, আপনার এতো মাথা ব্যাথা কেন? আপনি আসেন। আর আমার এই প্রসঙ্গে কোন মন্তব্য নেই। যা পারেন করেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের