অভিযুক্তকে অধ্যক্ষ করার পাঁয়তারা চলছে ভিকারুননিসায়

স্টাফ রিপোর্টার॥
অধ্যক্ষকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করায় নতুন খেলা জমে উঠেছে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে। আইন অনুযায়ী, শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে অধ্যক্ষ নিয়োগের আগ পর্যন্ত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু সেটি না মেনে গভর্নিং বডির কয়েকজন সদস্য অপেক্ষাকৃত জুনিয়র একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করতে মরিয়া। মঙ্গলবার গভীর রাত পর্যন্ত এ নিয়ে তারা ক্যাম্পাসে গোপন বৈঠক করেছেন বলেও সূত্র জানিয়েছে।

সূত্র জানিয়েছে, অধ্যক্ষ ওএসডি হওয়ায় সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ও যোগ্যতাসম্পন্ন একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হিসেবে নিয়োগ দেবেন গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান। সে ক্ষেত্রে জ্যেষ্ঠতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক হাসিনা বেগমের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হওয়ার কথা। কিন্তু গভর্নিং বডির চারজন সদস্য বাণিজ্য বিভাগের শিক্ষক কেকা রায় চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করতে মরিয়া হয়ে উঠেছেন।

সদস্যরা হলেন কলেজ শাখার শিক্ষক প্রতিনিধি ড. ফারহানা খানম, অভিভাবকদের মধ্যে প্রাথমিক শাখার গোলাম বেনজীর, স্কুল শাখার আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া (পুলক) ও সংরক্ষিত মহিলা আসনের মৌসুমী খান। কিন্তু কেকা রায়ের বিরুদ্ধে এর আগে দুদিনের জন্য ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ হয়ে ৪৪৩ জন শিক্ষার্থীকে অবৈধভাবে ভর্তির অভিযোগ রয়েছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে গভর্নিং বডির একজন সদস্য জানান, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ কামরুন নাহারকে ওএসডি করা হয়েছে। এখন প্রক্রিয়া করে অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া পর্যন্ত জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগ দেওয়া হবে। আমরা এ বিষয়ে গভর্নিং বডির সভাপতিকে অবহিত করেছি। কিন্তু আগের অধ্যক্ষের সকল অপকর্মের সঙ্গী গভর্নিং বডির কয়েকজন সদস্য জুনিয়র একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করতে তড়িঘড়ি শুরু করেন। তারা রাত ১টা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে গোপনে বৈঠক করেছেন। সেখানে তারা কেকা রায় চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করার যথেষ্ট চেষ্টা চালিয়েছেন। কিন্তু অভিভাবকদের প্রতিরোধের মুখে সেটি সম্ভব হয়নি। তবে তারা এখনো চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন।এদিকে, ভর্তি বাণিজ্যে অভিযুক্ত একজনকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের পাঁয়তারা চলছে, এমন খবরে আজ বুধবার সকালে ক্যাম্পাসে অবস্থান নেন অভিভাবকরা। দুই শতাধিক অভিভাবক এতে অংশ নেন। তাদের দাবি, কেকা রায় চৌধুরীকে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ করা হলে আবারও ভর্তি বাণিজ্যসহ প্রশাসনিক দুর্নীতি মাথাচাড়া দিয়ে উঠবে। সে কারণে তারা একজন জ্যেষ্ঠ ও যোগ্য শিক্ষককে প্রতিষ্ঠান পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। একই সঙ্গে গভর্নিং বডির সদস্যদের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নিয়োগের পাঁয়তারার প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

চারজন মিলে বৈঠক করেছেন কিনা জানতে চাইলে কোনো উত্তর দেননি কলেজ শাখার শিক্ষক প্রতিনিধি ড. ফারহানা খানম। তিনি বলেন, আমাকে প্লিজ এসব বিষয়ে জড়াবেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিভাবক প্রতিনিধি গোলাম বেনজীর ও আনোয়ারুল কবির ভূঁইয়া পুলককে জিজ্ঞাসা করুন। গভর্নিং বডির চেয়ারম্যানের কাছে জানতে চান।

এ বিষয়ে জানতে ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও ঢাকার বিভাগীয় কমিশনার খলিলুর রহমানের মুঠোফোনে কল করা হলে তিনি রিসিভ করেননি।

বরিশালে অফিস সহকারির পাঁচ তলা ভবন, ব্যাংকে জমা কোটি টাকা

 

