তারিখ লোড হচ্ছে...

টাকা আত্মসাৎই ছিল ধামাকার উদ্দেশ্য: র‌্যাব

নিজস্ব প্রতিবেদক॥

র‌্যাবের হাতে গ্রেপ্তার ধামাকা শপিং ডটকম- এর মূল উদ্দেশ্য ছিল ‘হোল্ড মানি প্রসেস প্ল্যান’ অর্থ্যাৎ গ্রাহক ও সরবরাহকারীর টাকা আটকে রেখে তা সরিয়ে ফেলা। এজন্য তারা বিশাল অফার, ছাড়ের ছড়াছড়িসহ নানাভাবে সাধারণ ক্রেতাদের প্রলুব্ধ করত। এভাবে দ্রুতই প্রতিষ্ঠানটির ক্রেতা বৃদ্ধি পায়।

র‌্যাব বলছে, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানিয়েছেন আর্থিক সংকটের কারণে গত কয়েক মাস ধরে প্রতিষ্ঠানের অফিস ও ডিপো ভাড়া বকেয়া রয়েছে। পাশাপাশি জুন ২০২১ থেকে কর্মচারীদের বেতন বকেয়া রয়েছে। চলতি বছরের গত এপ্রিল থেকে ধামাকা শপিং ডটকম অর্থ অন্যত্র সরিয়ে ফেলার কারণে জুলাই হতে সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে।

এর আগে বুধবার ভোরে র‌্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা ও র‌্যাব-২ এর অভিযানে রাজধানীর তেজগাঁও এলাকা থেকে ধামাকার সিরাজুল ইসলাম রানা, ইমতিয়াজ হাসান সবুজ ও ইব্রাহিম স্বপন গ্রেপ্তার হয়। একজন ভুক্তভোগীর মামলায় তাদের গ্রেপ্তার দেখানো হবে।

ধামাকা শপিং ডটকম- এর ব্যবসায়িক অবকাঠামো সম্পর্কে র‌্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন বলেন, মহাখালীতে তাদের প্রধান কার্যালয় এবং তেজগাঁও বটতলা মোড়ে একটি ডেলিভারি হাব রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির প্রায় ৬০০টি ব্যবসায়িক চেইন রয়েছে। এরমধ্যে নামিদামি প্রতিষ্ঠানের নামও উঠে এসেছে।

ধামাকা শপিং ডট কম ছাড়াও তাদের আরও কয়েকটি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যেমন, ইনভেরিয়েন্ট টেলিকম বাংলাদেশ লিমিটেড, মাইক্রোট্রেড ফুড এবং বেভারেজ লিমিটেড এবং মাইক্রোট্রেড আইসিক্স লিমিটেড ইত্যাদি। মূলত প্রতিষ্ঠানটির মূল উদ্দেশ্য তৈরিকারক ও গ্রাহক চেইন বা নেটওয়ার্ক থেকে বিপুল অর্থ হাতিয়ে নেওয়া।

কমান্ডার মঈন বলেন, ধামাকা শপিং ডট কম গ্রাহক সংখ্যা ৩ লক্ষাধিক। মোবাইল, টিভি, ফ্রিজ, মোটরবাইক, গৃহস্থলীপণ্য ও ফার্নিচারসহ বিভিন্ন অফারে বিক্রি করা হতো। ধামাকা শপিং ডট কম -এর বিভিন্ন লোভনীয় অফারগুলো হলো, সিগনেচার কার্ড ২০ থেকে ৩০ শতাংশ, ধামাকা নাইট এ ৫০শতাংশ পর্যন্ত, রেগুলার এ ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ছাড়। সিগনেচার কার্ড অফারটি গত মার্চ-এপ্রিল পর্যন্ত পরিচালনা করা হয়। মাত্র ২০ শতাংশ পণ্য সরবরাহ করে অর্থ সরিয়ে গ্রাহকদের চেক প্রদান করা হয়। অতঃপর ধীরে ধীরে সকল অর্থ সরিয়ে ফেলা হয়েছে।

প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ইনভেস্টমেন্ট ছিল না

জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা জানায়, ধামাকা শপিং ডট কম ব্যবসায়িক কর্মকাণ্ডে ইনভেনটরি জিরো মডেল এবং হোল্ড মানি প্রসেস প্লান ফলো করত। কয়েকটি দেশি-বিদেশী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের লোভনীয় অফারের আলোকে ধামাকা শপিং ডট কম ব্যবসায়িক স্ট্র্যাটেজি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির নিজস্ব ইনভেস্টমেন্ট ছিল না।

এতো দিন ধরে ট্রেড লাইসেন্স ছাড়া কীভাবে ব্যবসা করে আসছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত অক্টোবর থেকে তারা এগ্রেসিভ বিজনেসে যায়। ধামাকা খুব অল্প সময়েই মোটা অঙ্কের অর্থ সরিয়ে ফেলে। বাংলাদেশ ব্যাংক তাদের ১৪টি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করেছে। সিআইডির তদন্তে অস্বচ্ছতার বিষয়টি উঠে আসছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা পাবার পর থেকে নিয়মতান্ত্রিকভাবে কাজ করছে। যাদের বিরুদ্ধেই মামলা হচ্ছে, তারা যেই হোক তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।

ধামাকা একাউন্টে টাকা নেই

গ্রাহকের ৭৫০ কোটি টাকা লেনদেন হয়েছে। অথচ এখন ধামাকার অ্যাকাউন্টে মাত্র লাখ খানেক টাকা। বাকি টাকা কোথায় গেলো জানতে চাইলে কমান্ডার মঈন বলেন, ধামাকার ট্রেড লাইসেন্স নেই। সাধারণ গ্রাহকরা যে টাকা দিয়েছে তা গেছে ইনভেরিয়েন্ট টেলিকমের অ্যাকাউন্টে। ধামাকার আরও অনেক ব্যবসা রয়েছে। সেসব ব্যবসায় সেই টাকা স্থানান্তর করা হয়েছে। টাকা আসলে কোথায় গেলো তা মানি লন্ডারিং পর্যায়ে পড়েছে কিনা তা খুব শিগগিরই বেরিয়ে আসবে। মূলহোতা জসিম উদ্দিন চিশতির নিজস্ব সম্পদ রয়েছে আড়াই শ কোটি টাকার উপরে। সেখানেও ধামাকার গ্রাহকদের টাকা যেতে পারে।

ধামাকার প্রতারণার মূলহোতা জসিম উদ্দিন চিশতি কোথায় জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি পলাতক। আমরা জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারদের মাধ্যমে জেনেছি তিনি দেশের বাইরে রয়েছেন। তাকেসহ অন্যান্য আসামিদের খুঁজছি।

আরেক প্রশ্নের জবাবে কমান্ডার মঈন বলেন, হাজারের উপরে তাদের কর্মচারী রয়েছে। তারা কেউই গত জুন থেকে বেতন পাচ্ছেন না। ধামাকায় আসলে চাকরি করার সুযোগ নেই। তাদের ট্রেড লাইসেন্স নেই। গ্রেপ্তাররা ধামাকা শপিং ডট কমের ব্যবসায়িক কারসাজি সম্পর্কে সম্পূর্ণভাবে অবগত থেকে বিভিন্ন প্রতারণামূলক কার্যক্রমে সম্পৃক্ত থেকেছেন। এছাড়া তারা বিভিন্ন অপকৌশল প্রণয়নে প্রতিষ্ঠানকে পরামর্শ, সুপারিশসহ বিভিন্নভাবে সহায়তা প্রদান করছিল। তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

 

রাজউক দুদক মিলেই করছে অবৈধ ভবন নির্মাণের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত

রাজউক দুদক মিলেই করছে অবৈধ ভবন নির্মাণের চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত

ডেস্ক রিপোর্টঃ

রাজধানীর জিরো পয়েন্ট থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার দূরত্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মাতুয়াইল ইউটার্ন এর দক্ষিণ পাশে অবস্থিত তুষারধারা আবাসিক এলাকা । ২০১৫ সনে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে সিটিকর্পোরেশনের ৬৫নং ওয়ার্ডে উন্নীত হওয়ায় মধ্যবিত্তের জন্যে প্রাইম লোকেশন হয়ে উঠে এলাকাটি।

এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ডেভেলপার কোম্পানি মধ্যবিত্ত শ্রেণিকে নিরাপদ বাসস্থানের স্বপ্ন দেখিয়ে কোন নির্মাণ বিধি না মেনে রমরমা ফ্ল্যাট বাণিজ্য করছে। নিয়ম বহির্ভুত ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট বিক্রির নামে হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। আর এতে রাজউক, দুদক, সিটিকর্পোরেশন, ভোক্তা অধিকারসহ একাধিক সরকারি সংস্থার হাত আছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী রিহ্যাব সদস্য না হয়ে ফ্ল্যাট বেচাকেনা দন্ডনীয় হলেও সরকারি সংস্থাসমূহের ঘুষ গ্রহণের পর নিষ্ক্রিয়তার সুযোগে অবৈধ ভাবে ভবন নির্মাণের সুযোগ নিচ্ছে নাম সর্বস্ব ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানিসমূহ।

২০১৮ সন থেকেই তুষারধারা আবাসিক এলাকায় ভুয়া ডেভেলপার কোম্পানি কর্তৃক ৮ তলা অনুমোদন নিয়ে ১১ তলা বলে টেম্পারিং ডকুমেন্টে ফ্ল্যাট বিক্রির বিষয়টি নিয়ে সর্বপ্রথম রাজউক ও দুদকে অভিযোগ দাখিল করা হয়। তারপর বিভিন্নসময়ে ভিন্ন ভিন্ন অভিযোগের সুবাধে দুদকের নির্দেশে রাজউক কয়েক হাজার কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় শুধু অভিযানের নাম করে। কিন্তু একটি ভবনও নিয়ম মেনে সড়কের জায়গা ছেড়ে নির্মিত হয়নি।

২০২২ সন থেকে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করলেও একটি ভবনও নিয়ম অনুসরণ করেনি বরং ফ্ল্যাট ক্রেতাদের পুনরায় ফ্ল্যাট/ভবন রক্ষার্থে দুদক-রাজউককে ঘুষ দিয়ে ভবন রক্ষা করতে হয়েছে। রাজউক যেনো ঘুষ দুর্নীতির এক মহাসত্ব কায়েম করেছে ডেভেলপার কোম্পানি থেকে ঘুষ নিয়ে অবৈধ ভবন নির্মাণের মাধ্যমে। এখন ফ্ল্যাট ক্রেতাদের নিয়মিত ভাবেই ঘুষ প্রদানে বাধ্য করা হচ্ছে। অন্যথায় পানি/বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হচ্ছে। রাজউক কর্মকর্তা, RAB/পুলিশ কর্মকর্তা, থানা সহকারী মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা, শিক্ষা ভবনের কম্পিউটার অপারেটর, বদরুন নেসা কলেজের কেরানী, গণপূর্ত সচিবসহ সংঘবদ্ধ একটি সিন্ডিকেট মত্ত হয়ে আছে অবৈধভাবে ভবন নির্মাণের মাধ্যমে ফ্ল্যাট ব্যবসার নামে নিরীহ মানুষের টাকা হাতিয়ে নিতে। এ সিন্ডিকেট বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামীলীগ সেজে সরকারের পৃষ্টপোষকতায় মানুষের সাথে প্রতারণা করেছে আর এখন ধর্মীয় লেবাসের আড়ালে ফ্ল্যাট ব্যবসার নামে প্রতারণার অবৈধ কার্যকলাপ পরিচালনা করছে।

তুষারধারা আবাসিক এলাকার ৪নং সেক্টরস্থ YES TOWER জায়গা না ছেড়েই অবৈধ ভাবে ১৩ তলা ভবন নির্মান করেছে যার ফলে রাস্তা পাকা করতে গিয়ে ১২ ফুট রাস্তা করাও সম্ভব হচ্ছে না।

language Change
সংবাদ শিরোনাম