বাড্ডার জনপ্রিয় যুবলীগ নেতা কায়সারকে বিতর্কিত করার পাঁয়তারা

স্টাফ রিপোর্টার:
২০১৩ সালের ২৯ জুলাই ঢাকা দক্ষিণ যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মিল্কীকে হত্যার আগেই খুনি চঞ্চল গ্রুপ টার্গেট করেছিল বাড্ডা যুবলীগের ত্যাগী নেতা কায়সার মাহমুদকে। বাড্ডায় প্রকাশ্য দিবালোকে চঞ্চলের সহযোগী ১০/১২ জন অস্ত্রধারী চারদিক থেকে কায়সারকে ঘিরে এ্যামবুশ করে, গুলি চালায় বৃষ্টির মতো। কাধে, গলায়, পিঠে, বুকে বেশ কয়েকটি বুলেটবিদ্ধ অবস্থায় কায়সার ছটফট করতে থাকেন। মানুষজন ছুটে গিয়ে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। সঙ্কটাপন্ন অবস্থায় দীর্ঘ চিকিৎসায় প্রাণে বেঁচে যাওয়া কায়সার মাহমুদ আর ঘরে ফিরে যাননি। সংগঠনের জন্য নিজের জীবনকে উৎস্বর্গ করার ঘোষণা দিয়ে সন্ত্রাস, নৈরাজ্য আর খুনোখুনির বিরুদ্ধে রীতিমত যুদ্ধে নামেন তিনি। বাড্ডায় যুবলীগকে গড়ে তোলেন অপরাধ বিরোধী মানসিকতায়। ২০০৫ সালে বাড্ডায় ২১ নং ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি নর্বাচিত হন কায়সার মাহমুদ। চমৎকার সাংগঠনিক যোগ্যতা, দক্ষতা আর তৎপরতার মাধ্যমে ঢাকা মহানগর তথা কেন্দ্রীয় যুবলীগ নেতৃত্বেরও দৃষ্টি কাড়েন তিনি। ফলশ্রুতিতে ২০১২ সালে বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক হিসেবে দায়িত্ব প্রদানের পর থেকে প্রায় এক যুগের অপ্রতিদ্বন্দ্বী নেতৃত্ব চলছে কায়সারের।
কায়সার মাহমুদের ভাষায়, এ দীর্ঘ সময়ে কেন্দ্রীয় যুবলীগের সভাপতি শেখ ফজলে শামস পরশ ও সাধারণ সম্পাদক মইনুল হোসেন নিখিলের আদেশ, নির্দেশ, ব্যক্তিত্ব, সাংগঠনিক তৎপরতাকে অনুসরণ করে বাড্ডা থানা যুবলীগ আমূল বদলেছে। সাংগঠনিক ভাবেই আলাদা মডেলে পরিনত হয়েছে বাড্ডার যুবলীগ। এখানকার থানা, ওয়ার্ড এমনকি ইউনিট কমিটিগুলোকেও সামাজিক কর্মকান্ডে সম্পৃক্ত করা সম্ভব হয়েছে। সাংগঠনিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি যুবলীগ নেতৃত্ব এখন স্থানীয় পর্যায়ের নানা ভালো কাজে অংশগ্রহণ করে গৌরববোধ করে।
২০১২ সালে বাড্ডা থানা যুবলীগের আহবায়ক হওয়ার পর থেকেই কায়সার সেখানে বিএনপি জামায়াতের সরব রাজনীতিকে কোনঠাসা করার ক্ষেত্রে আপোসহীন ভূমিকা পালন করে আসছেন। বিগত প্রায় এক যুগেও বাড্ডায় যুবলীগের সক্রিয় তৎপরতার কারণে বাড্ডায় বিএনপি জামায়াত সাংগঠনিক ভাবে ন্যূনতম ভূমিকা পালনের সুযোগ পায়নি বললেই চলে। সর্বশেষ বিএনপির ঢাকা সমাবেশের প্রাক্কালেও কায়সার মাহমুদের নেতৃত্বে প্রগতি সরণী জুড়ে থাকা বিশাল আকারের মিছিল ও অবস্থান প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক শিবিরে কাঁপন ধরিয়ে দেয়।
এসব কারণে বারবারই কায়সার মাহমুদ রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার হয়েছেন। বিশেষ করে বিএনপি জামায়াত থেকে ক্ষমতাসীন দলে অনুপ্রবেশকারী চক্রটি কায়সার মাহমুদের সাংগঠনিক তৎপরতা থামিয়ে দেয়ার নানা ফন্দি এঁটেছে। কিন্তু কোনকিছুই ধোপে টেকেনি। এবার ভিন্ন কৌশলে মাঠে নেমেছে কায়সার বিরোধীরা। আজীবন সন্ত্রাস অরাজকতা বিরোধী বলিষ্ঠ নেতা কায়সারকেই উল্টো সন্ত্রাসী আখ্যা দিতে মরিয়া হয়ে উঠেছে চক্রটি। যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জীবনবাজি রেখে প্রতিবাদ করেছে, টানা লড়াই চালিয়েছে তাকেই ‘অবৈধ অস্ত্রবাজ সন্ত্রাসী গ্রুপের হোতা’ হিসেবে অপপ্রচারের পাঁয়তায়ও চালাচ্ছে তারা।
আসন্ন বাড্ডা থানা আওয়ামীলীগের কমিটি গঠনকে সামনে রেখেই কায়সার মাহমুদকে বিতর্কিত করার অন্যরকম কুটকৌশল চলছে বাড্ডায়। থানা আওয়ামীলীগের সম্ভাব্য সাধারন সম্পাদক পদের জন্য কায়সার মাহমুদ যখন আলোচনায় তুঙ্গে রয়েছেন তখনই তার ললাটে অভিযোগের তকমা লাগিয়ে দেয়ার অপচেষ্টায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। বাড্ডায় আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতা কর্মিদের কাছে যথেষ্ঠ জনপ্রিয় ও আস্থার প্রতীক হিসেবে কায়সারের শক্ত অবস্থান রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে আসন্ন কমিটিতে সাধারণ সম্পাদক পদে ফারুক মিলনের নামও আলোচনায় থাকার কথা জানিয়েছেন নেতা কর্মিরা। অপরদিকে সভাপতি পদের ব্যাপারে আলাপ আলোচনায় রয়েছে হাবিবুর রহমান সাচ্চা ও বাড্ডা থানা আওয়ামীলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলমের নাম। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষণা দিয়েছেন, কোনো ওয়ার্ড কাউন্সিলরই দলের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক হতে পারবেন না। এ নির্দেশনা বহাল থাকলে বাড্ডায় শক্তিশালী কমিটি গঠনের সম্ভাবনা আছে বলেও জানিয়েছেন নেতা কর্মিরা।

দেড়শ কোটি টাকা ছয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ভাগাভাগি

স্টাফ রিপোর্টার॥

চলতি অর্থবছরে গবেষণা বাবদ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়কে ১৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার। নিয়মানুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) এ টাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়কে বরাদ্দ দেয় ২০২২-২০২৩ অর্থবছরে গবেষণা বাবদ খরচের জন্য।

এসব বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কাছ থেকে পাওয়া সুনির্দিষ্ট গবেষণা প্রস্তাবের বিপরীতে এ টাকা খরচ করার বিধান থাকলেও এসব বিশ্ববিদ্যালয় তা মানেনি। তারা খুশি মতো খরচ করেছে এ টাকা। কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই শুধু শুধু ঢালাওভাবে বেতনের সঙ্গে এ টাকা শিক্ষকদের বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। যা সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির পর্যালোচনায় ধরা পড়েছে। তবে এখনও সেই টাকা ফেরত আনতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন।

ইউজিসি ও সংসদীয় কমিটি সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির এক সভায় দেড়শ’ কোটি টাকার গবেষণা তহবিল ‘তসরুফ’ নিয়ে আলোচনা হয়। উঠে আসে সংশ্লিষ্ট ৬ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণার জন্য বরাদ্দ টাকা খরচে অনিয়মের বিষয়টি। নিয়মবহির্ভূতভাবে টাকা খরচ করায় ওই টাকা ফেরত আনতে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনকে নির্দেশনা দিয়ে চিঠি দেয় সংসদীয় কমিটি। নির্দেশনা মোতাবেক ওই ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণায় বরাদ্দ দেওয়া টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দেয় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন। কিন্তু শিক্ষকরা টাকা দিতে রাজি নন।

ইউজিসি জানিয়েছে, এ পর্যন্ত কোনো বিশ্ববিদ্যালয় বা কোনো শিক্ষক ওই টাকা ফেরত দেননি। উল্টো বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে নিন্দা জানানো হয়েছে এ টাকা ফেরত চাওয়ায়।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বলেন, আগে বিশ্ববিদ্যালয়ে গবেষণার জন্য ৬০ কোটি টাকা বরাদ্দ ছিল। সরকারের উচ্চ পর্যায়ে আলোচনা করে তা বৃদ্ধি করে গত অর্থবছরে (২০২১-২০২২) ১২০ কোটি টাকা ও চলতি অর্থবছরে (২০২২-২০২৩) ১৫০ কোটি টাকা করা হয়েছে। কিন্তু সে টাকা নিয়ম না মেনে ঢালাওভাবে সব শিক্ষকের বেতনের সঙ্গে ৫ হাজার টাকা করে বিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়ে মঞ্জুরি কমিশনের সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

ইউজিসি বলছে, এ বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা না থাকলেও শিক্ষকদের বেতনের সঙ্গে পাঁচ হাজার করে টাকা দিয়েছে। যা গবেষণায় বরাদ্দ অর্থ খরচের বিধানপরিপন্থী। গবেষণার বরাদ্দ থেকে নেওয়া টাকা ফেরত দিতে চাচ্ছেন না শিক্ষকরা। টাকা ফেরত চেয়ে মঞ্জুরি কমিশন চিঠি দেওয়ায় নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়েছে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে। টাকা ফেরত চাওয়ার বিষয়টি অপ্রাসঙ্গিক দাবি করে নিন্দা জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি।

স্থায়ী কমিটির সভায় উঠে এসেছে যে, গবেষণা প্রস্তাব না থাকলেও বিধিবহির্ভূতভাবে বেতনের সঙ্গে সব শিক্ষককে পাঁচ হাজার করে টাকা দিয়েছে এই ছয়টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়।

জানা গেছে, গত ২৮ অক্টোবর অনুষ্ঠিত সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং মওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের কোনো ধরনের গবেষণা ছাড়াই গবেষণা বাবদ শুধু শুধুই বিলানো টাকা ফেরত নেওয়ার সুপারিশ করে। এরপর এ ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়কে টাকা ফেরত দেয়ার চিঠি পাঠায় ইউজিসি। এ ছয়টির মধ্যে শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮৮ লাখ ৪১ হাজার টাকা শিক্ষকদের বিলিয়েছে।

ওই ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ে পাঠানো ইউজিসির চিঠিতে বলা হয়, সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা ছাড়া এভাবে বরাদ্দ দেওয়ার বিধান না থাকায় সরকার ওই টাকা ফেরত চাইছে।

 

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম