1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । বিকাল ৫:৫৯ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
ভালুকায় ছেলের হাতে বাবা খুন গুলফাম বকাউলের গনজোয়ারের নেপথ্যের রহস্য ! গুলশানে স্পা অন্তরালে অপরাধ জগতের ডন বাহার ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য নারী দিয়ে ফাঁদ তীব্র গরমের অতিষ্ঠ জনজীবনে একটি প্রশান্তিময় ও দৃষ্টি নন্দিত উদ্যোগ বিশ্বনাথে পৌর মেয়রের উপর  কাউন্সিলর রাসনা বেগমের মামলা:  মেয়রের বিরুদ্ধে ঝাড়ু– মিছিল, উত্তেজনা তিতাস গ্যাসের সিবিএ সভাপতি মরহুম কাজিম উদ্দিন প্রধানের স্মরনসভা সমবায় লুটে আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের সম্পদের পাহাড়ের উৎস কোথায় ? গুলশানে স্পা অন্তরালে দিনে ও রাতে চলছে বাহারের ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য  এনআরবি লাইফ-প্রতিভা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ পেলেন ৫ কৃতিমান লেখক বাণিজ্য জগতে বিশেষ অবদানের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২৪ পেলেন হোটেল রয়্যাল প্যালেসের কর্তা আশরাফুল সেখ
বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

বঙ্গবন্ধুর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী আজ

স্টাফ রিপোর্টার:

বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা, স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের স্থপতি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ১০৪তম জন্মবার্ষিকী ও জাতীয় শিশু দিবস আজ। বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ এক অবিচ্ছেদ্য নাম। স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ডাকে বীর বাঙালি ঝাঁপিয়ে পড়েছিল মুক্তিযুদ্ধে। ৯ মাসের মরণপণ যুদ্ধের মাধ্যমে বিশ্ব মানচিত্রে যুক্ত হয় স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ। শুধু দেশ স্বাধীনই নয়, স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশকে সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ে তুলতে নতুন লড়াই শুরু করেছিলেন বঙ্গবন্ধু।
কিন্তু ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম এক হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে সপরিবারে নিহত হন জাতির পিতা। এই হত্যাকাণ্ডের মধ্যদিয়ে জাতি হারায় হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ সন্তানকে। থমকে দাঁড়ায় বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার গতিপথ। ইতিহাসের মোড় ঘুরে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছে দেশ। টানা চতুর্থ মেয়াদের জন্য ক্ষমতায় আছে আওয়ামী লীগ।
এমন প্রেক্ষাপটে ভিন্ন এক আবহে এবার উদ্‌যাপিত হচ্ছে বঙ্গবন্ধুর জন্মবার্ষিকী। দিবসটি উপলক্ষে আওয়ামী লীগ, সহযোগী সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ ছাড়া সরকারিভাবেও পালিত হবে নানা কর্মসূচি।

১৯২০ সালের ১৭ই মার্চ তদানীন্তন ফরিদপুর জেলার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গিপাড়ায় শেখ লুৎফর রহমান এবং মাতা সায়েরা খাতুনের ঘর আলোকিত করে জন্মগ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। চার বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন তৃতীয়। পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রভাকর রূপে জন্ম নেয়া ‘খোকা’ নামের সেই শিশুটি শিক্ষা-দীক্ষা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, মহত্তম জীবনবোধ, সততা, সাহস, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি। শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করতো। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন। গ্রামের হিন্দু, মুসলমানদের সম্মিলিত সম্প্রীতির সামাজিক আবহে তিনি দীক্ষা পান অসামপ্রদায়িক চেতনার। কিশোর বয়সেই তিনি রাজনীতিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেন। গোপালগঞ্জের মিশন স্কুলে অষ্টম শ্রেণিতে অধ্যয়নকালে তৎকালীন বৃটিশবিরোধী আন্দোলনে যোগদানের কারণে শেখ মুজিবুর রহমান প্রথমবারের মতো গ্রেপ্তার হয়ে কারাবরণ করেন। এরপর থেকে শুরু হয় বঙ্গবন্ধুর আজীবন সংগ্রামী জীবনের অভিযাত্রা। তিনি সারাজীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় ও কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারে বন্দি থেকেছেন, দুইবার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন। কিন্তু আত্মমর্যাদা ও বাঙালি জাতির অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কখনো মাথা নত করেননি, পরাভব মানেননি। দীর্ঘ ২৩ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের পথপরিক্রমায় বঙ্গবন্ধু তার সহকর্মীদের নিয়ে ১৯৪৮ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ এবং পরবর্তীতে ১৯৪৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ গঠন করেন। ১৯৫২-এর ভাষা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৫৪-এর যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন, ’৬২-এর শিক্ষা আন্দোলন, ’৬৬-এর ছয় দফা আন্দোলন, ’৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান পেরিয়ে ’৭০ সালের ঐতিহাসিক নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির অবিসংবাদিত নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হন। বঙ্গবন্ধুর সাহসী, দৃঢ়চেতা, আপোষহীন নেতৃত্ব ও বীরত্বপূর্ণ সংগ্রামে অনুপ্রাণিত হয়ে জেগে ওঠে শত বছরের নির্যাতিত-নিপীড়িত পরাধীন বাঙালি জাতি।
মুক্তির অদম্য সপৃহায় উদ্বুদ্ধ করে তিনি বাঙালি জাতিকে স্বাধীনতার চূড়ান্ত সংগ্রামে ঐক্যবদ্ধ করে তোলেন। ৭ই মার্চে বঙ্গবন্ধুর এই ঐতিহাসিক ঘোষণার পর দেশ জুড়ে শুরু হয় সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলন। ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চের প্রথম প্রহরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে গ্রেপ্তার হওয়ার পূর্বে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। মহান মুক্তিযুদ্ধের সর্বাধিনায়ক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৯ মাসব্যাপী রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের মধ্যদিয়ে ৩০ লাখ শহীদের আত্মদান ও ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানির বিনিময়ে অর্জিত হয় স্বাধীনতা বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বিশ্বমানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটে স্বাধীন বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রের। ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্টের কালরাত্রিতে বিশ্বাসঘাতকদের নির্মম বুলেটে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সপরিবারে নিহত হন। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর স্বাধীন বাংলাদেশে সামরিক স্বৈরাচার প্রায় দুই যুগ ধরে প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মিথ্যা ইতিহাস শেখাবার অপচেষ্টা চালায়। খুনিরা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করে কিন্তু বঙ্গবন্ধুর চেতনা ও আদর্শকে মুছে ফেলতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুর অবিনাশী চেতনা ও আদর্শ  চির অনির্বাণ হয়ে প্রজ্বলিত থেকেছে প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে।
বঙ্গবন্ধু ও বাঙালি জাতির অবিভাজ্য সম্পর্কের কোনো পরিসমাপ্তি নেই। বঙ্গবন্ধু আমৃত্যু সাম্য, মৈত্রী, গণতন্ত্রসহ বিশ্বশান্তি প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদান রেখেছেন। তিনি ছিলেন বিশ্বের নির্যাতিত, নিপীড়িত ও শোষিত-বঞ্চিত মানুষের মুক্তির দূত- স্বাধীনতা ও শান্তির প্রতীক। বাংলা ও বাঙালি যতদিন থাকবে, এই পৃথিবী যতদিন থাকবে, পৃথিবীর ইতিহাস যতদিন থাকবে তিনি একইভাবে প্রজ্বলিত হবেন প্রতিটি বাঙালি হৃদয়ে, প্রতিটি মুক্তিকামী, শান্তিকামী, মানবতাবাদী হৃদয়ে। বঙ্গবন্ধুর জীবনদর্শন চিরকাল বাঙালি জাতিকে অনুপ্রাণিত করবে- পথ দেখাবে। বাঙালি জাতি শ্রদ্ধা, কৃতজ্ঞতা ও ভালোবাসায় বাংলাদেশের ইতিহাস বিনির্মাণের কালজয়ী এ মহাপুরুষকে চিরকাল স্মরণ করবে।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »