কাল বসছে রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল

নিজস্ব প্রতিবেদক॥
রাশিয়ার সহায়তায় পাবনার রূপপুরে নির্মিত দেশের একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎ চুল্লিতে আগামীকাল রবিবার স্থাপন করা হবে নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই কাজের উদ্বোধন করবেন। এটাকে দেশে পারমাণবিক শক্তি উৎপাদনের স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি হিসেবে দেখছেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউক্লিয়ার রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেল পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রের হৃদপিণ্ড। এটি স্থাপনে অংশ নেবেন রাশিয়ার বিশেষজ্ঞের সঙ্গে বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞরা।

প্রেসার ভেসেল স্থাপন অনুষ্ঠানে রূপপুর প্রকল্প এলাকা থেকে যোগ দেবেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান, নির্মাণকাজের প্রধান ঠিকাদার রোসাটমের অন্যতম প্রধান নির্বাহী এলেক্সে লিখাচেভ, প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর, নির্মাণ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এএসইর কর্মকর্তারাসহ মন্ত্রণালয়ের সচিব ও দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা।

রাশিয়া থেকে রি-অ্যাক্টর প্রেসার ভেসেলটি গত বছর অক্টোবরে রূপপুর প্রকল্পে আনা হয়। ভেসেলটি চুল্লিতে স্থাপন করতে এক বছর ধরে অবকাঠামো প্রস্তুত করা হয়।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রটিতে রাশিয়ার সেরা কর্মকৌশল চর্চা, বহু বছরের অভিজ্ঞতা এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাকে কাজে লাগানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক আলেক্সি লিখাচেভ। তিনি বলেন, বিদ্যুৎ ইউনিটের একটিভ ও প্যাসিভ ব্যবস্থার অনন্য সংমিশ্রণ কেন্দ্রের নিরাপদ পরিচালনা নিশ্চিত করবে এবং বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পিত মাত্রার নিশ্চয়তা দেবে।

আলেক্সি বলেন, পারমাণবিক বিদ্যুৎ শিল্পের উন্নয়ন কেবল বাংলাদেশে জ্বালানি সরবরাহের সমস্যার সমাধান করবে না, এই অঞ্চলের উন্নয়নে অবদান রাখবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার মান ও বৃদ্ধি করবে।

আণবিক শক্তি কমিশন সূত্রে জানা গেছে, দেশ স্বাধীন হলে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রূপপুরে ২০০ মেগাওয়াটের একটি পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনের উদ্যোগ নেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু সপরিবারে নিহত হওয়ার পর প্রকল্পটি থেমে যায়। পরে ২০০৮ সালে আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহার অনুসারে প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়।

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান জানান, এই বিদ্যুৎকেন্দ্রটি দেশে পরিচ্ছন্ন জ্বালানির (ক্লিন এনার্জি) মডেল হিসেবে বিবেচিত হবে; যা থেকে দীর্ঘ মেয়াদে পাওয়া যাবে সাশ্রয়ী, নির্ভরযোগ্য ও মানসম্মত বিদ্যুৎ।

রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রকল্প পরিচালক ড. শৌকত আকবর জানান, রূপপুর প্রকল্পটি বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রকল্প। প্রকল্পের ব্যয় ধরা হয়েছে এক লাখ ১৩ হাজার ৯২ কোটি টাকা। ঋণ হিসেবে রাশিয়া দিচ্ছে ৯১ হাজার ৪০ কোটি টাকা। বাকিটা দিচ্ছে বাংলাদেশ সরকার।

 

৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

৭২ ঘণ্টা পরিবহন ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি

ডেস্ক রিপোর্ট:

আট দফা দাবি আদায়ে ৭২ ঘণ্টা ধর্মঘটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা। আগামী ১১ আগস্টের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন থেকে এই ধর্মঘট পালন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। রবিবার বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ হুঁশিয়ারি দেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম।

সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ সংশোধনসহ ৮ দফা দাবি আদায়ে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব সাইফুল আলম বলেন, ১১ আগস্টের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে পরদিন ১২ আগস্ট সকাল ৬টা থেকে ১৫ আগস্ট সকাল ৬টা পর্যন্ত ৭২ ঘণ্টা দেশে সকল প্রকার বাণিজ্যিক পরিবহন বাস, ট্রাক, কাভার্ড ভ্যান, প্রাইমমুভার পণ্যবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকবে।

তিনি বলেন, সড়ক পরিবহন দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সেক্টর। জাতীয় অর্থনৈতিক, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পণ্য পরিবহনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। তাই এই সেক্টরকে সুশৃংখল, যানজটমুক্ত, দুর্ঘটনামুক্ত ও চাঁদাবাজমুক্ত করে উন্নত যাত্রী সেবাবান্ধব-সার্বজনীন পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সাইফুল আলম বলেন, সম্প্রতি সরকারের নির্দেশনায় ২০ ও ২৫ বছরের পুরাতন বাস ও ট্রাক সড়ক থেকে অপসারণের জন্য বিআরটিএ’র কার্যক্রম শুরুর প্রেক্ষিতে দেশের বিভিন্ন জেলা ও বিভাগের মালিক-শ্রমিকরা আঞ্চলিকভাবে ধর্মঘটের ডাক দেয়।