স্টাফ রিপোর্টারঃ

নেছারাবাদ পরিবার পরিকল্পনা কার্যালয়ের অফিস সহকারি অামিনুল ইসলামের বরিশালে পাঁচতলা বাড়ি ও তার ব্যাংকের বেতন হিসাবে কোটি টাকার বেশি জমা রয়েছে।

পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের পরিচালক(প্রশাসন) বরাবর এই অফিস সহকারির অনিয়ম দূর্নীতির লিখিত অভিযোগ তদন্তে গেলে বেরিয়ে আসে থলের বিড়াল।

বরিশালের শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজের পিছনে আমতলা মোড় সংলগ্ন ওসমান সড়কের বিলাসবহুল পাঁচতলা ভবন তালুকদার ভিলার মালিক তিনি, ২০১১-২০১৬সাল পর্যন্ত সোনালি ব্যাংকে তার পরিচালিত হিসাব নম্বর ১০০০১১১৫৫ এ এক কোটি ছয় হাজার সাত শত একাশি টাকা জমা।

অত্র অধিদপ্তরের অতিরিক্ত সচিব ও পরিচালক প্রশাসন খান মোঃ রেজাউল স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে জানা গেছে, একই কার্যালয়ের সহকারি পঃপঃ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির এই অফিস সহকারির সহায়তায় জাল স্মারকের মাধ্যমে জাল প্রজ্ঞাপন তৈরী করে নেছারাবাদ উপজেলা হিসাব রক্ষণ অফিসে দাখিল করায় তাকে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়।

দীর্ঘ ২২ বছর ধরে একই অফিসে কর্মরত অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম দুলালের ব্যাপারে সোহাগদল এফডব্লিউসি’র স্যাকমো মাহফুজা বলেন, প্রতিষ্ঠান পরিচালনার জন্য কোন খরচ দেওয়া হয়না। ২০১১ থেকে ১৬ সাল পর্যন্ত আমাদের বেতনের একটা অংশ আমিনুল ইসলাম আত্নস্যাত করেছিল যা সোনালী ব্যাংকের তৎকালিন ম্যানেজার তার বেতন হিসাবে অত্যাধিক টাকা লেনদেন  দেখে তদন্তে আসলে বেরিয়ে আসে। সে ঘটনায় দুলাল দোষ স্বীকার করে আমাদের টাকা ফেরত দিয়েছিল। শ্রান্তী ভাতার টাকা তুলে তাকে দুই হাজার টাকা দিতে হয়।

সুটিয়াকাঠী এফডব্লিউসি’র  এফডব্লিউভি শিরিন সুলতানা বলেন, আমাদের যত ভাউচার বিল রয়েছে তার সব বিলের শতকরা ত্রিশ ভাগ দুলালকে দিয়ে আসি একাউন্সসহ অন্যান্য অফিসারদের যেটা দেওয়া দরকার সে দেয়।

মাঠকর্মীদের টাকা আত্নস্যাতের বিষয়ে তৎকালিন অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার অাবু বকর অাকন বলেন, ওই সময় দুলাল কর্মীদের বেতনের টাকার খুচরা অংশ আত্নস্যাৎ করেছিল যা সে স্বীকার করে রিফান্ড করায় প্রাথমিক ভাবে তাকে ক্ষমা করা হয়েছিল।

অভিযুক্ত অফিস সহকারী আমিনুল ইসলাম দুলাল সব অভিযোগ অস্বীকার করেন। চাকরির বাহিরে কোন ব্যবসা নেই উল্লেখ করে ব্যাংক হিসাবের লেনদেন তার নয় এবং বরিশালের আমতলা মোড় সংলগ্ন ওসমান সড়কের বিলাসবহুল ভবন তালুকদার ভিলার মালিক হওয়া সত্বেও তিনি সে ব্যপারে বলা জাবেনা বলে জানান।

২৪ মে ২০২২ তারিখ দূর্নীতি দমন কমিশন(দুদক) এর বরাত দিয়ে এফপি, পিরোজপুর মোঃ শহীদুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে আমিনুল ইসলাম দুলালকে ৩০মে ২০২২ উপস্থিত থাকতে বলা হয়। দুদকে দাখিলকৃত অভিযোগপত্রে স্বাক্ষদানকারী ব্যক্তিরা স্বাক্ষও প্রদান করেন বলে জানা গেছে কিন্তু আজো আলোর মুখ দেখতে পায়নি সে তদন্ত প্রতিবেদন। এ বিষয়ে দুলালের সাথে বারবার যোগাযোগ করার পরেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি এমনকি ক্ষুদে বার্তার জবাব দেননি।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম