৯ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সন্ধ্যা ৭:৩৩ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।
সরিষাবাড়ী প্রতিনিধি –
জানা গেছে, গত ২৬ আগস্ট “রয়েছে নানা অনিয়ম বিদ্যালয়ের ৩৪ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষকের সঞ্চয়ী হিসাবে জমা ” শিরোনামে দৈনিক আলোচিত জামালপুর পত্রিকা সহ কয়েকটি জাতীয় / অনলাইন পত্রিকায় সংবাদ পাঠিয়ে জামালপুর জেলা প্রশাসকের মেইলে তদন্তের জন্য আবেদন প্রেরণ করেন মাসুুদুর রহমান । ১৩ সেপ্টেম্বর সোমবার জামালপুর শিক্ষা অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) মনিরা মুস্তারী ইভা জামালপুর সদর এর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোহাম্মদ ছানোয়ার হোসেনকে আহবায়ক , জামালপুর জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মোঃ শফিকুল ইসলামকে সদস্য , জামালপুর জেলা শিক্ষা অফিসের সহকারী পরিদর্শক মোহাম্মদ শফিকুল আলমকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করে ১০ কর্ম দিবসের মধ্য সুস্পষ্ট মতামতসহ তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের জন্য অফিস আদেশ জারি করেন।২০সেপ্টেম্বর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীন বরাবর আংশিক তথ্য চেয়ে মাসুদুর রহমান তথ্য অধিকার আইনে আবেদন করে সরিষাবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে অনুলিপি প্রেরণ করেন। এরপর থেকে তিনি বিভিন্ন জায়গায় দৌড়ঝাপ পেরে মাসুদুর রহমানকে থামাতে না পেরে সরিষাবাড়ী থানায় ২২ সেপ্টেম্বর বুধবার প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীন বাদী হয়ে অভিযোগ দায়ের করে। বহুপন্থার অনিয়ম ও সাংবাদিক মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দেওয়া নিয়ে শুরু সমালোচনার ঝড়। এদিকে সাংবাদিক মাসুদুর রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দায়ের করায় নিন্দা জানিয়েছেন সরিষাবাড়ী উপজেলায় কর্মরত সাংবাদিকরা।
উল্লেখ্য থাকে যে, তিনি সরিষাবাড়ী উপজেলার সানাকৈর শেখ খলিলুর রহমান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে তার কর্মজীবন শুরু করেন । পরে সরিষাবাড়ী রিয়াজ উদ্দিন তালুকদার উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করে পরবর্তীতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক হিসেবে দায়িত্ব পালন রত অবস্থায় ৫৬ হাজার টাকা দুর্নীতি করেন। দুর্নীতির দায়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এর দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেয়ে অডিট কমিটির রিপোর্ট অনুযায়ী তার মাসিক বেতন থেকে আত্মসাৎকৃত টাকা পরিশোধ করেন।২০১৫ সালের ১ জানুয়ারী সরিষাবাড়ী সালেমা খাতুন বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদান করার পর থেকেই অর্থ আত্মসাৎ,নিয়োগ বানিজ্য ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার, তার ব্যক্তিগত সঞ্চয়ী হিসাব (নং-৫৯২৬০১০০০০৩১৯) খোলে ছাত্রীদের কাছ থেকে প্রধান শিক্ষকের নিজ নামীয় ব্যক্তিগত সঞ্চয়ী হিসাবে ব্যাংক রশিদের মাধ্যমে ৩৪ লক্ষ ৬৬ হাজার ১৮১ টাকা আদায়, ২০১৫-২০১৬,২০১৬-২০১৭ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থ বছরের ৫৮ লাখ ১৪ হাজার ১২ টাকা ০১ পয়সার দুর্নীতির দায়ে ছুটি ও ২য় বারের যোগদান,বিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কল্যাণ ট্রাস্ট থেকে নেওয়া নিভা রাণী পাল এর নিকট থেকে এমপিও করা বাবদ ১লক্ষ ত্রিশ হাজার টাকা উৎকোচ করার অভিযোগ রয়েছে।
১২ আগস্ট বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্ণীতি অর্থ আত্মসাৎ ও শিক্ষক-কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার করায় তার অপসারনের দাবীতে মানববন্ধন করেন শিক্ষক/শিক্ষিকা,কর্মচারীবৃন্ধ।
প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদা পারভীন কোন কথা বলতে রাজী না হওয়ায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
কথা হলে বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান শাহজাদার জানান, ১০ এপ্রিল দুর্ণীতির দায়ে ওয়াজেদা পারভীনকে ছুটি দিয়েছিলাম।ইতিমধ্যে সাংবাদিক মাসুদুর রহমান এর অভিযোগে তদন্ত কমিটি গঠন হয়েছে। একজন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দেওয়া দুঃখ জনক।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ মোজাম্মেল হক বলেন, জামালপুর শিক্ষা অফিস থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। আর সাংবাদিক মাসুদ তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করেছে অনুলিপি পেয়েছি।
সাংবাদিক মাসুদুর রহমান বলেন, ইতিপূর্বে মেয়র রুকনের দুর্ণীতির চিত্র তুলে ধরে কয়েকটি সংবাদ প্রকাশ ও ওসি মাজেদের বিরুদ্ধে একটি সংবাদ প্রকাশ করার অপরাধে তিনটি মিথ্যা মামলা পুরস্কার দিয়েছিল তৎকালীন ওসি মাজেদুর রহমান । এবার ওয়াজেদা পারভীনের দুর্নীতি চিত্র দৈনিক পত্রিকাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে। সংবাদ প্রকাশের পর থেকে তিনি বিভিন্ন মাধ্যমে আমাকে থামানোর চেষ্টা করেছে । অভিযোগ তুলে না নিলে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাসানো হবে বিভিন্ন জায়গায় আলোচনা হচ্ছে। আমার বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। অযথা যাতে হয়রানি না হই সেদিকে সকলের সু-দৃষ্টি কামনা করছি।
এ বিষয়ে সরিষাবাড়ি উপজেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবুল হোসেন জানান, সাংবাদিক মাসুদুর রহমান খুবই সাহসী একজন সাংবাদিক। তাকে দমিয়ে রাখতে এই অভিযোগ করা হয়েছে। বিষয়টি খুবই ন্যাক্কারজনক। অতি দ্রুত সাংবাদিক মাসুদুর রহমান বিরুদ্ধে দেওয়া অভিযোগটি প্রত্যাহারের দাবি জানান তিনি।
Leave a Reply