এতে করে সারা দেশের পরিবহন ব্যবস্থাপনায় অচলাবস্থার সৃষ্টির আশঙ্কা দেখা দেয়। এ বিষয়টি আলোচনা ও নিষ্পত্তির লক্ষ্যে গত ২০ জুলাই ঢাকায় সড়ক পরিবহন মালিক-শ্রমিক নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশন এবং বিভাগীয় মালিক ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ সমন্বয়ে এক যৌথ সভা করে। সভায় মালিক এবং শ্রমিক নেতৃবৃন্দ বিস্তারিত আলোচনার পর মালিকদের ব্যবসায়িক স্বার্থ এবং শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার সমুন্নত রেখে সড়ক ব্যবস্থাপনাকে সচল রাখার জন্য আগামী ১৫ কার্যদিবসের মধ্যে নিরসন করার জন্য সরকারকে লিখিতভাবে অনুরোধ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়। এই সময়ের মধ্যে দাবি মানা না হলে মালিক ও শ্রমিকরা যৌথভাবে সারা দেশে পরিবহন ধর্মঘটে যাওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

তাদের দাবিগুলো হলো সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮ এর ৯৮ ও ১০৫ নম্বর ধারাসহ অন্যান্য সুপারিশ করা ধারাগুলো সংশোধন করতে হবে। বাণিজ্যিক মোটরযানের ইকোনমিক লাইফ ২০ ও ২৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ৩০ বছর পর্যন্ত বিবেচনা করতে হবে। এছাড়া যেসব গাড়ি ফিটনেস পাবে না বা বায়ুদূষণ যন্ত্রের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণ করে বলে প্রমাণিত হয়, সেসব গাড়ি নতুন-পুরাতন বিবেচনা যাইহোক না কেন, চলাচলে অযোগ্য ঘোষণা করতে হবে। পূর্বে পুরাতন গাড়ি অপসারণের ক্ষেত্রে নিয়ম ছিল মেয়াদোত্তীর্ণ গাড়ি শুধুমাত্র মেট্রোপলিটন এলাকায় চলাচল করতে পারবে না। লোকাল জেলায় বিআরটিএ’র ফিটনেস পাওয়া সাপেক্ষে চলাচল করতে পারবে।

এই বিষয়টি বহাল রাখতে হবে। উল্লেখিত সমস্যা নিরসন না হওয়া পর্যন্ত বিআরটিএ কর্তৃক ২০ ও ২৫ বছরের পুরাতন গাড়ির বিরুদ্ধে অভিযান স্থগিত রাখতে হবে। বাজেটে বাণিজ্যিকভাবে চলাচলকারী যানবাহনের ওপর আরোপিত দ্বিগুণ অগ্রিম আয়কর (প্রিজাম্পটিভ ইনকাম ট্যাক্স) কমিয়ে পূর্বের ন্যয় বহাল রাখতে হবে। মেয়াদোত্তীর্ণ যানবাহন রাস্তা থেকে সরানোর জন্য সহায়ক হিসেবে বাণিজ্যিক রিকন্ডিশন যানবাহন (বাস, ট্রাক, কাভার্ডভ্যান, প্রাইম মুভার) আমদানির মেয়াদ ৫ বছর থেকে বৃদ্ধি করে ১২ বছর করতে হবে। দুর্ঘটনা কবলিত গাড়ি থানায় আটক হলে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে মালিকের জিম্মায় দেওয়ার বিধান রয়েছে। যা বাস্তবে কার্যকর করা হয় না। এটা কার্যকর করতে হব।

মেয়াদোত্তীর্ণ পুরাতন যানবাহনের জন্য স্ক্র্যাপ নীতিমালা তৈরি করতে হবে। মহাসড়কে তিন চাকার যানবাহন (অটো-টেম্পু, অটোরিক্সা) সহ বিআরটিএ কর্তৃক অনুমোদনবিহীন হালকা যানবাহনের পৃথক লেনে চলাচলের ব্যবস্থা করতে হবে। অধিকাংশ দুর্ঘটনাই এসব যানবাহন মহাসড়কে একত্রে চলাচলের কারণে হয়ে থাকে। ড্রাইভিং লাইসেন্স ও নবায়ন দ্রুততার সঙ্গে ডেলিভারি দিতে হবে এবং শ্রমিক ফেডারেশনের ১২ দফা দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির সভাপতি কফিল উদ্দিন আহমেদ, কার্যকরী সভাপতি এম এ বাতেন, সহ-সভাপতি মো. তোফাজ্জল হোসেন মজুমদার, বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ, সহ-সাধারণ সম্পাদক এম হুমায়ূন কবির, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কফিল উদ্দিন আহমেদ এবং সাবেক-সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি আব্দুর রহিম বক্স দুদু ও সাধারণ সম্পাদক হুমায়ূন কবির খান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের