ছোট কাপড় পরা মডেলদের শাসালেন হিন্দু শক্তি সংগঠন 

ছোট কাপড় পরা মডেলদের শাসালেন হিন্দু শক্তি সংগঠন 

বিনোদন ডেস্ক:

ভারতের উত্তরাখণ্ডে ‘মিস ঋষিকেশ’ সুন্দরী প্রতিযোগিতার রিহার্সেলের সময় ছোট পোশাক পরিধান করার কারণে মডেলদের সাথে বাদানুবাদে জড়িয়েছে হিন্দু শক্তি সংগঠন নামে একটি কট্টরপন্থী হিন্দু গোষ্ঠীর কর্মীরা।

শুক্রবার (৩ অক্টোবর) উত্তরাখণ্ডের দেহরাদুনের একটি হোটেলে এই ঘটনা ঘটে। এক প্রতিবেদনে এ তথ্য প্রকাশ করেছে এনডিটিভি। প্রতিবেদনে বলা হয়, লায়ন্স ক্লাব ঋষিকেশের আয়োজনে ওই হোটেলে যখন রিহার্সেল চলছিল, তখন হিন্দু শক্তি সংগঠনের সদস্যরা সেখানে প্রবেশ করে। সংগঠনের রাজ্য প্রেসিডেন্ট রাঘবেন্দ্র ভাটনাগরের নেতৃত্বে তারা মডেলদের সঙ্গে তর্ক শুরু করেন।

সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিওতে দেখা যায়, রাঘবেন্দ্র ভাটনগর পশ্চিমা পোশাক পরার কারণে মডেলদের কড়া সমালোচনা করছেন। ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা যায়, মডেলিং শেষ হয়ে গেছে। এখন বাড়িতে চলে যান। ঋষিকেশের সংস্কৃতিকে নষ্ট করবেন না। এটি আমাদের সংস্কৃতি নয়। উত্তরে একজন মডেল রাঘবেন্দ্রের সঙ্গে তীব্র তর্কে জড়িয়ে পড়েন। ওই মডেল বলেন, পোশাক নিয়ে আমাদের কিছু বলার আগে দোকানগুলোতে আগে ছোট পোশাক বিক্রি বন্ধ করুন।

রাঘবেন্দ্র যখন বলেন, আমাকে কিছু বলবেন না, তখন মডেলটি পাল্টা জবাব দেন, তাহলে আপনিও আমাদের কিছু বলবেন না। আমরা যা করছি তা করতে দিন। রাঘবেন্দ্র তখন ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, বাড়িতে আপনারা যা খুশি তাই করতে পারেন। এর জবাবে ওই নারী মডেল রেগে গিয়ে বলেন, আপনি আমাদের বলার কে?

পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হলে রাঘবেন্দ্র ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, ঠিক আছে আপনার এখানে থাকতে পারেন। কিন্তু আমি শো বন্ধ করে দেবো। আপনার উত্তরাখণ্ডের সংস্কৃতিকে ধ্বংস করছেন।

এই বিতর্কের সময় লায়ন্স ক্লাব ঋষিকেশের সভাপতি পঙ্কজ চন্দনি মডেলদের পক্ষ নিয়ে তাদের সমর্থন জানান। তিনি বলেন, মডেলরা সবাই প্রাপ্তবয়স্ক এবং তারা নিজেদের খুশি অনুযায়ী যা ইচ্ছে তা পরতে পারে।

এদিকে, পুলিশ জানিয়েছে যে এই ঘটনায় তারা এখন পর্যন্ত কোনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ পায়নি।

উল্লেখ্য, হিন্দু শক্তি সংগঠনের নেতাদের বাধা সত্ত্বেও, ‘ঋষিকেশ সুন্দরী প্রতিযোগিতা’ নির্ধারিত সময় অনুযায়ী শনিবার অনুষ্ঠিত হয়েছে।

তিন মাস রেকি করে মৌচাকের শম্পা জুয়েলার্সে চুরি

ডেস্ক রির্পোর :

রাজধানীর মৌচাক ফরচুন শপিং কমপ্লেক্সে চুরির আগে তিন মাসে ৩১ বার রেকি করে চক্রটি। সর্বশেষ তারা শম্পা জুয়েলার্সকে টার্গেট করে চুরির পরিকল্পনা সাজায়। চক্রের প্রধান শাহিন মাতাব্বর ওরফে সাহিদ ও শৈশব রায় ওরফে সুমন বোরকা পরে এক ঘণ্টা ধরে চুরি করে। চক্রের চার সদস্যকে গ্রেপ্তারের পর এসব তথ্য জানিয়েছে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি)। মার্কেটের দোতলায় স্বর্ণের দোকানটিতে ৮ অক্টোবর রাতে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে।

গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম, বরিশালের উজিরপুর, নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ ও ঢাকার শাঁখারী বাজার থেকে ওই চুরির ঘটনায় জড়িত সন্দেহে চারজনকে গ্রেপ্তার করে ডিবি লালবাগ বিভাগ। এ ঘটনায় রমনা থানায় মামলা হয়। গ্রেপ্তাররা হলো– চক্রের প্রধান শাহিন মাতাব্বর ওরফে সাহিদ, শৈশবের স্ত্রী অনিতা রায়, নূরুল ইসলাম ওরফে নূর উদ্দিন ও উত্তম চন্দ্র সুর ওরফে কানা উত্তম। তাদের কাছ থেকে ১৯০ ভরি স্বর্ণ, ৯৩.৫ গ্রাম রুপা, এক লাখ ৭৭ হাজার ২০০ টাকা ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে।

গতকাল শুক্রবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করে ডিবি। এতে ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (গোয়েন্দা) শফিকুল ইসলাম বলেন, চক্রটি তিন মাস আগে থেকে ওই দোকানে চুরির পরিকল্পনায় রেকি শুরু করে। ঘটনার দিন তাদের এক সদস্য মার্কেটের বাথরুমের জানালায় শক্ত সুতা ঝুলিয়ে রেখে আসে। পরে রাতে সুতায় দড়ি বেঁধে তারা ওপরে ওঠে। সেখানে ঝুলে জানালার গ্রিল কেটে মার্কেটের ভেতরে প্রবেশ করে দুজন।

ঢাকা মহানগর ডিবিপ্রধান শফিকুল ইসলাম বলেন, চুরির উদ্দেশ্যে মার্কেটে হাতুড়ি, শাবল, বোরকা, দড়িসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম আগে থেকেই লুকিয়ে রাখে তারা। বাথরুমের জানালার গ্রিলে সুতার মাধ্যমে ইউলুপ তৈরি মাটি পর্যন্ত নামিয়ে বেঁধে রাখে। ঘটনার দিন রাতে আসামিরা গণপূর্ত কোয়ার্টারের ভেতর দিয়ে মার্কেটের পেছনে পৌঁছে। সুতার সঙ্গে দড়ি বেঁধে তারা ওপরে উঠে গ্রিল কেটে ভেতরে প্রবেশ করে। শম্পা জুয়েলার্সে চুরি করে বের হওয়ার সময় তাদের ব্যবহৃত বোরকা ও বাকি সরঞ্জাম গণপূর্ত কোয়ার্টারের সেপটিক ট্যাঙ্কে ফেলে যায়।
তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, চক্রটি তিনটি গ্রুপে শম্পা জুয়েলার্সে কাজ করে। চক্রের হোতা শাহিন ও শৈশব। তারাই রেকির পর পরিকল্পনাসহ চুরি করে। এ কাজে তাদের আনা-নেওয়া করে নূর উদ্দিন। আর তাদের সব খরচ বহন করে কানা উত্তম। ভাগের ক্ষেত্রেও মোটরসাইকেল চালক নূর উদ্দিনকে প্রায় পাঁচ ভরি এবং কানা উত্তমকে প্রায় ৪০০ গ্রাম স্বর্ণ দেয় চক্রটি। বাকি স্বর্ণ তারা নিজেদের মধ্যে ভাগ করে নেন।

অতিরিক্ত কমিশনার শফিকুল ইসলাম বলেন, চক্রটি এর আগেও ২০২১ সালে চট্টগ্রামের কর্ণফুলী মার্কেটে স্বর্ণ চুরির ঘটনায় জড়িত ছিল। সেই ঘটনায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে এসে আবার একই অপরাধে জড়িয়েছে। দোকান মালিকের দাবি, ৫০০ ভরি স্বর্ণ চুরি হয়েছে। উদ্ধার হয়েছে ১৯০ ভরি। বাকি স্বর্ণ কোথায় আছে– জানতে তদন্ত চলছে। একজন আসামি এখনও পলাতক। তাকে গ্রেপ্তার করতে পারলে বাকি স্বর্ণের অবস্থান জানা যাবে।
মামলার তদন্ত সূত্রে জানা যায়, আসামিদের আদালতে তোলা হলে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন বিচারক। আগামীকাল রোববার চুরির ঘটনায় জড়িত আসামিদের রিমান্ড শুনানি হবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম