সাংবাদিকের প্রশ্নোত্তরে উদ্যত্তোপূর্ণ আচরণ করেন: স উ ম আবদুস সামাদ

চট্টগ্রাম প্রতিনিধি:
চট্টগ্রাম ১৪(চন্দনাইশ সাতকানিয়া আংশিক) আসনে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইসলামী ফ্রন্টের মনোনিত সংসদ সদস্য পদ প্রার্থী স উ ম আবদুস সামাদ দোহাজারী পৌরসভার একটি রেস্তোরাঁয় আজ বিকালে স্থানীয় ইলেকট্রনিক্স ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় অনুষ্ঠানে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকারের নির্বাচিত সংসদ সদস্য আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি ও উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল জব্বার চৌধুরীর কঠোর সমালোচনা করে বলেন, এরা বিগত দিনগুলোতে রুটিনমাফিক উন্নয়ন ছাড়া এলাকায় প্রতিনিধি হয়ে উন্নয়নমূলক কোনো কাজ করেননি এবং সংসদে উন্নয়নমূলক কোন প্রস্তাবনাও রাখেননি। রাখেনি দক্ষিণ চট্টগ্রামে ইউনিভার্সিটি, মেডিকেল ও সরকারি কারিগরি কলেজের প্রস্তাব। শুধু রুটিন ওয়ার্ক করেছেন মাত্র। এ সময় দৈনিক সবুজ বাংলাদেশ, চট্টগ্রাম প্রতিনিধির এক প্রশ্নের জবাবে, উত্তেজিত হয়ে উদ্যোক্তপূর্ণ আচরণ করায় সাংবাদিক মহলে তাৎক্ষণিক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। সাংবাদিকের প্রশ্নে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টের প্রতিনিধিদের নির্বাচন পরবর্তী সময়ে মাঠে তেমন একটা দেখা যায় না। এছাড়া এই ধরনের ছোট দলগুলো সরকারের নির্বাচনী এজেন্ডা বাস্তবায়ন করার জন্য এবং সরকারের বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করার জন্য আসন্ন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন কি না, প্রশ্ন করা হলে তেলে বেগুনে এক হয়ে উঠলেন স উ ম আবদুস সামাদ। এক পর্যায়ে তিনি বলে উঠলেন, আপনি জেগে থেকে ঘুমান না কি? আপনার মাথায় সমস্যা আছে, আপনি ডাক্তার দেখান। ঐ মূহুর্তে উনার এই কুরুচিপূর্ণ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে তাৎক্ষণিক সাংবাদিক মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। আলহাজ্ব নজরুল ইসলাম চৌধুরী এমপি ও উপজেলার সাবেক তিনবারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল জব্বার চৌধুরী সম্পর্কে প্রকাশ্যে সমালোচনা করেন। তিনি তার বক্তব্যে আরো বলেন আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নির্বাচিত হলে দক্ষিণ চট্টগ্রামকে ওয়ান সিটি টু টাউনে রুপান্তর করবেন। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও দক্ষিণ চট্টগ্রামে কোন উন্নয়ন হয়নি। সম্প্রতি উদ্বোধনকৃত টানেলের সমালোচনা করে বলেন, বৈদেশিক ঋণে হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দক্ষিণ চট্টগ্রাম বাসীর কোনো উপকারে আসছে না। দক্ষিণ চট্টগ্রামের উন্নয়ন অন্ধকারে তলিয়ে আছে, কয়েকটি গাড়ি চলাচল ও বিমানবন্দরের কিছু যাত্রী চলাচল করা ছাড়া তেমন একটা কাজে আসছে না টানেলটি। নির্বাচন প্রসঙ্গে উনি তত্তাবধায়ক সরকারের বিরোধিতা করে বলেন, তত্তাবধায়ক সরকারের অধীনে নয় বরং নির্বাচন কমিশনারের অধীনে সুস্থ ও অবাধ নির্বাচন চাই। তিনি আরো বলেছিলেন, নির্বাচন কমিশনকে সর্ব ক্ষমতা দেওয়া উচিত ছিলো প্রধানমন্ত্রীর। ২৯ই জানুয়ারী ২০২৪ এর মধ্যে যথাসময়ে নির্বাচন করা না হলে বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনসহ দেশের সার্বিক অবস্থান বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে, তাই আমরা অর্থাৎ বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট এই সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করেছি। এ সময় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যক্ষ আবু তালেব বেলাল , যুগ্ম মহাসচিব মুহাম্মদ আব্দুর রহিম,রেজাউল করিম তালুকদার, অধ্যাপক আব্দুর নুর, কেন্দ্রীয় সহ-প্রকাশনা সচিব মুহাম্মদ নুরুল্লাহ রায়হান খান, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সচিব ফয়েজ উল্লাহ খতিবি,ইসলামী ফ্রন্ট নেতা মুখতার আহমদ শিবলি, ডা. কলিম উদ্দিন, মাওলানা মাসুম রেজভি, আজিজুর রহমান, এডভোকেট মুজাম্মেল হক তালুকদার, মুহাম্মদ ইমতিয়াজ, এম এ মতিন,আবু তালেব মঈনি,আখতার কামাল, যুবনেতা উপাধ্যক্ষ মামুন উদ্দিন সিদ্দিকি, সংগঠক মুহাম্মদ মহিউদ্দিন, নুরুল ইসলাম হিরু, মুহাম্মদ শরাফত আলি,ছাত্রসেনার সাবেক সভাপতি মারুফ রেজা,যুবনেতা আব্দুল মুবিন,ছাত্রনেতা সেকান্দর আলম, আনোয়ার হোসাইন, আরমান হোসাইন প্রমূখ।

রমরমা জুয়ার ভয়ানক দাপট; অসহায় এলাকাবাসী, ব্যর্থ প্রশাসন!

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ-

দফায় দফায় অভিযান চললেও বন্ধ হয় না জুয়াব ন্দর নগরীতে মাদকের সাথে তালমিলিয়ে চলছে নিষিদ্ধ ছোট-বড় জুয়ার ঘর। চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) বিভিন্ন থানায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনী কর্তৃক পরিচালিত অভিযানে ছোটছোট জুয়া খেলা বন্ধ হলেও নগরীর বিভিন্ন থানায় বহাল তবিয়তে চলছে ক্ষমতাধরদের জুয়া। তারমধ্যে নগরীর হালিশহর থানাধীন ২৭নং ওয়ার্ড ছোটপুল ইসলামিয়া ব্রিফিল্ড এলাকায় আলমগীরের জুয়ার বোর্ড এখন ‘টপ অব দ্যা টক’। যা ভয়ানক মাদকের চেয়েও শক্তিশালী রুপ নিয়েছে। অপরদিকে আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর ভূমিকা নিয়ে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে জনমনে।

জানা গেছে, সারাদিনের উপার্জিত টাকা খেলায় খুইয়ে ওই এলাকায় বসবাসকারীদের অনেকের সংসারে বেড়েছে কলহ। ভয়ালগ্রাসী এ খেলা বন্ধে প্রশাসনের পক্ষ থেকে দফায় দফায় অভিযান চালানো হলেও খেলা বরাবরেই চলমান রয়েছে; অভিযোগ ভুক্তভোগীদের। অপরদিকে এলাকাবাসিসহ ভুক্তভোগীরা মুখ খুললেও নিজেদের নাম প্রকাশে করছে আপত্তি। তারা মনে করছেন, নাম প্রকাশ হলে তাদেরকে পড়তে হতে পারে আলমগীরের রোষানলে ।

এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ছোটপুলে পৈতৃক সম্পত্তি বুইল্লার কলোনিতে কয়েকটি দলে বিভক্ত হয়ে চলে জুয়া। দিনে খেলোয়াড়দের তেমন আনাগোনা না থাকলে সন্ধ্যার পর খেলা জমে ওঠে। এই আসরে যাওয়া আসার দুটি পথ রয়েছে। পুরো খেলার বোর্ডটি নিয়ন্ত্রণ করে আলমগীরের বিশস্ত কর্মচারি তাজু।

একাধিক সূত্র জানায়, আলমগীর খুবই হিংস্র। সব সময় নেশার ওপর থাকে। তার বিরুদ্ধে হত্যাসহ একাধিক মামলা বিভিন্ন থানায় রয়েছে। আলমগীরের বিশ্বস্ত তাজু নামের একজন সব কিছু দেখভাল করায় তাকে কোনো বিষয়ে টেনশন নিতে হয় না। এক কথায় বলা চলে, আলমগীর জুয়ার ঘরের মালিক হলেও হিসাব-নিকাশ থেকে শুরু করে সবকিছুর মূলকাণ্ডারী তাজু। যিনি (তাজু) থাকেন সব সময় ধরা ছোঁয়ার বাহিরে।

বছরখানেক আগে ঢাকাসহ সারাদেশে ক্যাসিনো অভিযান পরিচালনার পর চট্টগ্রামে হালিশহরস্থ আবাহনী ক্লাবে জমজমাট ক্যাসিনো খেলা বন্ধ হয়ে যায়। যা এখন পর্যন্ত বন্ধ আছে। কিন্তু থেমে নেই খেলা পরিচালনাকারীরা। বিভিন্ন কৌশলে বিভিন্ন এলাকায় এ খেলাকে ব্যাঙের ছাতার মত বিস্তার ঘটিয়েছে। চকবাজার, বহদ্দারহাটসহ বিভিন্ন থানা এলাকায় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর অভিযানে জুয়ার টাকাসহ তাসের ফিট নিয়ে অনেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে ছোটবড় জুয়ার ঘর বন্ধ হলেও দিবানিশি বহাল তবওয়্যতে চলছে ক্ষমতাধরদের বোর্ড।

সরেজমিনে দেখা গেছে, ছোটপুল পাঁচতলা বাজারের পাশদিয়ে সেমি পাকা ও বেড়া দিয়ে গড়ে ওঠেছে বুইল্লার কলোনি। সেখানে নিম্ম আয়ের মানুষের বসবাস এবং ঘনবসতি। এর মধ্যে জুয়ার সাম্রাজ্য গড়ে তুলছে আলমগীর হোসেন প্রকাশ আলমগীর। বাজারে প্রবেশের মুখে একদল কিশোরের বলয়। বাহিরের খবরা-খবর তারা দ্রুত ভেতরে পৌঁছে দেয়। তারা দৈনিক দুইশ থেকে তিনশ টাকা পায়। শুধু তাই নয়, কাঁচা রাস্তা দিয়ে খেলা ঘর পর্যন্ত পৌঁছাতে চোখে পড়বে কয়েকভাগে বিভক্ত কিশোরের জটলা। খেলাঘরের প্রধান ফটকে লোহার গেটের সামনে দুজন পাহারাদার। খেলোয়াড় ছাড়া অপরিচিত কিংবা সন্দেহজনক কাউকে ভিতরে প্রবেশ করতে দেয় না বলয়টি। যদিও প্রবেশ করতে চায় তাহলে মুখোমুখি হতে হয় বিভিন্ন প্রশ্নের। হিতে বিপরীত হলে মারধরের ঘটনাও ঘটেছে অতীতে।

ছোটপুল সমাজ কল্যাণ কমিটির বরাতে স্থানীয়রা জানায়, কমিটি অভিযোগ পেয়ে দফায় দফায় আলোচনা করেও বন্ধ করতে পারেনি এ জুয়া। বর্তমানে এটি এলাকায় বিষফোঁড়া।

সূত্র জানায়, সপ্তাহ কদিন আগেও জুয়ার বোর্ডে অভিযান চালিয়ে পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এর আগেও দফায় দফায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে বেশ কয়েকজন গ্রেফতার হয়। দুই তিন দিন বন্ধ থাকার পর ফের খেলা জমে ওঠে।

জুয়া খেলা পরিচালনাকারীদের ভাষ্যমতে, হালিশহর থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে দিবানিশি এই খেলা চলে। যদিও সাবেক ওসি রফিক থাকাকালীন সময় দুই বছর খেলা বন্ধ ছিল।

পরিচয় গোপন রেখে জুয়াড়ি জসিম আলাপচারিতায় বলেন, থানা পুলিশ কন্ট্রাক্ট থাকাতে আলমগীর ভাইয়ের জুয়ার বোর্ডে খেলোয়াড়দের খেলতে (পুলিশি) কোনো ভয় থাকে না। কড়া নিরাপত্তাজনিত কারণে খেলোয়াড় ছাড়া বাহিরের কোনো সাধারণ লোক ভিতরে ঢুকতে পারে না। প্রতিদিন এখানে ৪ লাখ থেকে ৫ লাখ টাকার খেলা চলে। তবে হালিশহর থানায় সাবেক ওসি রফিকুল ইসলাম দায়িত্বপালনকালীন সময়ে প্রায় দুই বছর খেলা বন্ধ ছিল।

এ বিষয়ে আলমগীরের মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে তিনি কল রিসিভ করেননি।

জুয়া বন্ধে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সফল নাকি ব্যার্থ জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার ( অপরাধ ও ক্রাইম….. বলেন, এই বিষয়টি আমার নলেজে নাই, অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।জুয়া খেলা স্থায়ী বন্ধে কোনো পদক্ষেপ আছে কিনা জানতে চাইলে হালিশহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জহিরুল ইসলাম বলেন, এই জুয়াটির বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ আছে। আমরা দফায় দফায় অভিযান পরিচালনা করছি কিন্তু পুলিশের অভিযানের পরেও তারা আবার পুনরায় খেলাটি চালু করে। এটি বন্ধে আমাদের কার্যক্রম চলমান থাকবে।

ভাষা পরিবর্তন করুন »
সংবাদ শিরোনাম