বিআইডব্লিউটিএ’র অতি:পরিচালক আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে নৌ-মন্ত্রণালয় নিরব কেন?

স্টাফ রিপোর্টার:
নিজেরাই দূর্নীতি করবে আর তা ঠাকার জন্য সাংবাদিককে দোষারোপ করবে এটা যেন আমাদের সমাজের টেডিশন হয়ে দাড়িয়েছে।

ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অভিযোগ পাওয়া গেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ-বিআইডব্লিউটিএ’র অতিরিক্ত পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ও নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে তার বিরুদ্ধে তদন্তে নেমেছে। তবে অভিযোগ বা তদন্তের তোয়াক্কা না করে বহাল তবিয়তে দাপিয়ে বেড়াচ্ছেন সাবেক ছাত্রদল নেতা এ কে এম আরিফ উদ্দিন।

জানা গেছে,পাবনায় বাড়ি হওয়ায় রাষ্ট্রের শীর্ষ ব্যক্তির নামও ব্যবহার করে যাচ্ছেন তিনি। আবার কখনো ব্যবহার করেছেন নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রীর বিশেষ আত্মীয়ের পরিচয়ও। দুদক এবং নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আরিফ উদ্দিন বিআইডব্লিউটিএ’র বন্দর ও পরিবহন বিভাগে অতিরিক্ত পরিচালক এবং ল্যান্ড অ্যান্ড এস্টেট এর পরিচালকের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। গুরুত্বপূর্ণ এলাকার বাসিন্দা এবং দুই দায়িত্ব নিয়োজিত থাকায় বিআইডব্লিউটিএ’র অধিকাংশ প্রকল্পে প্রভাব বিস্তার করে আসছেন তিনি। প্রভাব খটিয়ে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রাজধানীর এলিফ্যান্ট রোডের ৩০১ নম্বর বহুতল একটি বাড়ি তিনি ২২ কোটি টাকায় কিনেছেন। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকায় সি ব্লকের ২/এ নম্বর সড়কের ৪৭/৫৫ নম্বর হোল্ডিংয়ের যে অ্যপার্টমেন্টে তিনি বসবাস করছেন, সেটিও কিনতে খরচ করেছেন ৬ কোটি টাকা। আর অ্যপার্টমেন্টের সাজসজ্জায় খরচ করেছেন আরো ৪ কোটি টাকা। ব্যক্তিগত ব্যবহারের জন্য কোটি টাকায় কিনেছেন গাড়ি। স্ত্রীর জন্যও আছে পৃথক গাড়ি। স্কলরশিপ ছাড়াই তার ছেলে পড়াশোনা করছেন যুক্তরাষ্ট্রে। মেয়েকে পড়াচ্ছেন লন্ডনে। লন্ডনের বিগবর্ণ সিটিতে মেয়ের জন্য কিনেছেন একটি বাড়ি। যুক্তরাষ্ট্রেও ছেলের নামে বাড়ি কিনেছেন বলে বিআউডব্লিউটিএ’র কয়েকজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

সূত্র জানায়, পাবনার সুজানগর মৌজার বনখোলা, ঘেতুপাড়া, রামপুর, হাটখালী ও খেতুপাড়ায় অন্তত: ২০০ বিঘা জমি কিনেছেন স্ত্রী শামীমা, সন্তান, ভাগ্নেসহ পরিবারের সদস্যদের নামে। অতিরিক্ত পরিচালক আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে নামে-বেনামে একাধিক ব্যবসায় অর্থলগ্নির অভিযোগ। বেনামে লাইসেন্স করে বিআইডব্লিউটিএ’র বড় বড় কয়েকটি ঠিকাদারী কাজও বাগিয়ে নিয়েছেন বলে সূত্র জানায়।

অভিযোগে আরো জানা গেছে, পাঁচটি বেসরকারি ব্যাংকে আরিফের রয়েছে কয়েক কোটি টাকার ফিক্সড ডিপোজিট। বরাদ্দ না থাকলেও বিআইডব্লিউটিএ’র একটি গাড়ি সার্বক্ষণিক ব্যবহার করছেন ব্যক্তিগত কাজে। স্ত্রী শামীমাকে কিনে দিয়েছেন অন্তত শতভরি স্বর্ণালংকার। ব্যক্তিগত আয়কর সার্টিফিকেটে এসব সম্পদের তথ্য তিনি গোপন করেছেন। এর বাইরে বন্দর ও পরিবহন বিভাগের আওতাধীন ঘাট ইজারা নিয়েও আরিফের বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়াবহ অভিযোগ। পছন্দের ইজারাদারকে দিয়ে মামলা করিয়ে ইজারা স্থগিত করে শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন আরিফ। ফোরশোর নবায়নেও ইচ্ছামতো উৎকোচ আদায় করেন তিনি। বিআইডব্লিউটিএ’তে যা ওপেন সিক্রেট ঘটনা।

এ কে এম আরিফ উদ্দিনের এসব অভিযোগ বিষয়ে দুদকের উপ-পরিচালক মো. হাফিজুল ইসলাম গত বছরের ৩ সেপ্টেম্বর বিভিন্ন রেকর্ডপত্র তলব করে একটি চিঠিও দিয়েছে বিআইডব্লিউটিএ’র পরিচালক প্রশাসনকে। দুদক জানায়, বিআইডব্লিউটিএ’র আওতায় নারায়ণগঞ্জ পোর্ট থেকে ১ জানুয়ারি ২০১৯-৩১ ডিসেম্বর ২০২৩ সাল পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের হিসাবের বিবরণী, আরিফ উদ্দিনের ব্যক্তিগত নথি, চাকরির মেয়াদে উত্তোলিত বেতন-ভাতার বিবরণ, দাপ্তরিক দায়দায়িত্ব সম্পর্কীত অফিস আদেশ, তার স্ত্রী শামীমা, দুই সন্তান, ভাগ্নের নামে ব্যবসা এবং শেয়ার পরিচালনার আবেদন এবং অনুমোদন সংক্রান্ত সব ধরনের কাগজপত্র তলব করেছে দুদক। এবিষয়ে জানতে চাইলে ২ জন সাংবাদিকদের নাম নিয়ে তাদের দোষ দিয়ে শাক দিয়ে মাছ ঠাকার চেষ্টা করলেন কিন্তু মন্তব্য দিলেন না।

চিরনিদ্রায় শায়িত আকবর আলি খান

স্টাফ রিপোর্টার॥
সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা, অর্থনীতিবিদ, ইতিহাসবিদ, গবেষক ও শিক্ষক ড. আকবর আলি খানকে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। শুক্রবার বিকাল তিনটার পর তাকে সেখানে দাফন করা হয়।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন ড. আকবর আলি খান। তার বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে আকবর আলি খানের ছোট ভাই কবীর উদ্দিন খান জানান, হার্টঅ্যাটাকে আকবর আলি খানের মৃত্যু হয়েছে। আকবর আলি খান বাসায় গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

শুক্রবার সকালে এভারকেয়ার হাসপাতালের হিমঘর থেকে আকবর আলি খানের মরদেহ রাজধানীর গুলশানে তার বাসায় নেওয়া হয়। সেখানে স্বজন ও বিশিষ্টজনেরা তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। গুলশানে আকবর আলি খানের বাসায় যান সাবেক সচিব আবদুল মুয়ীদ চৌধুরী, দুদকের সাবেক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান, ব্যাংকার ও অর্থনীতি বিশ্লেষক মামুন রশীদ, কবি ও সাংবাদিক সোহরাব হাসান প্রমুখ।

পরে বাদ জুমা তার জানাজা রাজধানীর গুলশানের আজাদ মসজিদে সম্পন্ন হয়। জানাজা শেষে মসজিদ প্রাঙ্গণে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে তাকে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।জানাজায় অংশ নেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, এনবিআরের সাবেক চেয়ারম্যান বদিউর রহমান প্রমুখ।

১৯৪৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জন্মগ্রহণ করেন আকবর আলি খান। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) ইতিহাসে পড়াশোনা শেষ করে কানাডার কুইন্স ইউনিভার্সিটিতে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন তিনি। পিএইচডি গবেষণাও করেন অর্থনীতিতে।

আমলা হিসেবে পেশাগত জীবনে প্রধান ধারার পাশাপাশি শিক্ষকতাও করেন আকবর আলি খান। অবসর নেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব হিসেবে। এর পর দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করেন।

তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা হয়েছিলেন, পরে দায়িত্ব পালনে প্রতিবন্ধকতার মুখে পদত্যাগ করেন। অবসরের পর তার আবির্ভাব ঘটে পূর্ণকালীন লেখক হিসেবে। অর্থনীতি, ইতিহাস, সমাজবিদ্যা, সাহিত্য-বিচিত্র বিষয়ে তার গবেষণামূলক বই পাঠকের কাছে ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
হাজির করা হলো ট্রাইব্যুনালে, হেফাজতে থাকা সেনা কর্মকর্তাদের বিদেশ থেকে যতটুকু স্বর্ণ আমদানি করলে দিতে হবে না ভ্যাট প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎতে যাচ্ছেন বিএনপির মহাসচিব ফকরুল বাংলাদেশে ইতিহাস গড়ল উইন্ডিজ দুর্নীতির মাধ্যমে সম্পদের পাহাড় গড়েছেন রাজউক ইমারত পরিদর্শক শামীম রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধে কে জিতবে, তা নিয়ে পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের প্রস্তুতি নিচেছ ট্রাম্প নাসার চন্দ্র মিশনে স্পেসএক্স জুলাই যোদ্ধা স্বীকৃতি পেতে নতুন করে দেড় হাজারের বেশি আবেদন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফেরাতে আপিল শুনানি শুরু প্রধান প্রকৌশলীর আস্থাভাজন ইএম ২ এর তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী কায়কোবাদ সম্পদের পাহাড়