শিশু সুরক্ষা নিয়ে এগিয়ে এলেন জাহেদ আহমেদ : দেশজুড়ে কাজ শুরু করলো iSafe BD

অনলাইন ডেস্ক:

শুধু সমস্যা নিয়ে হতাশ না হয়ে সমাধান তৈরির ইচ্ছা থেকেই কাজ শুরু করেছিলেন তরুণ উদ্যোক্তা জাহেদ আহমেদ। তার উদ্যোগে গড়ে ওঠা প্রযুক্তিভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম iSafe BD এখন মাঠপর্যায়ে শিশু ও কিশোর সুরক্ষা নিয়ে কাজ শুরু করেছে।

বাংলাদেশে প্রতিবছর হাজারো শিশু নিখোঁজ হয়, অনলাইনে হয়রানির শিকার হয় অনেক কিশোর-কিশোরী, আর মানসিক সংকটে পড়ে অনেকেই নীরবে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও পর্যবেক্ষণ থেকেই এই বাস্তবতা বদলানোর লক্ষ্যে যাত্রা শুরু হয় iSafe BD-এর।

ব্যক্তিগত উপলব্ধি থেকে জাতীয় প্রয়াস

Jahed Al-Hasan বলেন,
“একটা সময় দেখেছি, শিশুকে হারানোর পর পরিবার কোথায় যাবে বুঝতে পারে না। আবার অনলাইনে নির্যাতনের শিকার কিশোররা ভয় বা লজ্জায় কারও সঙ্গে কথা বলতে পারে না। আমি বুঝেছিলাম—প্রতিবাদ নয়, একটা বাস্তব সমাধান দরকার।”

এই উপলব্ধি থেকেই তৈরি হয় iSafe BD—যা এখন একটি সংগঠিত প্রযুক্তি উদ্যোগ।

যেসব ক্ষেত্রে সক্রিয়ভাবে কাজ শুরু হয়েছে

শিশু নিখোঁজ প্রতিরোধে তথ্যভিত্তিক অ্যালার্ট ব্যবস্থা:
অ্যাপে তথ্য জমা দিলে তা যাচাই করে স্বেচ্ছাসেবক ও সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্কে ছড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে। পরিবারকে সহায়তার প্রক্রিয়াও চালু রয়েছে।

সাইবারবুলিং মোকাবিলা ও রিপোর্টিং সাপোর্ট:
অনলাইনে ব্ল্যাকমেইল, হুমকি বা হয়রানির শিকার হলে অ্যাপের মাধ্যমে গোপনীয় রিপোর্ট করার সুযোগ রাখা হয়েছে। প্রয়োজনে আইনগত দিকনির্দেশনা ও কাউন্সেলিং সংযোগ দেওয়া হবে।

কিশোর মানসিক স্বাস্থ্য সহায়তা:
মানসিক চাপ, অনলাইন নির্যাতন, পারিবারিক সংকট বা আত্মঘাতী প্রবণতার মতো বিষয়ে প্রাথমিক সহায়তা ও রেফারেল সেবা চালু করা হয়েছে।

মাঠপর্যায়ে সচেতনতা ও নেটওয়ার্ক তৈরি

উদ্যোগটি এখন সরাসরি স্কুল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, স্বেচ্ছাসেবক দল, সামাজিক সংগঠন এবং গণমাধ্যমের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। শিশুসুরক্ষা, অনলাইন নিরাপত্তা এবং মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সেশন পরিচালনা করা হচ্ছে।

একজন স্বেচ্ছাসেবক জানান,
“আগে নিখোঁজ শিশুর তথ্য ছড়াতে এলোমেলোভাবে ফেসবুকের ওপর ভরসা করা হতো। এখন অন্তত একটি নির্ভরযোগ্য মাধ্যম দাঁড়িয়েছে, যেখানে তথ্য যাচাই করে প্রচার করা হবে।”

প্রযুক্তি ও মানবিকতার সমন্বয়

অ্যাপটি এখন গুগল প্লে স্টোরে উন্মুক্ত। সাধারণ মানুষ, অভিভাবক, শিক্ষক, স্বেচ্ছাসেবক বা যুবসমাজ—যে কেউ এতে যুক্ত হতে পারেন। তথ্য দেওয়া, রিপোর্ট করা, সহায়তা চাওয়া বা সতর্কবার্তা পাওয়া—সবকিছু একই প্ল্যাটফর্মে রাখা হয়েছে।

জাহেদ আহমেদ বলেন,
“আমরা সরকারের বিকল্প হতে চাই না; সহযোগী হতে চাই। সঠিকভাবে পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা গেলে ভবিষ্যতে এই প্ল্যাটফর্মই জাতীয় নিরাপত্তা কাঠামোর অংশ হয়ে উঠতে পারে।”

সম্ভাবনা ও প্রত্যাশা

শিশুবিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকারকর্মীরা মনে করছেন, বাস্তব উদ্যোগ হিসেবে iSafe BD পরিবর্তনের একটি কার্যকর দৃষ্টান্ত হতে পারে।

একজন অভিভাবক বলেন,
“অর্থ, সচেতনতা আর মনোযোগ—সবকিছু একসঙ্গে দিলে এমন কিছু সম্ভব হয়, যেটা আমরা এতদিন পাইনি। এই উদ্যোগ যে মানুষ শুরু করেছে, তাকে সমর্থন দেওয়া সময়ের দাবি।”

সেনাপ্রধানের বক্তব্য বিকৃতি ও অপপ্রচারের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর বিবৃতি

স্টাফ রিপোর্টার॥
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের একটি বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। এটি উদ্দেশ্যমূলক অপপ্রচার বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।

সোমবার (০৬ অক্টোবর) আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তা প্রদান কার্যক্রমে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর কার্যকলাপ আরও উন্নত ও গতিশীল করার উপায় সন্ধানে আয়োজিত একটি গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপনা (স্টাডি পিরিয়ড) অনুষ্ঠানে সেনা সদস্যদের দেশের প্রচলিত আইন অনুযায়ী মোতায়েন এবং এর বিভিন্ন চ্যালেঞ্জসমূহ উপস্থাপিত হয়। ওই আলোচনায় বর্তমানে সেনাবাহিনীকে প্রদত্ত ‘ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা’ আরোপের মাধ্যমে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ের বিভিন্ন দিক আলোকপাত করা হয়। আইনগত, প্রশাসনিক ও প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা প্রদানের মাধ্যমে মাঠে নিয়োজিত সেনাদল কর্তৃক প্রযোজ্য আইনের ধারা সঠিকভাবে অনুধাবন করে পেশাদারত্ব ও দক্ষতার সাথে অর্পিত দায়িত্ব সঠিক ও সুচারুরূপে পালনে সক্ষম করাই ছিল এই আয়োজনের মূল উদ্দেশ্য।

আইএসপিআর জানিয়েছে, অনুষ্ঠানের একপর্যায়ে In Aid to Civil Power এ মাঠে নিয়োজিত সেনা সদস্যদের CrPc ১৩২ এ প্রদত্ত দায়মুক্তি (Indemnity) এর বিষয়ে কথা উঠে এবং সেনাপ্রধান আলোচনার অংশ হিসেবে CrPc ১৩২ এ প্রদত্ত দায়মুক্তি (Indemnity) এবং International Crimes (Tribunals) Act, 1973 (সংশোধিত ২০২৪) এর সাথে এর সাংঘর্ষিক অবস্থান সম্পর্কে আলোকপাত করেন। CrPc-এর অধীনে সরকারি আদেশে মাঠ পর্যায়ে দায়িত্ব পালনকারী সেনাসদস্যরা প্রদত্ত আইনি বিধান অনুসারে বেআইনি জনসমাগম ছত্রভঙ্গ করেন। অতএব, দায়িত্বরত এই সেনাসদস্যদের আইনগত সুরক্ষা নিশ্চিতের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বিষয়টি ইতোমধ্যে সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, আলোচনার কোনো পর্যায়েই সেনাপ্রধান গুম-খুন বা অন্যান্য মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত কাউকে দায়মুক্তি (Indemnity) দেওয়ার বিষয়ে কোনো কিছু উল্লেখ করেন নাই। কিন্তু একটি চিহ্নিত কুচক্রী মহল বিশেষ করে বিদেশে অবস্থানরত কিছু ব্যক্তি অসৎ ও হীন উদ্দেশ্যে বরাবরের মতো এবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্টাডি পিরিয়ডের বিষয়বস্তু ও সেনাপ্রধানের বক্তব্যকে বিকৃতভাবে উপস্থাপন করে বিভ্রান্তিকর পোস্ট দিচ্ছেন। এর মাধ্যমে তারা দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনগণের মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছেন।

এতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী সর্বদা সংবিধান, রাষ্ট্রের আইন ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে পেশাদারিত্ব ও শৃঙ্খলার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করে আসছে এবং ভবিষ্যতেও তা অব্যাহত রাখবে। একটি অসাধু ও কুচক্রী মহল সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেনাবাহিনী প্রধানের বক্তব্য বিকৃত করে যে মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে, তা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ও ভিত্তিহীন।

বিজ্ঞপ্তিতে এ ধরনের বিভ্রান্তিকর ও অসত্য তথ্যের প্রতি সতর্ক থাকার জন্য জনসাধারণকে বিনীতভাবে অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম