1. md.zihadrana@gmail.com : admin :
সন্ধীপ নৌ রুটে ভাড়া কমাতে চায় বিআইডব্লিউটিএ, রাজি নয় জেলা পরিষদ - দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ

২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ । সকাল ৬:১৭ ।। গভঃ রেজিঃ নং- ডিএ-৬৩৪৬ ।।

সংবাদ শিরোনামঃ
গুলফাম বকাউলের গনজোয়ারের নেপথ্যের রহস্য ! গুলশানে স্পা অন্তরালে অপরাধ জগতের ডন বাহার ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য নারী দিয়ে ফাঁদ তীব্র গরমের অতিষ্ঠ জনজীবনে একটি প্রশান্তিময় ও দৃষ্টি নন্দিত উদ্যোগ বিশ্বনাথে পৌর মেয়রের উপর  কাউন্সিলর রাসনা বেগমের মামলা:  মেয়রের বিরুদ্ধে ঝাড়ু– মিছিল, উত্তেজনা তিতাস গ্যাসের সিবিএ সভাপতি মরহুম কাজিম উদ্দিন প্রধানের স্মরনসভা সমবায় লুটে আগষ্টিন পিউরিফিকেশনের সম্পদের পাহাড়ের উৎস কোথায় ? গুলশানে স্পা অন্তরালে দিনে ও রাতে চলছে বাহারের ব্ল্যাকমেলই সহ মাদক বাণিজ্য  এনআরবি লাইফ-প্রতিভা প্রকাশ সাহিত্য পুরস্কার ২০২৪’ পেলেন ৫ কৃতিমান লেখক বাণিজ্য জগতে বিশেষ অবদানের জন্য এশিয়া প্যাসিফিক এক্সিলেন্স অ্যাওয়ার্ড ২৪ পেলেন হোটেল রয়্যাল প্যালেসের কর্তা আশরাফুল সেখ বিকাশে ভুল নম্বরে চলে যাওয়া টাকা উদ্ধার করে দিল যাত্রাবাড়ী থানার ওসি অপারেশন মামুন
সন্ধীপ নৌ রুটে ভাড়া কমাতে চায় বিআইডব্লিউটিএ, রাজি নয় জেলা পরিষদ

সন্ধীপ নৌ রুটে ভাড়া কমাতে চায় বিআইডব্লিউটিএ, রাজি নয় জেলা পরিষদ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

সগীর আলীর মেয়ে থাকে চট্টগ্রামের হালিশহর। মেয়ে অনেকদিন ধরে অসুস্থ। এদিকে দিনমজুর সগীর আলীর সংসার চলে তার আয়ে। ছেলের স্কুলে পরীক্ষার ফি জমা দেয়ার জন্য মেয়েকে দেখতে যেতে পারছে না। গতকালের পারিশ্রমিক ৬০০ টাকা আছে সগীর আলীর কাছে। আজকেই মেয়েকে দেখে ফিরতে হবে তার জন্মভূমি সন্ধীপে। ৬০০ টাকা নিয়ে চিন্তা করে ঘাটে বসে, স্পীড বোট ভাড়া ৩৮০ টাকা করে, যাওয়া-আসাতেই তার লেগে যাবে ৭৬০ টাকা। মেয়েকে আর দেখতে যেতে পারে না,তার বাবা। পুরো একটা দিনের পারিশ্রমিক দিয়েও সন্ধীপ থেকে চট্টগ্রাম আসতে পারে না সগীর আলী। বুক ফাটা কান্না নিয়ে সগীর ফিরে যায় তার বাড়ি। সগীর আলী এখানে উপমা হলেও এরকম হাজারো বাবা প্রতিদিন ফিরে যাচ্ছে চাপা কান্না নিয়ে।

সন্ধীপ থেকে চট্টগ্রাম আসার সবচেয়ে জনপ্রিয় ঘাট হল কুমিরা-গুপ্তছড়া ঘাট। সরকারি ২ প্রতিষ্ঠানের কাড়াকাড়ি এই ঘাট নিয়ে। তবে অবাক করা বিষয় হল- মাত্র ১৭ কিঃমিঃ নৌ রুটের ভাড়া ৩৮০ টাকা। ইজারাদারের মর্জি মতো চলে এসব বোট। তারই নিজস্ব নিয়োগকৃত কর্মচারীদের কাছে যেন জিম্মি সকলে। তার নামে যে সুনাম ও প্রচারে ব্যস্ত থাকে,তাকেই দেয়া হয় ভিআইপি প্রটোকল। তবে সত্যিকারের ভিআইপিদের সাথে করা হয় খারাপ আচরণ। তার কর্মীবাহিনীর আচার-আচরণে অতিষ্ঠ হয়ে অনেক নামি-দামি মানুষ সন্ধীপে না যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। গত বর্ষার শেষ সময়ে ‘সন্দ্বীপ উদ্যোক্তার খোঁজে’ সংগঠনের একজন নারী সদস্য সন্দ্বীপ গিয়েছিলেন সন্দ্বীপ থেকে ট্রেড লাইসেন্স ও ব্যাংক অ্যাকাউন্ট করার জন্য। উনাকে পানিতে নামিয়ে দেওয়া হয় উনার ১ বছরের শিশু কন্যাসহ। সন্দ্বীপ থেকে যাওয়ার সময় একই অবস্থা হয়েছিল। অতঃপর উনি সন্দ্বীপ থেকে ব্যবসায়িক লাইসেন্স করতে আগ্রহী হননি। ফলে শিল্প সন্দ্বীপের কিছু লোক কর্মসংস্থান হারালো।

এই ইজারাদার মহাশয়ের নাম এস এম আনোয়ার হোসেন। তিনি সন্ধীপ উপজেলা মগধরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান। ঔই ইউনিয়নে ঘাট হওয়াতে এক কর্তৃত্ব স্থাপন করেছেন তিনি। তার বিরুদ্ধে কেউ অভিযোগ করতে সাহস পান না। নিজেকে দানবীর হিসেবে পরিচয় দিতে ভালোবাসেন তিনি। দাবী করেন, করোনার মধ্যে কয়েক কোটি টাকার ত্রাণ সামগ্রী তিনি দিয়েছেন। এই টাকার উৎস কোথায়, তা জানা সম্ভব হয় নি। তবে ঘাট ছাড়াও তার অননুমোদিত কয়েকটি ইটের ভাটা রয়েছে। সামান্য কিছু দান সদকা করে গ্রামের সহজ সরল মানুষকে নিজের হাতে পুঞ্জীভূত করে রেখেছেন। ব্যাপারটা এরকম, শিশুর পাওয়া ঈদের বকশিস ১০০০ টাকার নোট হাত থেকে নিয়ে তাকে ১০ টাকার ১০টি নোট ধরিয়ে দিয়ে খুশি রাখা। তিনিই জেলা পরিষদকে এই অবৈধ ঘাট ধরে রাখার জন্য সর্বোচ্চ সহয়তা প্রদান করেন। কারণ অবৈধ ঘাটের অবৈধ আয়ের সিংহভাগই তার পকেটে ঢোকে। এই ঘাটে তার স্পীড বোট ছাড়া কারও বোট চলতে পারে না। যেন একক রাজত্ব স্বর্গ তৈরি করেছেন তিনি। তবে সেই স্বর্গ উপভোগ করার অধিকার কেবল তার মতে যারা রাজি থাকবে, তাদের ই প্রাপ্য।

২০১৩ সালে গুপ্তছড়া– কুমিরা ঘাটের ইজারা নিয়ে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ–পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডবিউটিএ) ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের মধ্যে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়। জটিলতা নিরসনে ২০১৪ সালের ৯ মার্চ তৎকালীন নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খানের উদ্যোগে স্থানীয় দুই সাংসদ চট্টগ্রাম–৩ (সন্দ্বীপ) ও চট্টগ্রাম–৪ (সীতাকুন্ড), বিআইডবিউটিএ ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই সভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০১৪ সালের ২ রা ডিসেম্বর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড ও সন্দ্বীপ উপজেলার গুপ্তছড়া–কুমিরা যাত্রী পারাপার ঘাট পরিচালনা নিয়ে বাংলাদেশ বিআইডবিউটিএ ও চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের সাথে ৬ বছরের সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষর হয়।

২০২০ সালের পয়লা মার্চ ফেনী জেলার সোনাগাজী থানা সংলগ্ন চট্টগ্রাম জেলার মিরসরাই থেকে ডাবল মুরিং থানা পর্যন্ত পুরো এলাকাকে নৌ–বন্দর ঘোষণা করে সরকার। পাশাপাশি বিআইডব্লিউটিএ-কে নৌ–ঘাটগুলো পরিচালনার দায়িত্বও দেওয়া হয়েছে। তাই আইন অনুযায়ী নৌ ঘাটটি পরিচালনা করবে বিআইডব্লিউটিএ। অপরদিকে চট্টগ্রাম জেলা পরিষদও তাদের পরিচালনা কার্যক্রম বন্ধ রাখেনি। উল্টো এ নৌ ঘাটের ইজারাদাতা হিসেবে মালিকানা ধরে রাখতে ঢাকায় মন্ত্রণালয়ে তদবির করা অব্যাহত রাখে। বিষয়টি সমাধানে দলীয় প্রভাব খাটানোর মাধ্যমে কয়েক দফা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে বসার অভিযোগও রয়েছে।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ- পরিবহন কর্তৃপক্ষের নৌ- নিরাপত্তা ও ট্রাফিক ব্যবস্থাপনা বিভাগ কর্তৃক ধার্যকৃত দেশের বিভিন্ন নৌ-পথের যাত্রী ভাড়া আদায়ের একটি তালিকা আছে। সে অনুপাতে গুপ্তছড়া-কুমিরা ১৭ কি.মি. নৌ- পথের পারাপার ও যাতায়াতের জন্য ভাড়া হওয়ার কথা টাকা ২৯ টাকা। কিন্তু সরকারি হিসেবের ২৯ টাকার জায়গায় ৩৮০ টাকা আদায় করা হচ্ছে, অর্থাৎ ১৩ দশমিক ১০ গুণ বেশি।

সর্বশেষে বিডব্লিউটিএ স্পীড বোট ভাড়া করতে চেয়েছে ২০০ টাকা জনপ্রতি। কিন্তু জেলা পরিষদ তা মানতে রাজি হয় নি। ইজারাদার হঠাৎ করে ২৫০ টাকার ভাড়া ৩৮০ টাকা করে ফেললেও তার বিরুদ্ধে সামান্য কোন ব্যবস্থাও গ্রহন করে নেই জেলা পরিষদ। আর এসবে সর্বোচ্চ ভুক্তভোগী সাধরণ মানুষ।

Please Share This Post in Your Social Media

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2021
ভাষা পরিবর্তন করুন »