নিয়োগ ছাড়াই যমুনা লাইফে বহাল তবিয়তে কামরুল

 

নিজস্ব প্রতিবেদক:

যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স কোম্পানির মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) পদে কামরুল হাসান খন্দকারের নিয়োগ নবায়নের আবেদন না-মঞ্জুর করার পরও তিনি দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। এতে বীমা কোম্পানিটির ব্যবসা পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অযোগ্য হওয়ার পরও কামরুল হাসান খন্দকারের নিয়োগ নবায়নের আবেদন করা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক ও অবিবেচনা প্রসূত। এতে বীমা খাত নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে নেতিবাচক বার্তা যাচ্ছে।

জানা গেছে, কামরুল হাসান খন্দকারের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদপত্রের সমতাকরণ ও বৈধতার প্রত্যয়নপত্র দাখিল না করা এবং দাখিল করা শিক্ষাসনদ ভুয়া প্রমাণিত হওয়ায় গত ১৯ মার্চ বীমা খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ) এই নিয়োগ না-মঞ্জুর করে।

কর্তৃপক্ষের পরিচালক (উপসচিব) আহম্মদ এহসান উল হান্নান স্বাক্ষরিত এ সংক্রান্ত একটি চিঠি যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের চেয়ারম্যানকে পাঠানো হয়েছে।

কোম্পানি কর্তৃপক্ষকে চিঠি দেওয়া হলেও কামরুল হাসান খন্দকারকে পদ থেকে সরানো হয়নি। অভিযোগ উঠেছে, এই নিয়োগের অনুমোদন নিতে ‘ভিন্ন পন্থা’ খোঁজা হচ্ছে।

তবে কোম্পানি কর্তৃপক্ষের দাবি, কামরুল হাসানের নিয়োগ আবেদন না-মঞ্জুরের পর আইডিআরএ তা রিভিউয়ের জন্য আবেদন করা হয়েছে।

আইডিআরএ’র চিঠিতে বলা হয়েছে, যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান খন্দকার তার বিদেশি এমবিএ ডিগ্রির মান সংশোধিত মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা নিয়োগ ও অপসারণ প্রবিধানমালা-২০১২ এর (৩)(ক) অনুযায়ী সমতাকরণ করেননি।

তাছাড়াও পরবর্তীতে দাখিলকৃত তার ইবাইস ইউনিভার্সিটির দুটি সনদপত্রের বৈধতার বিষয়েও বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে পারেননি।

উল্লেখিত দুটি কারণে যমুনা লাইফ ইন্স্যুরেন্সের মুখ্য নির্বাহী কর্মকর্তা পদে কামরুল হাসানের নিয়োগ নবায়নের আবেদন না-মঞ্জুর করা হয়েছে।

আইডিআরএ সূত্রে জানা গেছে, কামরুল হাসানের নিয়োগ নবায়নের আবেদন করা হয় ২০২৩ সালের ৭ নভেম্বর। ওই আবেদনে তার শিক্ষাগত যোগ্যতা উল্লেখ করা হয় ভারতের উত্তর প্রদেশের ডিমড ইউনিভার্সিটি থেকে ২০০২ সালে দূরশিক্ষণে এমবিএ পাস।

এই আবেদনের ২৯ দিন পর গত ৬ ডিসেম্বর আইডিআরএ’কে পাঠানো একটি চিঠিতে কামরুল হাসানের শিক্ষাগত যোগ্যতা হিসেবে ইবাইস ইউনিভার্সিটির দুটি সনদ দাখিল করা হয় এবং সেগুলো তার আবেদনে যুক্ত করার অনুরোধ জানানো হয়।

ইবাইস ইউনিভার্সিটির সনদপত্র অনুসারে কামরুল হাসান খন্দকার বিএসএস পাস করেছেন ২০১৯ সালে এবং এমবিএ পাস করেন ২০২১ সালে।

পরবর্তীতে কামরুল হাসানের বিদেশি এমবিএ ডিগ্রির মান সমতাকরণ এবং ইবাইস ইউনিভার্সিটির সনদপত্র দুটির বৈধতার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে বলে আইডিআরএ।

তবে কামরুল হাসান তার বিদেশি ডিগ্রির মান সমতাকরণ বা ইবাইস ইউনিভার্সিটির সনদপত্র দু’টির বৈধতার বিষয়ে কোনো প্রত্যয়নপত্র দাখিল করতে পারেননি।

এদিকে আইডিআরএ কামরুল হাসানের ইবাইস ইউনিভার্সিটির সনদপত্র দুটির সঠিকতা যাচাইয়ের জন্য ২০২৩ সালের ২৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়কে চিঠি দেয়। ওই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির রেজিস্ট্রার এখলাছুর রহমান গত ২১ জানুয়ারি আইডিআরএকে জানায় কামরুল হাসান খন্দকারের দুটি সনদই ফেক (ভুয়া)।

নিয়োগ আবেদন না-মঞ্জুরের পরও দায়িত্ব পালন করে যাওয়া আইনসিদ্ধ নয় বলে জানিয়েছেন খাত সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, আইডিআরএ কারো নিয়োগ না-মঞ্জুর করলে তার সিইও পদে দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার সুযোগ নেই। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে। সিদ্ধান্ত অমান্য করায় বোর্ড ভেঙে আইডিআরএ প্রশাসকও বসাতে পারে। তবে বোর্ড যদি এই নিয়োগ মঞ্জুরের জন্য আপিল করে তা হলে ভিন্ন কথা।

বিষয়টি জানতে কামরুল হাসান খন্দকারকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। হোয়াটসঅ্যাপে বার্তা দিয়েও সাড়া মেলেনি।

নিয়োগ না-মঞ্জুরের পরও কামরুল হাসান খন্দকারকে পদে বহাল রাখার বিষয়ে যমুনা লাইফের চেয়ারম্যান বদরুল আলম খান  বলেন, কামরুল হাসান খন্দকারের নিয়োগ না-মঞ্জুরের পর আমরা আইডিআরএ রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেছি। তারা রিভিউ করছে। তাদের সিদ্ধান্ত পেলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

নিয়োগ না-মঞ্জুরের পরও সিইও’র দায়িত্ব পালন করে যাওয়ার বিষয়ে আইডিআরএর মুখপাত্র ও পরিচালক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, কর্তৃপক্ষ কারো নিয়োগ না-মঞ্জুরের পর সিইও হিসেবে তার দায়িত্ব পালনের সুযোগ নেই। এতে গ্রাহকের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হয়। এটা আইন পরিপন্থী। বিষয়টি আমরা দেখবো।

বিআইডবিøউটিএ’র কর্মচারি নূর আলম একই অফিসে ১৬ বছর

স্টাফ রিপোটারঃ

দীর্ঘ ১৬ বছরেরও বেশি সময় ধরে একই কর্মস্থলে অফিস করছেন সরকারি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন (বিআইডবিøউটিএ) এক কর্মচারি। অভিযোগ রয়েছে, খন্দকার নূরে আলম নামে এই কর্মচারি বিগত ২০০৬ সালের ১১ জুলাই বিআইডবিøউটিএ’তে নিম্মমান সহকারী হিসেব ক্রয় ও সংরক্ষণ বিভাগে যোগদান করেন। সেই থেকে তিনি প্রতিষ্ঠানটির মতিঝিলের প্রধান কার্যালয় অফিস করছেন। পরে অবশ্য পদ পরিবর্তন হয়ে টাইপিষ্ট কাম কম্পিউটার পদে পদোন্নতি পান। দীর্ঘ বছর একই কর্মস্থলে থাকায় তিনি কাউকে পরোয়া করছেন না। বলে বেড়াচ্ছেন, এখানে চেয়ারম্যান বদল হয়, কর্মকর্তা বদল হয় কিন্তু নূরে আলম থেকেই যায়। তার একচ্ছত্র দাপটে কর্মকর্তাও অনেক ক্ষেত্রে অসহায়। কর্মচারি হবার কারনে তিনি ইউনিয়নের সঙ্গেও সম্পৃক্ত। ইউনিয়ন নেতারাও তাকে কদর করে চলেন অজানা আতঙ্কে।
নূরে আলমের গ্রামের বাড়ী টাইঙ্গাল জেলার নাগরপুর উপজেলায়। একেবারেই নিম্ম মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। অথচ অফিসের ফাইল গায়েব, তথ্য পাচার, কর্মচারিদের হুমকি দিয়ে সুবিধা আদায় সর্বপরি চাকরির আড়ালে ঠিকাদারি ব্যবসাসহ পেশায় অনৈতিক পন্থায় তিনি আজ অঢেল সম্পদের মালিক। সরকারি চাকুরির বিধান মতে, কোন কর্মচারি একই স্থানে টানা ৩ বছরের বেশি চাকুরি করার সুযোগ নেই। কিন্তু নূরে আলম কোন এক অজানা রহস্যে একই অফিসে কর্মজীবনের অধিকাংশ সময় পার করে চলেছেন।
অভিযোগ রয়েছে, ইউনিয়নের প্রভাব দেখিয়ে কাগজপত্র ঠিক নাই এমন ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে তিনি তালিকাভুক্তি করিয়ে থাকেন মোটা অঙ্কের সুবিধা নিয়ে। অফিসের একাধিক কর্মকর্তাকেও তিনি অবৈধ সুবিধা পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন। যে কারনে ওইসব অসাধু কর্মকর্তারাও অনৈতিক সুবিধা পেয়ে নূরে আলমকে প্রত্যক্ষ ও পরাক্ষভাবে সাপোর্ট করে যাচ্ছেন। নূরে আলমের গ্রামের এক ঠিকারদারী প্রতিষ্ঠান আছে। যেটার স্বত্তাধিকারি একজন নারী। অফিস সময় শেষে ওই নারীকে নিয়ে নিজের দপ্তরে ডেকে একান্তে সময় কাটান বলে অভিযোগ করেছেন বিআইডবিøউটিএ’র একাধিক স্টাফ। তারা বলেন, অনেক সময় আপত্তিকর কিছু চোখে পড়লেও প্রতিবাদের কোনো সুযোগ নেই। কারন নূরে আলমের এতটাই দাপট কেউ প্রতিবাদ করলে উল্টো অভিযোগকারিকেই হেনস্তা হতে হবে। ওই নারীকে নিয়ে নূরে আলম বিভিন্ন দপ্তরে কাজের জন্য তদবির করে বেড়ান। কাজের টাকা দু’জনেই ভাগাভাগি করে নেন। এসব অভিযোগের বিষয় জানতে চাইলে নূরে আলম বলেন, একাধারে ১৬ বছর ধরে একই কর্মস্থলে কাজ করছি বিষয়টা ঠিক এমন নয়। মাঝে দু’একবার এদিকে সেদিক যেতে হয়েছে। নারী প্রসঙ্গ, ঠিকাদারি কাজসহ অন্য অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব শুনে আপনার কি লাভ হবে। উপরে অভিযোগ দিয়েও কিছু হবেনা। তার চেয়ে বরং আসুন আমরা একটা চা চক্রে মিলিত হই।
তবে এসব বিষয়ে জানতে চাইলে বিআইডবিøউটিএর’ চেয়ারম্যান কমডোর গোলাম সাদেককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তাকে পাওয়া য়ায়নি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড় জানানো যাচ্ছে অভিযোগ, থানায় বসলেই ভিডিওকলে হাজির এসপি