
পটুয়াখালী সংবাদদাতা:
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার তেতুলিয়া নদীতে অভিযান চালিয়ে একটি অবৈধ ট্রলডোরযুক্ত কাঠের মাছ ধরার ট্রলারসহ প্রায় ৩৩ লাখ টাকার সামুদ্রিক মাছ ও জাল জব্দ করেছে প্রশাসন। গত ৫ আগস্ট মঙ্গলবার রাত ৯টা ১০ মিনিটে চরবিশ্বাস ইউনিয়নের ১ নম্বর সুইজ সংলগ্ন তেতুলিয়া নদীতে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ অভিযান পরিচালনা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী। সহায়তা করেন রাঙ্গাবালী উপজেলার মেরিন অফিসার এবং চর মোন্তাজ নৌ পুলিশ ফাঁড়ির সদস্যরা।
অভিযানে “এফবি মায়ের আর্শিবাদ-০৩” নামের একটি যান্ত্রিক কাঠের ট্রলার আটক করা হয়, যার রেজিস্ট্রেশন নম্বর এম-এফ ১০৫১৯। ট্রলারটিতে ৪১৭ হর্সপাওয়ারের ইঞ্জিন, ৬টি ট্রলনেট, ৪০ পিস সুতার জাল, প্রায় ১২০ ক্যারেট চিংড়ি, লইট্টা, ছুড়িসহ বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছ এবং ৫ ব্যারেল ডিজেল পাওয়া যায়। আটককৃতরা বৈধ কাগজপত্র দেখাতে ব্যর্থ হন এবং জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেন যে তারা ট্রলডোর ব্যবহার করে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছিলেন।
গলাচিপা উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. জহিরুন্নবী বলেন, “গোপন সংবাদের ভিত্তিতে আমরা অভিযান চালিয়ে ট্রলডোরযুক্ত একটি অবৈধ বোট আটক করেছি। এই ধরনের ট্রলার দিয়ে গভীর সমুদ্রে অবৈধ উপায়ে মাছ শিকার করা হয়, যা সামুদ্রিক জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। আইন অনুযায়ী আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি এবং এই ধরনের অভিযান নিয়মিতভাবে চলবে।”
তিনি আরও জানান, অভিযানে জব্দকৃত মালামালের বাজারমূল্য আনুমানিক ৩৩ লাখ টাকা এবং ১৫ জনকে বিবাদী করে গলাচিপা থানায় একটি নিয়মিত মামলা দায়ের করা হয়েছে, সামুদ্রিক মৎস্য আইন, ২০২০-এর ২৮/৫১ ধারা অনুযায়ী। গলাচিপা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আশাদুর রহমান বলেন, “অবৈধ ট্রলনেট ব্যবহার করে গভীর সমুদ্রে মাছ শিকার করাটা আইনগতভাবে দণ্ডনীয় অপরাধ। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।”
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন এএসআই রিপন খন্দকার, কনস্টেবল গোবিন্দ কর এবং স্থানীয় স্বাক্ষী মো. রাজা। স্থানীয় প্রশাসন জানিয়েছে, অবৈধ মাছ শিকার রোধে এ ধরনের অভিযান ভবিষ্যতেও নিয়মিতভাবে চলবে।