
মোঃ ইব্রাহিম হোসেন:
সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর পৌর এলাকা দ্বারিয়াপুরের মদখ পাড়া মহল্লার মৃত আব্দুল মান্নানের ছেলে সবুজ বিশ্বাস প্রায় এক যুগ ধরে মরণ নেশা ইয়াবার সম্রাজ্য গড়ে তুলেছেন।
৫ আগস্ট স্বৈরাচার সরকার পতনের পর থেকে মাদক ব্যবসা জমজমাট রাখতে গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং! এছাড়াও চিহ্নিত মাদক সম্রাট সবুজ বিশ্বাসের বিএনপির নেতা হওয়ার বড়ই খায়েস!
অনুসন্ধানে জানা যায়, স্বৈরাচার সরকার পতনের পর সবুজ বিশ্বাস সিরাজগঞ্জ সহ উত্তরবঙ্গের কয়েকটি জেলায় মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করছেন, মাদক ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়ার জন্য গড়ে তুলেছেন কিশোর গ্যাং!
সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, দ্বারিয়াপুর, বিসিক বাস স্ট্যান্ড, দিলরুবা বাস স্ট্যান্ড, থানাঘাট, রূপপুর, নগরডালা, ডায়া মোড়, পাড়কোলা,তালগাছি, বাঘাবাড়ী নৌঘাট, পোরজানা, কৈজুরী, পাঁচিল সহ সবুজ বিশ্বাসের একাধিক কিশোর গ্যাং সদস্য রয়েছে তারাই দিন রাত ২৪ ঘন্টাই খুচরা ও পাইকারী মাদকের চালান পৌঁছে দিচ্ছে খুচরা ব্যাবসায়ীদের কাছে।
সবুজ বাংলাদেশের প্রতিবেদক ছদ্মবেশে শাহজাদপুর বিসিক বাস স্ট্যান্ডে সবুজ বিশ্বাসের এক কিশোর গ্যাং সদস্যর সঙ্গে পাইকারি ইয়াবা টেবলেট ক্রয় করার কথা হলে তিনি বলেন,শুধু সিরাজগঞ্জ নয়, উত্তরবঙ্গের বেশ কয়টি জেলায় আমাদের বড় ভাই সবুজ বিশ্বাসের ইয়াবার পাইকারি চালান যায় প্রতিদিন, এছাড়াও চালান পৌঁছে দেওয়ার বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, আগে টাকা দিলে তারপর আশেপাশের নির্ধারিত একটি স্থানে দাঁড়ালে আমাদের লোক এসে চালান পৌঁছে দিবে। এছাড়াও দূরে কোথাও আমাদের লোকের মাধ্যমে চালান পৌঁছে দেওয়া হয় তবে,আলাদা খরচ দিতে হবে, এরপর দামাদামির বিষয়ে কথা হলে তিনি বলেন, উত্তরবঙ্গের ভিতরে সবুজ বিশ্বাসের কমে কেউ আপনাকে দিতে পারবে না, কারন তিনি সরাসরি কক্সবাজার থেকে বড় বড় চালান নিয়ে আসে তাই সবার চেয়ে কমে দিতে পারে।
তাদের ক্ষমতার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শাহজাদপুরের কোন পুলিশ- প্রশাসন সবুজ বিশ্বাসের লোক ধরার ক্ষমতা রাখে না, কারণ সবুজ বিশ্বাসের টাকায় আমার মত ৩০-৪০ জন পোলাপান চলে এবং বড় বড় নেতারা তার টাকায় রাজনীতি করে এবং পুলিশ-প্রশাসনকে মেনেজ করেই ব্যবসা করে।
এবিষয়ে শাহজাদপুরের একাধিক ব্যক্তির কাছে জানতে চাইলে তারা জানান, চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী সবুজ বিশ্বাসকে শাহজাদপুরে ইয়াবা সম্রাট নামেই পরিচিত, এবং মাদক ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে গড়ে তুলেছে কিশোর গ্যাং এর আগে একাধিক বার মাদকসহ আটক হয়েছে জেল ও খেটেছে, জেলে থেকে বসেও নিয়ন্ত্রণ করতো মাদক ব্যবসা, তার নামে কয়েকটি মাদক মামলাও রয়েছে।
এবিষয়ে স্থায়ী এক জনপ্রতিনিধির সঙ্গে কথা হলে তিনি নাম প্রকাশ না করা শর্তে সবুজ বাংলাদেশকে জানান, সবুজ বিশ্বাসের হাত অনেক উপরে তাকে বেশিদিন জেলেও রাখতে পারে না, এছাড়াও এলাকার মানুষ ভয়ে তার বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস করে না, কারন সে ভয়ংকর খারাপ মানুষ এছাড়াও তিনি শাহজাদপুরে কিশোর গ্যাং গড়ে তুলেছ কেউ তার বিরুদ্ধে কথা বললেই কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের দিয়ে হামলা চালায়।
তিনি আরো বলেন, চিহ্নিত মাদক সম্রাট সবুজ বিশ্বাস ইদানীং বিএনপির স্থানীয় কিছু নেতাদের সঙ্গে সু-সম্পর্ক গড়ে তুলছেন দলের পদ-পদবী পাওয়ার জন্য এবার মাদক ব্যবসা আরো ব্যাপক ভাবে করার উদেশ্যে রাজনৈতিক দলের নেতা হওয়ার ও খায়েস জমেছে।
এবিষয়ে স্থানীয় সুশীল সমাজের ব্যক্তিবর্গ জানান, মাদকের কারণে আমাদের যুবসমাজ আজ ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে, এখন সমাজের উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্ত পর্যায়ের তরুণ, যুবক এবং কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ও মাদকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছে, মাদকের বিষে অনেক শিক্ষার্থীর স্বপ্নময় জীবন নীল হয়ে যাচ্ছে। এ ছাড়াও সমাজে মাদক ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেওয়ার ফলে ধর্ষণ, যৌন হয়রানি, চুরি, ছিনতাইসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক ঘটনা ঘটছে। অন্যদিকে অধিক মুনাফা ও সহজে আমদানি করতে পাড়ায় মাদক ব্যবসায়ীরা রাতারাতি আঙ্গুল ফুলে কলাগাছে রূপ নিয়েছে। এভাবে সব এলাকায় মাদকের ভয়াবহতা রূপ নিয়েছে।
এদিকে গত ০৮/০৭/২৫ইং তারিখে চিহ্নিত মাদক সম্রাট সবুজ বিশ্বাসের মাদক ব্যবসার বিরুদ্ধে লেখালেখির জের ধরে সাংবাদিককে ফোন করে প্রাণ নাশের হুমকিসহ তার পালিত কিশোর গ্যাং এর সদস্যদের দিয়ে সাংবাদিকের উপর হামলার চেষ্টা চালায়, সেই সাংবাদিক মাদক সম্রাট সবুজ বিশ্বাসের নামে থানায় অভিযোগ ও দায়ের করেন।
অভিযোগের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন, শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ(ওসি) আসলাম আলী।
এবিষয়ে সবুজ বিশ্বাসের সঙ্গে কথা বলার জন্য একাধিকবার চেষ্টা করেও তার দেখা পাওয়া যায়নি, এছাড়াও তার মুঠোফোনে ফোন করলে-ও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
এবিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, শাহজাদপুর সার্কেল মোঃ কামরুজ্জামান সবুজ বাংলাদেশকে বলেন, সবুজ বিশ্বাসের নাম এই প্রথম আপনার কাছ থেকে শুনলাম, যাই হোক বিষয়টি আমি দেখবো।