ফরিদপুরে বসতবাড়ির আঙিনা থেকে ককটেল উদ্ধার

ফরিদপুরে বসতবাড়ির আঙিনা থেকে ককটেল উদ্ধার

ফরিদপুর সংবাদদাতা:

ফরিদপুরে সদরের ওবায়দুর মোল্যা (৫৫) নামে এক সাবেক ইউপি সদস্যের বসতবাড়ির আঙিনা থেকে দুটি ককটেল উদ্ধার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (৫ আগস্ট) সদর উপজেলার কানাইপুর ইউনিয়নের ভাটিকানাইপুরের ওই ইউপি সদস্যের বাড়িতে এসব ককটেল পাওয়া যায়। বিরোধের জেরে ভয় দেখাতে প্রতিপক্ষরা ককটেলগুলো রেখে যেতে পারে বলে সন্দেহ করছেন বাড়ির সদস্যরা। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

জানা যায়, বেলা মঙ্গলবার ১টার দিকে ওবায়দুর মোল্যার মালিকানাধীন মমতাজ মঞ্জিলের আঙিনা থেকে দুটি ককটেল উদ্ধার করেন পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা। এর আগে সকালে ওই স্থানে লাল স্কচটেপে মোড়ানো ককটেল দুটি দেখতে পেয়ে থানা পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ওবায়দুর মোল্যার ছেলে মিজানুর মোল্যা এ প্রসঙ্গে জানান, প্রতিবেশী ও ২ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কবির মোল্যা ও আফজাল মাতব্বরদের সঙ্গে জমি সংক্রান্ত বিরোধ রয়েছে তাদের।

তিনি বলেন, গত তিন দিন ধরে বাড়ির সামনে লোকজন নিয়ে মহড়া দিচ্ছে প্রতিপক্ষরা। আমাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। আজ সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখি, ঘরের সামনেই ককটেল। আমাদের ধারণা, ভয় দেখানোর জন্য তারাই এগুলো রেখে গেছে। আমরা এখন মামলা করবো। অপরদিকে বিএনপি নেতা কবির মাতব্বর দাবি করেন ষড়যন্ত্রমূলকভাবে তাদের ফাঁসানো হচ্ছে। তিনি বলেন, ওবায়দুরদের সঙ্গে আমাদের জমি সংক্রান্ত কোনো বিরোধ বা ঝামেলা নেই। অন্য একজনের সঙ্গে ঝামেলা চলতেছে। আমার বড় ভাই আমিন মাতব্বরকে (৭৫) ওই জমির মামলায় সাক্ষী সন্দেহ করে তিন দিন আগে মারধর করেন মিজানুর মোল্যা। এরপর বিষয়টি জানতে গিয়েছিলাম, কোনো মহড়া দেওয়া হয়নি। আবার আজ সকালে শুনলাম, ওদের বাড়িতে ককটেল পাওয়া গেছে। পরিকল্পিতভাবে আমাদের ফাঁসানোর জন্য নাম বলতেছে।

এ ব্যাপারে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান বলেন, খবর পেয়ে ওই বস্তু দুটি উদ্ধার করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক মূল ঘটনা জানা গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

ময়মনসিংহে ৪২৬ বছর আগের প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্রের সন্ধান

ময়মনসিংহে ৪২৬ বছর আগের প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্রের সন্ধান

ময়মনসিংহ সংবাদদাতা:

ময়মনসিংহ নগরীর মৃত্যুঞ্জয় স্কুল এলাকায় ১৬৯৯ সালে নির্মিত একটি প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্র পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। সম্প্রতি পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটি, ময়মনসিংহ অঞ্চল-এর একটি প্রতিনিধি দল মুদ্রণযন্ত্রটি পরিদর্শন করেন এবং দ্রুত সংরক্ষণের জন্য প্রশাসনের কাছে আবেদন করার ঘোষণা দেন। ১৫ শতকের মাঝামাঝি ইউরোপে মুদ্রণ শিল্পের সূচনা হয়। ১৪৫০ সালে জার্মান উদ্ভাবক জোহানেস গুটেনবার্গ ধাতব চলনশীল অক্ষর ব্যবহার করে মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কার করলে এর ব্যাপক প্রসার ঘটে। ভারতীয় উপমহাদেশে ১৫৫৬ সালে গোয়ায় পর্তুগিজরা প্রথম ছাপাখানা স্থাপন করে। ধীরে ধীরে এ প্রযুক্তি ছড়িয়ে পড়ে এবং মুদ্রণ শিল্পের বিকাশে প্রভাব ফেলে প্রাচীন নগরী ময়মনসিংহেও।

প্রাচীন এই মুদ্রণযন্ত্রটি বর্তমানে রাস্তার পাশে অবহেলায় পড়ে আছে। অনেক মূল্যবান অংশ ইতোমধ্যেই চুরি হয়ে গেছে, বিশেষ করে মাদকসেবীদের হাতে। কে বা কারা এটি এখানে রেখেছে সে সম্পর্কে কোনো তথ্য মেলেনি। পুরাকীর্তি সুরক্ষা কমিটির সদস্য সচিব ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, যদি মুদ্রণযন্ত্রটি সংরক্ষণ করে প্রদর্শন করা হতো, প্রজন্ম জানতে পারতো প্রাচীন মুদ্রণ কৌশল ও ময়মনসিংহে মুদ্রণ শিল্পের শুরুর ইতিহাস। কিন্তু অবহেলায় পড়ে থাকায় ইতিহাস থেকে প্রজন্ম বঞ্চিত হচ্ছেন। সভাপতিমণ্ডলী সদস্য অধ্যাপক স্বপন ধর বলেন, এভাবে অবহেলায় থাকলে ভবিষ্যতে কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। ময়মনসিংহে অনেক পুরাকীর্তি অবহেলায় ধ্বংসের পথে।

প্রাচীন মুদ্রণযন্ত্রসহ ময়মনসিংহের অন্যান্য পুরাকীর্তি সংরক্ষণের জন্য প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে আলোচনা করে জাদুঘরে স্থানান্তরের দাবি জানিয়েছে কমিটি। পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, অধ্যাপক স্বপন ধর, আব্দুল কাদের চৌধুরী, কবি সরকার আজিজ, গোলাম ফারুক লিটন, মো. নুর আলী চিশতি, ইমতিয়াজ আহমেদ, কবি আফতাব আহমেদ মাহবুব, মোহাম্মদ মাসুদ চিশতি, সাংবাদিক শফিয়েল আলম সুমন, সাংবাদিক বোরহান উদ্দিন আল মাছুম, মো. এনামুল কবীর, নিহার রঞ্জন দাস প্রমুখ।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম