জুলাইয়ের প্রথম শহীদ সাংবাদিক হাসান মেহেদীর মৃত্যুবার্ষিকীতে গভীর শ্রদ্ধা

স্টাফ রিপোর্টার॥

আজ থেকে ঠিক এক বছর আগের এক সন্ধ্যা। ক্যালেন্ডারের পাতা উল্টে আমরা ফিরে যাই ২০২৪ সালের ১৮ জুলাই। দিনটি বাংলাদেশের সাংবাদিকতা এবং গণতন্ত্রের ইতিহাসে এক কালো দিন হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে। এই দিনে পেশাগত দায়িত্বের প্রতি অবিচল থেকে, সত্যকে তুলে আনার সংগ্রামে রাজপথে প্রাণ দিয়েছিলেন দৈনিক ঢাকা টাইমসের সিনিয়র রিপোর্টার, অকুতোভয় সাংবাদিক হাসান মেহেদী।

দেখতে দেখেতে বছর পেরিয়ে গেছে। আজ তার প্রথম মৃত্যুবার্ষিকীতে আমরা তাকে স্মরণ করছি গভীর শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায়।

শহীদ মেহেদী রুহের মাগফেরাতের জন্য মিলাদ মাহফিলে পরিবারের সদস্যদের সাথে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ।

সেদিন রাজধানী ঢাকা ছিল ছাত্র-জনতার উত্তাল আন্দোলনে প্রকম্পিত। কোটা সংস্কারের দাবিতে শুরু হওয়া সেই আন্দোলন তত দিনে রূপ নিয়েছে ছাত্র-জনতার গণ-আন্দোলনে। সেই আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে ঢাকার যাত্রাবাড়ী এলাকায় গিয়েছিলেন হাসান মেহেদী।

সহকর্মীরা জানান, তিনি সেদিন পুলিশের পাশাপাশি থেকে দায়িত্ব পালন করছিলেন। তাঁর হাতে ক্যামেরা আর কলম ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কিন্তু সত্য তুলে ধরার সেই অস্ত্রই হয়তো কারও কারও জন্য অসহনীয় হয়ে উঠেছিল। সংঘর্ষের সংবাদ সংগ্রহের একপর্যায়ে পুলিশের ছোড়া গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যায় হাসান মেহেদীর বুক।

সহর্কমী মাংবাদিক ইমন তাকে উদ্ধার করে যখন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়, ততক্ষণে সব শেষ। কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন মেহেদিকে। নিভে যায় একটি সম্ভাবনাময় প্রাণ, একটি জ্বলন্ত মশাল।

মাত্র ৩১ বছর বয়সে থেমে যায় হাসান মেহেদীর পথচলা। তিনি শুধু একজন সাংবাদিকই ছিলেন না, ছিলেন পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি, বাবা-মায়ের স্বপ্ন, স্ত্রীর অবলম্বন এবং সাত মাস ও সাড়ে তিন বছর বয়সী দুই শিশুকন্যার গর্বিত বাবা।

পটুয়াখালীর বাউফলের গ্রামের বাড়ি থেকে ঢাকায় এসেছিলেন অনেক স্বপ্ন নিয়ে। দুর্নীতি দমন কমিশন বিটে কাজ করা এই সাংবাদিক তাঁর লেখনী দিয়ে অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল সাংবাদিকতার মাধ্যমে দেশ ও মানুষের সেবা করবেন। কিন্তু সেই স্বপ্ন কেড়ে নিল রাষ্ট্রযন্ত্রের নির্মম বুলেট।

হাসান মেহেদীর এই হত্যাকাণ্ড শুধু ঢাকা টাইমস বা তার পরিবারকেই নয়, স্তব্ধ করে দিয়েছিল পুরো দেশ এবং বিশ্ব বিবেককে। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস, সাধারন সাংবাদিক সমাজ এবং ইউনেস্কোর মতো আন্তর্জাতিক সংগঠনগুলো এই হত্যাকাণ্ডের তীব্র নিন্দা জানায়। তার মৃত্যু চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়, একটি স্বৈরাচারী শাসনামলে সত্য তুলে আনার চেষ্টা করা কতটা বিপজ্জনক। এই ঘটনার মধ্য দিয়ে উন্মোচিত হয় গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ এবং সাংবাদিকদের ওপর চালানো দমন-পীড়নের ভয়াবহ চিত্র।

হাসান মেহেদীর রক্তদান বৃথা যায়নি। তার মৃত্যু চলমান ছাত্র-জনতার আন্দোলনকে নতুন মাত্রা দেয়, হয়ে ওঠে স্বৈরশাসনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের প্রতীক। তিনি ছিলেন সেই জুলাই অভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ সাংবাদিক। বাংলাদেশের যেকোনো আন্দোলন-সংগ্রামের মাঠে কোনো সাংবাদিকের নিহত হওয়া ঘটনাও এটি প্রথম। তার আত্মত্যাগ আন্দোলনকারীদের আরও দৃঢ়প্রতিজ্ঞ করে তোলে। সপ্তাহ দুয়েকের মাথায় পতন ঘটে বাংলাদেশে চেপে বসা স্বৈরাচারী শাসনব্যবস্থার। শুরু হয় নতুন এক গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের পথে যাত্রা। হাসান মেহেদীরা নিজেদের জীবন দিয়ে সেই নতুন সকালের পথ তৈরি করে দিয়ে গেছেন।বাংলাদেশের পর্যটন

এক বছর পেরিয়ে গেছে, কিন্তু হাসান মেহেদীর স্মৃতি আমাদের কাছে অমলিন। ঢাকা টাইমসের করিডোর থেকে রাজপথ, তাঁর সহকর্মী থেকে শুরু করে মুক্তিকামী জনতা, কেউই ভোলেনি তার আত্মত্যাগের কথা।

যত দিন বাংলাদেশে মুক্ত সাংবাদিকতার চর্চা থাকবে, যত দিন মানুষ সত্য ও ন্যায়ের পক্ষে কথা বলবে, তত দিন হাসান মেহেদীর নাম শ্রদ্ধার সাথে উচ্চারিত হবে।

আমাদের অকুতোভয় সহযোদ্ধা, তোমাকে জানাই বিনম্র শ্রদ্ধা। তোমার দেখানো পথে সত্যের মশাল জ্বালিয়ে রাখাই হোক আমাদের আজকের অঙ্গীকার।

বাংলাদেশ সংবাদপত্র শিল্প পরিষদের ৮ম সভা অনুষ্ঠিত: সংবাদপত্র শিল্প টিকিয়ে রাখতে প্রধানমন্ত্রীর  সহযোগিতা কামনা

স্টাফ রিপোর্টার:
সংবাদপত্র শিল্পের চলমান সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে বাংলাদেশ সংবাদপত্র শিল্প পরিষদের উদ্যোগে আজ ২৫ মে, ২০২৪ রোজ শনিবার ডেইলী ইন্ডাস্ট্রি কার্যালয়ে সংগঠনের ৮ম সভা তথা এক জরুরী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। পরিষদের সভাপতি ও ডেইলী ইন্ডাস্ট্রি’র সম্পাদক ও প্রকাশক ডক্টর এনায়েত করিমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উক্ত সভায় সংগঠনের ৭ম সভার কার্যবিরণী পাঠ করেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক দৈনিক শেষ কথা ও দৈনিক সমাজ বাংলাদেশ সম্পাদক ও প্রকাশক ইউনুস সোহাগ। সভায় উপস্থিত সম্পাদক ও প্রকাশকদের উদ্দেশ্যে তিনি সংবাদপত্র শিল্পের বিরাজমান সমস্যা ও তার সমাধান নিয়ে ১৪ দফা দাবিগুলোও উপস্থাপন করেন। উক্ত দাবিগুলো ব্যাপারে সবাই মতামত ব্যক্ত করেন ও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের উপদেষ্টা দৈনিক স্বপ্ন প্রতিদিন প্রকাশনা গ্রুপ চেয়ারম্যান মোঃ মমিনুর রশীদ মামুন, দৈনিক ভোরের ডাক সম্পাদক ও প্রকাশক কে এম বেলায়েত হোসেন, দৈনিক পাঞ্জেরী সম্পাদক ও প্রকাশক বীর মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম তালুকদার, দৈনিক আলোর জগত প্রকাশক ও সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক তালুকদার, ডেইলি বিজনেস ফাইল প্রকাশক ও সম্পাদক অভি চৌধুরী, দৈনিক তরুণ কণ্ঠ প্রকাশক রফিকুল ইসলাম শান্ত, দৈনিক মুক্ত তথ্য সম্পাদক ও প্রকাশক এডভোকেট এম এ মজিদ, দৈনিক মাতৃভূমির খবর সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রেজাউল করিম, দৈনিক সময়ের চিত্র সম্পাদক ও প্রকাশক এ আর এম মামুন, দৈনিক সংবাদ প্রতিক্ষণ সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ আব্দুল আউয়াল, দৈনিক বিশ্ব মানচিত্র সম্পাদক ও প্রকাশক এডভোকেট মোঃ রাসেদ উদ্দিন, দৈনিক বন্ধুজন সম্পাদকম-লীর সভাপতি ও প্রকাশনা গ্রুপ পরিচালক আসিফ হাসান নবী, দৈনিক ব্যাংক বীমা অর্থনীতি প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ও প্রকাশনা গ্রুপ চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মুনীরুজ্জামান, দৈনিক আমাদের জাগরণ সম্পাদক ও প্রকাশক নূরুল আজিজ চৌধুরী, দৈনিক নববাণী সম্পাদক ও প্রকাশক এ এম এম সলিমউল্লাহ সরকার, দৈনিক ভোরের সময় প্রধান সম্পাদক মোঃ হাবিবুর রহমান, দৈনিক অগ্নিশিখা সম্পাদক ও প্রকাশক মোর্শেদ আলম, দৈনিক আজকের প্রভাত সম্পাদক ও প্রকাশনা গ্রুপ পরিচালক নেজামুল হক, ডেইলি ইভিনিং নিউজ সম্পাদক ও প্রকাশক এবিএম সেলিম আহমেদ, দৈনিক আলোর বার্তা ও দি ডেইলি স্টেট সম্পাদক ও প্রকাশক অধ্যাপক রফিকউল্লাহ শিকদার ও দি ডেইলি চ্যালেঞ্জ সম্পাদক ও প্রকাশক নাসির আল মামুন প্রমুখ।
দাবিগুলি হচ্ছে : ১। ডিএফপিসহ সকল সরকারী সংস্থার কাছে বকেয়া বিজ্ঞাপন বিল আগামী জুনের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে, ২। সরকারী বিজ্ঞাপনের সুষম বন্টন নীতিমালা প্রনয়ন করতে হবে এবং প্রতিটি বিজ্ঞাপণ কমপক্ষে ২টি ইংরেজী ও ৪টি বাংলা পত্রিকায় প্রদান করতে হবে, ৩।বিজ্ঞাপন বিলের উপর অগ্রীম আয়কর এবং সার্ভিস চার্জ বাতিল করতে হবে, ৪। ইংরেজী ও বাংলা পত্রিকার সরকারী বিজ্ঞাপনের মূল্য বৈষম্য দুর করতে হবে, ৫। নিবন্ধিত পত্রিকার অন-লাইন পোর্টালে সরকারী বিজ্ঞাপনের মূল্য নির্ধারন করে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে, ৬। সরকারী বিজ্ঞাপনের মূল্য বাজার ভিত্তিক (মূল্যস্ফীতির ভিত্তিতে) বৃদ্ধি করতে হবে, ৭। সংবাদপত্র শিল্পের জন্য স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করতে হবে, ৮। সাংবাদিক কর্মচারীদের আবাসন ব্যবস্থা করতে হবে, ৯। সংবাদপত্র শিল্পের জন্য আসন্ন বাজেটে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকার বিশেষ বরাদ্দ দিতে হবে, ১০। প্রকাশিত বিজ্ঞাপন বিল সর্বোচ্চ তিন মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে, ১১।সংবাদপত্র কর্মীদের জন্য একটি বিশেষায়িত হাসপাতাল নির্মান করতে হবে, ১২। সংবাদকর্মীদের জন্য বিশেষ পেনশন স্কীম চালু করতে হবে, ১৩। ডিজিটাল সিকিউরিটি এ্যাক্টসহ সকল কালা-কানুন বাতিল করতে হবে, ১৪। সকল সম্পাদককে ভি আই পি মর্যাদা প্রদান করতে হবে।
দীর্ঘ আলোচনায় সংবাদপত্র মালিক ও প্রকাশকগণ বলেন, আমরা নিজেদের কোটি কোটি টাকা বিনিয়োগ করে সংবাদপত্র প্রকাশ করছি কিন্ত্র সরকারি সংস্থাগুলি আমাদের বকেয়া বিজ্ঞাপন বিল সময়মত পরিশোধ না করলে আমরা প্রকাশনা টিকিয়ে রাখবো কিভাবে? আর সাংবাদিক কর্মচারিদের বেতন-ভাতাই বা পরিশোধ করবো কোথা থেকে?
সভায় সংবাদপত্র শিল্প টিকিয়ে রাখার জন্য সরকারের বিশেষভাবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতা কামনা করা হয়।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম
শিক্ষার্থীরা রোডম্যাপের দাবিতে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিলেন শাকসু নির্বাচনের বিদেশ যেতে না পারায় মাইক ভাড়া করে এলাকাবাসিকে গালিগালাজ করলেন কিশোরগঞ্জের যুবক জুলাই সনদে স্বাক্ষর করল গণফোরাম অন্যদেরও সই করার আহ্বান কমিশনের সূচক সাড়ে ৩ মাস আগের অবস্থানে লেনদেন ৪ মাসে সর্বনিম্ন আওয়ামীলীগ ফিরলে হাসিনার পা ধরেও মাফ পাবেন না: রাশেদ খান বিমানবন্দর অগ্নিকান্ডে পুড়েছে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম কুমিল্লায় গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার, পালিয়েছেন স্বামী ও তাঁর পরিবারের লোকজন ঢাকা এলজিইডিতে দুর্নীতির একচ্ছত্র অধিপতি বাচ্চু মিয়া বিমান বন্দরের সামনে এখোনো উৎসুক জনতার ভীড় নেভেনি আগুন বাড়িভাড়া ৫০০ টাকা বৃদ্ধি করে প্রজ্ঞাপন জারি শিক্ষকদের