কোচিং করতে গিয়ে ধরা পড়লেন এক আসামি

স্টাফ রিপোর্টার: 

ময়মনসিংহে পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) অভিযানের পর ফয়সাল খান (৩০) নামের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় এজাহারভুক্ত এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে নগরের গাঙ্গীনারপাড় এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে আজ তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

গ্রেপ্তার ওই ব্যক্তির নাম আসিফ সাইফুল্লাহ ওরফে শাকি। তিনি নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার বাসিন্দা। ফয়সালের মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় ৯ নম্বর আসামি হিসেবে তাঁর নাম উল্লেখ আছে।

গ্রেপ্তারের বিষয়ে নিহত ফয়সালের ভগ্নিপতি মোহসিনুল হক বলেন, ‘আসামিদের গতিবিধি আমরা নজরে রাখছিলাম। এজাহারভুক্ত আসামি আসিফ সাইফুল্লাহ অলকা নদী বাংলা কমপ্লেক্সের বিপরীত দিকে একটি সেন্টারে বিসিএস কোচিং করছিলেন। বিষয়টি টের পেয়ে পুলিশকে জানানো হয়। পরে পুলিশ তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। তবে এখনো রহস্যের জট খোলেনি। ঘটনার দিন ডিবি পুলিশের সঙ্গে বাসার ভেতরে ঢুকেছিল আসিফসহ দুজন। ফয়সালের প্রেমিকার খালাতো ভাই আসিফ।’

বিষয়টি নিশ্চিত করে ময়মনসিংহ কোতোয়ালি মডেল থানার ওসি মো. সফিকুল ইসলাম খান বলেন, আসিফকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। সাত দিনের রিমান্ড চেয়ে তাঁকে আদালতে সোপর্দ করা হবে। এ মামলায় আগে আরও তিন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। কিন্তু তাঁদের কাছ থেকে উল্লেখযোগ্য কোনো তথ্য মেলেনি। এ নিয়ে মামলাটিতে চার আসামি গ্রেপ্তার হয়েছেন। আসিফ বাদে অন্য আসামিরা হলেন মো. খুররম, ফরহাদ তানভীর ওরফে তুষার ও কাউছার মিয়া।

নিহত ফয়সাল খান ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার সরিষা কাশিপুর এলাকার বাসিন্দা। তিনি জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমবিএ শেষ করে নগরের কেওয়াটখালী পাওয়ার হাউস রোডে বড় বোনের বাসায় থেকে চাকরির চেষ্টা করছিলেন।

ফয়সালের স্বজনদের ভাষ্য, চার বছর ধরে ফয়সালের সঙ্গে একই এলাকার এক তরুণীর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সম্প্রতি মেয়েটির সরকারি চাকরি হয়। এরপর অন্য আরেকজনের সঙ্গে তাঁর বিয়ে ঠিক হলে ফয়সালের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। ফয়সাল বিয়েতে বাধা দিতে চাইলে তরুণীর বাবা গত ১০ নভেম্বর তাঁর বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে থানা ও ডিবি পুলিশের কাছে একটি অভিযোগ করেন। ওই দিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে ফয়সালের বোনের বাসায় অভিযান চালায় ডিবি পুলিশ।

স্বজনেরা আরও জানান, ডিবির অভিযানের সময় দুজন বহিরাগত ব্যক্তিও পুলিশের সঙ্গে ছিলেন। তাঁদের একজন ওই তরুণীর খালাতো ভাই আসিফ সাইফুল্লাহ। ডিবির অভিযানের পর বাসার সামনে ফয়সালকে অচেতন ও রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। পরে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সায়েন্সেস ও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৫ নভেম্বর তাঁর মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় ১২ নভেম্বর মাঝরাতে ফয়সালের বাবা মো. সেলিম খান বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা ৪-৫ জনকে আসামি করে একটি হত্যাচেষ্টা মামলা করেন।

 

সবা:স:জু- ৩৪৫/২৪

গৃহায়নের শওকতের অবৈধ সম্পদের পাহাড়

স্টাফ রিপোর্টার:

জাতীয় গৃহায়নের প্রধান কার্যালয়ের ভূমি শাখার অফিস সহকারী মোঃ শওকতের বেপরোয়া লুটপাটে গৃহায়ণ-ই যেন ফোকলা হতে চলেছে। অবৈধভাবে ঘুষ দুর্নীতি, নথি আটকে সম্পদের পাহাড় গড়ে তোলার অবৈধ মচ্ছবে মেতে উঠেছেন এই লুটেরা শওকত।

গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের ভূমি শাখার এলএমএসএস শওকত শুধু নিজের দপ্তরের অনিয়ম, দুর্নীতির অপকর্ম করেই ক্ষ্যান্ত থাকেন না, তিনি অন্যান্য বিভাগ ও সেকশনের হরিলুটের নেপথ্য নিয়ন্ত্রক হয়ে উঠেছেন। গৃহায়ণের যে কোনো কাজেরই তৎপরতা শুরু হলেই নড়েচড়ে বসেন তিনি। তার আস্থাভাজন সিন্ডিকেটকে সাথে নিয়েই সেবাগ্রহীতাদের জিম্মি করতে চলতে থাকে তার ফন্দিফিকির। সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের চাহিদা পূরণের মাধ্যমে গোপন পথে সুবিধা বাগিয়ে নেয়ার তদবিরবাজিতেই বেশি আগ্রহ তার। তবে এ কৌশল সফল না হলে শওকত আঙ্গুল বাঁকা করতেও বিন্দুমাত্র সময় ক্ষেপণ করেন না। গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের সম্পৃক্ত কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের নাম, পরিচয়, সাক্ষর ব্যবহার করে একগাদা মিথ্যা অভিযোগ দাখিল করেন দপ্তরে দপ্তরে। সেসব স্থানে টাকা ছিটিয়ে তদন্তের নামে হয়রানিও চালাতে থাকেন। অবস্থা বেগতিক দেখে তাকে সঙ্গে নিয়েই কাজ সমঝোতা করে তবেই রেহাই মেলে। এমন অপরাধ অপকৌশলে ওই ধূর্ত এমএলএসএস লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়ে থাকেন বলেও অভিযোগ উঠেছে।

বিতর্কিত এই এমএলএসএসের পুরো নাম হচ্ছে মোহাম্মদ শওকত। তিনি গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের হেড কোয়ার্টারে কর্মরত থাকাবস্থায় সংঘবদ্ধ সিন্ডিকেটের যোগসাজশে এরইমধ্যে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলেছেন। অসাধু এক দাপুটে কর্মকর্তার সকল অপকর্ম, গোপন অর্থের লেনদেন, টাকা পাচারসহ যাবতীয় অনৈতিক কাজের ‘ম্যানেজম্যান’ হিসেবেও তার সমধিক পরিচিতি রয়েছে।

এরইমধ্যে লুটেরা তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনে লিখিত অভিযোগ দাখিল হয়েছে।

দুদকে পাঠানো অভিযোগপত্রে গৃহায়ণের এমএলএসএস শওকতের লুটপাট, দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত বিশাল সহায় সম্পদের কিছু বিবরণও তুলে ধরা হয়েছে। তাতে উল্লেখ করা হয়, তার বর্তমান বাসা নং- ১/১,১/২, ১/৩, ১/৫, রোড-২৫ (পেরিস রোড) ব্লক-ডি, ফ্ল্যাট নং বি/২, ৪র্থ তলা, সেকশন-১০, ঢাকা-১২১৬। মোঃ শওকত এম এল এস এস (পিয়ন), জাতীয় গৃহায়ন কর্তৃপক্ষ প্রধান কর্যালয়, ঢাকার ভূমি শাখার উপ-পরিচালক এর দপ্তরে (৩য় তলায়) কর্মরত আছেন। তিনি ঘুষ দুর্নীতি ও সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে অবৈধভাবে কোটি টাকার মালিকানা অজন করেছেন। তার বিষয়ে হাজার হাজার অভিযোগ রয়েছে। তার বর্তমান বাসা নং- ১/১,১/২, ১/৩, ১/৫, রোড-২৫ (পেরিস রোড) ব্লক-ডি, ফ্ল্যাট নং বি/২, ৪র্থ তলা, সেকশন-১০, ঢাকা-১২১৬। তিনি একজন জাতীয় গৃহায়ণের এম এল এস এস (পিয়ন) হওয়ার সত্বেও তার বাড়ী গাড়ী ও অবৈধ টাকা পয়সার অভাব নেই। তিনি বর্তমানে জাতীয় গৃহায়নের প্রধান কার্যালয়ের ভূমি শাখার উপ পরিচালক-১, ঢাকা এর দপ্তরে কর্মরত থাকার কারনে অবৈধ ভাবে ক্ষমতা প্রয়োগ করে নথি লুকিয়ে রেখে মানুষকে হয়রানি করে প্রতিদিন লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তার ও তার পরিবারের অবৈধ সম্পদের হিসাব করতে তিনি হিমসিম খাচ্ছে। দুদকে দেওয়া অভিযোগ সুত্রে জানা যায়, ১) বাসা নং- ১/১,১/২, ১/৩, ১/৫, রোড-২৫ (পেরিস রোড) ব্লক-ডি, ফ্ল্যাট নং বি/২, ৪র্থ তলা, সেকশন-১০, ঢাকা-১২১৬। উক্ত বাসায় তিনি স্বপরিবারে বর্তমানে বসবাস করিতেছেন। উক্ত ফ্ল্যাটটির বর্তমান মূল্য প্রায় কোটি টাকার উপরে। (২) প্লট নং- ৫৬, রোড-১২, ব্লক-ডি, সেকশন-১২, পল্লবী, ঢাকা। উক্ত প্লট দুইটি তিনি তার স্ত্রী নামে ক্রয় করেছেন দুই কোটি ৯০ লক্ষ টাকা দিয়ে। (৩) বাসা নং-৭৮, রোড-০৮, মুক্তি হাউজিং, মিরপুর-০১, ব্লক-এ, উক্ত বাড়ীটি তিনি ৩য় তলা ১টি ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা ব্যয় করে। (৪) বাসা-৭৬, রোড-৫, কাটাসুর মোহাম্মদপুর, ঢাকা উক্ত বাড়ীটি তিনি ৫ম তলা পর্যন্ত নিমার্ণ করেছেন কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করে। (৫) প্রট নং-৪৫, রোড-৭, আমিন বাজার (সাভার) জেলা-ঢাকা। উক্ত বাড়ীটি ১৭ কাঠা জমি ৫ম তলা ভবন নির্মাণ করেছেন। (৬) কুমিল্লা জেলা শহরে তার একটি আলিশান বাড়ী নিমাণ করেছেন ৪ কোটি টাকা ব্যয় করে। তার বিভিন্ন ব্যংকে কোটি কোটি টাকা জমা রয়েছে নামে বে নামে। তার অবৈধ সম্পদ ও দেশের কুমিল্লা ও দেশের বাহিরে অবৈধ সম্পদ রয়েছে। বিষয়টি তদন্ত করলে আরো সত্যতা পাওয়া যাবে। তার স্ত্রীর ৫২ ভরি সোনা রয়েছে যা তিনি আয়কর নথিতে প্রর্দশন করেন নি।

এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে বারবার যোগাযোগ করা হলেও গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের এমএলএসএস মোঃ শওকত কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উল্টো তিনি একজন সিবিএ নেতাকে প্রতিবেদকের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়ে কৌশলে সটকে পড়েন।

চলবে……

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম